নিউজ

দুর্নীতি ধামাচাপা দিতে বিমান প্রভুর ভাষায় দায় এড়াচ্ছে

উড়োজাহাজ যাত্রীরা ছবি তুলতে পারবে না বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এমন নির্দেশনাকে যাত্রীসেবায় নানা অনিয়ম, লাগেজ হ্যান্ডলিংসহ দুর্নীতি ধামাচাপা দিতে কলোনিয়াল প্রভুর ভাষা বলে মন্তব্য করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন ‘ভয়েস ফর গ্লোবাল বাংলাদেশীজ’।

ভয়েস ফর গ্লোবালের সভাপতি ড. হাসনাত হোসাইন এমবিই গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বিমান বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষের বিবৃতিকে প্রত্যাখ্যান করে বলেন, এতে কর্তৃপক্ষের মূল সমস্যাকে ধামাচাপা দেয়া ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের পতাকাবাহী একটি সংস্থার উন্নয়ন ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনায় তাদের সীমাহীন ঔদাসীন্য ও ব্যর্থতাই শুধু প্রকাশ পায়নি বরং এতে তাদের অমার্জনীয় ঔদ্যত্বও প্রকাশ পেয়েছে।

বিমানের এটি মনে করার কোন কারন নেই যে, তাদের এই ভাষার চাতুর্য ও দায়িত্বহীন অবিমৃশ্যকারিতা কারোরই বুঝবার ক্ষমতা নেই ।

ড. হাসনাত হোসাইন এমবিই বলেন, একজন সেবা গ্রহনকারী উপযুক্ত সেবা না পেয়ে এবং দেশের পতাকা বহনকারী একটি সংস্থার আসনশূন্য ফ্লাইট চালানোয় বিমান যে অযৌক্তিকভাবে বিরাট অংকের লোকসান দিয়ে যাচ্ছে তা তুলে ধরতে গিয়ে প্রমান স্বরুপ সোস্যাল মিডিয়ায় যদি কোন ছবি আপলোড করে থাকে, একে বে আইনী এবং দন্ডনীয় অপরাধ বলে কর্তৃপক্ষ যে বক্তব্য দিয়েছেন এতে আমরা যুগপৎ ক্ষুব্ধ ও হতাশ হয়েছি।

একথা সর্বজনবিদিত যে, প্রবাসী বাংলাদেশীদের মধ্যে বিমান ভ্রমনের ক্ষেত্রে বিমান বাংলদেশ এয়ারলাইন্স সবসময়ই তাদের আগ্রহ ও পছন্দের তালিকার শীর্ষে থাকে। বিমান কী ভাবে এটা অস্বীকার করবে যে আন্তর্জাতিক রুটে ঢাকামুখি অন্যান্য এয়ার লাইন্সের চেয়ে বিমানের ভাড়া প্রায় দ্বিগুন হওয়া সত্তেও প্রবাসী বাংলাদেশীরা স্বদেশী বিমানেই ভ্রমন করতে চায়, বিবৃতিতে বলা হয়।

বিমান কর্তৃপক্ষ তাদের এই আগ্রহে ও দেশপ্রেমের কোন মূল্য না দিয়ে উল্টো একজন যাত্রীর একটি দৃষ্টি আকর্ষন মূলক পোষ্টের কারনে তাকে হেয় প্রতিপন্ন করে যে বিবৃতি দিয়েছে এটি কোনভাবেই গ্রহনযোগ্য নয়।

ড. হাসনাত হোসাইন বলেন, বিমানের যাত্রীসেবায় নানান অনিয়ম ,লাগেজ হ্যান্ডলিং এ দুর্নীতি এবং টিকেটিং এ আন্ডারলাইন সিনিডিকেটের কারনে আগ্রহী যাত্রীরা টিকিট না পেলেও বিমানে ফ্লাইটে আসন কেন শূন্য থাকে এ প্রশ্ন ওঠা খুব কী অযৌক্তিক?
একটি জাতীয় সংস্থার দায়িত্বশীল কর্মকর্তা হিসেবে কর্তৃপক্ষ এর দায় এড়াতে পারেনা। বিমানের যাত্রীসেবার দুরাবস্থা নিয়ে প্রশ্ন শুধু এবারই উত্থাপিত হয়েছে এমন নয়; বরং তা বহুদিনের । কিন্তু কর্তৃপক্ষ এর উন্নয়নে কি কি পদক্ষেপ নিয়েছে তা না জানিয়ে প্রতিবছরই তারা একই ধারায় জবাব দিয়ে দায় এড়াবার চেষ্ঠা করেছে মাত্র।

লক্ষ্য করলে দেখা যাবে এবার ২০২৪ সালে বিমান যে বক্তব্য দিয়েছে এটা তাদের পূর্বের বক্তব্যেরই কপি পেস্ট মাত্র। ২১১৮, ২০২২, ২০২৩ এও একই ধরনের অভিযোগে বিমান কর্তৃপক্ষ যে ব্যাখ্যা দিয়েছে ২০২৪ সালে এসে প্রায় একই বক্তব্য দিয়ে তারা প্রমান করেছেন যে কর্তৃপক্ষ বিমানের লোকসান পোষানো এবং মান উন্নয়নে কোন পদক্ষেপ না নিয়ে তাদের নিজেদের সিন্ডিকেট স্বার্থেরই পাহারাদারী করছে মাত্র।

এটা রীতিমতো বিষ্ময়ের ব্যাপার যে ২০১৮ সালে বিমানে আসন শূন্যতা প্রসংগে সংসদীয় কমিটির কাছে কর্তৃপক্ষের দেয়া যে বক্তব্য সংসদীয় কমিটি গ্রহন না করে প্রত্যাখ্যান করেছে বিমান কর্তৃপক্ষ ২২,২৩,২৪ সালে এসেও প্রায় একই বক্তব্য দেয় কী ভাবে?

বিবৃতিতে বলা হয়, লীন সিজন একটা যৌক্তিক কারন বটে । তবে তা পুষিয়ে নেবার জন্যে অন্যান্য এয়ারলাইন্স যেভাবে নানান রকমের আকর্ষনীয় অফার দিয়ে ঐ পিরিয়ডে যাত্রী আকৃষ্ট করে থাকে বিমানের ক্ষেত্রে তেমন কোন উদ্যোগ দেখা যায়না কেন? এ সব প্রশ্নের কোন উত্তর না দিয়ে বিমান কর্তৃপক্ষ বরাবরই কলোনিয়াল প্রভুর ভাষায় উত্তমপুরুষে কিছু শব্দজাল বুনে বিবৃতি দিয়ে দায় এড়াতে চেয়েছে।

বিমানের এটি মনে করার কোন কারন নেই যে, তাদের এই ভাষার চাতুর্য ও দায়িত্বহীন অবিমৃশ্যকারিতা কারোরই বুঝবার ক্ষমতা নেই ।

ড: হাসনাত গ্লোবাল বাংলাদেশীজ এর পক্ষ থেকে বিমান কর্তৃপক্ষকে যাত্রীদের আইনের পাঁচপা দেখানোর হুমকি না দিয়ে আন্তর্জাতিক দক্ষতা, পেশাদারিত্ব ও মান অর্জন এবং বিমানকে লোকসানের হাত থেকে বাঁচিয়ে একটি লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহনের আহ্বান জানান।

Tags
Sheikhsbay

Related Articles

Back to top button
Close
Close