‘ফ্রিডম অফ দ্য সিটি অফ লণ্ডন’ এওয়ার্ডে ভূষিত মিজানুর রহমান মিজানের সম্মানে কমিউনিটি গ্যাদারিং ও ভোজসভা অনুষ্ঠিত
ব্রিটিশ বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স এণ্ড ইণ্ডাষ্ট্রি (বিবিসিসিআই) পরিচালক ও নর্থ ওয়েস্ট রিজিয়নের প্রেসিডেন্ট, আন্তর্জাতিক চ্যারিটি সংস্থা জাস্ট হেল্প ফাউন্ডেশন ইউকে’র চেয়ারম্যান ও আই হসপিটালের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, চ্যানেল এস এর ম্যানচেস্টার ব্যুরো প্রধান মিজানুর রহমান মিজানকে ‘ফ্রিডম অফ দ্য সিটি অফ লন্ডন’ এওয়ার্ডে ভূষিত করা হয়েছে। গ্রেটার ম্যানচেস্টারে ব্রিটিশ বাংলাদেশীদের মধ্যে মিজানই প্রথম এই গৌরব অর্জন করেন। চ্যারিটি কার্যক্রমে ও সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদানের জন্য তাকে এই এওয়ার্ড প্রদান করা হয়।
গত ২৮ মে, মঙ্গলবার বেলা ১১.৩০ মি. লণ্ডন সিটি কাউন্সিলে আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে তাকে এই সম্মানজনক এওয়ার্ড প্রদান করা হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। পরে দুপুর ২ টায় তাঁর সম্মানে হোয়াচ্যাপলের ফিস্ট এণ্ড মিস্টি রেস্টুরেন্টে আলোচনা সভা ও মধ্যাহ্ন ভোজ অনুষ্ঠিত হয়।
ফারহান মাসুদের উপস্থাপনায় বক্তব্য রাখেন বক্তব্য রাখেন টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের স্পিকার সায়েফ উদ্দিন খালেদ, বিবিসিসিআই প্রেসিডেন্ট সাইদুর রহমান রেনু, লন্ডন-বাংলা প্রেসক্লাবের প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ জুবায়ের, বিবিসিসিআই সাবেক প্রেসিডেন্ট বশির আহমাদ, বিসিএর প্রেসিডেন্ট ওলি খানসহ কমিনিটির নেতৃবৃন্দ।
জানা যায়, ফ্রিডম অফ দ্য সিটি অফ লন্ডন এওয়ার্ড ১২৩৭ সাল থেকে চালু হয়। সেই হিসাবে এই এওয়ার্ড ব্রিটেনের একটি অন্যতম পুরাতন ও ঐতিহ্যবাহী এওয়ার্ড। সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য বহু গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদেরকে ইতিপূর্বে এই এওয়ার্ডে ভূষিত করা হয়েছে। যাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন রাণী দ্বিতীয় এলিজাবেথ। জন ক্যারি, ভান মরিসন, ড্যামি মারি পিটার্স, শাবানা আজমি, লর্ড মেয়র প্রফেসর মাইকেল ম্যানেলিলি, হাইড-স্টেলিব্রিজের এমপি জোনাথান রেনাল্ড প্রমুখ।
উল্লেখ্য মিজানুর রহমান মিজান গত ২৫ বছর থেকে ইলেক্ট্রোনিক মিডিয়ার সাথে সাংবাদিকতায় যুক্ত রয়েছেন। ১৯৯৯ সাল থেকে ২০০৭ পর্যন্ত বাংলা টিভি ও তারপর থেকে চ্যানেল এস এ তিনি বাংলাদেশী কমিউনিটির সংবাদ প্রচারের মধ্য দিয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে আসছেন।
মিজানুর রহমান মিজান বাংলাদেশের ক্রীড়াজগতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। সিলেট পাইলট স্কুলে থাকাকালীন সময় থেকে হকি খেলা শুরু করেন। মৌসুমী ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম। দীর্ঘদিন সিলেট মৌসুমী ও জেলা দলের হয়ে খেলেছেন।
১৯৮২ সনে খেলোয়াড় হিসাবে ঢাকা মোহামেডান ক্লাবে যোগ দেন। দুই বছর মোহামেডানে খেলার পর আবাহনীতে দীর্ঘদিন সুনামের সাথে খেলেছেন। সর্বশেষ ১৯৯০ সনে তিনি আবাহনী ক্রীড়াচক্রের ক্যাপ্টেনের দায়িত্ব পালন করেছেন।
হকি দলের খেলোয়াড় হিসাবে জাতীয় ইন্ডিয়া, পাকিস্তান, শ্রীলংকা ও মালয়েশিয়া সহ বিভিন্ন দেশের বিরুদ্ধে খেলে দেশের জন্য সম্মান বয়ে এনেছেন। এ ছাড়া মিজান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়র হয়ে ১৯৮৭/৮৮ সনে আন্ত: বিশ্ববিদ্যালয় হকি সুনামের সাথে খেলেন।
সিলেটের মিরা বাজার, আগ পাড়ায় দীর্ঘ ৬০ বছর যাবৎ স্থায়ীভাবে বসবাস করে আসছেন।
১৯৯১ সালে দেশ ছেড়ে ব্রিটেনে স্থায়ীভাবে এসে গ্রেটার ম্যানচেস্টারের ডাকিনফিল্ডে পরিবার নিয়ে বসবাস করে আসছেন।
বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদ মিজান বাল্যকাল থেকেই নিজেকে চ্যারিটি কর্মকান্ডে যুক্ত রেখেছেন। লন্ডনে ২০০৬ সালে আগপাড়া মসজিদের তহবিল সংগ্রহ করেন, তারপর ২০০৭ সালে জাস্ট হেল্প ফাউন্ডেশন গঠন করে দেশে বিদেশে আর্ত মানবতার কল্যাণে কাজ করে আসছেন।
২০১২ সালে সিলেটের গোয়াইনঘাঠে জাস্ট হেল্প আই হসপিটাল নির্মাণ দুঃস্থ মানবতার সেবায় একটি কার্যকর অবদান। বর্তমানে সিলেট প্রাইড রোটারীর সাথে যৌথ পরিচালনায় হসপিটাল পরিচালিত হচ্ছে। স্কুল জীবন থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য তিনি শতাদিক পুরস্কার পেয়েছেন।
এওয়ার্ড প্রাপ্তিতে মিজানুর রহমান তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, “আমি আমার এই সম্মানজনক এওয়ার্ড প্রাপ্তিতে মহান সৃষ্টিকর্তার কাছে শুকরিয়া আদায় করি, আল্লাহ আমাকে মানবতার জন্য কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছেন। আমাকে যিনি এই এওয়ার্ডের জন্য নমিনেট করেছেন, তাকে আমি আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।সেই সাথে আমার পরিবারের সদস্য, বন্ধুবান্ধব, শুভাকাঙ্খীসহ ব্রিটেন ও ইউরোপের বিভিন্ন কমিউনিটির সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা। আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া জাষ্ট হেল্প ফাউন্ডেশনকে এতদূর এগিয়ে নেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব না। যতদিন পর্যন্ত সৃষ্টিকর্তা আমাকে সুস্থ শরীরে বহাল তবিয়তে রাখবেন, ততদিন আমি আর্ত মানবতার সেবায় কাজ করে যাবো।”
তিনি সবার কাছে দোয়া প্রার্থী।