মুক্তচিন্তা

পরীমনির জামিন, ধন্যবাদ দিতে চাই গাফফার চৌধুরীকে

।। পলাশ রহমান ।।

লেখক: সাংবাদিক ।। ইতালী প্রবাসী

অভিনেত্রী পরীমনির জামিন হয়েছে। তিনি মাদক মামলায় গ্রেফতার হয়ে ২২ দিন হাজতে ছিলেন। গ্রেফতার হওয়ার প্রথম দিকে কেউ তার পক্ষে কথা না বললেও শেষের দিকে অনেকে বলেছেন। বিলেত প্রবাসী বর্ষীয়ান সাংবাদিক, লেখক আবদুল গাফফার চৌধুরীও এ বিষয়ে কথা বলেছেন। পত্রিকায় কলাম লিখেছেন। জনাব চৌধুরী পরীমনির বিষয়ে কথা বলার পরে অনেকটা অনুমেয় ছিল— পরীমনির জামিন হবে। তিনি লন্ডন থেকে পরীমনির জন্য আইনজীবী পাঠাতে চেয়েছিলেন, তা আর দরকার হয়নি। পরীমনি এখন হাজতের বাইরে থেকে তার মামলার জন্য আইনি লড়াই করার সুযোগ পাবেন।
আবদুল গাফফার চৌধুরী সরকার ঘরানার মানুষ। দেশে যখন সরকার নিয়ন্ত্রিত ৪টি সংবাদপত্র বাদে অন্য সবগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল, তিনি ছিলেন ওই সময়ের সম্পাদক। বঙ্গবন্ধুর আস্থাভাজন মানুষ হিসাবে শেখ হাসিনার কাছেও তিনি সমাদৃত। যদিও কিছু লেখালেখি এবং কথা বার্তার কারণে শেখ হাসিনার আওয়ামীলীগে তাঁর খানিকটা আস্থাসংকট আছে। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর পরে জনাব চৌধুরীর ভূমিকা আওয়ামীলীগের কাছে অনেকটা অগ্রহণযোগ্য। তবুও শেখ হাসিনার আওয়ামীলীগে বা সরকারে তিনি একজন প্রভাবশালী মানুষ। তিনি কথা বলার পরে, কলাম লেখার পরেও পরীমনির জামিন হবে না, তা কেউ বিশ্বাস করেনি।
জনাব চৌধুরী পরীমনি বিষয়ে মুখ খোলায় দুইটি বিষয় পরিস্কার হয়েছে। প্রথমতঃ গাফফার চৌধুরীদের কথা সরকার আমলে নেয়। তাদের কথায় অনেক কিছু প্রভাবিত হয়। অবিচার, অনিয়ম বাধাগ্রস্ত হয়। দ্বিতীয়তঃ দেশের বিচার ব্যবস্থা এবং শাসন ব্যবস্থার একটা নিদারুণ চিত্র গণমানুষের কাছে ফের উন্মোচিত হয়েছে।

শিল্পী পরীমনি

আমরা বিশ্বাস করি— লেখক, সাংবাদিক জগতের জীবন্ত কিংবদন্তি আবদুল গাফফার চৌধুরী যদি দেশের অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, দূর্নীতি, গণতন্ত্রহীনতা নিয়ে কথা বলেন, কলম ধরেন তবে অনেক কিছু বদলে যাবে, প্রভাবিত হবে। পরীমনির মতো দেশের গণমানুষ মুক্তি পাবে। গণতন্ত্রের জামিন হবে। দেশে নির্বাচন হয় না। গণতন্ত্র নেই। বিরোধী দল নিয়ন্ত্রীত। মানুষের কথা বলার অধিকার নেই। এক দলীয় শাসন চলছে। ইতিহাস বিক্রিত করা হচ্ছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো অকার্যকর করে সব কিছু এক ব্যক্তি কেন্দ্রিক করা হয়েছে। সিভিল সোসাইটি দূর্বল করে দেয়া হয়েছে। গোটা দেশ গুম, খুন আর দূর্নীতির নরকে পরিণত করা হয়েছে। এই বাস্তবতাগুলো জনাব চৌধুরী জানেন না তা পাগলেও বিশ্বাস করবে না। চিন্তাশীল মানুষরা তো নাই।

আমরা প্রত্যাশা করি— জীবনের শেষ বেলায় এসে আমাদের ‘নক্ষত্র’ জনাব চৌধুরী নিজের প্রতিভা, যোগ্যতার সাথে সুবিচার করবেন। দূর্নীতি, অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা নিয়ে কথা বলবেন। দেশে নির্বাচন না হওয়া, গণতন্ত্র না থাকা, বিরোধী দল দমন করা নিয়ে কলাম লিখবেন। গণমানুষের আর্তনাদগুলো তিনি পৌছে দেবেন শাহী-দরবারে।

Sheikhsbay

Related Articles

Back to top button
Close
Close