কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন: ১০ বিলিয়ন ডলারের তহবিল
লণ্ডন, ৩o মে – কোভিড-১৯ প্রতিরোধে ভ্যাকসিন এবং ওষুধ আবিষ্কারের জন্য বৈশ্বিক প্রচেষ্টায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এ পর্যন্ত ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি তহবিল সংগ্রহ করেছে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা ভাইরাসের প্রতিষেধক উন্নয়নের প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকার জন্য বিভিন্ন ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের অব্যাহত প্রচেষ্টার মধ্যেই এই তহবিল সংগৃহিত হলো। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডান লিয়েন মঙ্গলবার টুইটারে বলেছেন, ‘ইউ’র নেতৃত্বে ভাইরাস মোকাবেলায় প্রতিষেধক উন্নয়নের এই ম্যারাথনে বিশাল ফলাফল অর্জনের মাধ্যমে পথিকৃত হওয়ার অঙ্গীকার নিয়ে এই বৈশ্বিক উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’
এর আগে যুক্তরাষ্ট্র শুরুতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই পদক্ষেপ এড়িয়ে যায়, তা সত্তে¡ও ৪ মে পর্যন্ত বিশ্বনেতা এবং অন্যান্য ইনস্টিটিউশন থেকে সংগৃহীত তহবিলের পরিমান দাঁড়ায় ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বিশ্বে প্রায় ১০০টি ভ্যাকসিন বিভিন্ন পর্যায়ে পরীক্ষাধীন রয়েছে, বিশেষজ্ঞদের ধারণা ওষুধ প্রস্তুতকারী অথবা গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর অব্যাহত প্রচেষ্টায় এই প্রতিযোগিতায় একটি নয় অনেকগুলো প্রচেষ্টা সফল হতে পারে। এর প্রেক্ষিতেই ইইউ তাদের এই উদ্যোগের কথা জানিয়েছে।
‘এই প্রতিযোগিতায় একের অধিক বিজয়ী হতে পারে’ উল্লেখ করে বøুমবার্গের এক বিশ্লেষক বলেছেন, অনেকগুলো ভ্যাকসিন খুবই কার্যকর মনে হচ্ছে এমনকি কম কার্যকর একটি ড্রাগও বিপুল জনগোষ্ঠীকে হার্ড ইমিউনিটি জোগাতে যথেষ্ট কার্যকর হতে পারে।
অন্যান্য ভ্যাকসিন বিশেষ করে রোগীদের সেবায় নিয়োজিত হেলথ কেয়ার কর্মীদের যথাসম্ভব দ্রæত সুরক্ষার জন্য বেশি কার্যকর হতে পারে।
ভ্যাকসিন গবেষণায় যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় হার্ভাডের ভ্যাকসিন গবেষক ড্যান বারোস বলেছেন, ‘আমরা যদি শেষ পর্যন্ত দুই, তিন অথবা চারটি কার্যকর ভ্যাকসিন পাই বিশ্বব্যাপী ৭শ’ কোটি লোকের জন্য এগুলোই যথেষ্ট হবে।’
মিডিয়া রিপোর্টে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান মডেরনার ভ্যাকসিনের হিউম্যান টেস্টে আশাব্যাঞ্জক ফলাফল পাওয়া গেছে, গত সপ্তাহে কোম্পানিটি এক ঘোষণায় বলেছে, ৪৫ জন রোগীর ওপর তারা এই টেস্ট করেছে, এতে সকলের দেহে করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার এন্টিবডি তৈরি হয়েছে।
কিছু বিপত্তি সত্তে¡ও জুলাই মাসে দ্বিতীয় পর্যায়ে ক্লিনিক্যাল টেস্টে যাওয়ার মাধ্যমে প্রতিযোগিতায় মডেরনা সম্মুখ অবস্থানে রয়েছে।
অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা বলেছেন, ফার্মা জায়ান্ট এসট্রাজেনিকার সাথে যৌথভাবে সমীক্ষা কার্যক্রম জোরদার করার মাধ্যমে তারা আশা করছে, তাদের পরীক্ষামূলক তৎপরতা থেকে ধারণা করা হচ্ছে যে, সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকেই তারা কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের ১ মিলিয়ন ডোজ তৈরি করতে পারবে পারবে।
অক্সফোর্ড প্রফেসর অব মেডিসিন স্যার জন বেল মঙ্গলবার বলেছেন, বৃটেনের ‘কয়েক শত’ নাগরিকের ওপর এখন পরীক্ষামূলক ফলাফল আশার সঞ্চার করেছে যে, মধ্য জুনে তাদের ভ্যাকসিন কার্যকর হতে পারে।
ভ্যাকসিন তৈরিতে চীনের অবস্থান দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে, তাদের কোম্পানিগুলো বর্তমানে ৫টি ভ্যাকসিনের টেস্ট করছে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং অঙ্গীকার করেছেন, তাদের প্রচেষ্টায় সফল যে কোন ভ্যাকসিন তারা বিশ্বের সঙ্গে শেয়ার করবেন।
একাধিক বিশেষজ্ঞ বলেছেন, চীনের কানসিনো বায়োলজিস ইনক বৈশ্বিক ভ্যাকসিন প্রতিযোগিতায় নতুন শক্তিশালী প্রতিযোগী।