কাউন্ট ডাউন ১০ ডিসেম্বর

বিএনপি অফিসে পুলিশি হামলা ও গ্রেফতারের ঘটনায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নিন্দা ও প্রতিবাদ

লণ্ডন, ৭ ডিসেম্বর: নয়াপল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে পুলিশি হামলা ও গ্রেফতারের ঘটনায় বাম গণতান্ত্রিক জোট নিন্দা জানিয়েছে। নিন্দা জানিয়েছে, গণসংহতি আন্দোলন। গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি এবং নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল এক যৌথ বিবৃতিতে ১০ ডিসেম্বরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে সরকারের নির্বিচারে জনমানুষকে গ্রেফতার এবং বিএনপির নেতাকর্মীদের গুলি করে হত্যা ও মুহুর্মুহু হামলার তীব্র নিন্দা জানান। নেতারা অতিসত্বর এই নিপীড়ন ও আক্রমণ বন্ধের আহ্বান জানান। নেতারা বলেন, সরকার মির্জা ফখরুলসহ তাদের কেন্দ্রীয় নেতাদেরকে তাদের অফিসে ঢুকতে দিচ্ছে না, তাকে ঘেরাও করে রেখেছে। আমরা সরকারের এমন অরাজনৈতিক ও বর্বরোচিত কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা করছি। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত এ বাংলাদেশে বিরোধী দলের ওপর এরকম ফ্যাসিবাদী দমন-পীড়ন বাংলাদেশের জনগণ মেনে নেবে না।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জোটের কেন্দ্রীয় পরিচালনা পরিষদের সভায় পুলিশি হামলার নিন্দা জানানো হয়। বাম জোটের সমন্বয়ক ও সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন সিপিবির সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের আবদুস সাত্তার, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের সভাপতি হামিদুল হক প্রমুখ। বাম জোটের নেতারা বলেছেন, সভা-সমাবেশ করা গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক অধিকার। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার এ অধিকার হরণ করে স্বৈরাচারী, ফ্যাসিস্ট কায়দায় ক্ষমতায় থাকতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রাম গড়ে তোলা ও গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করার অপচেষ্টা রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানায় বাম জোট। সিপিবি এক পৃথক বিবৃতিতে নয়াপল্টনে বিএনপি অফিসের সামনে পুলিশের হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছে, সভা-সমাবেশের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করে, স্বৈরাচারী কায়দায় হামলা-মামলা, নির্যাতন, নিপীড়ন করে ক্ষমতায় থাকা যায় না।

নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল। দলের সম্পাদক ফয়জুল হাকিম এক বিবৃতিতে বলেন, ১০ ডিসেম্ব^র ঢাকায় বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশ হওয়ার কথা, যা বানচাল করতেই যে পুলিশের এ হামলা, তা বোঝা কঠিন নয়। এক বিবৃতিতে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি ও নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল বলেন, গুলি করে হত্যা ও মুহুর্মুহু হামলা করেছে পুলিশ। একজনকে হত্যা করেছে। এর অর্থ হচ্ছে মানুষ হত্যার এই নির্মমতাকে সরকার নিয়মিত বিষয়ে পরিণত করতে চায়। সরকার তাদের অবৈধ ও দানবীয় ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতেই এসব করছে।

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির চরমোনাই পীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার একটি গণপ্রজাতন্ত্রী স্বাধীন রাষ্ট্রের এসব মৌলিক অধিকারসমূহকে নির্মমভাবে হরণ করেই যাচ্ছে। তারা বিরোধীদলের শান্তিপূর্ণ সমাবেশগুলোতে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ নানাভাবে বাধাগ্রস্ত করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় আসন্ন ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিরোধীদলের সমাবেশকে কেন্দ্র করে তারা একটি উত্তেজনাপূর্ণ সহিংস পরিস্থিতি তৈরি করেছে।

নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মা’ছুম বিবৃতিতে বলেন, দেশের জনগণ ১৪ বছরের কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে আজ ঐক্যবদ্ধ। দেশের আপামর জনতা কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত।

গণফোরাম একাংশের সভাপতি মোস্তফা মোহসীন মন্টু, নির্বাহী সভাপতি অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট একেএম জগলুল হায়দার আফ্রিক, অ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন আব্দুল কাদের ও সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব খান ফারুক এক যৌথ বিবৃতিতে বলেন, পুলিশ কোনো দলের বা সরকারের হাতিয়ার বা লঠিয়াল হিসাবে ব্যবহার হোক তা জনগণের নিকট কাম্য নয়। গ্রেফতারকৃদের অবিলম্বে মুক্তি দেয়ার পাশিপাশি হামলার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানান।

এবি পার্টির সদস্য সচিব মজিবুর রহমান মন্জু বলেন, গত কয়েকদিন ধরেই সরকারি দলের নেতা ও মন্ত্রীদের হুমকি, ধমকি ও উত্তেজনা ছড়ানোর তৎপরতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে এসেছি। সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে নয়াপল্টন এলাকায় পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে পরিকল্পিতভাবে সহিংসতাকে উস্কে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপির সভাপতি কর্ণেল (অব.) ড. অলি আহমদ, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মহাম্মদ ইবরাহিম, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহবায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণ অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়া ও সদস্য সচিব নুরুল হক নুর, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ডিএলের সাইফুদ্দিন মনি, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন ও সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী ও ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ড্যাব।

Sheikhsbay

Related Articles

Back to top button
Close
Close