।। আরিক শামস ।।
আগামী ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য বাংলাদেশের দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের প্রতারণা (ভাষান্তরে প্রচারণা; প্রতিপক্ষ না থাকায় এটাকে নির্বাচনী প্রতারণা হিসেবেই দেখা হচ্ছে) বুধবার সিলেটের জনসভার মাধ্যমে শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একদলীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয় ও ব্যয়বহুল এই জনসভার আয়োজনকে ঘিরে নানা প্রশ্ন উঠেছে।
রাজনীতি বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যে নির্বাচনে প্রতিপক্ষ নাই, তার জন্য কোন প্রচারণার প্রয়োজন হয় না। সুতরাং এক দলীয় নির্বাচন যেখানে কোন প্রতিপক্ষের অস্তিত্বই নেই, সেখানে নির্বাচন ঘিরে এই প্রচারকে প্রচারণা না বলে প্রতারণা বলাই সঙ্গত। কারণ এর আসল উদ্দেশ্য, নির্বাচনী মেনিফেস্টোর পক্ষে প্রচারণা বা জনমত গঠন নয়। বরং কোটি কোটি ভোটারের সামনে নির্বাচনী আবহ তৈরি করে প্রকৃত চিত্র আড়াল করার চেষ্টা। দলীয় কর্মী বা ভোটাররা জানেন হাসিনা ক্ষমতায় টিকে থাকতে তার সমর্থন বা ভোটের কোনো প্রয়োজন হবে না। ফলাফল প্রধানমন্ত্রী যেভাবে চাইবেন, সেভাবেই হবে। তবে আওয়ামী লীগের জন্য তিনি ২৫০ নাকি ২৯০ আসন রাখবেন, সেটা একমাত্র তাঁর ইচ্ছার উপর নির্ভর করবে। ভোটারদের ইচ্ছার উপর নয়।
সিলেটের নির্বাচনে জনসভায় অন্যানের মধ্যে শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা ও সিলেটের “নবনির্বাচিত” মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
সিলেটের পবিত্র নগরী থেকে ভোটারদের বিভ্রান্ত করার এই প্রতারণা বা প্রচারণাকে অনেকেই সিলেটবাসী কৌতুকের বিষয় হিসেবেই দেখেছেন বলে জানা গেছে। সমালোচকরা আরও বলছেন, শাসক দল যতই এটাকে নির্বাচন দাবি করুক না কেন জনসাধারণের মধ্যে এই নির্বাচন নিয়ে কোন কৌতূহল আলোচনা উত্তেজনা কিংবা জয় পরাজয় কিংবা নির্বাচনের ফলাফল ফলাফল নিয়ে আলোচনা একেবারে শুন্যের কোঠায়।
এছাড়া শেখ হাসিনা তার দলের নেতাকর্মীদেরকে ডামি প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করিয়ে পশ্চিমা বিশ্বকে বিভ্রান্ত করতে যে কৃত্রিম নির্বাচনী আবহ তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন, তা নিয়েও দেশে-বিদেশে রসাত্মক আলোচনা চলছে। বলা হচ্ছে, এটা আসলে ডামি নির্বাচন, যার মাধ্যমে নির্বাচিত হবে একটি ডামি সরকার। তিনি হবেন ডামি প্রধানমন্ত্রী।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সকল আলোচনার পাশাপাশি শেখ হাসিনাকে গাজোড়ি (গায়ের জোরে প্রধানমন্ত্রী) হিসেবেও উল্লেখ করা হচ্ছে। আবার অন্যদিকে এই নির্বাচনকে “আমরা- আমরা” অর্থাৎ “আওয়ামরা- আওয়ামরা” ইত্যাদি বিশেষণ দেয়া হয়েছে।