ভারতে জাতীয় নির্বাচনঃ মোদী ৩.০ নাকি ২০০৪’র পুনরাবৃত্তি
।। রূপম রাজ্জাক ।।
“ইলেক্টোরাল বন্ড কেলেঙ্কারি উল্টে দিতে পারে মোদীর সাজানো বাগান”
ভারতে লোকসভা নির্বাচনের ভোটাভুটির পর্ব শুরু হতে যাচ্ছে এ মাসের ১৯ তারিখে। জনসংখ্যার হিসাবে ‘বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতন্ত্র’ বলে পরিচিত ভারতের ৭ ধাপের এই ভোটাভুটি শেষ হবে জুনের ১ তারিখে এবং ফলাফল প্রকাশ হবে ৪ তারিখে। গত মাসের ১৬ তারিখে নির্বাচনের সময়সূচী ঘোষণার সময় থেকেই নির্বাচনের মডেল কোড অফ কন্ডাক্টও কার্যকর হয়েছে। এই মুহুর্তে নির্বাচনী উত্তেজনা চরমে। চলছে কথার লড়াইও। দিল্লীর রামলীলা ময়দানে বিরোধীদের সাম্প্রতিক সমাবেশে রাহুল গান্ধী বলেছেন, ‘এবার বিজেপি জিতলে সংবিধান পরিবর্তন করবে এবং সারাদেশ আগুনে পুড়বে। ভারত আর টিকে থাকতে পারবেনা।’। এর জবাবে নরেন্দ্র মোদী জনতার কাছে তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করার আহবান জানিয়েছেন।
নির্বাচনে জিততে নরেন্দ্র মোদী তার স্বভাবজাত আগ্রাসী কৌশল ও স্টাইল অনুযায়ী কাজ করছেন। কিন্তু একইসাথে রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে নজিরবিহীন অন্যায্য অনেক কার্যক্রমও চালিয়েছেন। যার সর্বশেষ উদাহরণ বিরোধী জোটের অন্যতম নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের অস্বাভাবিক গ্রেফতার। বিচারের আগেই এই গ্রেফতার নিয়ে জার্মানি, যুক্তরাষ্ট্র ও জাতিসংঘকে কথা বলতেও দেখা গেছে। একইসাথে আলোচিত হচ্ছে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের ব্যাংক একাউন্ট ফ্রিজ করার বিষয়টিও। নির্বাচনের মাত্র ২ মাস আগে তাদেরকে আর্থিকভাবে কার্যত অচল করে দেয়া হয়েছে। এতটাই যে তারা দেশের অভ্যন্তরে বাসে-ট্রেনে চলার মতো ব্যয় নির্বাহও করতে পারছে না। এর প্রভাব গিয়ে পড়েছে তাদের প্রার্থীদের ওপরও। তাদের ঘোষিত বেশকিছু প্রার্থী নির্বাচন থেকে সরেও গিয়েছেন।
শুধু কি এতটুকু? আসুন আরও কিছু ঘটনার আলোকে দেখা যাক নরেন্দ্র মোদীর সরকার বিরোধীদের কোণঠাসা করতে কি কি করেছে?
– দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালকে গ্রেফতারের আগে বিরোধী জোটের আরও একজন মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে মোদীর সরকার। ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনের সেই গ্রেফতার ছিল শুধুমাত্র রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে। তার উপস্থিতিতে সেখানকার ১৪টি সিটের বেশিরভাগেই এবার বিরোধী জোটে যাওয়ার আশংকা দেখে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়।
– বিজেপির পরিবর্তিত আইনে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ হয়েছে। আগে যেখানে দেশের প্রধান বিচারপতি, প্রধানমন্ত্রী ও সংসদে বিরোধীদের একজন প্রতিনিধির সম্মিলিত পছন্দে কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ হতো, নতুন আইনে সেখান থেকে প্রধান বিচারপতিকে বাদ দিয়ে একজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে রাখার বিধান করা হয়েছে। ফলে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ এক্ষণ পুরোপুরি দখলে। সাম্প্রতিক ২ নতুন নির্বাচন কমিশনার নিয়োগও সেভাবেই হয়েছে।
– নির্বাচনের আগে দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পদক ভারতরত্নকে ব্যবহার করে ভোটের সমীকরণ নিজেদের পক্ষে নেয়ার প্রচেষ্টা। নিজদলীয় আদর্শিক নেতা এলকে আদভানিকে দেয়া হয়েছে বর্তমান ভোটকে আরও সুসংহত করতে। কংগ্রেসদলীয় প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নরসীমা রাওকে এই পদক দিয়ে দক্ষিণ ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলাঙ্গানায় ভোটে প্রভাব ফেলার চেষ্টা করেছে এবং একইসাথে সেখানকার আঞ্চলিক দলগুলোকে কাছাকাছি টানার কৌশল হিসেবেও দেখেছে। হয়েছেও তাই। অন্ধ্র প্রদেশে চন্দ্রবাবু নাইডুর নের্তৃত্বাধীন তেলেগু দেশাম পার্টি ইতিমধ্যেই বিজেপির সাথে জোটবদ্ধ হয়েছে। এবার সেখানকার ২৫টি সিটের বেশিরভাগ জেতার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাব পার্শ্ববতী তেলাঙ্গানাতেও কিছুটা পড়বে। এছাড়া, বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কর্পুরি ঠাকুরকে এই পদক দিয়ে সেখানকার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর আস্থা অর্জনের চেষ্টা হয়েছে এবং একইসাথে প্রভাবশালী আঞ্চলিক দলগুলোকে শক্ত বার্তা দিয়েছে। এছাড়া, উত্তর প্রদেশের অসন্তুষ্ট কৃষক ও আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজেদের পক্ষে রাখতে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চৌধুরী চরণ সিং ও বিখ্যাত কৃষি বিজ্ঞানী মানকম্বু স্বামীনাথানকেও ভারতরত্ন পদক দেয়া হয়েছে।
– বিভিন্ন রাজ্যে প্রভাবশালী স্থানীয় নেতাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে নিজদলে নিয়ে আসার কৌশল অব্যাহত রেখেছে। হিমাচলে কংগ্রেস থেকে ৬ জন ও স্বতন্ত্র ৩ জন এমএলএকে ভাগিয়েছে। ঝাড়খণ্ডের কংগ্রেস জোটের প্রধান একটি পরিবারের একজন পুত্রবধূকে বিজেপির টিকেট দেয়া হয়েছে। মহারাষ্ট্রে কংগ্রেসের প্রাক্তন একজন মুখ্যমন্ত্রী ও একজন সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসহ বিরোধী জোটের বেশকিছু নেতাকে ভাগিয়ে নিয়েছে। গোটা দেশজুড়েই এটি অব্যাহত আছে।
আরও বিভিন্ন সমীকরণকে মাথায় রেখে বিভিন্ন স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদী কার্যক্রম চালিয়েছে বিজেপি সরকার। নরেন্দ্র মোদী তার ৭৩ বছর বয়সে যে পরিমাণ তৎপরতা ও আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে দিনরাত বিরোধীদের ব্যস্ত রেখেছেন তা বিস্ময়কর। যদিও গনতন্ত্রকামী মানুষের চোখে তার বেশিরভাগ কাজই ভারতের গণতান্ত্রিক পথের পরিবর্তে স্বৈরাচারী পথের দিকে যাত্রা বুঝায়। কারণ তার ক্ষমতায় আসার পর ‘ডেমোক্রেটিক’ ভারত বিশ্ববাসীর চোখে ‘ইলেক্টোরাল অটোক্রেসি’ হবার পর এখন ‘ডিক্টেটরশিপ’ হিসেবে গণ্য হচ্ছে।
ভারতের নির্বাচনের ফলাফলে যে ৪ টি রাজ্য সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখে সেগুলো হলো – উত্তর প্রদেশ, মহারাষ্ট্র, পশ্চিমবঙ্গ ও বিহার। আসুন দেখা যাক এই ৪টি প্রদেশে ভোটে জিততে বিজেপি কি কি করেছে?
উত্তর প্রদেশের ৮০টি আসন থেকে বিজেপি জোট গত নির্বাচনে ৬৪টি আসন পেয়েছিল। এবার একই পারফরম্যান্স ধরে রাখতে সেখানকার বিরোধী দল রাষ্ট্রীয় লোক দল (আরএলডি) কে ভাগিয়ে এনেছে। আরএলডি বিরোধী জোটেই ছিল। কিন্তু তাদেরকে ভাগিয়ে নিতে দলটির প্রধান জয়ন্ত চৌধুরীর পিতামহ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চরণ সিং চৌধুরীকে ফেব্রুয়ারির শুরুতে ভারতের সর্বোচ্চ পদক ‘ভারতরত্ন’ প্রদানের ঘোষণা দেয় সরকার। পিতামহের জন্য সম্মানজনক এই পদক পেয়ে জয়ন্ত চৌধুরী দ্রুতই বিজেপি জোটে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এর ফলে উত্তর প্রদেশের পশ্চিমাংশে বেশ কয়েকটি আসনে ভোটের প্রভাব পড়বে। এছাড়া ঐতিহ্যগতভাবে আরএলডির জাট-মুসলিম ভোটের সুবিধাও পাবে বিজেপি জোট।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ লোকসভা আসন ৪৮টি মহারাষ্ট্রে। গত লোকসভা নির্বাচনে সেখানে ৪১টি আসনে জেতে বিজেপি-শিবসেনা জোট। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনের পর কংগ্রেস, শারদ পাওয়ারের এনসিপি ও উদ্ধব ঠাকরের শিবসেনা এক হয়ে সরকার গঠন করে। ভেঙ্গে যায় বিজেপির জোট। ক্ষমতাসীন ৩ দলের যৌথ শক্তি বিজেপির চেয়ে অনেক বেশি হওয়ায় প্রথম থেকে বিজেপির চেষ্টা ছিল ক্ষমতাসীন জোটে ভাঙন সৃষ্টি করার। আড়াই বছরের মাথায় শিবসেনা নেতা একনাথ শিন্দেকে দিয়ে দলের বেশিরভাগ এমএলএকে সরিয়ে এনে সেই সরকারের সমাপ্তি ঘটায় বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী করা হয় ভাঙন সৃষ্টিকারী একনাথ শিন্দেকে। তাতেও সম্মিলিত শক্তি কম মনে হওয়ায় শারদ পাওয়ারের দল এনসিপি থেকে তার ভাতিজা অজিত পাওয়ারের মাধ্যমে দল ভেঙ্গে বিজেপি সরকারে যোগদান করায়। সম্প্রতি বিরোধী জোটের প্রার্থীর নাম ঘোষণার ২ ঘন্টার মধ্যে সেই প্রার্থীকে সরকারি দপ্তর ইডি থেকে নোটিশ পাঠানোর ঘটনাও ঘটেছে সেখানে। এসবকিছুর উদ্দেশ্য লোকসভা নির্বাচনে বিরোধী জোটে শক্তিকে কমিয়ে ফেলে আগের নির্বাচনের পারফরম্যান্স ধরে রাখা। তবে এতকিছুর পরেও বিভিন্ন জরিপ বলছে বিজেপি সেখানে বিরোধী জোটের কাছে অন্তত ২০টি আসন হারাতে পারে।
তৃতীয় ও চতুর্থ সর্বোচ্চ আসন যথাক্রমে পশ্চিমবঙ্গ (৪২) ও বিহারে (৪০)। পশ্চিমবঙ্গে মমতা ব্যানার্জির দল বিরোধী জোটের অংশ থাকলেও শেষ মুহুর্তে আসন ভাগাভাগির অজুহাতে নির্বাচনী জোটভুক্ত হয়নি। ধারণা করা হয়, কেন্দ্রীয় সরকারের অব্যাহত চাপের কারণে শেষ পর্যন্ত তার থাকা সম্ভব হয়নি। যদিও তিনি সিটের অজুহাতে সেটা করেছেন। এর ফলে সেখানে কংগ্রেসের ৬ শতাংশ ও বামদলগুলোর ৭ শতাংশ ভোট বিভক্ত হবে মনে করা হচ্ছে। একইসাথে, কেন্দ্রীয় সরকার প্রায় ৫ বছর আগের পাশ হওয়া সিটিজেনশিপ আইন বাস্তবায়নের ঘোষণা দেয়ায় অন্তত ১০টি আসনে এর সরাসরি প্রভাব পড়বে। এছাড়া সামগ্রিকভাবে হিন্দু ভোটকে সুসংহত করবে বলে ধারণা করা যায়। বিভিন্ন জরিপেও এসেছে এবার পশিমবঙ্গে বিজেপি গতবারের ১৮টির চেয়ে বেশি আসন পেতে যাচ্ছে। অন্যদিকে, বিহারের ৪০টি আসনের ৩৯টিতে জিতেছিল বিজেপি-জেডিইউ জোট। মাঝখানে নিতিশ কুমার কংগ্রেস জোটে গেলেও বিজেপি দ্রুতই তাকে ফেরায়। অনেকের ধারণা, নিতিশ কুমার কংগ্রেস জোটে থাকলে সেখানে ৫টি আসনেও জেতার সম্ভাবনা থাকতো না বিজেপির। এটা মাথায় রেখেই তাকে ফেরানো হয়েছে। ধারণা করা যায় বিহারে বিজেপি জোট আগের মতো না হলেও কাছাকাছি পারফরম্যান্স করবে।
এছাড়াও কোথাও কোথাও ১টি বা ২টি আসনে প্রভাব ফেলতে জোট করেছে বিজেপি।
তবে কি নরেন্দ্র মোদী ৩য় বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন? সাম্প্রতিক সব জরিপের রায় মোদীর পক্ষে থাকলেও ইলেক্টোরাল বন্ড কেলেঙ্কারি ফাঁস হবার পর দেশব্যাপী মোদীবিরোধী একটি অন্তঃপ্রবাহ চলছে বলে অনেকে মনে করছেন। এমনকি মোদী সরকারের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামের স্বামী পারাকালা প্রভাকর (যিনি নিজেও একজন অর্থনীতিবিদ) বলেছেন এই বন্ড কেলেঙ্কারি ভারতের আনাচেকানাচে পৌঁছে যাচ্ছে এবং ভোটে এর ভয়াবহ প্রভাব বিজেপি দেখবে। এছাড়াও সুপ্রিম কোর্টের ইভিএম বিষয়ক সর্বশেষ নির্দেশনায়ও বিরোধীরা আশা দেখছে। তাদের ধারণা গতবার মোদী সরকার ইভিএম জালিয়াতি করে অন্তত ৫% ভোট ম্যালিপুলেট করেছে। এবার সেটা না পারলে অনেক আসনে হেরে যাবে বিজেপি।
বিরোধীরা কি শুধু শুধু আশা দেখছেন?
বিরোধীরা কি শুধু শুধু আশা দেখছেন? ইলেক্টোরাল বন্ড কেলেঙ্কারি, কংগ্রেসের ব্যাংক একাউন্ট জব্দ, দু’জন মুখ্যমন্ত্রীর গ্রেফতার, সরকারি বাহিনী দিয়ে বিরোধীদের হয়রানি, রাহুল গান্ধীর গাড়িবহরে হামলা, নির্বাচন কমিশনে নিজেদের মনমতো কমিশনার নিয়োগ, বিরোধী নেতাদের ভাগিয়ে নেয়া সহ নানা কারণে মানুষের মাঝে একটি নেতিবাচক মনোভাব তৈরি হয়েছে। বিরোধী জোটের করা সাম্প্রতিক নানা জরিপের আলোকে তারা মনে করছে অন্তত ১২০টি আসনে এবার বিজেপি হোঁচট খাবে। বিশেষ করে মহারাষ্ট্র, উত্তর প্রদেশ ও বিহারের ব্যাপারে তারা বেশ আশাবাদী। এছাড়া গতবারের ক্লিন সুইপ হওয়া কর্নাটকে এবার কংগ্রেস ১০টির বেশি সিট আশা করছে। তেলাঙ্গানাতেও তারা বেশ কিছু আসন যোগ করার ব্যাপারে আশাবাদী। রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশে, হরিয়ানা এমনকি গুজরাটেও সিট আশা করছে – এই রাজ্যগুলোতে গতবার প্রায় সব আসন জিতেছিল বিজেপি। সবমিলিয়ে বিজেপি বর্তমানের ২৯৫টি থেকে ৮০-৯০টি সিট হারালে অবাক হওয়ার কিছু থাকবেনা বলে অনেকের মত। তারা মনে করেন ‘মোদী ঢেউ’ বলে যা ছিল সেসময় পার হয়েছে। সেক্ষেত্রে বিজেপি ৭০-৭৫টি আসন হারালেও বাকিদের নিয়ে সরকার গঠনের জন্য বিরোধীদের বেগ পেতে হবেনা। কারণ সেরকম পরিস্থিতিতে বিজেপি জোটেরই উচ্চাকাঙ্ক্ষীরা বেরিয়ে এসে কংগ্রেস জোটে ভেড়ার সম্ভাবনা প্রবল। সবমিলিয়ে এবারের নির্বাচনকে অনেকে ২০০৪ সালের নির্বাচনের সাথেও তুলনা করছেন। যখন অটল বিহারি বাজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপির জয় নিশ্চিত ধরা হয়েছিল কিন্তু শেষে সোনিয়া গান্ধীর নের্তৃত্বে বিরোধীরা এগিয়ে যায়।
রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে বিজেপির নানা অন্যায্য কার্যক্রমের ফলে কোণঠাসা বিরোধীরা এই নির্বাচন ভারতের গণতন্ত্র রক্ষার শেষ সুযোগ বলে প্রচার চালাচ্ছেন। ভারতের অভ্যন্তরে ও বিশ্বব্যাপীও অনেকের চিন্তা ভারতের গণতন্ত্র কি টিকবে? ভারতের সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও শীর্ষ আইনজীবী কপিল সিবাল মনে করেন ভারতের গণতন্ত্র টিকে থাকবে তার বৈচিত্রের কারণে। প্রায় দেড় বিলিয়ন মানুষকে স্বৈরতন্ত্র দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যাবেনা এবং তাদের আকাঙ্ক্ষাকেও কবর দেয়া যাবেনা। প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত গণতন্ত্র থাকবেই বলে মনে করেন তিনি।
লেখকঃ রাজনৈতিক বিশ্লেষক, সাংবাদিক ও তথ্যপ্রযুক্তিবিদ