নিউজ

পারমাণবিক তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের শঙ্কা

রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসন

পারমাণবিক যুদ্ধের হুমকিতে বিশ্ব
বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে রাশিয়া
যুদ্ধে লড়তে দেশে ফিরেছেন ৮০ হাজার ইউক্রেনিয়ান
জাতিসংঘে ইউক্রেন প্রশ্নে নিরপেক্ষ অবস্থানে বাংলাদেশ

।। সুরমা ডেস্ক ।।
লণ্ডন, ৪ মার্চ : রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের সপ্তাহ হতে চলেছে। এরইমধ্যে ইউক্রেনের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শহর দখলে নিতে সক্ষম হয়েছে রাশিয়া। ইতোমধ্যে মারা গেছেন নারী-শিশুসহ সামরিক ও বেসামরিক অনেক লোক। ধ্বংস হয়েছে অনেকে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও আবাসিক ভবন। ইউক্রেন ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নসহ বিশ্বের অনেক দেশ রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসনের নিন্দার পাশাপাশি যুদ্ধ বন্ধে বিভিন্নভাবে আহবান জানিয়ে আসছে। এতদ্বসত্ত্বেও কিছুতেই থামতে নারাজ “নব্য হিটলার” খ্যাত রুশ প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিন। যুদ্ধ বন্ধে বেলারুশ বর্ডারে দুই দেশের মধ্যকার প্রথম শান্তি আলোচনাটিও ভেস্তে গেছে। যু্দ্ধ শুরু হওয়ার ৬ষ্ট দিনে রাশিয়ার দীর্ঘ যুদ্ধবহর ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের খুবই কাছাকাছি চলে আসার সংবাদ বিভিন্ন বিশ্ব গণমাধ্যমসমূহে প্রচার হতে দেখা গেছে।

রাশিয়ার ইউক্রেন আগ্রাসন কেন্দ্র করে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা তৈরী হয়েছে। শেষ পর্যন্ত কোনেভাবেই এই যুদ্ধ থামানো না গেলে তা যে ভয়াবহ পারমাণবিক তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে রূপ নেবে, সেটির ইঙ্গিতও ইতোমধ্যে পাওয়া গেছে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিন কতৃর্ক দেশটির পারমাণবিক বাহিনীকে প্রস্তুত রাখার নির্দেশের পর বিষয়টি আরো বেশী ভাবিত করছে যুদ্ধ বিশ্লেষকদের। রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের পর দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ বলেছেন, যদি একটি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয় তাহলে এতে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহৃত হবে। এটি হয়ে ওঠবে ধ্বংসাত্মক। ২ মার্চ, বুধবার তিনি এই মন্তব্য করেন। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আরআইএ এখবর জানিয়েছে।

ল্যাভরভ বলেছেন, ইউক্রেন যদি পারমাণবিক অস্ত্র সংগ্রহ করে ফেলে সেটি হবে রাশিয়ার জন্য সত্যিকার বিপদ। এর আগে মঙ্গলবারও রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছিলেন, ইউক্রেন পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের চেষ্টা করছে। এটি একটি ‘সত্যিকারের বিপদ’, যার জন্য রাশিয়ার প্রতিক্রিয়া দেখানোর প্রয়োজন রয়েছে। তবে বিশ্লেষকরা ইঙ্গিত দিচ্ছেন, পুতিনের এই পদক্ষেপকে ইউক্রেনে অন্য দেশগুলোকে না জড়ানোর সতর্ক বার্তা হিসেবে দেখা যেতে পারে। এটি হয়তো পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করার ইচ্ছার ইঙ্গিত নয়।

এদিকে, ইউক্রেনে আক্রাসন চালিয়ে বিশ্ব থেকে ক্রমশ বিচ্ছিন্ন পড়ছে রাশিয়া। অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক বিভিন্ন খাত থেকে প্রায় ছিটকে পড়েছে দেশটি। দেশটির বৈশ্বিক ব্যাংকিং কর্মকাণ্ড চালানোর সক্ষমতা মারাত্মকভাবে খর্ব হয়েছে। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক ব্যাংকিং লেনদেন সংস্থা সুইফট থেকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাংকগুলো বিচ্ছিন্ন হওয়া রাশিয়ার জন্য মারাত্মক বিপর্যয়। ইউরোপীয় দেশগুলো এই ইস্যুতে একাট্টা হয়ে তাদের আকাশসীমায় রুশ বিমান নিষিদ্ধ করেছে। এছাড়া ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে রাশিয়াকে নিষিদ্ধ করেছে ফিফা ও ইউরোপীয় ফুটবল সংস্থা।

অপরদিকে, ইউক্রেন ইস্যুকে কেন্দ্র বিশ্ব অনেকটা দু‘ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। ইউক্রেনের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব প্রশ্নে একদিকে একাট্টা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপী ইউনিয়নসহ সমমনা দেশগুলোর বৃহৎ জোট। অন্যদিকে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্বের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হলেও আগ্রাসনের জন্য রাশিয়ার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোনও পদক্ষেপ নিতে রাজি নয় চীন। এছাড়া অপর বৃহৎ দেশ ভারতও রাশিয়ার আগ্রাসন প্রশ্নে নিরবতা পালন করছে। আর ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক হামলার প্রতিবাদে ও নিন্দায় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ডাকা জরুরী বৈঠকে নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে বাংলাদেশ।

বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে রাশিয়া:
ইউক্রেনে হামলা চালিয়ে বিশ্বায়নের এই পৃথিবীতে ক্রমশ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে রাশিয়া। এই সপ্তাহে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন খাত থেকে ছিটকে পড়েছে দেশটি। খর্ব হয়েছে বৈশ্বিক ব্যাংকিং কর্মকাণ্ড চালানোর সক্ষমতা। বড় আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় দেশটির অংশগ্রহণ বাতিল করা হয়েছে। ইউরোপের আকাশে নিষিদ্ধ দেশটির ফ্লাইট ও উড়োজাহাজ। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অঙ্গরাজ্যে ভদকা আর পছন্দের তালিকায় নেই। এছাড়া নিরপেক্ষতার জন্য দীর্ঘদিনের খ্যাতি অর্জন করা সুইজারল্যাণ্ডও সতর্কভাবে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।

মাত্র তিন দিনের মাথায় রাশিয়া আন্তর্জাতিকভাবে অচ্ছুৎ রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। এর মূল কারণ ইউক্রেনে দেশটির আক্রমণ এবং রুশ নেতা ভ্লাদিমির পুতিনের বন্ধুর সংখ্যা কমছে তো কমছেই। বড় বিষয় হলো, মস্কোর বিরুদ্ধে এতদিক থেকে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে যে এটিকে শুধু তাৎপর্যপূর্ণ বলাই যথেষ্ট নয়। জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের সময় ওয়াকআউট করেন ৪০ দেশের প্রতিনিধিজাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের সময় ওয়াকআউট করেন ৪০ দেশের প্রতিনিধি মাসকালেস্টার কলেজের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ও ভূ-রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ অ্যাণ্ড্রিউ লাথাম। তিনি বলেন, খুব বড় কিছু ঘটেছে। তা না হলে তিন বা চার দিন আগেও যা কেউ কল্পনা করতে পারেনি, সেটাই ঘটছে। এটি পর্যবেক্ষণ সত্যিই অবাক করার মতো।

মাত্র তিন দিনে বজ্রগতির মতো একের পর এক বড় বড় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন দেশের সরকারের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা, জোটের পদক্ষেপ এবং তাদের ঘিরে থাকা সংস্থা ও ব্যক্তিরা নড়েচড়ে বসেছে। সব মিলিয়ে বিভিন্নভাবে তারা বিশ্বের অন্যতম বড় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। যা পেছনে ফেলেছে ইরান ও উত্তর কোরিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাকে।
ইউরোপীয় দেশগুলো এই ইস্যুতে একাট্টা হয়ে তাদের আকাশসীমায় রুশ বিমান নিষিদ্ধ করেছ।আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থা সুইফট রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ ব্যাংকগুলোকে তাদের নেটওয়ার্ক থেকে বাদ দিয়েছে। সুইফটের মাধ্যমে বিশ্বের ১১ হাজারের বেশি ব্যাংক ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান বিলিয়ন ডলার লেনদেন করে। এটি রাশিয়ার অর্থনীতির জন্য বড় বিপর্যয়।

গত ২৮ ফেব্রুয়ারী, সোমবার আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে রাশিয়াকে নিষিদ্ধ করেছে ফিফা ও ইউরোপীয় ফুটবল সংস্থা। এরমধ্যে ২০২২ সালের বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের ম্যাচও রয়েছে। এর আগে আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি ক্রীড়া সংস্থাগুলোকে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা থেকে রুশ অ্যাথলেটদের বাদ দেওয়ার আহ্বান জানায়। এরপর যখন আন্তর্জাতিক আইস হকি ফেডারেশন ও ন্যাশনাল হকি লিগ রাশিয়ার বিরুদ্ধে তাদের পদক্ষেপ ঘোষণা করে, তখন স্পষ্ট হয় যে এমন কিছু চলছে যা ক্রীড়া ক্ষেত্রে গত কয়েক দশকে দেখা যায়নি।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়কালের পররাষ্ট্র নীতির পরিবর্তন ঘটিয়ে জার্মানি বিস্ময়কর পদক্ষেপ নিয়েছে। দেশটি ঘোষণা দিয়েছে, ইউক্রেনকে অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করবে। এই সিদ্ধান্তকে ‘নতুন বাস্তবতা’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস। সচরাচর বিরোধ এড়িয়ে চলা ফিনল্যাণ্ড ও সুইডেন রাশিয়াবিরোধী সম্ভাব্য অবস্থান নিচ্ছে। সুইজারল্যাণ্ডের অর্থনীতি বিষয়ক দফতরের প্রধান গাই পারমেলিন জানান, তারা রাশিয়া ইস্যুতে কঠোর অবস্থান নিচ্ছেন।

ভূমধ্যসাগরের সঙ্গে কৃষ্ণ সাগরের সংযোগ স্থাপনকারী তুরস্কের দুই প্রণালীতে যুদ্ধজাহাজ চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যকার যুদ্ধের উত্তেজনা কমাতে এই উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়েছেন তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান। অথচ তুরস্কের সঙ্গে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। এছাড়া জাপান, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ কোরিয়াসহ অনেক দেশই রাশিয়ার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

সরাসরি প্রভাব না ফেললেও যুক্তরাষ্ট্রের কিছু অঙ্গরাজ্যের উদ্যোগও গুরুত্বপূর্ণ। পেনসিলভানিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা, ভারমন্ট, ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া ও মাইন তাদের বারগুলোতে ভদকাসহ রুশ পণ্য নিষিদ্ধ করেছে। এই তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে।
মঙ্গলবার বহুজাতিক কয়েকটি কোম্পানি রাশিয়া থেকে বিনিয়োগ প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে। আর শেল, বিপি ও নরওয়ের ইকুইনর জানিয়েছে, তারাও মস্কো ছাড়বে।
ইলিনয়েসভিত্তিক নর্থ সেন্ট্রাল কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ উইলিয়াম মাক বলেন, শুরুতে এগুলো ছিল প্রতীকী। কিন্তু এরপর একে একে নিষেধাজ্ঞা ও পদক্ষেপ আসতেই থাকে। আলাদা করে এগুলোকে তুচ্ছ মনে হতো। পারে কিন্তু একসঙ্গে বিচার করে দেখলে মনে হবে পুরো ব্যবস্থা নড়েচড়ে বসেছে।
রাশিয়ার বিরুদ্ধে ত্বরিত গতির এসব পদক্ষেপ সোমবার হোয়াইট হাউজের প্রশংসা কুড়িয়েছে। প্রেস সচিব জেন সাকি বলেছেন, আধুনিক ইতিহাসে ন্যাটোকে ঐক্যবদ্ধ করতে বড় ভূমিকা রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের। ফলে আমার মনে হয় এজন্য পুতিনকে আমরা ধন্যবাদ জানাতে পারি।
ভূ-রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ অ্যাণ্ড্রিউ লাথাম বলেন, এক প্রজন্ম আগে এমন কিছু ঘটলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সন্ধ্যার খবরে জানা যেতো। কিন্তু এখনকার মতো দ্রুত আন্তসংযোগ থাকতো না। আমার মনে হয় এটি প্রভাব বাড়িয়ে দিচ্ছে। তবে একেবারে বিশ্বের সবাই রাশিয়াকে বিচ্ছিন্ন করার দিকে ছুটছে না। ইউক্রেন ইস্যুতে পুরো দুনিয়ার স্রোতের বিপরীতে চীন। এতে অবশ্য খুব বেশি অবাক হওয়ার মতো কিছু নেই। তবে দেশটি বলে আসছে যেকোনও দেশের সার্বভৌমত্বকে অন্য দেশের শ্রদ্ধার জানাতে হবে। অবশ্য রাশিয়ার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক কোনও পদক্ষেপ নিতে রাজি নয় বেইজিং। তবে নীরবে চীনের রাষ্ট্রীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো রুশ অর্থনীতি থেকে নিজেদের দূরে রাখছে।

রাশিয়ার বিরুদ্ধে লড়তে দেশে ফিরেছেন ৮০ হাজার ইউক্রেনিয়ান:
রাশিয়ার সেনাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অংশ নিতে এখন পর্যন্ত বিদেশ থেকে ৮০ হাজার ইউক্রেনীয় নাগরিক দেশে ফিরেছেন। ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাতে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এ তথ্য জানিয়েছে।
ইউক্রেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক টেলিগ্রাম পোস্টে বলা হয়েছে, বিদেশফেরত ইউক্রেনীয়দের একটি বড় অংশ পুরুষ। তাঁরা সেনাবাহিনী ও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী প্রতিরক্ষা দলের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন।

এদিকে, ইউক্রেনের উপপ্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রনীতি-বিষয়ক উপদেষ্টা সোভেতলানা জালিচাক আল-জাজিরাকে বলেন, দেশজুড়ে লড়াইয়ের তীব্রতা বাড়ছে। ইউক্রেনের সাধারণ নাগরিকেরা রুশ প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিনকে নিয়ে সন্দিহান। ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর বেরেগোভোয় অবস্থান করছেন জালিচাক। সেখান থেকে আল-জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের আশঙ্কা, পুতিন থামবেন না।’
এমন অবস্থায় সাধারণ নাগরিকেরাও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে যুদ্ধে যোগ দিচ্ছেন। সোভেতলানা জালিচাক বলেন, গত কয়েক দিনে ইউক্রেনের প্রায় এক লাখ সাধারণ নাগরিক দেশটির স্বেচ্ছাসেবী প্রতিরক্ষা দলে যোগ দিয়েছেন। এর মধ্যে তাঁর ভাইও রয়েছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘ও (জালিচাকের ভাই) সেনাবাহিনীর কেউ নয়, কিন্তু ও বন্দুক হাতে তুলে নিয়েছে এবং কিয়েভের প্রবেশমুখে একটি শহরের সুরক্ষায় নিয়োজিত আছে।’

জাতিসংঘে ইউক্রেন প্রশ্নে নিরপেক্ষ অবস্থানে বাংলাদেশ:
ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক হামলার প্রতিবাদে ও নিন্দায় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ডাকা জরুরি বৈঠকে বাংলাদেশ নিরপেক্ষ অবস্থান নিয়েছে। ১ মার্চ, মঙ্গলবার পরিষদের বিতর্কে অংশগ্রহণ করে বাংলাদেশ জাতিসংঘ মহাসচিবের নেতৃত্বে সংলাপের মাধ্যমে সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের ওপর জোর দেয়। পাশাপাশি জাতিসংঘ সনদে বর্ণিত সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় অখণ্ডতার নীতির প্রতিও সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ। এর আগে ইউক্রেন প্রশ্নে নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকে নিন্দাসূচক প্রস্তাবে রাশিয়ার ভেটোর কারণে তা বাতিল হলে বিষয়টি আলোচনার জন্য সাধারণ পরিষদে স্থানান্তরিত হয়। গত সোমবার বিতর্কের সূত্রপাত করে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজ বলেন, যথেষ্ট হয়েছে, ইউক্রেনে হামলা এখনই বন্ধ করতে হবে। বেসামরিক এলাকায় রুশ বিমান হামলা ও গোলাবর্ষণের নিন্দা করে তিনি ইউক্রেনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সীমানার ওপর তার সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক সংহতি রক্ষার ওপর জোর দেন।

সোম ও মঙ্গলবার এই বিতর্কে যেসব দেশ অংশগ্রহণ করে, তাদের অনেকেই ইউক্রেনে হামলার জন্য রাশিয়ার সমালোচনা করে। শুধু পশ্চিমা দেশগুলোই নয়, তৃতীয় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এই হামলাকে আন্তর্জাতিক আইনভিত্তিক বিশ্বব্যবস্থার ওপর সরাসরি আঘাত হিসেবে বর্ণনা করে।

Sheikhsbay

Related Articles

Back to top button
Close
Close