নিউজ

কর্ণেল শহীদের কাছে হেরে গেলেন হাসিনা-সিদ্দিক গং

  • কর্ণেল শহীদ উদ্দিন খানকে ইন্টারপোলের ক্লিনচিট।
  • ইন্টারপোলের কাছেও ধরা খেলো হাসিনা সরকার।

সুরমা প্রতিবেদন: বাংলাদেশ আর্মির অত্যন্ত সৎ ও চৌকস অফিসার জনতার কর্ণেল খ্যাত ড. কর্ণেল (অব:) শহীদ উদ্দিন খান (পিএসসি) ও তার স্ত্রী এবং তাদের দুই মেয়েকে ক্লিনচিট দিলো ইন্টারপোল। ইন্টারপোলের এই ক্লিনচিটের মাধ্যমে কর্ণেল (অব:) শহীদ উদ্দিন খান (পিএসসি) ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দেশের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার নিরাপত্তা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল তারেক আহমেদ সিদ্দিক গং সরকারের সকল অভিযেোগ মিথ্যা প্রমাণিত হলো। সরকারের অবৈধ ও নানা অনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে যুক্ত না হওয়ায় হাসিনা-সিদ্দিক গং কর্ণেল  (অব:) শহীদ উদ্দিন খানের বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দায়ের করেছিলো। সবশেষে ইন্টারপোলের কাছেও হাসিনা সরকার ধরা খেলো। অবৈধ সরকারের প্রতিহিংসা ও হয়রানিমূলক মামলায় যা উল্লেখ করা হয়েছিলো তার কোনও ভিত্তি ছিলো না। এসব অভিযোগের সপক্ষে কোনও তথ্য প্রমাণও মেলেনি। দেশের আইন আদালত যে নিরপেক্ষ নয় এই নজিরবিহীন ঘটনার মাধমে তা আবার প্রমাণিত হলো। ড. কর্ণেল  (অব:)  শহীদ উদ্দিন খান (পিএসসি), তারঁ স্ত্রী ও তাদের দুই মেয়ের নামে বাংলাদেশ সরকার ইন্টারপোলে আবেদন করেছিলো। বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক আনীত অভিযোগ দীর্ঘ তদন্তে প্রমাণিত না হওয়ায়  আবেদনটিকে সম্প্রতি ইন্টারপোল খারিজ করে দিয়েছে। ড. কর্ণেল (অব:)  শহীদ উদ্দিন খান (পিএসসি) ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা ইন্টারপোলের নথিপত্র নিয়ন্ত্রণ কমিশন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিরপক্ষ তদন্তে নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন। ফলে ইন্টারপোলের রেড অ্যালার্ট গ্রেফতারি পরোয়ানা তালিকা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে কর্ণেল (অব:) শহীদ উদ্দিন খান (পিএসসি) ও তার পরিবারের সদস্যদের নাম। এমনকি ইন্টারপোলের পারসোনাল ডাটা প্রসেসিং প্রক্রিয়া সম্পর্কিত আইনের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ না হওয়ায় ইন্টারপোল ড. কর্ণেল (অব:)  শহীদ উদ্দিন খান (পিএসসি) ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্মন্ধে এ যাবত প্রাপ্ত সকল তথ্য ইন্টারপোলের ফাইল এবং ওয়েব সাইট থেকে মুছে ফেলেছেন। ইন্টারপোলের কাছে কর্ণেল (অব:) শহীদ উদ্দিন খানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইন্টারপোল জনাব খানকে এক পত্রের মাধ্যমে এই তথ্য জানিয়েছেন। ইন্টারপোলের ইতিহাসে এমন ঘটনা আগে ঘটেনি। ইন্টারপোলের ইতিহাসে এটি একটি নজিরবিহীন ঘটনা।

ইন্টারপোলের নথিপত্র নিয়ন্ত্রণ কমিশন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ড. কর্ণেল (অব:) শহীদ উদ্দিন খান (পিএসসি) কে দেয়া কমিশনের আট পাতার সিদ্ধান্তের কপিটি আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে। গত ৩০ মার্চ অনুষ্ঠিত কমিশনের ক্যামেরা অধিবেশনে ব্যাপক আলোচনা ও পর্যালোচনার ভিত্তিতে উক্ত সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে। সিদ্ধান্ত কপির উল্লেখযোগ্য অংশ সাপ্তাহিক সুরমা পাঠকদের জন্য এখানে তুলে ধরা হলো। সিদ্ধান্ত কপির ৫ নং প্যারাগ্রাফে বলা হয়েছে, আবেদনকারী (কর্ণেল শহীদ উদ্দিন খান) বাংলাদেশের একজন নাগরিক। NCB বাংলাদেশের অনুরোধে ইন্টারপোল আবেদনকারীর বিরুদ্ধে ১৯ জুন ২০১৯’এ কটি ‘রেড নোটিশ’ জারী করে এবং তা ১৭ আগস্ট ২০২০’এ পুনরায় হালনাগাদ করা হয়। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগগুলি হচ্ছে, (১) প্রতারণার উদ্দেশ্যে জালিয়াতি, (২) ২৮ এপ্রিল ২০১৯’এ অপরাধে সহায়তা বা প্ররোচণার অভিযোগে ঢাকা অতিরিক্ত  চীফ মেট্রোপলিটন মেজিস্ট্রেট আদালতের রায়ে ৫ বছরের সশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়, (৩) বে-আইনী অস্ত্র রাখার দায়ে অভিযুক্ত  যা, (৪) অস্ত্র আইনের ৬, ১৩, ১৪ ও ১৫ ধারার লংঘন এবং (৫) বাংলাদেশের জাল নোট এবং জাল দলিল রাখার অভিযোগে ৩০ জুন ২০১৯’এ ঢাকা মেট্রোপলিটন স্পেশাল ট্রাইবুনাল, ১ নং আদালত কর্তৃক গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করা হয়। ৬ নং প্যারাগ্রাফে বলা হয়েছে, মামলার বিবরণীতে বলা হয় যে, “০৮ অক্টোবর ২০০৯ থেকে ২৮ এপ্রিল, ২০১৯  পর্যন্ত সময়কালে সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী  মোঃ শহীদ উদ্দীন খান তার অন্যান্য সহযোগীদের সহায়তায় ৬১৩ শতক জমি প্রকৃত মালিকের অনুপস্থিতির সুযোগে জাল ও ভূয়া দলিলের মাধ্যমে দখল নেন এবং নিজে ভূয়া মালিক সেজে ঐ জমি ৩০ কোটি টাকায় বিক্রি করেন। এই কারণে তার বিরুদ্ধে ঢাকার অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটান মেজিস্ট্রেট আদালতে তার বিরুদ্ধে ‘বাংলাদেশ দন্ডবিধি’র ধারা ৪৬৮/১০৯ অনুযায়ী প্রতারণা ও জালিয়াতি’র মামলা দায়ের করা হয় ২৮ এপ্রিল, ২০০৯ তারিখে। বিচারে আদালত তাকে দোষী সাব্যস্ত করে ৫ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা প্রদান করে (অনাদায়ে আরো ৩ মাস কারাদন্ড)। পলাতক আসামীকে গ্রেফতার করার জন্য আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করে। ১৪ নং প্যারাগ্রাফে বলা হয়েছে, কমিশন পূনরায় মনে করে যে, রিভিশনের জন্য কোনো আবেদন কমিশন তখনই বিবেচনা করবে যদি আবেদনকারী নতুন কোনো সত্য তথ্য বা ইনফরমেশন কমিশনের সামনে উপস্থাপন করবে যেগুলি পূর্বের সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রাক্কালে যদি উপস্থাপিত হতো তাহলে সিদ্ধান্ত অন্যরকম হতে পারতো এবং নতুন তথ্য উদ্ঘাটিত হওয়ার ৬ মাসের মধ্যে কমিশনের কাছে পেশ করতে হবে আবেদনের সাথে। ১৫ নং প্যারাগ্রাফে বলা হয়েছে, অতএব কমিশন আবেদনকারী প্রদত্ত নতুন তথ্য উপাত্ত যে গুলি নতুন সঠিক তথ্য ও প্রমাণে সমৃদ্ধ এবং নতুন ধারনা ও নিষেধাজ্ঞার ঘটনা দ্বারা প্রভাবিত,- বিবেচনায় নিয়েছে। কমিশনের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে যে, আবেদনকারীর প্রদত্ত নতুন যুক্তি ও বক্তব্য উপরোক্ত সঠিক ঘটনা ও সত্যের উপর প্রতিষ্ঠিত এবং তার বক্তব্যে মানবাধিকারের প্রতি সন্মান প্রতিফলিত হয়েছে। এই যুক্তিপূর্ণ তথ্য ও উপাত্ত কমিশনের পূর্বেকার সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় জানা ছিলো না, যদি সে সময় উপস্থাপিত হতো তাহলে সিদ্ধান্ত অন্য রকম হতে পারতো। আবেদনকারী উপস্থাপিত নতুন তথ্য প্রমাণের আলোকে কমিশনের সামনে এই সত্য উপস্থাপিত হয়েছে যে, এই নতুন তথ্য প্রমাণের উদঘাটনের সময়কাল ২০২১’এর সেপ্টেম্বর ও ডিসেম্বর মাস এবং এগুলি কমিশনের সামনে উপস্থাপিত হয়েছে ২০২২’এর মার্চ মাসে। সুতরাং এই নতুন তথ্য প্রমাণাদি উদঘাটিত হওয়ার ৬ মাসের মধ্যেই কমিশনের সামনে পেশ করা হয়েছে। যার ফলে কমিশন মনে করে যে, এই নতুন তথ্য প্রমাণাদি কমিশনের আইন ৪২ ধারা অনুযায়ী রিভিশনের সকল শর্তাবলী পূরণ করেছে। ২৩ নং প্যারাগ্রাফে বলা হয়েছে, আবেদনকারী তার উপস্থাপিত বক্তব্যে বলেন যে তার বিরুদ্ধে গৃহীত প্রসিডিংস ইন্টারপোল সংবিধানের ২ নং ধারার লংঘন, কারণ তারা মানবাধিকারের নীতিমালার প্রতি সন্মান দেখায়নি। আবেদনকারীর বক্তব্য অনুসারে জানা যায় যে, গত ০১ সেপ্টেম্বর, ২০২১ তারিখে সে এবং তার স্ত্রী’কে তাদের অনুপস্থিতিতে ২০০০ জাল বৃটিশ পাউন্ড রাখার কথিত অভিযোগে ১০ বছরের কারাদন্ড দেয়া হয়। এই মামলায় কথিত প্রমাণাদি ২০১৯’এর ১৬ জানুয়ারী ডি,জি,এফ,আই, র্যাব এবং পুলিশের সম্মিলিত বাহিনী আবেদনকারী বাসভবনে অভিযান ও তল্লাশীর সময় সংগ্রহ করা হয়। আবেদনকারীর বক্তব্যে আরো জানা যায় যে, ১৩ জানুয়ারী, ২০১৯ তারিখে প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে ‘র্যাব’এর ২০ জন সশস্ত্র ব্যক্তি তার ৩ জন কর্মচারী মিঃ জহুরুল হক খন্দকার, মিঃ সুবেদার খোরশেদ আলম পাটোয়ারী, ল্যান্স নায়েক মিঃ সৈয়দ আকিদুল আলী’কে আটক করে নিয়ে যায়। ১৬ জানুয়ারী অভিযানের সময় পুলিশের ভাষ্যমতে তারা ৫০ টি বিষ্ফোরক ডিটেনেটর, ৭ টি ‘জিহাদি’ পুস্তক, বাংলাদেশী ৩ লাখ জাল টাকা এবং ৪ টি লাইসেন্সবিহীন আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে। পরের দিন বেআইনী অস্ত্র ও জাল টাকা রাখা এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের জন্য আবেদনকারীকে অভিযুক্ত করা হয়। তার স্ত্রী এবং উপরে বর্ণিত কর্মচারি ৩ জনকেও একই অভিযোগ আনা হয়। যে ২ টি শটগান এবং পিস্তল পাওয়া যায় সে গুলি ঢাকা’র জেলা প্রশাসক কার্যালয় কর্তৃক আইনানুগভাবে তাকে ও তার স্ত্রী’র নামে লাইসেন্স প্রদান করা হয় ২০১০ এবং ২০১১ সনে, যখন তারা ঢাকায় বসবাস শুরু করেন। তার বাসা থেকে জব্দ করা আগ্নেয়াস্ত্রের ধরন, ক্যালিবার এবং নাম্বার আগ্নেয়াস্ত্রের গায়ে খোদাইকৃত আছে তার বক্তব্যের স্বপক্ষে তিনি প্রমাণ হিসাবে এই আগ্নেয়াস্ত্রগুলীর লাইসেন্সের কপি প্রদান করেছেন। ২৪ নং প্যারাগ্রাফে বলা হয়েছে,  আবেদনকারী জানান যে, ২০২১’এর ০১ সেপ্টেম্বরের দন্ডাদেশ ছাড়াও তিনি, তার স্ত্রী এবং ৩ জন আটককৃত কর্মচারী “অবৈধ” অস্ত্র রাখার অভিযোগে ভিন্ন মামলায় ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত হন তাদের অনুপস্থিতিতে – ২০২০’এর ১০ নভেম্বর। তিনি দাবী করেন যে, মামলাগুলীর কার্যক্রম মাত্র ১০/১৫ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করা হয় এবং তিনি অথবা তার স্ত্রী – উপস্থিত থেকে নিজেদের স্বপক্ষে স্বাক্ষী, প্রমাণাদি আদালতে উপস্থাপন করতে পারেন নি। এতদসত্বেও স্বাধীন আপীল প্রক্রিয়ায় আবেদনকারীকে অংশগ্রহনের সুযোগ দেয়া হয়নি এবং এটা ব্যাপকভাবে বলা হয়ে থাকে যে বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থায়  প্রধানমন্ত্রী প্রভাববিস্তার ও তদবির করে থাকেন এবং তিনি (প্রধানমন্ত্রী) জেনারেল তারেক সিদ্দিক এর নিকট আত্মীয়া। ২৫ নং প্যারাগ্রাফে বলা হয়েছে, আবেদনকারীর ভাষ্যমতে তার ৩ জন কর্মচারী, মিঃ পাটোয়ারী, মিঃ আলী ও মিঃ খন্দকার’কে দীর্ঘদিন আগেই আটক করা হয়েছিলো। মিঃ আলী ও মিঃ পাটোয়ারী কে ৯ দিন ধরে জিজ্ঞাসাবাদ ও নির্যাতন করার ফলে তাদের কে “স্বীকারোক্তিমূলক” জবানবন্দী দিতে বাধ্য করা হয়, কিন্তু মিঃ খন্দকার মিথ্যা জবানবন্দী দিতে অস্বীকার করেন। আটকালীন অবস্থায় নির্যাতনের স্বীকার হয়ে গুরুতর অসুস্থ্য হওয়ায় তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। ২০১৯’এর ২১ অক্টোবর গুরুতর নির্যাতনজনিত কারণে তিনি মারা যান। আল-জাজিরা’র ২২ মার্চ, ২০১৯ তারিখে প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হয় যে, “তার (মিঃ খন্দকার) মৃত্যুর ঘটনা ‘প্রশ্নবোধক’ পরিস্থিতিতে হয়েছে”। ইতিপূর্বে ২০ মার্চ ২০১৯’এ প্রকাশিত আল-জাজিরা’র রিপোর্টে আবেদনকারীর বরাত দিয়ে বলা হয় যে, আবেদনকারীর ৩ জন কর্মচারী মিঃ পাটোয়ারী, মিঃ আলী ও মিঃ খন্দকারের অন্তর্ধানের পিছনে জেনারেল সিদ্দিকের  হাত রয়েছে। এই রিপোর্ট প্রকাশের কারণে বাংলাদেশ সরকার এই অঞ্চলে আল-জাজিরা নিউজকে নিষিদ্ধ করে। মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট এর ২০২০ এ প্রকাশিত “কান্ট্রি রিপোর্ট”এ এই ঘটনার উল্লেখ করে বলা হয় যে বাংলাদেশ সরকার ২০১৯’এর মার্চে আল-জাজিরা নিউজ এই রিপোর্ট প্রকাশের কয়েক ঘন্টার মধ্যেই বাংলাদেশ সরকার আল-জাজিরা কে এই অঞ্চলে নিষিদ্ধ করে কারণ এই রিপোর্টে আল-জাজিরা উপরে বর্ণিত ৩ জন কর্মচারীর অন্তর্ধানের পিছনে জেনারেল সিদ্দিকের  সরাসরি হাত রয়েছে বলে উল্লেখ করে। ২৬ নং প্যারাগ্রাফে বলা হয়েছে আবেদনকারীর দাবী মতে ২০২০’এর ২৮ এপ্রিল থেকে জুলাইয়ের শেষ পর্যন্ত সময়ে বিভিন্ন দফায় সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজের সাথে তার রেকর্ডকৃত টেলিফোন আলাপের  সময় আজিজ স্বীকার করে যে, তার কর্মচারীদের পুলিশের একটি ‘গ্যাং’ অপহরণ করে নিয়ে যায় যারা জেনারেল সিদ্দিকের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রাধীন। জেনারেল আহমেদ নিশ্চিত করেন যে, এই ৩ জন কর্মচারী কোনো সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত ছিলোনা কিন্তু তা সত্বেও তাদের কে ১০ মাস ধরে নির্যাতন করা হয়, পরিণতিতে জনাব খন্দকারের মৃত্যু হয়। আবেদনকারী তার সাথে সেনাপ্রধানের রেকর্ডকৃত ফোনালাপ আল-জাজিরা কে প্রদান করেন। ২০২১’এর ফেব্রুয়ারী’তে প্রচারিত আল-জাজিরা’র বিশেষ “All the Prime Minister’s Men” শীর্ষক ডকুমেন্টারীতে ফোনালাপের কিছু অংশ প্রচারিত হয়। আল-জাজিরা’র উক্ত ‘ডকুমেন্টারী’তে  বাংলাদেশ সরকারের ব্যাপক দূর্ণীতির বিবরণ তুলে ধরা হয় এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার  ‘মাফিয়া কানেকশন”এর বিষয়টি  বিরাট শোরগোলের সৃষ্টি করে। আল-জাজিরা’র এই ডকুমেন্টারী প্রচারের ৩ সপ্তাহ পর র্যাব আবেদনকারীর ভাই কবীর উদ্দিন খান’কে গুম করে এবং তার আরেক ভাই কে ২০২১’এর ফেব্রুয়ারীতে অন্যায়ভাবে আটক করে কারান্তরীণ করে রাখে। ২৭ নং প্যারাগ্রাফে বলা হয়েছে, আবেদনকারী আরো উল্লেখ করেন যে, ২৭ অক্টোবর ২০২০’এ যুক্তরাষ্ট্রের ৯ জন সিনেটর বালাদেশে ২০০’এরও অধিক বিচার – বহিঃর্ভূত হত্যাকান্ডের জন্য র্যাব’এর উর্ধতন ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা (স্যাংশন) আরোপের দাবী জানান এবং সিনেটরবৃন্দ আবেদনকারীর কর্মচারীদের আটক এবং শারীরিক নির্যাতন ও পরিণতিতে জনাব খন্দকারের মৃত্যুব ঘটনা তাদের চিঠিতে উল্লেখ করেন। ডিসেম্বর ২০২১’এ যুক্তরাষ্ট্র সরকার র্যাব’এর ৭ জন বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ‘স্যাংশন’ (US Sanction) আরোপ করে যাদের মধ্যে বেনজীর আহমেদ ও চৌধুরী আব্দুল্লাহ-আল-মামুন উল্লেখযোগ্য। যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হয়েছে র্যাব ও অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কর্তৃক মানবাধিকারের ভয়াবহ লংঘন, ২০০৯ থেকে এ পর্যন্ত ৬০০ গুম এবং ২০১৮ থেকে এ পর্যন্ত ৬০০ জন বিচার বহিঃর্ভূত হত্যাকান্ডের স্বীকার, শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা বাংলাদেশে আইনের শাসন, মৌলিক অধিকার এবং মানবাধিকার কে অবজ্ঞা করার কারণে। আবেদনকারী উল্লেখ করেন যে জনাব আহমেদ জানুয়ারী ২০১৫ থেকে ২০২০’এর এপ্রিল পর্যন্ত র্যাব’এর মহা-পরিচালক ছিলেন। তার আমলেই ২০১৯’এর ১৬ জানুয়ারী আবেদনকারীর বাসভবনে পুলিশী অভিযান, তার ৩ জন কর্মচারীকে দীর্ঘদিন আটক রেখে নির্যাতন, পরিণতিতে জনাব খন্দকারের করুন মৃত্যু তার ২ ভাইকে আটকের ঘটনা ঘটেছে। আবেদনকারী জানান যে, জনাব চৌধুরী ২০২০’এর এপ্রিলে র্যাব’এর প্রধান নিযুক্ত হন এবং তার সময়েই আবেদনকারী’র ২ ভাই কে আটক করে দীর্ঘদিন ধরে অন্তরীন রাখা হয়েছে। সুতরাং – আবেদনকারিকে দেশে ফেরত পাঠালে অমানুষিক শারীরিক নির্যাতন এবং অমানবিক আচরনের স্বীকার হবে। ২৮ নং প্যারাগ্রাফে বলা হয়েছে,  NCB নিশ্চিত করে যে, আবেদনকারী বাংলাদেশ দন্ডবিধির ১০৯, ৪৬৮ ও ৪৭২ ধারা মোতাবেক ‘জালিয়াতি’র মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন এবং বেআইনী অস্ত্র রাখার অভিযোগে “অস্ত্র আইন ১৮৭৮’এর সেকশন ৯ (এ) এবং (এফ)’এর আওতায় যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত হয়েছেন। ২৯ নং প্যারাগ্রাফে বলা হয়েছে,  ২০২১’এর ০১ সেপ্টেম্বর আবেদনকারী ও তার স্ত্রী’কে তাদের অনুপস্থিতিতে বিশেষ ক্ষমতা আইনের ধারা ২৫ (ক) (গ) মোয়াবেক জাল টাকা রাখার অপরাধে ১০ বছরের কারাদন্ড প্রদান করা হয়। ৩২ নং প্যারাগ্রাফে বলা হয়েছে, যেহেতু তার অনুপস্থিতিতে বিচার হয়েছে, সেই কারণে আবেদনকারী তার পছন্দমতো কোনো আইনজীবী নিয়োগ দিতে পারেনি। রাষ্ট্র কর্তৃক প্রদত্ত আইনজীবী তার মামলা পরিচালনা করেন। অবশ্য তিনি দন্ডাদেশের বিরুদ্ধে দেশে ফিরে আদালতে আত্মসমর্পনের পর তার পছন্দের আইনজীবী’র মাধ্যমে উচ্চ আদালতে আপীল করতে পারবেন। কমিশনের ‘ফাইন্ডিংস’নামে ৩৪ নং প্যারাগ্রাফে বলা হয়েছে,  ইন্টারপোল সংবিধানের ধারা ২ (১) লংঘন প্রসঙ্গে আবেদনকারীর বক্তব্যে কমিশন মনে করে যে উল্লেখিত ধারা ইন্টারপোলের পুলিশী সহযোগীতার “সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণার স্পিরিটের” আলোকে হতে হবে। তদুপরি, RPD’এর ১১ (১) ধারায় বলা হয়েছে যে, “ ডাটা প্রসেসিং’এর সময় ইন্টারপোলের ইনফরমেশন সিস্টেম কে অবশ্যই ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের মৌলিক অধিকারের প্রতি সন্মান প্রর্শন করতে হবে -কমিশনের ধারা ২ এবং সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণা অনুযায়ী। যাই হোক, সংশ্লিষ্ট দেশের আইনের প্রয়োগ ও বিচার ব্যবস্থার মূল্যায়ন ইন্টারপোলের কাজ নয়, কিন্তু ইন্টারপোল তার অনুরোধে সংশ্লিষ্ট দেশের ডাটা প্রসেসিং’এ ইন্টারপোলের নীতিমালার প্রতিপালিত হচ্ছে কি না, সেটা পরীক্ষা করবে। Universal Declaration of Human Rights (UDHR) এর প্রতি ও পাশাপাশি ইন্টারপোলের সীমিত ভূমিকাকে সন্মান প্রদর্শনপূর্বক অধিকার লংঘনের সাধারণ অনুমান একজন আবেদনকারীর নির্দিষ্ট কোনো অবস্থার সুরাহা করেনা এবং তা ধারা ২ এর লংঘন প্রমাণের জন্য যথেষ্ট নয়। অপরপক্ষে, ধারা ২’এর বিশ্লেষনকালে এবং প্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট তথ্যাদি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে কমিশন এটা বিবেচনা করবে যে,  আবেদনকারী তার মানবাধিকার বঞ্চিত করার বিষয়টি নিশ্চিতভাবে উপস্থাপন করতে পেরেছেন কি না। ৩৫ নং প্যারাগ্রাফে বলা হয়েছে,  আবেদনকারীর বক্তব্যের ভিত্তিতে কমিশন মনে করে যে, ঘটনাপ্রবাহ বা ‘প্রসিডিংস’ আবেদনকারী মানবাধিকার লংঘনসহ তার বেঁচে থাকার অধিকার এবং যথাযতো আইনী প্রক্রিয়া থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে – যা ২৩ থেকে ২৭ প্যারাগ্রাফে বর্ণিত হয়েছে। কমিশন আরো মনে করে যে, NCB বাংলাদেশে’এর বক্তব্য হচ্ছে – যা উপরের প্যারাগ্রাফ ২৮ থেকে ৩৩’এ বর্ণিত হয়েছে, আবাদনকারী কে আইনসঙ্গতভাবেই তার অনুপস্থিতিতে বিচার করা হয়েছে,  বিচারের রায়ের বিরুদ্ধে আপীল এবং পছন্দসই আইনজ্ঞ নিয়োগের অধিকার তার রয়েছে। কমিশন আবেদনকারীর শারীরিক নির্যাতনের কথিত অভিযোগ ও প্রশ্নবোধক পরিস্থিতি তে তার সহ-অভিযুক্তের মৃত্যুর ঘটনা যা আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম, এন, জি, ও এবং তৃতীয় কোনো দেশের আইন প্রণেতাদের দ্বারা সমর্থিত হয়েছে, এবং আবেদনকারীর আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা (US Sanction) সম্পর্কিত বক্তব্য কমিশন গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করেছে। আবেদনকারীর মানবাধিকার সম্পর্কিত অভিযোগ, তার সহ-অভিযুক্তদের প্রলম্বিত আটকাদেশে শারীরিক নির্যাতন ও পরিণতিতে জনাব খন্দকারের মৃত্যু – এইসব প্রসঙ্গে NCB বাংলাদেশ’এর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায় নি। কমিশন মনে করে যে, বেঁচে থাকার মৌলিক মানবাধিকার এবং শারীরিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে সুরক্ষার রক্ষাকবচ UDHRএর ঘোষণাপত্রের ধারা ৩ ও ৫’এ বর্ণিত হয়েছে এবং আবেদনকারীর সহ-অভিযুক্তদের প্রতি কথিত নির্যাতনমূলক আচরণ এই মামলায় আবেদনকারীর উপরে বর্ণিত অধিকারসমূহ লংঘনের যথেষ্ট ঝুকি থেকে যায়। ফলশ্রুতিতে, এই মামলায় প্রাপ্ত বিভিন্ন প্রমাণিত বিষয়ের কারণে এই মামলার তথ্যাদি ইন্টারপোলের ফাইলে রেখে দেয়া সংস্থাটির বিভিন্ন দেশের পুলিশ কর্তৃপক্ষের সাথে UDHR’এর মূল স্পিরিট’ অনুযায়ী সহযোগিতার নীতির পরিপন্থি। ৩৬ নং প্যারাগ্রাফে বলা হয়েছে, উপরে বর্ণিত পরিস্থিতির আলোকে কমিশন এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, NCB বাংলাদেশ প্রদত্ত ডাটা ও তথ্য ইন্টারপোল সংবিধানের ২ নং ধারার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। সবশেষে উপসংহারে বলা হয়েছে, এইসব কারণে, কমিশনের কাছে এটা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে রিভিশনের সকল শর্তাবলী পূরণ করা হয়েছে।  কমিশন এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে যে, আবেদনকারী সম্মন্ধে এ যাবত প্রাপ্ত সকল তথ্য ইন্টারপোলের পারসোনাল ডাটা প্রসেসিং প্রক্রিয়া সম্পর্কিত আইনের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ না হওয়ায় ইন্টারপোলের ফাইল এবং ওয়েব সাইট থেকে ঐগুলি মুছে ফেলা হলো। ইতোমধ্যে ইন্টারপোল তাদের দীর্ঘ তদন্ত প্রতিবেদনসহ এই সিদ্ধান্ত কপিটি পৃথিবীর ১৯৫টি দেশে পাঠিয়ে দিয়েছে।

ইন্টারপোলের ক্লিনচিটের প্রতিক্রিয়ার ড. কর্ণেল (অব:) শহীদ উদ্দিন খান (পিএসসি) সাপ্তাহিক সুরমাকে বলেন, এটা শুধু আমি বা আমার পরিবারের বিজয় নয়, এটা বাংলার কোটি কোটি অত্যাচারিত মানুষের বিজয়। সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে যারা আমার পাশে ছিলেন আমি তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানাই। ২০১৯ সাল থেকে তারেক সিদ্দিক গংরা আমার ওয়াইফ ও বাচ্চাদের বিরুদ্ধে এরকম অনেক মিথ্যাচার করে আসছেন। এমনকি যুক্তরাজ্যের স্বনামধন্য পোর্টসমাউথ ইউনিভার্সিটি থেকে আমার ডক্টরেট ডিগ্রী অর্জন ঠেকাতে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করেছেন ভুয়া ডিগ্রীধারী শেখ হাসিনা ও তারেক সিদ্দিক গং। রাষ্ট্রীয় প্যাডে পোর্টসমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে চিঠি লিখেন তারা আমার বিরুদ্ধে। এই অপকর্মে তারা লন্ডনস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত মুনা তাসনিমকেও ব্যবহার করেন। আমরা এগুলোকে প্রথমে পাত্তা দেইনি। যাই হোক, অবশেষে সত্যের জয় হয়েছে। আমি দেশের জনগণকে বলবো, কেউ যদি আপনার বিরুদ্ধে কিছু বলে বা রটনা রটায় তাহলে নিজেকে প্রশ্ন করুন যে আপনার বিরুদ্ধে যে রটনাটা রটাচ্ছে, এটা মিথ্যা কিনা। যদি মিথ্যা হয় তাহলে যুদ্ধ করুন। সাথে সাথে ডকুমেন্টারি এভিডেন্স সৃষ্টি করুন। আমি তাই করেছি। আমি আপোষ করিনি। তারা দেশে বিদেশে আমার সম্পদ ধ্বংস করে দিয়েছে। আমাকে মানবেতর জীবনে নিয়ে গেছে। তারপরেও আমি দমে যাইনি। মাদার অব মাফিয়া শেখ হাসিনা তৎকালীন সেনা প্রধান জেনারেল আজিজকে দিয়ে আমাকে ফোন করিয়েছেন, আপনারা সেটা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে দেখেছেন। টেলিফোনে এই কথোপকথনের কিছুদিন পরে তো তাদের উপর আমেরিকান স্যাংশন এসেছে। তারা অন্য অফিসারদের দিয়েও আমাকে ফোন করিয়ে আপোষের প্রস্তাব দিয়েছে। কিন্তু আমি একজন ইমানদার মানুষ। আমি ভেবেছি এত অন্যায়, এত অত্যাচার ও এত অনৈতিক কর্মকান্ডের পরেও যদি আমি আপোষ করি তাহলে আল্লাহ নাখোশ হবেন। আল্লাহ বলবেন শহীদ তোমার ধৈর্য্য নাই। এজন্য অন্যায়ের সাথে আমি আপোষ করিনি। ২০০৪ এ যখন আমার বিরুদ্ধে কোর্ট মার্শাল করেছে আমি ধৈর্য্য ধরেছিলাম এবং আমি আমার সন্মান ফেরত পেয়েছিলাম। কোর্ট মার্শালে সততার জন্য উল্টো আমার প্রশংসা করা হয়েছিলো। সেনাবাহিনীর ইতিহাসে যা আগে ঘটেনি। আল্লাহ আমাকে রক্ষা করেছেন। একইভাবে আমি ও আমার পরিবারের সদস্যরা গত চার বছর ধৈর্য্য ধরে ছিলাম। কিছুটা সাফারও করেছি, কিন্তু আমরা আমাদের সন্মান ফিরে পেয়েছি। সততার জন্য দেশে কোর্ট মার্শাল থেকে যেটা পেয়েছিলাম, সেটা ছিলো আমার ন্যাশনাল রিকোগনিশন। সততার জন্য এখন ইন্টারপোল থেকে যেটা পেয়েছি, এটা হলো আমার ইন্টারন্যাশনাল রিকোগনিশন। ইন্টারপোল থেকে এই ধরণের চিঠি সাধারণত কেউ পায় না। কিন্তু আমি পেয়েছি। আমি আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। জনতার কর্ণেল খ্যাত ড. কর্ণেল (অব:) শহীদ উদ্দিন খান (পিএসসি) সুরমাকে আরও জানান, হাসিনা ও তারেক সিদ্দিক গংদের বিরুদ্ধে তিনি মানহানি ও হাজার কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ আদায়ের মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এবং ইন্টারপোলের দীর্ঘ তদন্ত প্রতিবেদন সাপেক্ষে হাসিনা ও তারেক সিদ্দিক গংকে গ্রেফতার করতে বিশ্বের ১৯৫টি দেশকে তিনি আহবান জানিয়েছেন।

Sheikhsbay

Related Articles

Back to top button
Close
Close