কমিটির দাবিতে নানক-নাসিমের গাড়ি আটকে দিলো ছাত্রলীগ

লন্ডন, ৫ ডিসেম্বর: কমিটির দাবিতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের পথ রুদ্ধ করেছে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ। গতকাল রবিবার রাত ১১টার দিকে ধানমণ্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ের কাছে এই ঘটনা ঘটে। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের চলমান বিক্ষোভের মুখে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে সাইন্সল্যাব মোড় পার হয়েছেন তারা৷
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা কমিটির দাবিতে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম ও সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হকের পথ রুদ্ধ করেন। পরে কেন্দ্রীয় নেতারা বিক্ষুব্ধ কর্মীদের নিয়ে রাজনৈতিক কার্যালয়ের দিকে যান।
এর আগে রাত ১০টার দিকে একই দাবিতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়কে নিউমার্কেট এলাকায় অবরুদ্ধ করেন ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা কলেজের কমিটি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন ছাত্রলীগ সভাপতি।
পরে জাহাঙ্গীর কবির নানকের আশ্বাসে সোয়া ঘণ্টা পর রাস্তা অবরোধ প্রত্যাহার করে ছাত্রলীগ কর্মীরা।
এ ব্যাপারে ছাত্রলীগ নেতা মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন কমিটির জন্য অপেক্ষা করেছি৷ কিন্তু কমিটি না হওয়ায় এখন আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে৷ এজন্য রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়েছি৷’
উল্লেখ্য, গত এক দশকে দুবার (২০১২ ও ২০১৭ সাল) ছাত্রলীগের কমিটি হয়েছিল ঢাকা কলেজে। দুবারই অপ্রীতিকর ঘটনায় সেই কমিটি ভাঙতে হয়েছে। এর মধ্যে প্রায় এক দশক পর ২০১২ সালের ৪ অক্টোবর ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের ৫৫ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। ওই কমিটিতে ফুয়াদ হোসেন ওরফে পল্লবকে সভাপতি ও সাকিব হাসান ওরফে সুইমকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। একটি ছিনতাইয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২০১৩ সালের ২৯ নভেম্বর রাতে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে আসাদুজ্জামান আল ফারুক নামের এক ছাত্র নিহত হন। এর পরদিনই ঢাকা কলেজ শাখার কমিটি স্থগিত এবং সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ সাত নেতাকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।
এরপর প্রায় তিন বছর ঢাকা কলেজে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি ছিল না। ২০১৬ সালের ১৭ নভেম্বর নূরে আলম ভূঁইয়া ওরফে রাজুকে আহ্বায়ক করে তিন মাসের জন্য আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এর দুই মাসের মাথায় ২০১৭ সালের ২২ জানুয়ারি ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আহ্বায়ক নূরে আলম ও যুগ্ম আহ্বায়ক হিরণ ভূঁইয়ার অনুসারীরা সংঘর্ষে জড়ান। সংঘর্ষের সময় কলেজের ছাত্রাবাসের কয়েকটি কক্ষ ভাঙচুর এবং সাতটি মোটরসাইকেলে আগুন দেন নেতা-কর্মীরা। ওই ঘটনায় সেদিনই আহ্বায়ক নূরে আলম ও যুগ্ম আহ্বায়ক হিরণ ভূঁইয়াসহ ঢাকা কলেজ কমিটির ১৯ নেতাকে বহিষ্কার করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এ কমিটি বিলুপ্ত বা স্থগিত না করা হলেও ক্যাম্পাসে ‘বিলুপ্ত কমিটি’ হিসেবে পরিচিতি পায়।
২০১৭ সালের ওই ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত ঢাকা কলেজে ছাত্রলীগের আর কোনো কমিটি হয়নি।