করবিন পুনর্বহাল, পার্লামেন্টারি সদস্যপদ প্রশ্নে বিদ্রোহের মুখে স্টারমার
|| সুরমা প্রতিবেদন ||
লণ্ডন, ২১ নভেম্বর – এন্টি-সেমিটিজম ইস্যুতে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া সাবেক লেবার নেতা জেরেমি করবিনকে দলের ন্যাশনাল এক্সিকিউটিভ কমিটির (এনইসি) সিদ্ধান্তে পুনর্বহাল হয়েছেন। এর মাধ্যমে লেবার পার্টি থেকে বরখাস্ত হবার প্রায় ১৯ দিন পর দলের সদস্যপদ ফিরে পেলেন জেরেমি করবিন। মঙ্গলবার লেবার পার্টির ন্যাশনাল এক্সিকিউটিভ কমিটির এক বৈঠকে দলের সাবেক লিডার এবং বর্ষীয়ান এমপি জেরেমি করবিনের সদস্যপদ ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
তবে দলীয় সদস্য ফিরিয়ে দিলেও লেবারের পার্লামেন্টারি সদস্য হিসেবে করবিনকে মেনে নিতে অস্বীকার করেছেন বর্তমান লেবার নেতা স্যার কিয়ার স্টারমার। আর এতে করে লেবারের বামপন্থীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। দলীয় এমপিদের বিদ্রোহের মুখে পড়েছেন তিনি।
১৭ নভেম্বর, মঙ্গলবার করবিনের দলীয় সদস্যপদের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নেয় দলীয় কার্যনির্বাহী কমিটির (এনইসি)। এতদ্বসত্ত্বেও বুধবার এক কড়া বিবৃতিতে স্টারমার বলেছেন যে, তিনি করবিনকে সংসদীয় লেবার পার্টিতে (পিএলপি) ফিরিয়ে নেবেন না।
স্টারমার বিবৃতিতে বলেন, ‘ইএইচআরসি রিপোর্টের প্রতিক্রিয়া হিসাবে জেরেমি করবিনের পদক্ষেপগুলি এন্টি-সেমিটিজম মোকাবেলায় লেবার পার্টির দক্ষতার প্রতি আস্থা আনার ক্ষেত্রে আমাদের কাজকে ক্ষুন্ন করেছে। এই পরিস্থিতিতে আমি পার্লামেন্টের হুইপ জেরেমি করবিনের কাছে ফিরিয়ে না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমি এই পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে দেখবো।
দলীয় নেতার এই সিদ্ধান্তে করবিনের সমর্থক ডায়ান অ্যাবট, জন ম্যাক-ডোনাল্ড এবং রিচার্ড বার্গনসহ বেশ কয়েকজন লেবার এমপিদের ক্ষুব্ধ করে তুলেছে এবং তারা স্টারমারকে দলীয় ঐক্য বিনষ্টের ঝুঁকির জন্য অভিযুক্ত করেছিলেন।
এদিকে, পূর্ব লণ্ডনের লাইম হাউজ এণ্ড পপলার আসনের বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত এমপি আফসানাসহ লেবারের সোশ্যালিস্ট উইয়িং এর ২৭ এমপি সাবেক নেতা করবিনকে পার্লামেন্টারি লেবার পার্টি (পিএলপি) এর মধ্যে পুনরায় অন্তর্ভূক্তির জোর দাবী জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ইজলিংটন নর্থের এমপি জেরেমি করবিন লেবার পার্টির লিডার থাকাকালিন সময়ে দলের এন্টি-সেমিটিজম ইস্যুর সুরাহা করতে গিয়ে ইক্যুয়ালিটি এ্যাক্ট লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে দ্যা ইক্যুয়ালিটি এ- হিউম্যান রাইটস কমিশনের তদন্ত রিপোর্টে প্রকাশ করা হয়। এই রিপোর্টের প্রতিক্রিয়া জানাতে জেরেমি করবিন মন্তব্য করে বলেছিলেন, রাজনৈতিক কারণে নাটকীয়ভাবে দলের ভেতরে এন্টি-সেমিটিজম ইস্যুর মাত্রা বাড়ানো হয়েছে। দলের ভেতরে উত্তপ্ত এন্টি-সেমিটিজিম ইস্যু নিয়ে ইএইচআরসি’র রিপোর্টের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে সাবেক লেবার লিডার শব্দ চয়নে ব্যর্থ হয়েছেন বলে তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছিল। তবে করবিনকে বরখাস্তের ইস্যুতে লেবারে পাল্টা গৃহদাহের সূচনা হয়।
শেষ পর্যন্ত দলীয় ঐক্য সামাল দিতে সাবেক এবং বর্তমান দু‘নেতাই আন্তরিকতার পরিচয় দেন।
দ্যা ইক্যুয়ালিটি এণ্ড হিউম্যান রাইটস কমিশনের তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশের পর নিজের মন্তব্যের কারণে কেউ কষ্ট পেয়ে থাকলে এ জন্যে মঙ্গলবার সকালে এক বিবৃতিতে দুঃখ প্রকাশ করেন সাবেক লেবার লিডার। এরপর বিকেলেই দলের ন্যাশনাল এক্সিকিউটিভ কমিটির এক মিটিংয়ে বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদকে দলীয় সদস্যপদ পুনরায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়।