আল জাজিরার সংবাদের সত্যতা প্রমাণিত:
![](http://www.surmanews.com/wp-content/uploads/2019/11/johurul.jpg)
অপহরণের ৯ মাস পর কারাগারে ক্যাপ্টেন জহুর-এর মৃত্যু: দায়ী কে? তারেক সিদ্দিক, নিরাপত্তা বাহিনী নাকি সরকার?
।। বিশেষ প্রতিবেদক ।।
লন্ডন, ১৩ নভেম্বর – অবশেষে বাংলাদেশ সরকার স্বয়ং আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম আল জাজিরা’র সংবাদের সত্যতা প্রমাণ করলো। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা গত ২০ মার্চ বাংলাদেশের একজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা’র সুনির্দিষ্ট ও তথ্যভিত্তিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে “বাংলাদেশ: শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তা অপহরণের দায়ে অভিযুক্ত” শীর্ষক বিশেষ সংবাদ প্রকাশ করেছিলো। ওই সংবাদে প্রধানমন্ত্রী’র নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেনারেল তারিক সিদ্দিক (অবঃ) ক্ষমতার মোহে রাষ্ট্রীয় বাহিনী ব্যবহার করে প্রতিপক্ষের তিনজনকে অপহরণের বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে। এই অপরাধের সহযোগী হিসেবে প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা ডিজিএফআই তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করেছিলো।
![](http://www.surmanews.com/wp-content/uploads/2019/11/Johor-2.jpg)
আল জাজিরা’য় সংবাদ প্রকাশের ৬ মাস পর গত সপ্তাহে ঢাকার একটি কারাগারে অপহৃত তিনজনের অন্যতম অনারারি ক্যাপ্টেন জহুর এর মৃত্যুর ঘটনায় বিভিন্ন দিক থেকে অসংখ্য প্রশ্ন উত্থাপিত হচ্ছে। মৃত্যুর কয়েক দিন আগে অর্থাৎ ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ তারিখ থেকে তাকে গ্রেফতার দেখানো হলেও গত নয় মাস অর্থাৎ গত ১৩ জানুয়ারী ২০১৯ তারিখ থেকে অনারারী ক্যাপ্টেন জহুর কোথায় ছিলেন সে ব্যাপারে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও কারা কর্তৃপক্ষ কোন ব্যাখ্যা প্রদান করেনি। একই সময়ের অপহরণের শিকার অপর দুজন হচ্ছেন, ল্যান্স নায়েক আকিদুল ও সুবেদার খোরশেদ। অনারারি ক্যাপ্টেন জহুর সেনা কমান্ড ট্রেনিং সেন্টারে একজন সিনিয়র ট্রেইনার হিসেবে উর্দ্ধতন সেনা কর্মকর্তাদের নিকট অত্যন্ত সম্মানিত ছিলেন বলে জানা গেছে। এমনকি তিনি বর্তমান সেনা প্রধান জেনারেল আজিজের প্রশিক্ষক ছিলেন বলেও জানা গেছে। নির্ভরযোগ্য সূত্রমতে, কর্নেল শহীদ খান, তাঁর স্ত্রী ফারজানা খান, অনারারি ক্যাপ্টেন জহুর, ল্যান্স নায়েক আকিদুল ও সুবেদার খোরশেদ এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্র ও সন্ত্রাস বিরোধী আইনে কয়েকটি মামলা করা হয়। পুলিশের ভাষ্য মতে, গত ০৭ অক্টোবর ল্যান্স নায়েক আকিদুল ও সুবেদার খোরশেদ এর ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী নেয়া হয়। অপর একটি সূত্র মতে, অনারারি ক্যাপ্টেন জহুর ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিতে অস্বীকার করায় তাঁকে অমানবিক নির্যাতন করা হয়। যার ফলশ্রুতিতে তাঁকে গত ০৯ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং তিনি গত ১১ অক্টোবর সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে ঐ হাসপাতালে তিনি অকালে মৃত্যুবরণ করেন। যদিও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাঁর মৃত্যু হার্ট এটাক ও লিভার সিরোসিস জনিত কারণে ঘটেছে বলে জানিয়েছে। কিন্তু পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদন অনুযায়ী অনারারি ক্যাপ্টেন জহুর এর পিঠে এবং হাতে অত্যাচারের কালো দাগের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
![](http://www.surmanews.com/wp-content/uploads/2019/11/Johor-3.jpg)
অনারারি ক্যাপ্টেন জহুর এর এক ছেলে বর্তমানে বাংলাদেশ আর্মির একজন মেজর, তাঁর আরেক ছেলে ব্যাঙ্কে চাকুরীরত। প্রায় নয় মাস গুন থাকা অবস্থায় ক্যাপ্টেন জমির উপর অমানবিক নির্যাতন এবং পরিশেষে কারাগারে আটক দেখিয়ে মৃত্যুর ঘটনায় তার পরিবার ও পরিচিত সকলের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
কর্নেল শহীদ অপহৃতদের প্রামাণ্য বক্তব্যসহ তাদের অপহরণ ও পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোকেও অবহিত করেন। কিন্তু গোয়েন্দা সংস্থা এবং সরকার বরাবরের মতো আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উত্থাপিত এসব অভিযোগের কোনো জবাব দেয়নি অথবা কোথাও কোথাও জবাব দিলেও সবগুলো ঘটনাই অস্বীকার করে অন্যদিকে এসব অপহরণের জন্য গোয়েন্দা সংস্থা কর্নেল শহীদের বিরুদ্ধে উল্টো অভিযোগ করে যে, প্রতিপক্ষের দায়ের কৃত মামলা অথবা তদন্তে সাক্ষ্য দান থেকে বিরত থাকার জন্যই কর্নেল শহীদ তাদের লুকিয়ে রেখেছেন। গোয়েন্দা সংস্থার বক্তব্য সঠিক হলে ৯মাস পর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তাদের গ্রেফতার দেখিয়ে নিজেই আগের বক্তব্যকে অসত্য প্রমাণ করলো বলে উল্লেখ করেন অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল শহীদ। আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় মিথ্যাচারের মাধমে দেশের ভাবমূর্তি এর মাধ্যমে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলো। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এগুলো খারাপ উদাহরণ হিসেবে ব্যবহার হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন এই সাবেক সেনা কর্মকর্তা।
এর আগে গত বছরের মাঝামাঝি এই তিনজন ও আরেকজন সহকর্মীকে একইভাবে অপহরণ করা হয়েছিল। সে সময় তাদের একইভাবে অপহরণ করে নিয়ে দুইদিন অত্যাচার করে মুক্তি দেয়। অপহৃত অন্যরা হচ্ছেন ল্যান্স নায়েক আকিদুল, সুবেদার খোরশেদ এবং এনামুল। ক্যাপ্টেন জহুর গত ০৫ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে তাঁর প্রথম অপহরণের ৪৮ ঘণ্টা পর ছাড়া পাবার পর তাঁর নিজ হাতে লিখিত হলপনামা অপহরণের সাক্ষ্য দালিলিক প্রমাণ হিসেবে আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়। এই রিপোর্টে ও ওই হলফনামায় দাবি করা হয়েছিল, সেনাবাহিনীর অনারারী ক্যাপ্টেন জহুরসহ তাঁর তিনজন সহকর্মীকে গত ১৩ জানুয়ারীতে ঢাকা থেকে অপহরণ করে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা সংস্থার কর্মকর্তার পরিচয়ে কিছু সাদা পোশাকধারী ব্যক্তি এবং কতিপয় রেব সদস্য।
এই ঘটনার অংশ হিসেবেই কর্নেল শহীদের আইনজীবী এডভোকেট আশরাফ আলী জানুয়ারির শেষ সপ্তাহ থেকে নিরুদ্দেশ। কেউ জানেন না তিনি কোথায় আছেন। এছাড়া কর্নেল শহীদের ছোট ভাই মোহাম্মদ আলী খান (৪৬) গত ২২ এপ্রিল অপহরণের শিকার হয়ে আজো নিরুদ্দেশ। কর্নেল শহীদের ৭০ বছর বয়স্ক বড় ভাই মুক্তিযোদ্ধা গিয়াস উদ্দিন খান ২১ এপ্রিল অপহৃত হন এবং ৯দিন নিরাপত্তা বাহিনীর হেফাজতে নির্যাতনের পর তাকে ছাড়া হয়।বাবুল মৃধা ৮ মার্চ থেকে অপহৃত। কর্নেল শহীদের আরেক ভাই কবির উদ্দিন খান (৪৯) গত ৬ জুন নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে অপহৃত হন, তাকে ৩০ ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ করে শর্ত সাপেক্ষে ছাড়া হয়। এই পরিবারের পক্ষ থেকে বারবার সরকারি বিভিন্ন কতৃপক্ষের কাছে নিপীড়ন বন্ধের আবেদন জানিয়ে কোনো সাড়া পাচ্ছেন না, এমনকি এই পরিবারের কথা শোনার যেন কেউ নেই। নির্মমতার যেন শেষ নেই। গত ১২ এপ্রিল কর্নেল শহীদের শাশুড়ী ৭৯ বছর বয়স্ক বৃদ্ধা চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে আসার পথে ঢাকায় বিমানবন্দরে আটকে দেওয়া হয় কোনো আইনগত কতৃত্ব অথবা কারণ দর্শানো ছাড়াই বিমানবন্দরে ইমিগ্র্যাশন কতৃপক্ষ অদৃশ্য শক্তির ইশারায় এই বেআইনি কাজ করেছিলো বলে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে।এই ব্যাপারে উচ্চ আদালতে রিট আবেদন করা হলেও এখনো কোনো সুরাহা হয়নি, এমনকি সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের পক্ষ থেকে এই মামলার ফাইল পাওয়া যাচ্ছে না বলে আবেদনকারীকে জানানো হয়েছে। এই হচ্ছে রাষ্ট্রীয় নির্যাতন, নির্মমতা আর ভয়াবহ অত্যাচারের শিকার পরিবারের সদস্য ও তাদের প্রতিষ্ঠানে কাজ করার অপরাধে কিছু নিরীহ সাধারণ নাগরিকের চরম পরিস্থিতির বিবরণ। কোথায় তারা বিচার পাবেন, জানেন না। রাষ্ট্রের সবচেয়ে দায়িত্বশীল নিরাপত্তা সংস্থার নাম ও শক্তি ব্যবহার করে এই গুম, অপহরণ কিংবা খুনের ঘটনা সম্পর্কে কেউ যাতে কোনো কথা বলতে না পারে, তার জন্য একের পর এক হুমকিও অব্যাহত রেখেছে।তারপরও ভয়াবহ নির্যাতনের শিকার এই পরিবার সরকারের সকল পর্যায়ে আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছেন এই বর্বরতার অবসানে।
কর্নেল মোঃ শহীদ উদ্দিন খান, পিএসসি (অবঃ) এর বক্তব্য:
অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল শহীদ এই প্রতিবেদককে বলেন, আমি বিশ্বাস করি কিছু সংখ্যক চিহ্নিত আই জি অর্থাৎ ইন্টারেস্ট গ্রুপ তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে এই ধরণের মানবতা বিরোধী অপরাধ করে যাচ্ছে। তারা নিজেদের স্বার্থেই তাদের আওতায় থাকা বিভিন্ন সংস্থাকে ব্যবহার করলেও শেষ পর্যন্ত আইনের কাছে তাদের অবশ্যই আত্মসমর্পন করতে হবে । এটা শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র। তিনি আরো বলেন, এই আই জি এবং তাদের এই সম্পর্কিত সকল মানবতা বিরোধী সকল অপকর্মের দালিলিক প্রমাণ তাঁর কাছে সংরক্ষিত আছে । একদিন আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত হলে মানবতা বিরোধী আদালতেই তাদের বিচার হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।তিনি বলেন, সেনাবাহিনী থেকে বিদায় নেয়ার পরে ২০০৫ সাল থেকে আমার সঙ্গে মিস্টার তারেক সিদ্দিক এবং তাঁর স্ত্রী শাহীন সিদ্দিকের ব্যবসায়িক সম্পর্ক ছিল। নীতিগত কারণেই তা্র সঙ্গে আমার বিরোধ। কিন্তু ব্যাক্তিগত ও নীতিগত বিরোধের জের ধরে আইনানুগ নিষ্পত্তিতে ব্যর্থ হয়ে আমার এবং আমার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে একের পর এক হামলা, নির্যাতন ও লুটপাটের মাধ্যমে আমাকে মানুসিকভাবে পর্যুদস্ত করার ঘৃণ্য কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ২০০৯ সালে সরকার গঠন করার পর তারিক সিদ্দিক ক্ষমতাধর হয়ে অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জনে ব্যস্ত হয়ে পরে, যা আমি মেনে নিতে পারিনি বিধায় ২০০৯ সালেই স্বপরিবারে যুক্তরাজ্যে চলে আসি। কিন্তু তারিক সিদ্দিক থেকে সম্পূর্ণভাবে আলাদা হতে পারিনি, কেননা তাঁরা আমাদের কোম্পানির মালিকানার অংশীদার ছিল। ২০১৬ সাল থেকে হঠাৎ করে কোম্পানিটি (প্রচ্ছায়া লিঃ) বন্ধ করে দিতে বলে, যা আইনগতভাবে অত্যন্ত জটিল। তথাপি, আমি ২০১৮ সালের ০৪ এপ্রিলের মধ্যে উচ্চ আদালতের মাধ্যমে কোম্পানিটি বিলুপ্ত করে দেই। এই দেরী হওয়ার কারণে তাঁরা ক্ষিপ্ত হয়। এর মূল কারণ হচ্ছে, তাঁরা শুরু থেকে এই কোম্পানিতে কোন অর্থ বিনিয়োগ না করে কোম্পানির ৫০% ভাগ অংশিদারিত্ব ভোগ করে আসছিল। অথচ তাঁরা বলেছিল যে, তাঁরা পরবর্তী সময়ে প্রতিশ্রুত বিনিয়োগের অর্থ কোম্পানির তহবিলে জমা দিবে, সেই “পরবর্তী সময়” আর কখনো আসেনি। তাদের একমাত্র দৃশ্যমান বৈধ উপার্জনের উৎস ছিল প্রচ্ছায়া লিঃ, যার মাধ্যমে তাঁরা কোটি-কোটি টাকা বৈধভাবে উপার্জন করে তাঁদের আয়করে প্রদর্শন করেছে।অথচ, সেই অত্যন্ত সফল কোম্পানিটিকে বিলুপ্ত করতে বাধ্য করেছে, কারণ তাদের আশঙ্কা ছিল যে, আমি হয়তো ভবিষ্যতে তাদেরকে আইনের আওতায় আনবো। তাই, আদালত কর্তৃক প্রচ্ছায়া লিঃ বিলুপ্ত করার পরের দিনই অর্থাৎ ০৫ এপ্রিল ২০১৮ তারিখে তাঁরা আমাদের অফিস লুট করে এবং আমাদের কর্মকর্তা কর্মচারীদের অপহরণ করে অত্যাচার করে, যাতে করে কোম্পানির সকল নথিপত্র ধ্বংস করে সমস্ত প্রমাণাদি নিশ্চিহ্ন করে দেয়া যায়। আমি যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এদের এই অমানবিক এবং বেআইনি আচরণের প্রতিবাদ করি। কিন্তু তাঁরা আরও উদ্ধত হয়ে আইনের প্রতি কোন ভ্রুক্ষেপ না করে আমার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধেও একের পর এক হামলা, নির্যাতন ও লুটপাটের মাধ্যমে আমাকে মানুসিকভাবে পর্যুদস্ত করার ঘৃণ্য কার্যক্রম অদ্যাবধি চালিয়ে যাচ্ছে।
কর্নেল শহীদ বলেন, আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে লন্ডন থেকে আমি বার বার তাদের লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছি । সেই আইনি প্রক্রিয়ার তোয়াক্কা না করে তাঁরা রাষ্ট্র ক্ষমতার অপব্যবহার করে তাদের চিরাচরিত সন্ত্রাসী কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। লন্ডনে তিনি একটি টেলিভিশন চ্যানেলে সাক্ষাৎকার দিয়ে ষ্টুডিও থেকে বের হবার আগেই তাঁর ঢাকায় তাঁর বাড়িঘর লুটপাট করে ও তাঁদের বিরুদ্ধে ভুয়া ও হাস্যকর সন্ত্রাসী মিথ্যা মামলা দায়ের করে বলে তিনি উল্লেখ করেন ।তিনি বলেন যে, এই সৎ, দেশপ্রেমিক এবং ধর্মপ্রাণ সাবেক সামরিক কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন জহুরকে সেই তথাকথিত সন্ত্রাসী মামলার অভিযোগ মাথায় নিয়ে মৃত্যুবরণ করতে হলো। তাঁর কাছে ও তার পরিবারের কাছে এর চেয়ে কষ্টকর আর কি হতে পারে? তিনি আরো বলেন, তিনি প্রধানমন্ত্রী’র কাছে বারবার লিখেও কোন ফল না পেয়ে আজ তিনি সংবাদপত্রের মাধ্যমে দেশের জনগণের কাছে এর বিচার চাইছেন। তিনি বিশ্বাস করেন, ক্যাপ্টেন জহুর সেনা বাহিনীতে কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দেশের নিরাপত্তার জন্য কাজ করে গেছেন, আর সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের হাতে জীবন দিয়ে দেশের শত্রুদের চিহ্নিত করে গেছেন। তাই তাঁর এই মৃত্যু সাধারণ মৃত্যু নয় । তিনি শহীদ, কারণ তিনি শাহাদাত বরণ করেছেন।তাঁর এই আত্মদান অবশ্যই বৃথা যাবে না । ইতিপূর্বে প্রথমবার দুই দিন অপহৃত থাকার পর নির্যাতনের মুখ থেকে ফিরে এসে ক্যাপ্টেন জহুর সাহসী বীরের মতো নোটারি পাবলিকের সামনে সবকিছু স্বহস্তে লিপিবদ্ধ করে গেছেন। তাঁর মৃত্যুর কয়েক মাস আগেই আল জাজিরা যখন সরকার ও নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে এই ব্যাপারে জানতে চায়, তারা সেটা অস্বীকার করেন, অথচ এর কয়েক মাস পর পুলিশ হেফাজতে তাঁর মৃত্যুর পর তাদের আর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। কারণ এখন সব কিছুই দিবালোকের মতো পরিষ্কার হয়ে গেছে এবং শহীদ জহুরের হলপনামাই পুরো অপরাধ প্রমাণের জন্য যথেষ্ট। আইনগতভাবে এই পুরো ঘটনাগুলোর সঙ্গে বিশেষত খুন, অপহরণ, নির্যাতন এবং মানবতাবিরোধী সকল অপরাধের সঙ্গে জড়িতদের অতি দ্রুত চিহ্নিত করণ, বিচার এবং দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি নিশ্চিত করা্র জন্য বাংলাদেশে আইনের শাসনের সবচেয়ে বেশি জরুরী ।