মেয়র নির্বাচন: আবারও মুখোমুখি লুৎফুর-বিগস

।। সুরমা প্রতিবেদন ।।
লণ্ডন, ১৩ আগস্ট : ২০২২ সাল তথা আগামী মেয়র নির্বাচনে আবার মুখোমুখি হচ্ছেন টাওয়ার হ্যামলেটস বারার বর্তমান নির্বাহী মেয়র জন বিগস ও সাবেক প্রথম নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমান। সম্প্রতি আগামী মেয়র নির্বাচনের জন্য আবারও লেবার দলের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন জন বিগস। লেবার দলের সদস্যদের ভোটাভুটিতে তাঁর এই মনোনয়ন চূড়ান্ত হয়। ২০২২ সালে মে মাসে পরবর্তী মেয়র নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।
২০১৪ সালে বিশেষ নির্বাচনী আদালত কর্তৃক তৎকালীন মেয়র লুৎফুর রহমানকে অপসারণের পর অনুষ্ঠিত উপ-নির্বাচনে জন বিগস প্রমবারের মতো টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়র নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার গৌরব অর্জন করেন।
আদালতের নিষেধাজ্ঞার কারণে বারার প্রভাবশালী রাজনীতিক এবং প্রথম নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমান ওই দুটি নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। তবে ২০২২ সালের নির্বাচনে লুৎফুর রহমানের প্রার্থী হতে আইনী কোনো বাধা নেই। যার কারণে রাজনীতির মাঠে সক্রিয় হয়েছেন লুৎফুর রহমান। ইতোমধ্যেই বিভিন্নভাবে তাঁর সক্রিয়তার বিষয়ে তিনি জানানও দিয়েছেন এবং আগামী নির্বাচনে তাঁর প্রার্থী হওয়ার বিষয়টি অনেকটা পরিষ্কার। শেষ পর্যন্ত প্রার্থীতার বিষয়ে অটল থাকলে তিনি এবং জন বিগসই যে হবেন প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী সেটি আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
উল্লেখ্য, রাজনীতি করতে যেয়ে লুৎফুর রহমান বারবার ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। ২০১০ সালের প্রথম নির্বাহী মেয়র নির্বাচনে নিজ দল লেবারের প্রার্থী মনোনয়ন হওয়ার পর দলের মধ্যকারই কিছু ক্ষমতালোভী ও পরশ্রীকাতর নেতা তাঁর পথে বাধা হয়ে দাঁড়ান। তাকে আটকানোর জন্য ডশিয়ার প্রদান করে মনোনয়ন বঞ্চিত করা হয়। কিন্তু তবুও তাকে আটকানো যায়নি। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জনগণের বিপুল রায়ে তখনকার লেবার প্রার্থীকে পরাজিত করে বারার প্রথম নির্বাহী মেয়র নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেন লূৎফুর রহমান। এরপরও ষড়যন্ত্র তাঁর পিছু ছাড়েনি। দ্বিতীয় মেয়াদে আবারও নির্বাচিত হওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে ভোট জালিয়াতিসহ বিভিন্ন অভিযোগ আনা হয়। নির্বাচনী বিশেষ ট্রাইব্যুনাল কোর্টের রায়ে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হলেও বারবার তদন্ত করেও কোনো ধরণের ক্রিমিনাল অফেন্স খুঁজে পায়নি মেট পুলিশ।
সর্বশেষ উল্লেখযোগ্য কোনো কারণ ছাড়াই ডাইরেক্টলি ইলেক্টেট মেয়রাল সিস্টেম রদ করার প্রস্তাব এনে রেফারে-ামের আয়োজন করে স্থানীয় লেবার। আর এসবের মাধ্যমে লুৎফুর রহমানকে আটকানো চেষ্টা করা হয় বলে জনমুখে আলোনা রয়েছে। কিন্তু সেখানেও চচরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে এই কুচক্রী মহল। গত মে‘র রেফারেণ্ডামে মেয়র পদ্ধতির পক্ষে বিপুল জনরায়ে আবারও তাদের নস্যাৎ হয়ে যায়। রেফারেণ্ডামে মেয়র পদ্ধতির পক্ষে মাঠে সক্রিয় ছিলেন সাবেক লুৎফুর রহমান। তাঁর প্রচারণাতেই বিপুল মানুষ এর পক্ষে তাদের রায় দেন। এতে করে প্রকারান্তরে লুৎফুর রহমানেরই শক্তি ও জনপ্রিয়তা প্রবলভাবে প্রমাণিত হলো।