নিউজ

রিয়া হায়দার খান নান্না’র দাফন সম্পন্ন

  • গাজীপুরে পিতার কবরের পাশে সমাহিত

লণ্ডন, ২৩ আগস্ট: গাজীপুরে বাবার কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন তরুণ উদ্যোক্তা, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব মোহাম্মদ রিয়া হায়দার খান নান্না। গত ২০ আগস্ট রবিবার লণ্ডন থেকে তার মরদেহ গাজীপুরে পৌছলে সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের সৃষ্টি হয়। গাজীপুরে দ্বিতীয় জানাজা শেষে তার মরদেহ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

এর আগে গত ১৮ আগস্ট, শুক্রবার ইস্ট লণ্ডন মসজিদে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর পারিবারিক ইচ্ছানুযায়ী তার মরদেহ বাংলাদেশ বিমানযোগে দেশে পাঠানো হয়।

 হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে গত ০৮  আগস্ট, মঙ্গলবার তিনি কিছুটা অসুস্থ বোধ করেন। ০৯ আগস্ট, বুধবার সন্ধ্যায় অকস্মাৎ মেসিভ হার্ট অ্যাটাক হলে চিকিৎসার জন্য তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে করে দ্রুত স্থানীয় নিউহাম জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানেই তিনি রাত আনুমানিক ১০টার দিকে ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

মোহাম্মদ রিয়া হায়দার খান নান্না’র অকাল মৃত্যুতে শোকাভিভূত সুরমা পরিবার গত ১১ আগস্ট শুক্রবার বিকাল ৫ টায় মরহুমের স্বরণে ও তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে সুরমা অফিসে তাৎক্ষণিকভাবে এক দোয়া মাহফিলের আয়োজন করেন। এতে মরহুমের বন্ধু-বান্ধব, সহকর্মী ও শুভাকাঙ্খীরাসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন। তাঁরা মরহুমের সাথে তাদের স্মৃতিচারণ করেন ও মরহুমের বিভিন্ন গুণাবলী তুলে ধরেন। সবশেষে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে সবাই দোয়া করেন। বিশিষ্ট কমিউনিটি ব্যক্তিত্ব ও আলেমে দ্বীন প্রফেসর আবদুল কাদির সালেহ মোনাজাত পরিচালনা করেন।

গাজীপুরের কৃতি সন্তান মোহাম্মদ রিয়া হায়দার খান নান্না খুবই সজ্জন, বন্ধুবৎসল ও পরোপকারী মানুষ হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অবিবাহিত ছিলেন। নয় ভাই-বোনের পরিবারের মধ্যে এক ভাই যুক্তরাস্ট্রে আর তিনি নিজে যুক্তরাজ্যে বসবাস করছিলেন। পাঁচ ভাইয়ের মধ্যে তিনি সবার ছোট ছিলেন। দীর্ঘদিন তিনি সিলেটে ছিলেন। সিলেটের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গণের সঙ্গে তিনি ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিলেন। বাংলাদেশের ক্রীড়া অঙ্গণের সঙ্গেও তিনি নিবিড়ভাবে জড়িত ছিলেন। রাজধানীর কলাবাগান ক্রীড়া চক্রের হয়ে তিনি ফার্স্ট ডিভিশন ক্রিকেট লীগে খেলেছেন।

পরবর্তীতে বিলেতে এসেও তিনি কমিউনিটির বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বিলেতের অন্যতম প্রধান সাপ্তাহিক ‘সুরমা’র সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন। দীর্ঘদিন তিনি ‘সুরমা‘র সাথে একনিষ্ঠভাবে জড়িত থেকে সাংবাদিক বন্ধুদের সার্বক্ষণিক সঙ্গ দিতেন ও ‘সুরমা‘কে সবরকমের সহযোগিতা করতেন।

শিল্প-সংস্কৃতি, ক্রীড়া ও মিডিয়া বিষয়ে নিবেদিতপ্রাণ মোহাম্মদ রিয়া হায়দার খান নান্না‘র সাথে বিলেতের সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও মিডিয়াঙ্গনের অনেকেরই বন্ধুত্ব ছিলো। তাঁর সাথে অনেকেরই অনেক আগে থেকেই পরিচয় ও সখ্যতা ছিলো। রিয়া হায়দার খান নান্নার এই অকাল মৃত্যর খবর শোনে তাঁরা শোকাভিভূত হয়ে পড়েছেন। ‘সুরমা পরিবারের ঘনিষ্ঠ প্রিয়জন ও সহযোগী ব্যক্তিত্ব রিয়া হায়দার খান নান্নার অকাল মৃত্যুতে সুরমা পরিবারের সদস্যরা গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এছাড়া তাঁর সহকর্মী, বন্ধু-বান্ধব ও শুভাকাঙ্খীরা সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের শোক প্রকাশ করেছেন।

উল্লেখ্য, সুরমা পরিবারসহ দোয়া মাহফিলে যারা শরীক হয়েছেন, জানাজায় যারা অংশ নিয়েছেন এবং যারা শোক প্রকাশ করেছেন মরহুমের পরিবার তাদের সকলের প্রতি দোয়া, ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। বিশেষ করে সুরমা পরিবারের পক্ষে সম্পাদক শামসুল আলম লিটন বুকে পেস মেকার ও পায়ে ইনজুরি নিয়েও যেভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন, হাসপাতাল থেকে মরহুমের মরদেহ গ্রহণ ও লণ্ডনে জানাজা শেষে দেশে বসবাসরত পরিবারের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছেন মরহুমের পরিবার তাঁর সুস্থতা কামনায় বিশেষ দোয়া এবং অশেষ কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

Sheikhsbay

Related Articles

Back to top button
Close
Close