নিউজহোম

রাজপথে সর্বদলীয় ঐক্য গড়ে উঠলে মাফিয়া চক্র পিছু হটবে- তারেক রহমান

“স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিকেরা এখন নিজ দেশেই যেন পরাধীন”- “জাতীয় বেঈমানরা দেশের শত্রু, গণতন্ত্রের শত্রু”

সুরমা প্রতিবেদন ।।

লন্ডন, ১৬ ডিসেম্বর; বিজয় দিবস উপলক্ষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান লন্ডন থেকে জাতির উদ্দেশ্যে বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্রের সংগ্রামে সকল শহীদ ও হতাহতদের প্রতি শ্রদ্ধা ও পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। বিজয়ের ৫৩ তম বছরে মুক্তিযুদ্ধের সকল মূলমন্ত্রের একটিও এখন আর অবশিষ্ট নেই’ উল্লেখ করে এই ভিডিও বক্তব্যে তিনি বলেন, আজ দেশে গার্মেন্টস শ্রমিক থেকে নোবেল লরিয়েট পর্যন্ত সকলে মানবিক মর্যাদা হারিয়ে মাফিয়া চক্রের ইচ্ছে-অনিচ্ছের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন। স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের সংগ্রামের পথ ধরে এই ডিসেম্বরে আরেকটি বিজয়ের লক্ষ্যে মাঠে ময়দানে সকলকে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, রাজপথে সর্বদলীয় ঐক্য গড়ে উঠলে মাফিয়া চক্র পিছু হটতে বাধ্য হবে।

দেশে নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে’ উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা, তার পরিবারের সদস্য এবং আওয়ামী দুর্নীতিবাজদের কারণে দেশে এখন নীরব দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। দেশবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি চলমান আন্দোলন, নেতাকর্মীদের গণহারে গ্রেফতার, দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি, আর্থিক খাতে লুটপাট, জাতীয় শিক্ষা কারিকুলাম, বিচার বিভাগ, গার্মেন্টস শ্রমিকদের উপর নির্যাতন -খুন ও শতাধিক নেতাকে গ্রেফতার প্রসঙ্গে বিস্তারিত বক্তব্য তুলে ধরেন।

দেশবাসীর উদ্দেশ্যে প্রদত্ত তারেক রহমানের ভিডিও বক্তব্যের সম্পূর্ণ টেক্সট এখানে তুলে ধরা হলো:
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম

রক্তক্ষয়ী একটি মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে লাখো প্রাণের বিনিময়ে শত্রুকে পরাজিত করে ১৯৭১ সালের এইদিনে আমরা বিজয় অর্জন করেছিলাম। বিজয়ের ৫৩ বছরে এসে আজকের নির্মম বাস্তবতা হলো, দেশ এখন ফ্যাসিবাদের কবলে। জনগণের বিজয়ের সেই গৌরব কেড়ে নেয়া হয়েছে। মানুষের স্বাধীনতা -অধিকার কেড়ে নিয়ে বাংলাদেশকে একটি তাবেদার রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছে। বর্তমানে এক কঠিন সংকট কাল অতিক্রম করছে দেশ। সাম্য-মানবিক মর্যাদা-সামাজিক সুবিচার, মুক্তিযুদ্ধের এইসব মূলমন্ত্রের একটি বৈশিষ্টও এখন আর অবশিষ্ট নেই। গার্মেন্টস শ্রমিক থেকে নোবেল লরিয়েট মানবিক মর্যাদা হারিয়ে, প্রতিটি মানুষই এখন মাফিয়া চক্রের ইচ্ছে-অনিচ্ছের কাছে প্রায় জিম্মি হয়ে পড়েছে। দেশে এখন নাগরিকদের স্বাধীন মতামত প্রকাশ কিংবা সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার নেই। নাগরিকদের উপর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিচ্ছে ফ্যাসিবাদী সরকার অপরদিকে ফ্যাসিবাদী সরকারের উপর অন্য কেউ সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিচ্ছে। স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিকেরা এখন নিজ দেশেই যেন পরাধীন।

প্রিয় দেশবাসী
বর্তমানে দেশ কোন অবস্থায় দাঁড়িয়ে এর একটি মাত্র উদাহরণ দিলেই দেশের প্রকৃত অবস্থা আরো স্পষ্ট হয়ে উঠবে। আমার সবাই দেখেছি, ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবকদেরকে অন্ধকারে রেখেই শিক্ষার্থীদের উপর তথাকথিত জাতীয় শিক্ষা কারিকুলাম চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। এর বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদেরকে প্রতিবাদ জানানোর সুযোগ নেই। কিছু শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকগণ প্রতিবাদ জানানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাদের উপর হামলা মামলা হয়েছে। অনেক শিক্ষক-অভিভাবককে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ চাপিয়ে দেয়া শিক্ষা কারিকুলামের ব্যাপারে নিজেদের মতামত প্রকাশ করতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ১৩ ডিসেম্বর একটি আলোচনা সভার আয়োজন করেছিলেন। উদ্বেগের বিষয় হচ্ছে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদেরকে জাতীয় কারিকুলাম নিয়ে আলোচনা করতে দেয়নি। শিক্ষা কারিকুলাম নিয়ে শিক্ষাবিদদের আলোচনায় ফ্যাসিস্ট হাসিনার এতো ভয় কেন? সন্দেহটা এখানেই।
প্রিয় দেশবাসী
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণই যদি আলোচনার সুযোগ না পান তাহলে জাতীয় শিক্ষা কারিকুলাম নিয়ে কারা আলোচনা করবেন? কম টাকায় চা-সিঙ্গারার যোগান দেয়াই কি দেশের সর্বোচ্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ? অবাধ নকলের সুযোগ কিংবা অটোপাশ দিয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ইতোমধ্যেই দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা এবং একটি প্রজন্মের সর্বনাশ করেছে। জনমনে প্রশ্ন উঠেছে, এবার কি তাহলে দেশকে তাবেদার রাষ্ট্র বানিয়ে রাখার সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে/একটি মেরুদন্ডহীন প্রজন্ম তৈরী করতেই বিতর্কিত এই জাতীয় শিক্ষা কারিকুলাম চাপিয়ে দেয়া হয়েছে?

প্রিয় দেশবাসী
ফ্যাসিবাদের কবলে পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতোই/এভাবে দেশের প্রতিটি স্বায়ত্তশাসিত, বিধিবদ্ধ এবং সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নিজেদের স্বাধীনতা-স্বকীয়তা বিসর্জন দিতে বাধ্য হয়েছে। দেশের বিচার বিভাগেও ফ্যাসিবাদ ভর করেছে। গণতন্ত্রকামী জনগণকে কারাগারে পাঠাতে ফ্যাসিবাদের দোসর বিচারকরা এখন রাতের বেলায় পর্যন্ত আদালত বসিয়ে কারাদণ্ড দিচ্ছে। ফ্যাসিবাদের দোসর কতিপয় বিচারকের অবিচার থেকে মৃত মানুষের পর্যন্ত রেহাই মিলছেনা। এতো করিৎকর্মা বিচারক, অথচ, যুগ পার হয়ে গেলেও সাগর-রুনি হত্যার বিচার নেই। ৮/৯ বছর পেরিয়ে গেলেও/ বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেন রিজার্ভ থেকে আটশো দশ কোটি টাকা লোপাটের তদন্ত নেই। আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে খুশি করতে দিনে-রাতে আদালত বসিয়ে যারা গণতন্ত্রকামী জনগণের বিরুদ্ধে আইনের নামে বেআইনী কর্মকান্ডে লিপ্ত তাদেরকেও একদিন অবশ্যই আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।
প্রিয় দেশবাসী
ফ্যাসিস্ট হাসিনা, তার পরিবারের সদস্য এবং আওয়ামী দুর্নীতিবাজদের কারণে দেশে এখন নীরব দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। চাল-ডাল-আলু-তেল-লবন-চিনি-পেঁয়াজ প্রতিটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম জনগণের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। দেশের প্রতিটি কৃষক শ্রমিক, দিনমজুর, স্বল্প আয়ের মানুষের দিনকাটছে অর্ধাহারে অনাহারে। এমনকি মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোও জীবন পরিচালনায় হিমশিম খাচ্ছে। অথচ আওয়ামী দুর্নীতিবাজদের উল্লাস নৃত্যের আড়ালে হারিয়ে যাচ্ছে অসহায় মানুষের আর্তনাদ।
প্রিয় দেশবাসী,

আপনারা সাম্প্রতিক সময়ে দেখেছেন,দুর্মূল্যের বাজারে পরিবার পরিজন নিয়ে একটু ভালোভাবে খেয়ে পরে বেঁচে থাকার আশায় গার্মেন্টস শ্রমিকরা রাজপথে নেমেছিল। অথচ মাফিয়া সরকারের সন্ত্রাসী বাহিনী কয়েকজন গার্মেন্টস শ্রমিককে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। শ্রমিকদের বিরুদ্ধে ৪৩ টি মামলা দিয়ে কমপক্ষে ২০ হাজার শ্রমিককে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় বিভিন্ন পর্যায়ের কমপক্ষে ১১৫ জন শ্রমিক নেতাকে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে।
প্রিয় দেশবাসী
৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের পরাজিত অপশক্তি মহাজোটের নামে একজোট হয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের পর ভোটের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের সকল পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে। জনম্যান্ডেট ছাড়াই ক্ষমতা দখল করে রাখতে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ২০১৪ সালে করেছিল ‘বিনাভোটের নির্বাচন’। ২০১৮ সালে ‘নিশিরাতের নির্বাচন’। আর এবার ২০২৪ সালে ‘ডামি নির্বাচন’ অনুষ্ঠানের ষড়যন্ত্র চলছে। কথিত এই ‘ডামি নির্বাচনের’ জন্য তৈরী করা হয়েছে ‘ডামি প্রার্থী’ ‘ডামি রাজনৈতিক দল’।
প্রিয় দেশবাসী
চিহ্নিত ভোট ডাকাত হাসিনার অবৈধ ক্ষমতার খায়েশ পূরণ করতে মেরুদন্ডহীন নির্বাচন কমিশন ‘ডামি ক্যান্ডিডেটদেরকে নিয়ে নানারকম তৎপরতা দেখালেও বাস্তবতা হচ্ছে ফ্যাসিবাদের বর্তমান আস্তানা গণভবনে বানরের পিঠা ভাগের মতো কথিত ‘ডামি নির্বাচনে’ ‘ডামি এমপি’ বানানোর জন্য আসন ভাগাভাগি চলছে। ফ্যাসিবাদের দোসর কতিপয় রাজনৈতিক দলের নেতারা নিজেদের আত্মসম্মান বিসর্জন দিয়ে ‘ডামি এমপি ‘হওয়ার লোভে নির্লজ্জভাবে ফ্যাসিস্ট হাসিনার কাছে নিজেদেরকে সমর্পন করেছে।
আপনারা সাম্প্রতিক সময়ে দেখেছেন,দুর্মূল্যের বাজারে পরিবার পরিজন নিয়ে একটু ভালোভাবে খেয়ে পরে বেঁচে থাকার আশায় গার্মেন্টস শ্রমিকরা রাজপথে নেমেছিল। অথচ মাফিয়া সরকারের সন্ত্রাসী বাহিনী কয়েকজন গার্মেন্টস শ্রমিককে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। শ্রমিকদের বিরুদ্ধে ৪৩ টি মামলা দিয়ে কমপক্ষে ২০ হাজার শ্রমিককে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় বিভিন্ন পর্যায়ের কমপক্ষে ১১৫ জন শ্রমিক নেতাকে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে।
প্রিয় দেশবাসী
৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের পরাজিত অপশক্তি মহাজোটের নামে একজোট হয়ে রাষ্ট্রক্ষমতা দখলের পর ভোটের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের সকল পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে। জনম্যান্ডেট ছাড়াই ক্ষমতা দখল করে রাখতে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ২০১৪ সালে করেছিল ‘বিনাভোটের নির্বাচন’। ২০১৮ সালে ‘নিশিরাতের নির্বাচন’। আর এবার ২০২৪ সালে ‘ডামি নির্বাচন’ অনুষ্ঠানের ষড়যন্ত্র চলছে। কথিত এই ‘ডামি নির্বাচনের’ জন্য তৈরী করা হয়েছে ‘ডামি প্রার্থী’ ‘ডামি রাজনৈতিক দল’।
প্রিয় দেশবাসী
চিহ্নিত ভোট ডাকাত হাসিনার অবৈধ ক্ষমতার খায়েশ পূরণ করতে মেরুদন্ডহীন নির্বাচন কমিশন ‘ডামি ক্যান্ডিডেটদেরকে নিয়ে নানারকম তৎপরতা দেখালেও বাস্তবতা হচ্ছে ফ্যাসিবাদের বর্তমান আস্তানা গণভবনে বানরের পিঠা ভাগের মতো কথিত ‘ডামি নির্বাচনে’ ‘ডামি এমপি’ বানানোর জন্য আসন ভাগাভাগি চলছে। ফ্যাসিবাদের দোসর কতিপয় রাজনৈতিক দলের নেতারা নিজেদের আত্মসম্মান বিসর্জন দিয়ে ‘ডামি এমপি ‘হওয়ার লোভে নির্লজ্জভাবে ফ্যাসিস্ট হাসিনার কাছে নিজেদেরকে সমর্পন করেছে।

প্রিয় দেশবাসী
এমপি হওয়ার জন্য যারা ফ্যাসিস্ট হাসিনার কাছে নির্লজ্জ আত্মসমপর্ণ করছেন এদের মধ্যে অভিজ্ঞ কিংবা পোড় খাওয়া এমন কিছু রাজনৈতিক নেতাও রয়েছেন যাদের রাজনৈতিক জীবনের বয়স বাংলাদেশের বয়সের চেয়েও বেশি। আমি বিএনপিসহ গণতন্ত্রের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে ফ্যাসিবাদের দোসর এইসব রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের প্রতি উদাত্ত আহবান জানিয়ে বলতে চাই, নিজেদের দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ারের প্রতি অমর্যাদা করবেন না। ফ্যাসিস্ট হাসিনার ‘ডামি এমপি’ লিস্টে নাম তুলতে নিজেদের বিবেক কিংবা আত্মমর্যাদা বিসর্জন দেয়ার মধ্যে প্রাপ্তি বা গৌরবের কিছু নেই। আপনাদের প্রতি আমার বিনীত আহবান, ফ্যাসিবাদের সঙ্গ ত্যাগ করে জনগণের পক্ষ নিন। এখনো সময় আছে, বারোকোটি ভোটারের ভোটের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নিজেদেরকে শামিল করুন। আমি বিশ্বাস করি, ‘ডামি নির্বাচনে’ ভাগবাটোয়ারার এমপি হওয়ার চেয়ে/ সবার অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচনে জনগণের ভোটে হেরে যাওয়াও অনেক বেশি সম্মানের।

প্রিয় দেশবাসী
নির্বাচনের নামে দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ এবং বিশ্বের গণতান্ত্রিক শক্তিকে ধোকা দিতে ফ্যাসিস্ট হাসিনা এখন নিজেই নিজের দলের একজন প্রার্থীর বিরুদ্ধে আরেকজনকে ‘ডামি ক্যান্ডিডেট’ হিসেবে দাঁড় করিয়ে নির্বাচনী আমেজ তৈরীর অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। তবে বিএনপিসহ গণতন্ত্রের পক্ষের আরো ৬২টি রাজনৈতিক দল চিহ্নিত ভোট ডাকাত হাসিনার ‘ডামি নির্বাচন’ বর্জন করেছে। এই নির্বাচন নিয়ে গণতন্ত্রকামী জনগণের কোনো আগ্রহ নেই। এই নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থকের মধ্যেও কোনো আগ্রহ থাকার কারণ নেই। এর কারণ, কোন দল থেকে কাকে এমপি বানানো হবে ফ্যাসিস্ট হাসিনা গণভবনে বসে নির্বাচনের আগেই সেই তালিকা চূড়ান্ত করছে। এখন ‘ডামি নির্বাচন কমিশনের’ প্রধান কাজ ফ্যাসিস্ট হাসিনার সরবরাহ করা এমপি তালিকা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে নাম ঘোষণা করা।

প্রিয় দেশবাসী
নির্বাচনের নামে ফ্যাসিস্ট হাসিনার প্রতারণার বিরুদ্ধে যাতে গণ প্রতিরোধ গড়ে উঠতে না পারে এ জন সারাদেশে চলছে গণ গ্রেফতার। গণতন্ত্রকামী জনগণের পেছনে/র্যাব পুলিশের একটি চক্রকে লেলিয়ে দেয়া হয়েছে। এ চক্রটি গুম খুন অপহরণ, হামলা মামলা নির্যাতন নিপীড়ন চালিয়ে সারাদেশে গণতন্ত্রকামী জনগণকে দমিয়ে রাখতে চাইছে। তবে মাফিয়া চক্রের রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করেই ফ্যাসিস্ট হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণ সারাদেশে হরতাল অবরোধসহ আন্দোলন সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছে। গণতন্ত্র-মানবাধিকার এবং ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার চলমান এই আন্দোলনে যারা হতাহত হয়েছেন, বাংলাদেশের মহান বিজয়ের এই দিনে আমি আল্লাহর দরবারে তাদের কল্যাণ কামনা করি। হতাহতদের শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আরেকটু কষ্ট-আরেকটু ত্যাগ শিকার করতে পারলে, এই বিজয়ের মাসেই হয়তঃ আরেকটি বিজয়ের পথ রচিত হবে ইনশাআল্লাহ।
গণতন্ত্রের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোর সর্বস্তরের নেতাকর্মীবৃন্দ, আমি জানি, গণতন্ত্রের পক্ষের প্রতিটি রাজনৈতিক দলের আলাদা রাজনৈতিক আদর্শ এবং কর্মসূচি রয়েছে। তবে দেশ এবং জনগণের অধিকার রক্ষায় এই মুহূর্তে আমাদের প্রত্যেকের দফা এক-দাবি এক ফ্যাসিস্ট হাসিনার পদত্যাগ। এই দাবি আদায়ে নিজেদের মধ্যে রাজপথের ঐক্য গড়ে তোলা জরুরী। এমন বাস্তবতায় দলমত ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে গণতন্ত্রকামী জনগণ বিশেষ করে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে বিএনপিসহ আন্দোলনকারী সকল রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী-সমর্থকদের প্রতি আমার আহবান গণতন্ত্র-মানবাধিকার-ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার চলমান আন্দোলনকে চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে সাধ্যমতো প্রতিটি বাড়ি কিংবা প্রতিটি পরিবার থেকে কমপক্ষে একজন সদস্য হলেও সর্বাত্মকভাবে সর্বদা প্রস্তুত থাকুন। একদফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে শহর-নগর-বন্দর-প্রতিটি গ্রাম-মহল্লা-জনপদ তথা যার যার সাংগঠনিক এলাকায় নিজ নিজ দলীয় দৃষ্টিভঙ্গির উর্ধে উঠে নিজেদের মধ্যে নেটওয়ার্ক গড়ে তুলুন। একের সঙ্গে অপরের নিবিড় যোগাযোগ বাড়িয়ে দিন। গণতন্ত্রের পক্ষের রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো একজন কর্মী-সমর্থক বিপদে পড়লে কিংবা রাজনৈতিক হয়রানির শিকার হলে যে দলেরই হোক দলীয় পরিচয়ের ঊর্ধ্বে উঠে তার সমর্থনে অন্যরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসুন। একসঙ্গে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। এভাবে, নিজ নিজ এলাকায় কিংবা মাঠে ময়দানে-রাজপথে সর্বদলীয় রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে উঠলে মাফিয়া চক্র অবশ্যই পিছু হটতে বাধ্য হবে।
প্রিয় দেশবাসী

১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও বিজয় অর্জনের সংগ্রামেও কিছু বেঈমান-বিশ্বাসঘাতক-কুচক্রী-সুবিধাবাদী ছিল। তবুও দেশপ্রেমিক মুক্তিযোদ্ধারা/সশস্ত্র শত্রুদের হটিয়ে বাংলাদেশের বিজয় ছিনিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছিলেন। আর এবার দেশ এবং জনগণের স্বাধীনতা রক্ষার আন্দোলনেও কিছু বেঈমান, বিশ্বাসঘাতক, কুচক্রী, সুবিধাবাদী, ফ্যাসিবাদের দোসর হয়ে ‘ডামি নির্বাচনে’র আড়ালে জনগণের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এদের চিহ্নিত করে রাখুন। এরা দেশের শত্রু গণতন্ত্রের শত্রু। হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই। বিশ্বাস রাখুন, ‘ডামি নির্বাচন’ নয় ভোট ডাকাতদের প্রতিহত করে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার বাইরে রেখেই নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে ইনশাআল্লাহ।

Sheikhsbay

Related Articles

Back to top button
Close
Close