নিউজ

৭ ব্যবসায়ীকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে ইউকেবিসিসিআই ও বিসিএ’র সংবাদ সম্মেলন

বাংলাদেশে ব্যবসার পরিবেশ আছে বলে যে সুনাম ছিলো, তা নষ্ট হতে চলেছে 

॥ সুরমা প্রতিবেদন ॥

লণ্ডন, ২৯ সেপ্টেম্বর : সম্প্রতি বাংলাদেশে ৭ ব্রিটিশ-বাংলাদেশী ব্যবসায়ীর ষড়যন্ত্রমূলক গ্রফতার ও হাজতবাসের নিন্দা ওপ্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে বৃটেনে বাংলাদেশী কমিউনিটির শীর্ষ দুই ব্যবসায়ী সংগঠন। ইউকে বাংলাদেশীক্যাটালিষ্ট ইণ্ডাষ্ট্রি (ইউকেবিসিসিআউ ও বাংলাদেশ ক্যাটারার্স এসোসিয়েশনের (বিসিএ) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদসম্মেলনে শীর্ষ ও সনামধন্য এই ৭ ব্যবসায়ীকে ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় ফাঁসিয়ে হয়রানীর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলা হয়, ঘটনার ধরন দেখে স্পষ্টত বোঝা যাচ্ছে যে একটি দুষ্কৃতিকারী চক্র এই প্রবাসী ব্যবসায়ীদের বিনিময়োগকৃত পুঁজি হাতিয়ে নেবার উদ্দেশ্যেইএভাবে সাজানো মামলায় তাদের ফাঁসিয়েছে। 

বাংলাদেশে ব্যবসার পরিবেশ আছে বলে যে সুনাম ছিলো, তা নষ্ট হতে চলেছে মন্তব্য করে সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা আরো বলেন, এভাবে প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের সাথে প্রতারণা ও ষড়যন্ত্র চলতে থাকলে বাংলাদেশে আর কেউই বিনিয়োগে উৎসাহিত হবেনা। 

সংবাদ সম্মেলনে ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত এবং এর সাথে জড়িতদের খুঁজে বের করে বিচারের আওতায় নিয়ে আসার পাশাপাশিপ্রবাসী বিনিয়োগকারীদের সার্বিক নিরাপত্তা এবং আর যাতে কেউ হয়রানীর শিকার না হয় সেজন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিতেবাংলাদেশ সরকারের কাছে জোর দাবী জানানো হয়। 

গ্রেপ্তারকৃত সাত ব্যবসায়ীর পরিচয় এবং কমিউনিটিতে তাদের অবদান ও সম্পৃক্ততা তুলে ধরে বলা হয়, আমরা হলফ করেবলছি যে,  যুক্তরাজ্য প্রবাসী এই ৭ ব্যবসায়ী দেশে ফেরায় ক্ষুব্ধ হয়ে গোপনে পুলিশকে খবর দিয়ে তাদের ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে।গ্রেপ্তারকৃতরা সবাই যুক্তরাজ্যের নাগরিক ও প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার বাসিন্দা জামাল মিয়া ওতার ভাই কামাল মিয়া, বিশ্বনাথের আবদুল আহাদ ও তার ভাই আবদুল হাই, ছাতকের জামাল উদ্দিন ও শাহজালালউপশহরের আবদুর রাজ্জাক। তাদের মধ্যে জামাল মিয়া কোম্পানির ভাইস চেয়ারম্যান ও বাকি সবাই পরিচালক। তম্মধ্যেগ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে জনাব জামাল উদ্দিন মকদ্দুস সাহেব আমাদের সংগঠনের সম্মানিত সিনিয়র সহ-সভাপতি। ভদ্র, অমায়িকএবং দেশপ্রেমি সমাজকর্মী জনাব জামাল উদ্দিন মকদ্দুস নিজ এলাকা ছাতক থানায় নিজ গ্রামে জামাল উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়প্রতিষ্ঠা করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরো বলা হয়, আমরা আমাদের সংগঠন থেকে ইতোমধ্যে লণ্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন এবং বাংলাদেশস্থব্রিটিশ হাইকমিশনকে  আমাদের প্রবাসী ৭ ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তারের ব্যাপারে আমাদের উদ্বিগ্নের কথা জানিয়েছি। 

প্রবাসী ৭ ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তারের ফলে বাংলাদেশে ব্যবসার পরিবেশ আছে বলে যে সুনাম ছিলো, তা আজ অতিপয় দুষ্ট মানুষ এরজন্য নষ্ট হতে চলেছে। আমরা আশা করি উক্ত ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হবে এবং আমরা প্রবাসী ব্যবসায়ীরা দেশের অর্থনীতিতেঅবদান রাখতে পারবো। 

 সংবাদ সম্মেলনে নিম্নোক্ত দাবীদাওয়া তুলে ধরা হয়—

১) প্রবাসী ৭ ব্যবসায়ীর নি:শর্ত মুক্তি চাই, দিতে হবে।

২) রহস্যজনক এই গ্রেফতারের সুষ্ঠু তদন্ত চাই।

৩) আমরা প্রবাসী ব্যবসায়ী যারা বাংলাদেশে ইনভেস্টমেন্ট করাকে প্রমোট করে থাকি, তাদের নিরাপত্তা ও সামাজিক মর্যাদা দিতেহবে। 

৪) অযথা মামলা ও হয়রানী করা থেকে বিরত থাকতে হবে।

৫) বাংলাদেশে আলাদা ভাবে প্রবাসীদের মামলাগুলো  ত্বরিত বিচারের জন্য দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল স্থাপন করতে হবে। 

২৯ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার লণ্ডন বাংলা প্রেক্লাবে বিসিএ ও ইউকেবিসিসিআই’র যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনেবক্তব্য রাখেন ও বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন ইউকে-বিসিসিআই’র চেয়ারম্যান ইকবাল আহমদ ওবিই, প্রেসিডেন্ট এমজি মৌলামিয়া, ফাউন্ডার প্রেসিডেন্ট বজলুর রশীদ এমবিই, বিসিএ প্রেসিডেন্ট এম এ মুনিম ওবিই। লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিসিএ’রপ্রেস এন্ড পাবলিকেশন্স সেক্রেটারি ফরহাদ হোসেন টিপু।

উল্লেখ্য, গত সেপ্টেম্বর ‘হোমল্যান্ড লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড’র বার্ষিক সাধারণ সভায় অংশ নিতে লন্ডন থেকেঢাকায় গিয়েছিলেন কোম্পানিটির এই ৭ পরিচালক। কিন্তু  কোম্পানিটির মতিঝিলের প্রধান কার্যালয় থেকে তাদের গ্রেপ্তার করেকারাগারে পাঠানো হয়। কিন্তু রহস্যজনক কারণে একই মামলার আসামি হলেও গ্রেপ্তার করা হয়নি কোম্পানিটির চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও মহাব্যবস্থাপকসহ অন্য কোনো পদস্থ কর্মকর্তাকে। 

Sheikhsbay

Related Articles

Back to top button
Close
Close