বিশ্ব বরেণ্য ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা সাঈদীর বন্দীদশায় ইন্তেকাল- চিকিৎসা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন
|| সুরমা প্রতিবেদন ||
বাংলাদেশে স্মরণকালে সবচেয়ে জনপ্রিয় বিশ্ব বরেণ্য ইসলামী চিন্তাবিদ মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী কারান্তরীণ অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সোমবার (১৪ আগস্ট) রাত ৮টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএসএমইউ) তিনি মারা যান। মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদী ১৯৪০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি পিরোজপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। বিএসএমএমইউ পরিচালক সোমবার রাতে মাওলানা সাঈদীর মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেন। তাঁর চিকিৎসায় গাফিলতি ও মৃত্যুর বিষয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আগের দিন হাসপাতালে ভর্তির সময় তাঁকে হাস্যোজ্জল অবস্থায় দেখা গেছে। হার্ট অ্যাটাকের কথা বলা হলেও তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়নি। এমনকি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে দেয়া হয়নি। মাওলানা সাঈদীর চিকিৎসা ও মৃত্যুতে চিকিৎসার কোনো গাফিলতির অভিযোগ তদন্তের দাবিও করেছেন বিক্ষুব্ধ অনেকে। মরহুমের মরদেহ স্বজনদের দেয়া নিয়ে কতৃপক্ষের গড়িমসি এক ইকারণে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
গত রোববার (১৩ আগস্ট) বিকেলে কারাগারে বুকের ব্যথায় অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে কাশিমপুর কারাগার থেকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিএসএসএমইউ-তে পাঠানো হয়।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামী ব্যাক্তিত্ব মাওলানা সাঈদী পিরোজপুর ১ আসন থেকে সংসদ সদস্য ছিলেন ১৯৯৬ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত আশির দশকে শেষ দিকে তিনি জামাত ইসলামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত হন।
মাওলানা সাঈদী ২০১০ সালে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হন এবং পরবর্তীতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত হন তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোর মধ্যে ছিল পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কাছে গোপনে তথ্য সরবরাহ এবং ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট। যদিও এমনি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচ সহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার সমূহ তার এই বিচারকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত এবং ভুল পরিচয়ে বিচার মিসটেকেন আইডেন্টিটি হিসেবে প্রতিবাদ করে। মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার প্রতিবাদে সারাদেশে বিক্ষোভে অন্তত ৭০ জন বিক্ষোভকারী পুলিশের গুলিতে নিহত হন আহত হয়েছিলেন কয়েক শতাধিক। অবশ্য ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট তার সাজার মেয়াদ কমিয়ে আমৃত্যু কারাদন্ডের আদেশ প্রদান করে।
তখন থেকেই তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-১-এ বন্দি ছিলেন। সেখানে থাকা অবস্থায় রোববার বিকেল পাঁচটার দিকে হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। এ সময় বুকে ব্যথা অনুভব করছিলেন।এরপরই তাঁকে হাসপাতালে নেয়া হয়।