মহামারীর বাজেট
সুরমা এ সপ্তাহের সম্পাদকীয় ।। ইসু্য ২১৯২
মহামারীর কারণে চরম অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কাকে সামনে রেখে ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য নতুন বাজেট ঘোষণা করেছেন চ্যাঞ্চেলর ঋষি শুনাক। দীর্ঘ এক বছরের থমকে দাঁড়ানো জীবনযাত্রা আর বন্ধ থাকা উৎপাদনের ঘাটতি মোকাবেলার লক্ষ্যকে সামনে রেখে এই বাজেট। এই বাজেট নতুন প্রাণের সঞ্চার করতে কতটুকু ভূমিকা রাখবে তা নিয়ে সংশয় আছে, কারণ মহামারী অচিরেই শেষ হবে আর জনজীবনে আসবে স্বাভাবিক গতি, এমন সম্ভাবনা সামনে রেখেই প্রণীত এই নতুন বাজেট। কিন্তু জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ আর বিজ্ঞানীরা কিন্তু সরকারের দৃষ্টিকোণ থেকে কোনাকুনি পরিস্থিতি উত্তরণে কোনো সম্ভাবনার কথা কোথাও বলেননি। তাই জুন মাসের মধ্যে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা নির্ভর বাজেটের সফলতা পুরোপুরি নির্ভর করছে করোনার গতিবিধির উপর । প্রকৃতির কাছে সম্পূর্ণ আত্নসমর্পণ করতেই হচ্ছে সবকিছুকে। নতুন বাজেট আর জনজীবনে স্বাভাবিকতা ফিরে আশা এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হোক, এমন আশাবাদ বিলাতে নতুন প্রাণের সঞ্চার করুক।
জো বাইডেন: দুর্বল সিদ্ধান্ত প্রশ্নবিদ্ধ
সৌদি বংশোদ্ভূত মার্কিন সাংবাদিক জামাল খাসোগি’র হত্যাকান্ড সম্পর্কে সিআইএর রিপোর্ট প্রকাশে বাইডেন প্রশাসনের সিদ্ধান্ত বিশ্বব্যাপি সাড়া জাগিয়েছে। নিঃসন্দেহে বাইডেন প্রশাসন ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু প্রশ্ন দেখা দিয়েছে এই সিদ্ধান্তের জের ধরে গৃহীত সিদ্ধান্তের যথার্থতা নিয়ে। সিদ্ধান্ত অনুসারে ওই হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী ১৭ জন সৌদি নাগরিকের উপর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়েছে। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে তাদের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের আদেশ এই নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত। এই ১৭ জনের মধ্যে সৌদি সরকারের একজন উর্ধতন কর্মকর্তা সউদ আল কাহতানী ও তার সহযোগী মাহের মুত্রেব, ইস্তাম্বুলে নিযুক্তকনসাল জেনারেল মোহামেদ আলতাইবি এবং হত্যাকাণ্ডের মিশনে অংশ নেয়া ১৪ জন মানুষরূপী সৌদি কসাইকে এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনা হয়েছে। কিন্তু হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা হিসেবে প্রমাণিত প্রিন্স মোহাম্মেদ বিন সালমানের উপর কোনো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি। একজন মার্কিন সাংবাদিকের হত্যাকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে জো বাইডেন যে দুর্বলতার পরিচয় দিয়েছেন, তা রীতিমতো বিস্ময়কর। বাইডেন তার নাগরিকদের বিশ্বব্যাপি নিরাপত্তা প্রদানের ক্ষেত্রে তাঁর সর্বোচ্চ অঙ্গীকার প্রকাশে ব্যর্থ হয়েছেন। একইদিন রাশিয়ার বিরোধী নেতা মি. নাভালনীর উপর বিষপ্রয়োগের ঘটনায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রীসহ পদস্থ সরকারী উর্ধতন কর্মকর্তাদের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন বাইডেন। রাশিয়ায় নিষেধাজ্ঞার তালিকায় একজন মন্ত্রী থাকলেও সৌদিতে সিদ্ধান্তটি চরম দুর্বল বলেই প্রতীয়মান। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ট্রাম্পমুক্ত হলেও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তার মর্যাদা পুনরুদ্ধারে এতোটা দুর্বল সিদ্ধান্ত বাইডেন প্রশাসন সম্পর্কে বিশ্ববাসীকে ভুল বার্তা দিবে।