নিউজবাংলাদেশ

সিলেটে এখনো পানিবন্দি ৬ লাখ ৫৮ হাজার মানুষ

লণ্ডন, জুন- সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির কোথাও উন্নতি হয়েছে, আবার কোথাও অবনতি। জেলায় এখন পর্যন্ত ছয় লাখ ৫৮ হাজার ৬৬২ জন পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন।

বুধবার সিলেট জেলা প্রশাসন থেকে প্রাপ্ত বন্যা পরিস্থিতি বিষয়ক তথ্যে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতের বৃষ্টিতে গোলাপগঞ্জ, বিয়ানীবাজার ও বিশ্বনাথ উপজেলায় নতুন করে কয়েকটি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তবে অন্যান্য উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সিলেট কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, সুরমা নদীর পানি কমলেও বাড়ছে কুশিয়ারার পানি। বুধবার দুপুরে সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ৫১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া কুশিয়ারা নদীর পানি জকিগঞ্জে বিপদসীমার ১৮ সেন্টিমিটার, ফেঞ্চুগঞ্জে ৪৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সিলেট নগরে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ছয় সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যান্য নদীগুলোর পানিও বিপদসীমার নিচে নেমেছে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। সব উপজেলায় আলাদা কন্ট্রোল রুম স্থাপন করে বন্যার্তদের সহায়তায় কাজ করা হচ্ছে। এছাড়া প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে।’

সিলেটে ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে ২৭ মে থেকে জেলার কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট ও জকিগঞ্জ উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরবর্তীতে আরো কয়েকটি উপজেলায় দেখা দেয় বন্যা। শুক্র ও শনিবার বৃষ্টি এবং উজানের ঢল থামায় পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছিল। তবে রোববার থেকে আবারো সিলেটে ভারী বৃষ্টি শুরু হওয়ায় বেড়ে যায় নদ-নদীর পানি।

মঙ্গলবার পর্যন্ত জেলার ১৩টির মধ্যে তিনটি (ওসমানীনগর, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ) ছাড়া বাকি সব উপজেলায় বন্যা দেখা দিয়েছে। এদিন জেলা ও মহানগরে সাত লাখ ৩৯ হাজার ৩৬২ জন পানিবন্দি ছিলেন।

বুধবার জেলা প্রশাসনের দেয়া সর্বশেষ তথ্যমতে, বর্তমানে জেলা ও মহানগর মিলিয়ে ৬৩টি ইউনিয়ন এবং ১৩ ওয়ার্ডের ৮৪২টি গ্রাম/পাড়ার ছয় লাখ ৫৮ হাজার ৬৬২ জন পানিবন্দি রয়েছেন।

জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বন্যাকবলিত উপজেলাগুলোতে মোট ৫৭১টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে বর্তমানে চার হাজার ৫০৫ জন অবস্থান করছেন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে আরো জানা গেছে, বর্তমানে সিলেট মহানগরের ১৩ ওয়ার্ডে বন্যার পানি রয়েছে। শুরুতে কমপক্ষে ৩০টি ওয়ার্ড পানিবন্দি ছিল। গত দুই দিন থেকে ধীরে ধীরে নামছে পানি। মহানগরে ২০টি আশ্রয়কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। বুধবার এসব কেন্দ্রে চার হাজার মানুষ আশ্রয়ে আছেন।

সিলেটের জেলা প্রশাসক জানান, বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়গুলোতে কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় ডেডিকেটেড অফিসার নিয়োগের পাশাপাশি প্রতিটি ইউনিয়নে ট্যাগ অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, এছাড়া বন্যার্তদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য ইউনিয়ন ভিত্তিক মেডিক্যাল টিম গঠন করা হয়েছে। সরকারি/বেসরকারিভাবে অব্যাহত রয়েছে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম।

Sheikhsbay

Related Articles

Back to top button
Close
Close