নিউজ

প্রধানমন্ত্রীর ঘন ঘন বিদেশ সফরের উদ্দেশ্য প্রশ্নবিদ্ধ!

সুরমা ডেস্ক: বাংলাদেশের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশাল লটবহর নিয়ে জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফর শেষে দেশে ফিরে যেতে না যেতেই আবার বিশাল লটবহর নিয়ে তিন দিনের সফরে তিনি কাতার সফরে গেছেন। গত তিন মাসের মধ্যে এটা তাঁর দ্বিতীয় কাতার সফর। সোমবার (২২ মে) কাতার ইকোনমিক ফোরাম-২০২৩-এ যোগ দিতে তিনি চাটার্ড ফ্লাইটে কাতারের দোহায় গেছেন। প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফর সঙ্গীদের নিয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ভিভিআইপি ফ্লাইট বিকেল ৩টা ১৩ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করে। স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ৩২ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফর সঙ্গীদেরকে বহনকারী বিমান হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এ সময় কাতারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নজরুল ইসলাম বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান। এবারের সফরে কাতার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তাঁর একটি ভাষণ দেবার কথা আছে। সেই ভাষণ শোনার জন্য ও হাত তালি দেওয়ার জন্য তিনি দেশ থেকে বিশাল এক লটবহর সাথে নিয়ে গেছেন। ক্ষমতার শেষ সময়ে এসে তিনি তাঁর অবৈধ ক্ষমতার সঙ্গী সাথীদের নিয়ে প্লেজার ট্রিপে যেতে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। যেখানে অর্থমন্ত্রী বা অর্থসচিবকে পাঠালেই হয়, সেখানেও তিনি বিশাল লটবহর নিয়ে নিজেই যাচ্ছেন। যেখানে পররাষ্ট্র সচিব বা পররাষ্ট্র মন্ত্রীকে পাঠালেই হয় সেখানেও বিশাল লটবহর নিয়ে তিনি নিজেই যাচ্ছেন। অবৈধভাবে ক্ষমতায় থেকে অর্থ অপচয়ের মচ্ছব করছেন। অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকতে যারা তাকে সহযোগিতা করছেন, তাদেরকেও তিরি তাঁর প্লেজার ট্রিপে সঙ্গী করছেন। এর আগে তিনি তাঁর নৈশ ভোটের সহযোগিদের পুকুর খনন শেখা, খাল খনন শেখা, মৎস্য চাষ শেখা, সড়ক উন্নয়ন, খিচুড়ি রান্না এবং সুউচ্চ ভবন তৈরি শেখা ইত্যাদি নানা প্রশিক্ষণের নামে বহুবার বিদেশ ভ্রমণ করার সুযোগ করে দিয়েছেন এবং কেউ কেউ বারবার এই সুযোগ পেয়েছেন। কিন্তু সেই প্রশিক্ষণের তেমন বাস্তব লাভ কতটুকু হয়েছে, তার হিসাব কারও কাছেই নেই। জনগণের করের টাকায় সরকারি এসব অদ্ভুত বিদেশ সফর নিয়ে এত আলোচনা-সমালোচনা হওয়ার পরও তা হয়নি।

অভিযোগ আছে, অবৈধ প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতায় টিকে থাকতে যেসব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক ও দলীয় নেতা-কর্মীরা সাহায্য করে থাকেন এবং যারা প্রধানমন্ত্রীর চাটুকারিতা করেন বিদেশ সফরে তিনি তাদেরকেই বেশি অন্তর্ভুক্ত করেন। অথচ সরকারের অর্থপ্রাপ্তির মূল জায়গাটি জনগণ। জনগণের টাকায় প্রধানমন্ত্রী ও সরকারের কর্মকর্তারা বেতন পান, ভাতা পান, অফিসের খরচ পান। সেই টাকায় আবার যদি বিদেশ সফরের নামে অপচয় করার সুযোগ পান, তবে তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন তৈরি হওয়াটা স্বাভাবিক।

এর আগে গত মার্চে এলডিসি ৫ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার জন্য কাতারে গিয়েছিলেন অবৈধ প্রধানমন্ত্রী। তাঁর এবারের সফর সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর দ্বিতীয় কাতার সফর আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের দৃশ্যমান উপস্থিতির প্রতীক। কী হাস্যকর কথা! কোনো প্রটোকল নাই। মান সম্মান নাই। তারপরও দেশে (বাড়িতে) তাঁর মন বসে না।

দেশের সচেতন নাগরিক সমাজ অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর  অনর্থক ঘন ঘন বিদেশ সফরের নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, অনর্থক বিদেশ সফর মানে জনগণের করের টাকার অপচয় ছাড়া কিছুই নয়। এভাবে অহেতুক বিশাল লটবহর নিয়ে ঘন ঘন বিদেশ সফরে না গিয়ে রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় বন্ধ হোক। ডলার সংকটে দেশের ব্যবসায়ীরা যখন আমদানী করতে পারছেন না, তখন গরীব দেশের প্রধানমন্ত্রীর বিশাল লটবহর নিয়ে চাটার্ড ফ্লাইটে এরকম ঘন ঘন বিদেশ সফরের ফুটানি মানায় না। তাঁরা আরও বলেন, প্রয়োজন থাকলে প্রধানমন্ত্রী বা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবশ্যই বিদেশে যেতে হবে। কিন্তু অপ্রয়োজনে বা যেসব কাজ দেশে বসে জুম মিটিংয়ে করা সম্ভব, সেগুলোর জন্য বিদেশ যাওয়ার প্রয়োজন কী? আমরা প্রত্যাশা করি, যেন রাষ্ট্রীয় অর্থে সব ধরনের অপ্রয়োজনীয় বিদেশ সফর বন্ধ হয় এবং প্রয়োজনীয় বিদেশ সফর থেকে অর্জিত অভিজ্ঞতা রাষ্ট্রীয় সেবার মান উন্নয়নে কাজে লাগে।  

Sheikhsbay

Related Articles

Back to top button
Close
Close