নিউজ

বিএনপির সাবেক এমপি হাবিবসহ ৪ জনের যাবজ্জীবন

মামলাদেশ # শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার অভিযোগ!

ঢাকা অফিস।। নির্বাচনের আগেই রাজনৈতিক মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির পথে। বেশীরভাগ নির্বাচনী এলাকার জনপ্রিয় বিরোধী দলীয় নেতাদের নামে দায়েরকৃত মামলা নিষ্পত্তির তালিকায় বলে জানা গেছে।

সাতক্ষীরার কলারোয়ায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়ি বহরে হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় বিএনপির সাবেক এমপি হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ ৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া ৪৪ জনকে সাত বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। আজ সাতক্ষীরার স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-৩ এর বিচারক বিশ্বনাথ মণ্ডল এ রায় ঘোষণা করেন। এ সময় ৩৯ জন আসামি আদালতে উপস্থিত  ছিলেন। একই ঘটনায় তিনটি মামলার মধ্যে অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের দুটি মামলায় আজ রায় ঘোষণা করা হয়। এর আগে ২০২১ সালে একই ঘটনায় তৃতীয় মামলায় হাবিবসহ ৫০ নেতাকর্মীকে ৪ থেকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়।

ঢাকার একজন সিনিয়র আইনজীবী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বিএনপির এমন কোনো নেতা নাই, যার নামে কয়েক ডজন মামলা নাই। এর বড় একটা অংশ সর্বোচ্চ শাস্তি দেওয়ার সুযোগ থাকছে। এফআইআর থেকে মামলার রায় কোনো পর্যায়ে আইনের কোনো তোয়াক্কা নেই। সর্বত্র গায়েবি মামলা। গায়েবি রায়। নির্বাচনের মাঠ খালি করার জন্য এবার হয়তো তারা এই কৌশল বেছে নিয়েছে।

সাতক্ষীরার মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- সাতক্ষীরা তালা-কলারোয়া আসনের সাবেক এমপি বিএনপি নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, কলারোয়া উপজেলা সদরের আব্দুল কাদের বাচ্ছু, রিপন ও রঞ্জু। ৭ বছর করে কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- সাতক্ষীরা জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা মৎস্য দলের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম (৪৬), সাবেক ছাত্রদলের সভাপতি রিপন (৩৫), বিএনপি নেতা আব্দুর রাজ্জাক (৪৮), উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ তামিম আজাদ মেরিন (৪৫), উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল রকিব মোল্যা (৪৩), কলারোয়া পৌরসভার মেয়র বিএনপি নেতা গাজী আক্তারুল ইসলাম (৩৮), বিএনপি নেতা মফিজুল ইসলাম (৪৪), পৌর ছাত্রদলের সভাপতি আব্দুল মজিদ (৩০), বিএনপি নেতা এড. আব্দুস সামাদ (৫২), বিএনপি নেতা হাসান আলী (৪৫), উপজেলা কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন আলী (৫৫), বিএনপি নেতা ময়না (৩৮), বিএনপি নেতা শিক্ষক আব্দুস সাত্তার (৫০), সাবেক উপজেলা ছাত্রদালের সভাপতি খালেদ মঞ্জুর রোমেল (৪২), বিএনপি নেতা কলেজ শিক্ষক তোফাজ্জেল হোসেন সেন্টু (৫০), যুবদলনেতা মাজাহারুল ইসলাম (৪৫), বিএনপি নেতা আব্দুল মালেক (৩৮), বিএনপি নেতা আব্দুর রব (৪৬), উপজেলা কেরালকাতা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম (৪৩), যুগীখালী ইউপি চেয়ারম্যান উপজেলা বিএপির যুগ্ম সাধারন সম্পাদক রবিউল ইসলাম (৫০), পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম রসুল (৪৮), সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক বিএনপি নেতা এড. আব্দুস সাত্তার (৫২), যুবদল নেতা রিংকু (৩২), যুবদল নেতা আব্দুস সামাদ (৪৮), বিএনপি নেতা আলাউদ্দীন (৩৪), যুবদল নেতা আলতাফ হোসেন (৩৮), উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি তৌফিকুর রহমান সনজু (৩৩), ছাত্র দলের সহ সভাপতি নাজমুল হোসেন (৩০), বিএনপি নেতা সাহাবুদ্দিন (৪৯), বিএনপি নেতা সাহেব আলী (৪৮), বিএনপি নেতা সিরাজুল ইসলাম (৫৫), যুবনেতা টাইগার খোকন (৩৮), যুব নেতা ট্রলি সহিদুল (৪২), বিএনপি নেতা কনক (৩৮), পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শেখ কামরুল হোসেন (৫০), যুবদল নেতা মনিরুল ইসলাম (৩০), যুবদল নেতা ইয়াছিন আলী (৩৫), পৌর বিএনপির সহ সভাপতি আখলাকুর রহমান শেলী (৩২), বিএনপি নেতা শাহিনুর রহমান (৫২), বিএনপি নেতা বিদার মোড়ল (৪০), যুবদল নেতা সোহাগ হোসেন (২৮), বিএনপি সমর্থক মাহাফুজার রহমান মোল্যা (৩৮), জামায়াত কর্মী গফ্ফার গাজী (৪০), সাবেক উপজেলা যুবদলের সহসভাপতি মাহাফুজুর রহমান সাবু (৫০)। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে ৯ জন পলাতক রয়েছেন।

সাতক্ষীরা জেলা জজ কোর্টের পিপি এড, আব্দুল লতিব জানান, ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাতক্ষীরায় আসেন এক ধর্ষিতাকে দেখতে। সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল থেকে দেখে যশোর ফেরার পথে কলারোয়া উপজেলা সদরে তার গাড়ি বহরে হামলা চালানো হয়। প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার জন্য বোমা বিস্ফোরণ ও গুলি চালানো হয়। এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেম উদ্দিন বাদী হয়ে কলারোয়া থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় ৫০ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট প্রদান করা হয়। সাক্ষ্য শেষে আজ এ মামলায় ৪ জনকে যাবজ্জীবন ও বাকি আসামিদের ৭ বছর করে কারাদন্ড প্রদান করা হয়।

Sheikhsbay

Related Articles

Back to top button
Close
Close