নিউজ

প্রবাসীরাও দেশে গণতন্ত্র ও স্বাধীনভাবে ভোটের নিশ্চয়তা চান

।।শামসুল ইসলাম।।

বাংলাদেশে বর্তমানে যে গণতন্ত্র, মানুষের ভোটাধিকার, মানবাধিকার বা আইনের শাসনের কোনটাই আর উপস্থিত নাই সেটা আওয়ামী লীগের সমর্থকরাও জানেন, মানেন। অন্যদের সাথে তাদের পার্থক্য হলো, তারা একে কথিত উন্নয়নের বিনিময়ে জাস্টিফাই করেন। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় দেড় কোটি মানুষ বিশ্বের নানা দেশে বাস করেন বলে ধারণা করা হয়। ইউরোপ, আমেরিকা, কানাডা, অষ্ট্রেলিয়ার মতো গণতান্ত্রিক দেশগুলোতে বসবাস করা বাংলাদেশিদের সংখ্যাটাও নেহাত কম নয়। এসব দেশে বসবারত বাংলাদেশীরা স্বভাবতই এই দেশগুলোর গণতান্ত্রিক চর্চা, মানবাধিকার বা মত প্রকাশ করার স্বাধীনতা এগুলো সামনে থেকে প্রত্যক্ষ করে থাকেন। অনেকে আবার সরাসরি এসব দেশের স্থানীয় বা মূল ধারার রাজনীতির সাথে জড়িত আছেন। কেউ কেউ বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিও নির্বাচিত হতে পেরেছেন।

কিন্তু এসব প্রবাসীরা যখন নিজের জন্মভূমির সাথে এসব দেশের শাসক ও শাসন ব্যবস্থার তুলনা করেন তখন কেবল যে আশাহতই হন তা নয় বরং হতাশ হতে বাধ্য। বাংলাদেশের মানুষ মাত্রই সহজাতভাবেই রাজনীতি সচেতন। প্রবাসে যারা থাকেন তারা বরং একটু বেশিই দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি নিয়ে ভাবেন। তাদের হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের পাঠানো টাকাই যে বর্তমানে দেশের মূল চালিকাশক্তি সেটাও তারা জানেন। কিন্তু তাদের পরিশ্রমের টাকা দেশে কতটা নিরাপদ তা নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রবাসীরা। দিনের পর দিন জবাবদিহিতা ছাড়া চলা একটি দেশে বিনিয়োগ করতে ভয় পাচ্ছেন প্রবাসীরা।

শরীফ আহসান, পর্তুগালে ট্রাভেল এজেন্সি ও ক্যাটারিং ব্যবসার সাথে জড়িত। দেশে বিনিয়োগের চিন্তা করেও বারবার ফিরে আসেন। তার সাফ কথা দেশে ন্যূনতম ন্যায়বিচার বা আইনের শাসন অবশিষ্ট নেই, কোন ভরসায় বিনিয়োগ করবেন। তার মতে প্রবাসীদের নিজেদের সার্থে দেশের গণতন্ত্র ও মানবাধিকার প্রতিষ্টায় ভূমিকা রাখা দরকার।

ফ্রান্সের তুলুজে বাস করেন সোহাগ মজুমদার, দুই দশকের প্রবাস জীবনে এতটা দেশ বিমোখ হননি কখনো। তার মতে দেশ যেভাবে চলছে তা থেকে বের হতে হলে প্রবাসীদেরও এগিয়ে আসতে হবে। দেশে বুঝে শুনে বিনিয়োগ করতে হবে। দেশে ফ্রান্সের মতো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়তে এখানকার প্রবাসী যারা রাজনীতি করেন তাদের ভূমিকা নেয়া দরকার। আপনি বা বিএনপি করেন ভোট দেয়ার অধিকার তো দিতে হবে।

এম এ মুহিত, সাউথ ইয়র্কশায়ারে ট্যাক্সি চালান, তার মতে দেশে একনায়কতন্ত্র জেকে বসে আছে। প্রবাসীদের সরকারের উপর চাপ দিতে প্রয়োজনে রেমিট্যান্স বন্ধ করার হুমকি দিতে হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফ্রান্স আওয়ামী লীগের একের সহ সভাপতি মনে করেন, শেখ হাসিনার উচিৎ নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করে দেয়া। অবশ্য তার বিশ্বাস শেখ হাসিনার উন্নয়নের কারনে নিরপেক্ষ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ জিতে আসবে।

প্রবাসীদের অনেকের সাথে আলাপকালে যা জানা যায় তা হলো, তারা মনে করেন না বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ বা বিএনপি কোন দলীয় সরকারের অধীনে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। যেকোনো নামেই হোক দল নিরপেক্ষ সরকারের মাধ্যমে নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে তাগিদ দেন তারা।

Sheikhsbay

Related Articles

Back to top button
Close
Close