নিউজ

প্রধান বিরোধী দলের নেতা ও স্ত্রীর কারাদণ্ড

আরেকটি ফরমায়েশি রায় — লণ্ডনে প্রতিবাদ সমাবেশ

।। ঢাকা অফিস ।।
জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানকে কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। নির্বাচনকে নিয়ে জাতীয় রাজনীতির চরম উত্তাপের মধ্যে এই কারাদণ্ড দেয়া হলো।এর আগে ২১ আগস্ট বোমা হামলা মামলায় তারেক রহমানকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেয়া হয়. এছাড়া অর্থ পাচারের আরেক মামলায় কারাদণ্ড দেয়া হয় ৭ বছর, যদিও ওই মামলায় বিচারিক আদালতে তারেক রহমানকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছিল। এদিকে এই রায় ঘোষণার প্রতিবাদে ঢাকায় বিএনপি তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল করে ও বৃহস্পতিবার ছাত্রদল-যুবদল-স্বেচ্ছাসেবক দলের উদ্যোগে দেশব্যাপী ও শুক্রবার ঢাকায় নয়াপল্টনে সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

জানা গেছে, ১/১১ সরকারের দায়ের করা মামলায় বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানকে নিন্ম আদালত যথাক্রমে ৯ বছর ও ৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় বুধবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান এ রায় ঘোষণা করেন। তবে তাঁদের আইনজীবীদের দাবি, বাংলাদেশের এইমুহুর্তে অন্যতম প্রধান জনপ্রিয় রাজনীতিক তারেক রহমানের বিরুদ্ধে এটি আরেকটি ফরমায়েশি রায়। এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে নজিরবিহীন দ্রুততম সময়ে। রাতের অন্ধকারে সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে। এমনকি এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন তাদের আইনজীবীরা যাতে এজলাসে থাকতে না পারে পিপি’র নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীরা মারধর করে বের করে দিয়েছে। সুতরাং এটা একটা ফরমায়েশি রায় ছাড়া আর কিছু নয়। 

তবে বিএনপি সমর্থক আইনজীবীদের অভিযোগ অসত্য বলে মন্তব্য করেছেন মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর এডভোকেট আব্দুল্লাহ আবু। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, এ মামলায় সাজা হওয়ার জন্য যথেষ্ট তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে দুদক। যে কারণে তাদেরকে আদালত শাস্তি দিয়েছেন। যথাযথ বিধিবিধান অনুসরণ করেই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে এ রায় দিয়েছে আদালত। রায়ে কারাদণ্ড ছাড়াও তারেক রহমানের তিন কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের ঢাকা ইউনিটের সভাপতি ও তারেক-জুবাইদার পক্ষে আইনি লড়াই করতে আবেদন জমা দেয়া আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, এ মামলায় মোট ৫৭ জন সাক্ষী ছিল। মাত্র ১৬ কার্য দিবসে ৪২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন আদালত। যা আদালত অঙ্গনে নজিরবিহীন।

দ্রুত এই মামলা শেষ করতে সরকারের হস্তক্ষেপ ছিল। দুইদিন সাক্ষ্যগ্রহণ করেছে রাত ৭টা পর্যন্ত। কোর্ট অফিসার হিসেবে মামলার শুনানিতে আইনজীবীদের থাকার আইনগত অধিকার রয়েছে। কিন্তু এই মামলায় আমাদের আইনজীবীদের পিপি’র নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীরা মারধর করে বের করে দিয়েছে। শেষ পর্যন্ত আদালত ফরমায়েশি রায় দিলেন।

দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন অত্যন্ত নিরপেক্ষভাবে মামলাটি তদন্ত করেছে।  সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে ১৮টা এক্সিবিটের মাধ্যমে আমরা প্রমাণ করতে পেরেছি ২ কোটি ২৩ লাখ টাকা তার অবৈধ উপার্জন এবং ৫৮ লাখ টাকার তথ্য গোপন করেছেন।  এ পাবলিক প্রসিকিউটর বলেন, আমরা ৪২ জন সাক্ষী দিয়েছি। সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে আমরা এই অপরাধটা প্রমাণ করতে পেরেছি। 

২০০৭ সালের ২৬শে সেপ্টেম্বর সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে তারেক রহমান, জুবাইদা রহমানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। পরের বছর তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়া হয়। চলতি বছরের গত ১৩ই এপ্রিল তারেক রহমান ও জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।

জিয়া পরিবারের প্রতি সরকারের প্রতিহিংসা : কর্নেল (অব.) অলি

লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ (বীর বিক্রম) এক বিবৃতিতে বলেছেন, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তাঁর সহধর্মিনী ডাঃ জুবাইদা রহমানকে সাজা দেয়াটা দেশে বিরোধীদল শূন্য করার অপপ্রয়াস। এই রায়ের ফলে বিচার বিভাগ প্রমাণ করেছে তারা স্বাধীন না। বর্তমান সরকার আদালতকে তার কাজ সঠিকভাবে করতে দিচ্ছে না। তাদের প্রভাবিত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, এই ফরমায়েশী রায় জিয়া পরিবারের প্রতি সরকারের হিংসা ও আক্রোশের বহিঃপ্রকাশ। জিয়া পরিবারকে বিনাশ এবং তারেক রহমানের জনপ্রিয়তা ও উজ্জ্বল ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করার জন্য তাদের সাজা দেয়া হয়েছে। কর্নেল অলি তারেক রহমান ও ডাঃ জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও সাজা প্রত্যাহারের আহবান জানান।

লণ্ডনে প্রতিবাদ:

যুক্তরাজ্য বিএনপি বুধবার সন্ধ্যায় এক তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে।

মাহবুব আলী খান স্মৃতি পরিষদ পৃথক এক বিবৃতিতে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক নিপীড়নমূলক রায়ের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।

Sheikhsbay

Related Articles

Back to top button
Close
Close