আন্তর্জাতিক শেয়ার বাজারে কেনা বেচা: সহজ পাঠ


শেখ আহমেদ
লেখক: বিশ্লেষক ।। এক্টিভিস্ট
সাপ্তাহিক সুরমার সম্পাদকীয় অনুরোধে রচিত এই পর্বগুলো অনুসরন করলে এ বিষয়ে আপনি প্রাথমিক ধারনা লাভ করতে সক্ষম হবেন। এই কলামের এ পর্যন্ত পড়ার জন্য জন্য ধন্যবাদ। আমি নিশ্চিত আপনি এর প্রতিটি পর্ব পছন্দ করতে যাচ্ছেন!
আমি এটা কিভাবে জানি?
ওয়েল, আমি প্রচুর ট্রেডিং এডুকেশন শিক্ষার্থীদের সাথে কাজ করছি এবং আমি প্রতিদিনই তাদের প্রতিক্রিয়া পাই। আমাদের কিছু শিক্ষার্থী যারা একেবারে কোনও রকম অভিজ্ঞতা ছাড়াই প্রশিক্ষন নিয়ে ট্রেডিং শুরু করেছিলেন তারা এখন ট্রেডিং থেকে ধারাবাহিক লাভ করছেন।
আমি নিশ্চিত যে আপনি যদি লক্ষে অবিচল থাকেন তাহলে একসময় ট্রেডিং এর কলা কৌশল রপ্ত করতে পারবেন এবং যে অবস্থানে যেতে চান শেখানে পৌঁছাতে পারবেন। তাহলে শুরু করা যাক। শেয়ার মার্কেট বুঝার আগে আপনাকে ফাইনানশিয়াল মার্কেট এবং এই মার্কেটের প্রোডাক্ট গুলো ভাল করে বুঝতে হবে।
ফাইনান্সিয়াল মার্কেট বা আর্থিক বাজারের পরিচিতি:
ফাইনান্সিয়াল মার্কেট হল এমন জায়গা যেখানে সাধারন মানুষ এবং বিভিন্ন কোম্পানি শেয়ার, বণ্ড, কমোডিটিস (পণ্য), সুচক এবং অন্যান্য প্রোডাক্ট যেগুলোকে এক কথায় এসেট বলা হয়, তা ক্রয়-বিক্রয় করতে আসে মানুষ শত শত বছর ধরে ফাইনান্সিয়াল মার্কেট বা আর্থিক বাজারে ব্যবসা করে আসছে, অনেকটা না জেনেই। শুরুটা প্রাচীন মিশরে হয়েছিল বলে অনেকে মনে করেন। এর পেছনে ছিল দৈনন্দিন জীবনের বাস্তব প্রয়োজন থেকে উদ্ভূত কারণ। সভ্যতার বিকাশের সাথে সাথে মানুষ চেয়েছে আরও দক্ষতার সাথে পন্যের হাতবদল, লোকদের মাঝে জিনিস কেনা ও বেচা করতে সহায়ক মাধ্যম গুলো এক সময় জনপ্রিয় হয়ে উঠল এবং শিল্প বিপ্লবের প্রথম দিকে কোম্পানিগুলো উতপাদন বাড়ানোর জন্য তারল্যের প্রয়োজন বোধ করলে তাদেরকে দ্রুততার সাথে অর্থের যোগান দেয়ার প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই হালের শেয়ার বাজারের জন্ম হয়।
বছরের পর বছর ধরে, মার্কেটগুলি বড় হয়েছে এবং এর বিস্তৃতি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। আগের তুলনায় আরও বেশি লোক এখন এই বাজারগুলিতে অ্যাক্সেস পেতে সক্ষম। একসময় শেয়ার মার্কেট বলতেই বোঝাত বড় ব্যাংক, ফিনান্স হাউস এবং খুব ধনী ব্যক্তিদের সংরক্ষিত এলাকা, কিন্তু প্রজুক্তির বিস্তারের সাথে সাথে তাদের সেই একচেটিয়া দিন আর নেই। নব্বই দশকে তথ্য প্রযুক্তি আসার আগে শেয়ার বাজারে ঢুকতে হলে কমপক্ষে দশ হাজার পাউণ্ড লিকুইড মানি থাকা লাগত, আর এখন আপনি মাত্র দুশো পাউণ্ড খরচ করলেই একাউন্ট ওপেন করতে পারেন এবং ট্রেডিং শুরু করতে পারেন।
শুরুতেই বলে নেয়া ভালো আপনি যখন প্রথমে এর সুলুক সন্ধান শুরু করবেন তখন ফাইনান্সিয়াল ট্রেডিং আপনার কাছে খুবই কনফিউজিং বা বিভ্রান্তিকর মনে হতে পারে। ঘাবড়াবেন না। আমরা আপনার সাথেই আছি। আপনি এআপনার চারপাশে যারা ফাইনান্সিয়াল ট্রেডিং নয়ে কাজ করে তাদের কাছ থেকে প্রচুর জারগন শুনতে পাবেন। কিছু কিছু আপনি সজেই বুঝবেন যেমন ইন্টারেস্ট রেইট বা সুদের হার, ব্রোকার, কমডিটি বা পণ্য এবং ডিভিডেন্ট বা লভ্যাংশের মতো কিছু মোটামুটি স্বীকৃত শব্দাবলী। তবে এমন কিছু শব্দও আপনি শুনবেন যা আপনি এর আগে কখনও শুনেন নি, যেমন লং স্ট্রাংগল, EBITDA বা ইচিমোকু ক্লাউড ইত্যাদি।
তবে এই সব টারমিনলোজি বা পরিভাষার বাইরে একটি মূল নীতি বা কোর প্রিন্সিপল আছে যার উপরে পুরো ফাইনান্সিয়াল ট্রেডিং দাঁড়িয়ে আছে। অর্থাৎ এটাই হল তার ভিত্তিমূল। কি সেটা? প্রেডিক্টিং হোয়েদার সামথিং উইল গো আপ ইন প্রাইস, অর ডাউন। ভবিষ্যদ্বাণী করা যে কোনও কিছু দামে বা কমবে কিনা। আপনি যদি এটি সঠিকভাবে করতে পারেন তবে দারুন লাভের সুযোগ রয়েছে। তবে যদি হিসাব নিকাশে ভুল হয়ে যায় তবে এর জন্য চড়া মাশুল দিতে হতে পারে এবং আপনি প্রচুর অর্থ হারাতে পারেন।