বাংলাদেশে এখন নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে -রিজভী আহমেদ
ঢাকা অফিস।।১৩মার্চ।। তেল,গ্যাস,বিদ্যুৎ, পানি সহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিবাদ মিছিল ও সমাবেশে প্রধান অতিথি বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী (রিজভী আহমেদ) বলেছেন, দেশ এক ভয়ঙ্কর দুঃস্বপ্নের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির চড়া দামের কারণে মানুষ খেয়ে না খেয়ে জীবনযাপন করছে। টিসিবির লম্বা লাইনে মধ্যবিত্ত শ্রেণি ও স্বল্প আয়ের মানুষ লাইন ধরে দাঁড়িয়ে আছে। তিনি বলেন, চাল-ডাল-আটা-গুঁড়ো মসলা ও শাক-সবজি আজ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে। বেগুন-আলু ও সবজির গায়ে হাত দিলে বৈদ্যুতিক শক খেতে হয়। মানুষ একবেলা ও আধপেটা খেয়ে বেঁচে আছে।
রবিবার ১৩ মার্চ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে রাজধানীর শান্তিনগর বাজার এলাকায় জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের পক্ষ থেকে লিফলেট বিতরণ শেষে সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী আহমেদ বলেন, চৈত্রের খরতাপের মধ্যে নিম্নআয়ের মানুষ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনতে টিসিবির লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু টিসিবি সারাদেশে মাত্র ১ থেকে ২ শতাংশ পণ্য দিতে পারে। সারাদেশের মানুষ আজ চড়া দামে জিনিসপত্র কিনছে, অন্যদিকে উন্নয়নের গল্প শোনাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। কী একটা ভয়ঙ্কর দুঃস্বপ্নের মধ্যে জীবনযাপন করছি। আজ আবারও সেই ’৭২ থেকে ’৭৪ কথা আমরা শুনছি, যখন কি না বাসন্তী-দুর্গতিরা শাড়ি না পেয়ে মাছ ধরার জাল দিয়ে লজ্জা নিবারণ করেছে। যারা ভাত-রুটি না পেয়ে আম গাছের পাতা কাঁঠাল গাছের পাতা চিবিয়ে খেয়েছে। এরই পুনরাবৃত্তি হচ্ছে আজ বাংলার প্রান্তরে প্রান্তরে। দুর্ভিক্ষের ছায়া বিস্তার করেছে চতুর্দিকে।
বিএনপির এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলেই দুর্ভিক্ষ, জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি, দেশের মানুষ আধপেটা খেয়ে থাকে আর উন্নয়নের নামে লক্ষ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়। রিজভী বলেন, বাংলাদেশে এখন বিক্ষুব্ধ পরিস্থিতির মধ্যে দিন যাচ্ছে, রাষ্ট্রক্ষমতায় যারা বসে আছেন তাদের কোনো জবাবদিহিতা নেই, এ কারণেই আকাশ ছোঁয়া নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম। আওয়ামী লীগের আমলে গত ১০ বছরে বিদ্যুতের দাম ৯০ শতাংশ, গ্যাসের দাম ১৪৪ শতাংশ, ডিজেলের দাম ৮২ শতাংশ এবং পানির দাম ২৬৪ শতাংশ বাড়িয়েছে। যা পৃথিবীর কোনো গণতান্ত্রিক ও জনপ্রতিনিধিত্বমূলক দেশে হয় না।
নতুন নির্বাচন কমিশন প্রসঙ্গে রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, এ নির্বাচন কমিশনকে আমরা প্রত্যাখ্যান করেছি। আমরা মনে করি অবৈধ সরকার অবৈধ আইনের মাধ্যমে এ কমিশন গঠন করেছে। সুতরাং পরবর্তী পর্যায়ে কী হবে সেটা আমাদের দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সিদ্ধান্ত হলে জানতে পারবেন। তিনি বলেন, আইনমন্ত্রী দুদিন আগে বলেছেন- তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর বিএনপির অন্যায়-অবিচার একই বিষয়। আমি আইনমন্ত্রীকে বলছি, আপনি আপনার প্রধানমন্ত্রীকে বলুন- তত্ত্বাবধায়ক সরকার কী এবং কত প্রকার? এ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আন্দোলন করতে গিয়ে মানুষ পুড়িয়েছেন, ঘরবাড়ি ধ্বংস করেছেন। প্রধানমন্ত্রীকে জিজ্ঞাসা করুন, এ তত্ত্বাবধায়কের জন্য তিনি কী পরিস্থিতি তৈরি করেছিলেন।
এ সময় জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, সহ-সভাপতি গোলাম সারোয়ার, আনু মোহাম্মাদ শামীম,এস,এম,জিলানী,পারভেজ আহমেদ,ওয়াহিদুদজামান চয়ন,শ্বত,শাহাবুদ্দিন মুন্না,যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, সাদরেজ জামান, ডি,জেড,এম হাসান বিন শফিক,দপ্তর সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিক,সহ দপ্তর সম্পাদক নাজমুল হাসান,সহ সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন,এ্যাড লোবান,সারোয়ার ভুইয়া রুবেল,সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ হাসিবুর রহমান খান মুন্না, জসিম উদ্দিন,প্রচার সম্পাদক আনিসুর রহমান সুজন,সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক হুমায়ুন,স্বাস্থ্য সম্পাদক ডাক্তার জাহিদুর রহমান সহ দপ্তর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন সহ স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় ও ঢাকা মহা নগর উত্তর, দক্ষিণের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।