রয়েল লণ্ডন হসপিটাল প্যাশেন্ট এণ্ড ফেমেলি গ্রুপের সংবাদ সম্মেলন
সঠিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে ব্রিটিশ-বাংলাদেশীদের সোচ্চার হওয়ার আহবান
।। সুরমা প্রতিবেদন ।।
লণ্ডন, ২৯ জানুয়ারী – সম্প্রতি রয়েল লণ্ডন হসপিটালে বিরুদ্ধে একজন বাঙালি বৃদ্ধার পরিবারের পক্ষ অযত্ন-অবহেলার অভিযোগ ওঠার পর আরো কিছু পরিবার বিষয়টিতে সোচ্চার হয়েছেন। তারা দাবী করেন, এভাবে আরো অনেক ব্রিটিশ-বাংলাদেশী তথা মুসলমান পরিবারের বয়োবৃদ্ধরা নানাভাবে অযতœ-অবহেলার শিকার হয়েছেন বলে তারা বিভিন্নভাবে জেনেছেন। অন্যান্য কমিউনিটির তুলনায় স্বাস্থ্যসেবায় ব্রিটিশ-বাংলাদেশ তথা মুসলমানরা বৈষম্যের শিকার বলেও দাবী করেন তারা। কিন্তু এসব ব্যাপারে সঠিকভাবে অভিযোগ দায়ের তথা এসবের কারণ বের করা বা প্রতিকার সম্পর্কে সঠিক ধারণা না থাকায় অনেকেই তা এড়িয়ে গেছেন।
গত ২৬ জানুয়ারী, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাংলা মিডিয়ার সাথে অনুষ্ঠিত এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ উত্থাপন করেন ব্রিটিশ-বাংলাদেশী কমিউনিটির কয়েকজন। তারা আরো বলেন, বিভিন্ন সময় দেখা গেছে যে, জুইস ও এলজিবিটি কমিউনিটির ক্ষেত্রে এনএইচএস‘র সেবার মানের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনা এবং কিছু ঘটলেও এসব কমিউনিটির লোকজন সোচ্চার হন। কিন্তু এক্ষেত্রে মুসলিম বা ব্রিটিশ-বাংলাদেশী কমিউনিটির পক্ষ থেকে এসব ব্যাপারে প্রতিকার চাওয়া বা সঠিক সেবা পেতে প্রয়োজনী লবিং করতে দেখা যায় না। তারা বিষয়টি সম্পর্কে ব্রিটিশ-বাংলাদেশী তথা মুসলিম কমিউনিটিকে এখনই সোচ্চার হওয়ার আহবান জনান। একই সাথে কমিউনিটিতে বিরাজমান এসব সমস্যা লাঘবে তারা সর্বাত্মক সহযোগিতা করবেন বলেও জানান।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন সম্প্রতি রয়েল ল-ন হসপিটালে অবহেলার শিকার জহুরা বিবির ছেলে এবং রয়েল লণ্ডন হসপিটাল প্যাশেন্ট এ- ফেমেলি গ্রুপের চেয়ারপার্সন আব্দুল দায়াছ। এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দাতব্য সংস্থা ইডেন কেয়ার ইউকের আব্দুল মুনিম, সাবেক কাউন্সিলার আবজল মিয়া ও সুরত মিয়া । তারা জানান, অতীতে অনেক এধরনের বৈষম্যের শিকার হয়েছে বলে তাদের জানা। তারা বলেন, আমাদের বয়স্করা ভাষা সমস্যার কারণে অনেককিছু তারা বুঝিয়ে বলতে পারেন না। এক্ষেত্রে তাদের সাহায্যের জন্য পরিবারের কাউকে পাশে থাকার অনুমতির পাশাপাশি তাদের সমস্যা আন্তরিকভাবে শোনার ও সমাধানের চেষ্টার বিষয়টি গুরুত্ব দেওয়ার উপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা কমিউনিটিকে সাথে এই ইস্যুতে কাজ করার ইচ্ছার কথা জানান।
উল্লেখ্য, দায়িত্বরত স্টাফদের অযত্ন, অবহেলার কারণে প্রায় মৃত্যুপথযাত্রী হয়ে পড়েছিলেন বাংলাদেশী বৃদ্ধা জহুরা বিবি। বিষয়টি নিয়ে পরিবারের সদস্যরা হাসপাতালের স্টাফদের সাথে ব্যাপক বাকবিতণ্ডা করার পর পরিবারের কথামতো সেবাযত্ন নিলে ওই বৃদ্ধার শারীরিক অবস্থা অনেকটা স্বাভাবিক হয়। অতঃপর তাকে ঘরে নিয়ে আসা হয়। জহুরা বিবির ছেলে আব্দুল দায়াছ তার মাকে ঠিকমতো যত্ন তথা সময়মতো খেয়াল করে খাবার-দাবার না দেবার অভিযোগ তুলেন। তিনি বিষয়টি সম্পর্কে ইতোমধ্যে এনএইচএস‘র সংশ্লিষ্ট বিভাগে অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি মিনিস্ট্রি অফ ডিপার্টমেন্ট, স্থানীয় এমপি, লণ্ডন মেয়র সাদিক খান ও টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়রসহ ব্রিটিশ মেইনস্ট্রিম ও বাংলা মিডিয়ায় বিষয়টি উপস্থাপন করেছেন।
এ সম্পর্কে এনএইচএস‘র কর্তৃপক্ষের সাথে সুরমার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা করা হলে তারা বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে জানানো হয়।