হাইকমিশনার না লাই-কমিশনার! দ্বিপাক্ষিকের নামে বহুপাক্ষিক মিথ্যে!!
সুরমা প্রতিবেদন, লন্ডন, ১০মে।। সালমান রহমানের ব্যাখ্যা দেয়ার পরেও হাই কমিশনার সৈয়দা মুনা তাসনিম অসত্য, ভিত্তিহীন ও কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত বক্তব্য প্রত্যাহার করেননি দুঃখ প্রকাশ করেননি।
বিভিন্ন সূত্রে আমরা নিশ্চিত হয়েছি, গত ৫ মে শেখ হাসিনা ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী রিশি শুনাকের মধ্যে কোন দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়নি। উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রীর অফিশিয়াল কর্মসূচিতেও এই ধরনের কোন কর্মসূচি ছিল না। কমনওয়েলথের প্রধান কার্যালয়ে (মালবোরো হাউস) কিং চার্লসের সঙ্গে কমনওয়েলথ নেতাদের ফটোসেশনের পর দুই প্রধানমন্ত্রী হলের এক পাশে একটি কাউচে (সোফা সদৃশ) পাশাপাশি বসে কিছু সময় অতিবাহিত করেন। যাকে সৌজন্য সাক্ষাৎ বলা যায়। এই সৌজন্য সাক্ষাৎকে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক বলে বাংলা মিডিয়াকে ব্রিফ করেন লন্ডনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুনা তাসনিম।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হলে রবিবার ৮ মে লন্ডনে আরেকটি অনুষ্ঠানে সালমান রহমান সাপ্তাহিক সুরমার সাংবাদিক হাসনাত আরিয়ান খানের প্রশ্নের জবাবে বিভ্রান্তির অবসান করে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, ওটা ছিল সৌজন্য সাক্ষাৎ।
রাষ্ট্রাচার ও কূটনৈতিক আচরণের ক্ষেত্রে এই ধরনের দৃষ্টান্ত দুই দেশের জন্যই অস্বস্তিকর বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র সম্পর্কের একজন বিশ্লেষক।তাঁর মতে,কূটনৈতিক শিষ্টাচারের কারণে প্রধানমন্ত্রী রিশি শুনাকের দপ্তর হয়তো সরাসরি এই কূটনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত বক্তব্যের প্রতিবাদ করবে না। তবে এটা বাংলাদেশের জন্য একটি অমর্যাদাকর ও ভবিষ্যতের জন্য খারাপ রেফারেন্স হিসেবে থেকে যাবে। কারণ প্রধানমন্ত্রী রিশি শুনাকের যে কোন অফিসিয়াল সভা ও বক্তব্য টেন ডাউনিং স্ট্রিটের প্রেস বিভাগ প্রকাশ করা যুক্তরাজ্য সরকারের একটি নিয়মিত চর্চার বিষয়। কিন্তু যুক্তরাজ্য সরকারের বক্তব্য অন্য দেশের কূটনীতিক বা কর্মকর্তারা কোন অধিকার বলে প্রকাশ করলেন?
সূত্রটি আরো মন্তব্য করেন, বিদেশে সরকার বিরোধী বিক্ষোভকে দেশের ভাবমূর্তির জন্য দায়ী করা হলেও যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে সরকার প্রধান কিংবা রাজার বিরুদ্ধে বিক্ষোভকে নাগরিক অধিকার হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং এইসব বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ স্বাভাবিক জীবনযাত্রার ও গণতান্ত্রিক অধিকারের অংশ হওয়ায় এই চর্চাটি নিয়ে পশ্চিমের সমাজ গর্ভবোধ করে। কিন্তু মিথ্যাচারের আবরণে প্রোপাগান্ডা পশ্চিমের সমাজে গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কেবলমাত্র একটি অসত্য উচ্চারণের কারণে সম্প্রতি বরিস জনসনকে প্রধানমন্ত্রীর পদ পর্যন্ত ছাড়তে হয়েছে। আর সহকর্মী কর্মকর্তাদের প্রতি আপত্তিকর শব্দ চয়নের কারণে উপপ্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হয়েছে। সেই সমাজে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুনা তাসনিমের এই দীর্ঘ সময় ধরে কূটনীতির আবরণে সার্বক্ষণিক দলীয় প্রোপাগান্ডায় ব্যস্ত থাকেন বলে ব্যাপকভাবে সমালোচিত।
মিথ্যা যদি কোন শিল্প হয় তার প্রধান শিল্পীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভোট ডাকাতি এবং উন্নয়নের নামে কমিশন বা উন্নয়নের ব্যবসাকেও শিল্পের পর্যায়ে উন্নীত করেছে তার সরকার। দুর্নীতি মানবাধিকার লঙ্ঘন ও গণতন্ত্র হরণের সকল কর্মসূচি সম্পর্কে তথাকথিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বঙ্গবন্ধু ইত্যাদির মাইকিং এ ব্যস্ত লাই কমিশনার মুনা। এই মিথ্যাচারের জন্য তিনি অচিরেই পররাষ্ট্র দপ্তরের এক নম্বর পদ পাওয়ার ক্ষেত্রেও এগিয়ে যেতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।