পেট্রোলের দাম দ্বিগুণ: যুদ্ধের মাশুল কেন দিবে বিশ্ববাসী
এ সপ্তাহের সম্পাদকীয় || ইস্যু ২২৫৮
রাশিয়ার চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধ চলছে মাসের পর মাস। ইউক্রেনের শহর-জনপদ-সমুদ্র-বন্দর আর বিমানবন্দর ধ্বংস করে যুদ্ধের উল্লাসে দিন কাটছে ভ্লাদিমির পুতিনের। পশ্চিমারা এই যুদ্ধে ইউক্রেনকে সর্বাত্মক সহায়তা করছে। পুতিনের যুদ্ধ উৎসব অবিরাম চলছে। আর পশ্চিমাদের সহায়তায় ইউক্রেন তার ভূখণ্ডকে অধিকৃত বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত রাখতে দিনের পর দিন লড়াই করে চলেছে। দুটোই লক্ষণীয়। কিন্তু জনদুর্ভোগের কথা চাপা পড়ে গেছে সবকিছুর নিচে। লণ্ডনে পেট্রোলের দাম প্রতি লিটার এখন প্রায় দ্বিগুণ, এক পাউন্ডের পেট্রোল চলতি সপ্তাহে দুই পাউন্ডে পৌঁছেছে। প্রতিযোগিতা দিয়ে অবিশ্বাস্যভাবে সকল পণ্যের মূল্য বেড়ে চলেছে। শুধু যুক্তরাজ্য নয়, ইউরোপ আমেরিকা থেকে শুরু করে সারা বিশ্বেই তেলের মূল্য বাড়ার পর কাঁচামাল আমদানি রপ্তানি বা শিল্প পণ্যের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে ব্যাপক এবং অবিশ্বাস্য মূল্যস্ফীতির খপ্পরে পড়েছে বিশ্ববাসী। যুদ্ধের দায় পরিশোধ করছে রাশিয়া ইউক্রেন আর ন্যাটোর সদস্যরা। কিন্তু নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য ও খাদ্য সামগ্রীর অবিশ্বাস্য মূল্যস্ফীতির দায় কে শোধ করবে? জনদুর্ভোগ নিয়ে আলোচনার সময় জাতিসংঘের নেই। বিশ্বের ৬০০ কোটি মানুষের ভোগান্তি নিয়ে তাহলে আলোচনা হবে কোথায়? বিশ্বের মোড়লদের যুদ্ধ যুদ্ধ খেলার আড়ালে পড়ে থাকছে এই অমানবিক এক বৈশ্বিক বাস্তবতা। আলোচনা জারি থাকা দরকার। যুদ্ধ আর যুদ্ধবাজ বিশ্ব নেতাদের অপকর্মের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া দরকার। এটি কোন দেশের বিষয় নয়, বিশ্বের প্রত্যেকটি দেশের টানাপোড়নের শিকার বেশিরভাগ মানুষের বাঁচা মরার প্রশ্ন।
নিশ্চয়ই যুদ্ধ বন্ধ হবে নিকট ভবিষ্যতে। কিন্তু এই অবিশ্বাস্য রকমের মূল্যস্ফিতিকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরত আনবে কে বা কারা কিংবা কিভাবে? এই প্রশ্নগুলো সকল পক্ষ থেকেই আলোচনার সূত্রপাত এবং কঠিনভাবে অব্যাহত রাখা দরকার। চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধের চেয়ে ধরে জনদুর্ভোগের সমাধান না পাওয়া পর্যন্ত জোরদার আলোচনা অব্যাহত রাখা অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি জরুরী।