নিউজ

বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন উপলক্ষে যুক্তরাজ্য বিএনপি’র দোয়া মাহফিল

লণ্ডন, ১৭ আগস্ট: বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ৭৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করে যুক্তরাজ্য বিএনপি’র  উদ্যোগে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। গত মঙ্গলবার পূর্ব লণ্ডনের মাইলেন্ডের রিজেন্টস লেক ব্যানকুইটিং ভেন্যুতে এই মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয়তাবাদী দলের যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব সাপ্তাহিক সুরমা সম্পাদক সাংবাদিক ও কলামিস্ট শামসুল আলম লিটন, মেজর (অব:) সিদ্দিক, শিক্ষাবিদ শাহআলম, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব এম এ মালিক, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদ, জাতীয়তাবাদী জনতা দল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. আরিফুল ইসলাম উজ্জ্বল প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারেক রহমান বলেন, ‘আজ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন উপলক্ষ্যে তাঁর জন্য দোয়া করবো। আমরা দোয়া করবো দেশে স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার সংগ্রামে আমাদের যেসকল সহকর্মীরা শহীদ হয়েছে তাদের জন্য। আমরা আল্লাহর নিকট রহমত চাই, আল্লাহ যেন আমাদের শক্তি দান করেন। আমরা যেন হারিয়ে যাওয়া বাক স্বাধীনতা, হারিয়ে যাওয়া গণঅধিকার ফিরে পাই। পরিশেষে দেশ ও বিদেশে সকলের নিকট আমার মা, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্য দোয়া চাই। আল্লাহ যেন উনাকে সুস্থতা ও নেক হায়াত দান করেন।’

জাতীয়তাবাদী দলের যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপার্সন বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ৭৮তম জন্মবার্ষিকীতে সবাইকে সালাম ও শুভেচ্ছা জানাই। জাতির মা আমাকে নাম ধরে ডাকেন, আমাকে স্নেহ করেন। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ১৫ আগস্ট জন্মদিন নিয়ে ক্ষমতাসীনরা অনেক কথা বলেন। আমি তাদের বলবো, পার্লামেন্ট আপনাদের কাছে, আপনারা আইন পাশ করেন ১৫ আগস্ট বাংলাদেশে যত মানুষের জন্মদিন আছে, তাদের পরিবর্তন করতে হবে। শুধু খালেদা জিয়াকে বলেন কেনো? হিংসা! খালেদা জিয়ার পুরো ফ্যামিলিটাকে তছনছ করে ফেলা হয়েছে। ক্যান্টনমেন্টে একটা বাড়ি ছিলো, সেই বাড়িটাও নিয়ে গেছে। আরাফাত রহমান কোকোর অকাল মৃত্যু হয়েছে। এই বয়সে আপনার নানী দাদী, খালা, ফুপুরা কী চিন্তা করেন? চিন্তা করেন যে আমার ছেলে-মেয়ে নাতি-নাতনীরা কাছে থাকুক। কিন্তু খালেদা জিয়া পারতেছেন? খালেদা জিয়াকে সেই সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আমাদেরকে একটা আদর্শ দিয়ে গেছেন। বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ। আমরা মাকে যেমন ভালোবাসি, দেশকে তেমন ভালোবাসি। এরপর তিনি দেশের বিচার ব্যবস্থা নিয়ে নানান কথা বলেন। বেগম জিয়া, তারেক রহমান ও জুবায়দা রহমানের মামলা নিয়ে কথা বলেন। সবশেষে কথা বলার সুযোগ দেয়ার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে তিনি তাঁর বক্তব্য শেষ করেন।

সাপ্তাহিক সুরমা সম্পাদক সাংবাদিক ও কলামিস্ট শামসুল আলম লিটন বলেন, ‘আজকে যে উপলক্ষে আমরা এখানে এসেছি, মায়ের জন্মদিন। মায়ের জন্মদিন সন্তানের জন্য অনেক আবেগঘন ব্যাপার। এই জাতির কাছে তিনি মা শুধু আজকে নন। নব্বইয়ে আমরা যারা গণ-অভ্যুত্থান করেছি তাদের কাছে তিনি তখন থেকেই মা। মা, মাটি, মানুষ- পোস্টারটিও কথা নিশ্চয়ই সবার মনে আছে। কেনো সেদিন সেই একটি শ্লোগান একানব্বইয়ের নির্বাচনে মানুষকে এক করেছিলো? কারণ তিনি স্বৈরাচারকে বিদায় করতে বলেছিলেন। এবং চিটাগাঙে আরেকজন নেত্রীর দলের যখন ২২ জন মারা গেলো, জাতি শোকাহত হলো, সকল দল গেলো শহীদ মিনারে মিছিল নিয়ে কিন্তু সেই নেত্রী সেখানে গেলেন না। সেখানে গেলেন মা, মাটি ও মানুষের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। সেদিনই তিনি প্রমাণ করলেন তিনি মা, মাটি ও মানুষের নেত্রী। বিএনপি তাঁর দল, বিএনপি তাঁর আদর্শ। কিন্তু তিনি বাংলাদেশের মা, মাটি ও মানুষের নেত্রী। আমরা যখন জিহাদের লাশ নিয়ে অপরাজেয় বাংলার পাশে বিক্ষোভরত, প্রত্যেকটা ছাত্র যখন জীবন দেওয়ার জন্যে রেডি তখন সেই নেত্রী এলেন যিনি শহীদ মিনারে গেলেন না। তিনি এসে দলীয় শ্লোগান দিয়ে আন্দোলনকে বিভ্রান্ত করতে চাইলেন। সমগ্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা বিক্ষোভে ফেটে পড়লেন। এ অবস্থায় ডাকসু নেতারা মা,মাটি ও মানুষের নেত্রী দেশনেত্রীর কাছে নির্দেশনা চাইলেন। তিনি বললেন, যে যাই শ্লোগান দিক, আমাদের লক্ষ্য একটাই স্বৈরাচারের পতন। যেকোন মূল্যে একতাবদ্ধ থাকতে হবে। জাতির অস্তিত্ব ও স্বকীয়তা রক্ষার জন্য একতার বিকল্প নেই। ঐক্যের কোন বিকল্প নেই। এই হচ্ছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। আমি যুক্তরাজ্য বিএনপিকে ধন্যবাদ দিই দেশনেত্রীর জন্মদিন আপনারা পালন করছেন। মায়ের জন্মদিন আপনারা পালন করছেন। একইসঙ্গে আমি একথাও স্বরণ করিয়ে দিতে চাই তিনি শুধু বিএনপি নেত্রী নন। তিনি বাংলাদেশ নেত্রী, তিনি জনগণের নেত্রী। তিনি-জিয়া পরিবার তাঁরা শুধু ব্যাক্তি নন। তাঁরা বাংলাদেশের সম্পদ। তাঁরা উই রিভল্টের উত্তরাধিকার। আজকে আমরা যার জন্মদিন পালন করছি তিনি যে কতটা শান্তিপ্রিয়, যিনি গ্রেফতার হওয়ার আগে বলেছিলেন, আমার যাই কিছু হোকনা কেনো, আন্দোলন সংগ্রাম হতে হবে দেশের স্বার্থে, শান্তিপূর্ণভাবে। এই কথা আমরা গত ৫০ বছরে মাত্র একজন নেত্রীর কাছ থেকেই শুনেছি। ঐক্যে, শান্তি এবং দেশের স্বার্থ। দেশের মা দেশনেত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে জানাতে চাই, আপনাকে এই জাতি ব্যক্তি মনে করে না। আপনি-জিয়া পরিবার জাতির আলোকবির্তকা। তিনি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের অর্থের উৎস নিয়ে নিয়ে কথা বলেন এবং বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন।’

জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি আলহাজ্ব এম এ মালিক তাঁর বক্তব্যে বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার শুভ জন্মদিন উপলক্ষ্যে সবার নিকট দোয়া চান এবং জন্মদিন উপলক্ষ্যে কেক না কেটে, বিলাসিতা না করে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করায় বিএনপি চেয়ারপার্সন তারেক রহমানের প্রশংসা করেন। জন্মদিনে তিনি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানান।

যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমেদের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতা-কর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।

নেতা-কর্মীদের উপস্থিতিতে মিলাদ শেষে মোনাজাতের মাধ্যমে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করে ৭৮তম জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শেষ করেন।

Sheikhsbay

Related Articles

Back to top button
Close
Close