নিউজ

গুমের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবসে লন্ডনে সমাবেশ -প্রতিটি ঘটনায় জড়িতদের বিচার  করতে হবে

।। সুরমা প্রতিবেদন।।

লন্ডন, ৩০ আগস্ট: জোরপূর্বক তুলে নেওয়ার পর গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে লন্ডনে পার্লামেন্টের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভে বক্তারা বলেছেন, বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদি সরকার ভিন্নমতের রাজনৈতিক নেতা ও কর্মীদের গুম করতে আয়নাঘর নামক অঘোষিত বিশেষ কারাগার তৈরি করেছে। বিভিন্ন কালো আইনোর মাধ্যমে ভিন্নমতের লোক ও বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের নিপীড়নের পাশাপাশি সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তুলে নিয়ে গুম করছে। 

বক্তারা বলেন, এসব গুমের ঘটনা নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য জাতিসংঘ থেকে আহ্বান জানানো হলেও শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদি সরকার সেটা অগ্রাহ্য করে গুম-খুন ও নিপীড়ন অব্যাহত রেখেছে। অবিলম্বে গুমের শিকার ব্যক্তিদের মুক্তির আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেছেন, প্রতিটি গুমের ঘটনা ভবিষ্যতে একদিন তদন্ত হবে এবং জড়িত প্রতিটি ব্যক্তিকে আইনের আওতায় বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।

সাউথ এশিয়ান পলিসি ইনিশিয়েটিভ ও গ্লোবাল ভয়েস ফর হিউমিনিটির উদ্যোগে এবং যুক্তরাজ্যে কর্মরত ২০টি মানবাধিকার সংগঠনের আয়োজনে বৃটিশ পার্লামেন্ট স্কয়ারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভে বক্তারা এসব কথা বলেন।

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদি সরকার ক্ষমতায় আসার পরপরই বিরোধী দলের নেতা চৌধুরী আলম, এম ইলিয়াস আলীসহ অনেক রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে তুলে নিয়ে গুম করেছে। বছরের পর বছর পার হয়ে যাচ্ছে, তাদের স্বজনরা জানেন না কোথায় কিভাবে রয়েছেন তারা। বক্তারা আরো বলেন, শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতে এবং বিরোধী দলের আন্দোলন-সংগ্রামকে দমন করতেই বিরোধী রাজনৈতিক নেতাদের গুম-খুন করছে।

আন্তর্জাতিক আইনে গুম একটি মাবতা বিরোধী অপরাধ উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, প্রতিটি গুমের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের মানবতা বিরোধী অপরাধের আইনে বিচারের আওতায় আনতে হবে। একই সাথে এসব গুমের হুকুমদাতাকেও ভবিষ্যতে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে।

আমার দেশ পত্রিকার সিনিয়র সাংবাদিক অলিউল্লাহ নোমানের সভাপতিত্বে এবং সাপ্তাহিক সুরমার সম্পাদক শামসুল আলম লিটনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও বিক্ষোভে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, যুক্তরাজ্য বিএনপি’র সভাপতি ও সিটিজেন রাইটস মুভমেন্টের আহ্বায়ক এম এ মলিক, প্রবীন শিক্ষাবিদ সৈয়দ মামনুন মোর্শেদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমীর প্রফেসর আবদুল কাদির সালেহ, কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব মুফতি শাহ মুহাম্মদ সদরউদ্দিন, মানবাধিকার কর্মী ও সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর অব, জাকির হোসেন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি ব্যারিষ্টার তারিক বিন আজিজ, সোসাইটি ফর ডেমোক্রেটিক রাইটস-এর সভাপতি ব্যারিষ্টার ইকবাল হোসাইন, সেক্রেটারি ব্যারিষ্টার আলিমুল হক লিটন, মেজর অব সৈয়দ সিদ্দিক,যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি আশিকুর রহমান আশিক, পিস ফর বাংলাদেশের সভাপতি মো: ডলার বিশ্বাস, সেক্রেটারি মোঃ মাহিন খান, সাবেক ছাত্রনেতা আনোয়ার হোসেন টিপু, সাবেক ছাত্রনেতা আবদুল্লাহ আল মোমিন, নিরাপদ বাংলাদেশ চাই-এর আহ্বায়ক মুসলিম খান, ফাইট ফর রাইট্স-এর সভাপতি রায়হান উদ্দিন, সেক্রেটারি বুরহান উদ্দিন চৌধুরী, সেন্টার ফর দ্যা ডেমোক্রেটিক অ্যাণ্ড গুড গভর্নেন্স-এর আহ্বায়ক সোয়ালেহিন করিম চৌধুরী, সদস্য সচিব আবদুল কাইয়ূম, মানবাধিকার কর্মী নাদিয়া ফাতেমা, ইন্টারন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফোরামের উপদেষ্টা শফিকুল ইসলাম রিবলু, সেক্রেটারি জাকির হোসেন, ইকুয়াল রাইটস ইন্টারন্যাশনালের সেক্রেটারি নওশিন মোস্তারি মিয়া সাহেব, রাইটস অব দ্যা পিপলের সভাপতি আসাদুজ্জামান শাফি, মানবাধিকার কর্মী শফিক খান, সংস্কৃতি ও মানবাধিকার কর্মী সারিয়া ইসলাম শায়লা প্রমূখ।

বক্তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ৪৫ বছর পর মানবতা বিরোধী অপরাধের কথা বলে যদি বিচার হতে পারে গুমের প্রকৃত ঘটনার বিচারও অচিরেই হবে। গুম আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একটি মানবতা বিরোধী অপরাধ। বক্তারা আরো বলেন, বাংলাদেশে গুম ও খুনের মত মাবতা বিরোধী অপরাধের অভিযোগের সত্যতা যাছাই করে নিরাপত্তা বাহিনী র‌্যাব ও র‌্যাবের ৭ কর্মকর্তাকে ইতোমধ্যেই আমেরিকা নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। ভবিষ্যতে আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনী ডিবি, ডিজিএফাইসহ যারা গুমের সাথে জড়িত তাদেরও চিহ্নিত এবং বিচার করতে হবে।

যুক্তরাজ্যে সক্রিয় ২৪টি মানবাধিকার সংগঠনের মধ্যে রয়েছে-সিটিজেন মুভমেন্ট ইউকে, সোসাইটি ফর ডেমোক্রেটিক রাইটস(এসডিআর), ‘Global Human Rights & Environmental Defenders Forum (বিশ্ব মানবাধিকার ও পরিবেশ রক্ষাকারী ফোরাম)‘, নিরাপদ বাংলাদেশ চাই-ইউকে, ফাইট ফর রাইটস ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যানিটি ক্লাব ইউরো বিডি, জাস্টিস ফর বাংলাদেশ, ইন্টারন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফোরাম, অনলাইন এক্টিভিস্ট ফোরাম ইউকে, সলিডারিটি ফর হিউম্যান রাইটস ইউকে, রাইটস কনসার্ন, রাইটস মুভমেন্ট ইউকে, স্ট্যান্ড ফর বাংলাদেশ, পিস ফর বাংলাদেশ, সেন্টার ফর ডেমোক্রেসি এন্ড গুড গভর্নেন্স, সাপোর্ট লাইফ ইউকে, ইউনিভার্সাল ভয়েস ফর জাস্টিস, ভয়েস ফর জাস্টিস এন্ড রাইট, ভয়েস ফর জাস্টিস অ্যান্ড হোয়াইট পিজিয়ন, ইকুয়াল রাইটস ইন্টারন্যাশনাল (ইআরআই), সেন্টার ফর দ্যা ডেমোক্রেটিক অ্যাণ্ড গুড গভর্নেন্স, ইউনিভার্সাল ভয়েস ফর হিউম্যান রাইট,  রাইট্স অব দ্যা পিপলস ও ইন্টারন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ফোরাম।

Sheikhsbay

Related Articles

Back to top button
Close
Close