নিউজবাংলাদেশ

ডাহামিথ্যা ও রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয়ের নতুন রেকর্ড গড়লেন হাসিনা

  • রাষ্ট্রীয় সফরের নামে তিনদেশে প্লেজার ট্রিপ!
  • সফর গুরুত্ব পায়নি জাপানি মিডিয়ায়!
  • আমন্ত্রণ জানায়নি বাইডেন প্রশাসন!
  • ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর রিশি শুনাকের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের খবর ভূয়া!
  • আইএমএফ প্রধানের বক্তব্য নিয়ে মিথ্যাচার!
  • ১০টি বিমান কেনার প্রস্তাব- শ্রীলঙ্কার পথেই হাঁটছে বাংলাদেশ!

সুরমা প্রতিবেদন: বাংলাদেশের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে মিথ্যা- প্রোপাগান্ডাময় সফর শেষে অবশেষে দেশে ফিরেছেন। দেশে ফিরেও তিনি ও তাঁর সফরকারী দলের সদস্যরা মিথ্যা-প্রোপাগান্ডা অব্যাহত রেখেছেন। শেখ হাসিনা এবার জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফরে মিথ্যা এবং ডাহামিথ্যার নতুন রেকর্ড গড়েছেন। মূলত ডলার সংকটের কারণে দেশ যেখানে ঠিকমত আমদানি করতে পারছে না, সেখানে ক্ষমতার শেষ সময়ে ১৫৭ জনের বিশাল লাটবহর নিয়ে বিদেশ সফর জায়েজ করতেই এসব ন্যারেটিভ তিনি তৈরী করেছেন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন,’শেখ হাসিনার এই সফরের মূল লক্ষ্যই ছিলো আগামী নির্বাচন। যেহেতু ২০১৮ সালের নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে এই তিনটি দেশ কঠোর অবস্থানে, তাই তাদের মুখ বন্ধ করতে লবিং করা এবং আগামী সংসদ নির্বাচনে তাদের সমর্থন লাভ করাই ছিলো হাসিনার এই সফরের মূল উদ্দেশ্য। এছাড়া জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য শেখ হাসিনার পাশে আছে জানলে দলের নেতা-কর্মী ও পুলিশ- প্রশাসনে দলীয় কোটায় নিয়োগপ্রাপ্তরা আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবেন- এটাও ছিলো এই সফরের আরেকটা উদ্দেশ্যে।’ বিশ্লেষকরা বলছেন, একতরফাভাবে মার্কিন একটি কোম্পানিকে তেল ও গ্যাসফিল্ড ইজারা আর যুক্তরাজ্যকে বাগে আনতে এয়ারবাস থেকে ১০টি বিমান কেনার প্রস্তাব শেখ হাসিনার টিকে থাকার এক নির্লজ্জ প্রয়াস। আগামী নির্বাচনকে ঘিরে এবং যেকোন উপায়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে দেশের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী দিনগুলোতে বাংলাদেশকে দেউলিয়া করে হলেও এমন অনেক ‘উদ্দেশ্যমূলক’ কর্মকাণ্ড করবেন ও তা প্রপাগান্ডার কাজে লাগাবেন। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য দেশের ভিতরে আর বাইরে থেকে তার উপর যে চাপ সেই চাপ সামলানোর জন্য তিনি তাঁর জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য সফরকে নিশ্চিতভাবে ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন।

কূটনৈতিক শিষ্টাচার ধ্বংস!

শেখ হাসিনার এবারের ব্যক্তিগত ও নির্বাচনী সফরকে কেন্দ্র করে কূটনীতিকরা দেশের কূটনৈতিক শিষ্টাচার সম্পূর্ণ ধ্বংস করেছেন। আর এ কাজে বাংলাদেশের প্রধান কূটনীতিক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন ও যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম নেতুত্ব দিয়েছেন। বিশ্ব নেতারা শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেছেন, শেখ হাসিনার মিথ্যা বয়ানের সমর্থনে প্রতিদিন তাঁরা এরকম নতুর নতুন বয়ান তৈরী করেছেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন বিশ্ব ব্যাংকের সামনে দলীয় নেতা-কর্মীদের পাশে দাড়িঁয়ে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বলেছেন- ‘আপনারা প্রায়ই বলে থাকেন বাংলাদেশে করাপশন হয়, কারচুপি হয়। আর বিশ্ব ব্যাংক বলছে, বাংলাদেশ আমাদের জন্য একটা আদর্শ।’ আইএমএফ প্রধানকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেছেন- ‘আইএমএফ প্রধান বলেছেন, সমৃদ্ধির জন্য শেখ হাসিনার নেতৃত্ব প্রয়োজন।’ পরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে যে, সবই তিনি মিথ্যা বলেছেন। বিশ্বব্যাংক ও আইআইএমএফ এর তরফ থেকে এমন কোন কথা বলা হয়নি। এব্যাপারে সুরমার হাতে প্রমাণ রয়েছে। অন্যদিকে যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার সাইদা মুনা তাসনিম ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সাথে বাংলাদেশের অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাতকে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক বলে চালিয়ে দিয়েছেন। শুধু তাই না, ব্রিট্রিশ প্রধানমন্ত্রী রিশি সুনাক বাংলাদেশের অবৈধ প্রধানমন্ত্রীকে অনুপ্রেরণা ও রোল মডেল মানেন, এমনকি তাঁর দুই মেয়ে এবং স্ত্রী শেখ হাসিনার বড় ভক্ত। এসব ন্যারেটিভ মুনা তাসনিম তৈরী করেছেন। দেশের সংবাদমাধ্যমগুলোও কোনরকম যাচাই-বাছাই ছাড়া সেই খবর চেপেছেন। চাটুকার সংবাদমাধ্যমগুলো বাসসকে কপি করে বেশ ফলাও করে এসব প্রচার করেছেন। আবদুল মোমেন ও মুনা তাসনিমের সাথে তাল মিলিয়ে দেশের প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবদিকেরা যেভাবে মাতামাতি করছেন তাতে যে কেউ তাদেরকে সাংবাদিক না ভেবে সরকারি তথ্য-কর্মকর্তা ভাবতে পারেন। প্রকৃত সাংবাদিক হলে দেশের স্বার্থে তারা সরবরাহকৃত সকল তথ্য যাচাই বাছাই করে ছাপতেন এবং সফরে কতজন গেছেন; তাদের পেছনে কত টাকা খরচ হয়েছে এবং এই সফর থেকে দেশের প্রাপ্তি কী ইত্যাদি বিশদভাবে তুলে ধরতেন। তা না করে হাসিনা, মোমেন, পলক ও মুনাদের মনগড়া বক্তব্য ছেপে ও প্রচার করে তাদের সাথে তারাও বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ ও ১০ ডাউনিং স্ট্রিটকে বিব্রত করছেন। কূটনৈতিক শিষ্টাচার ধ্বংস করছেন।

রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সফরের নামে তিন দেশে প্লেজার ট্রিপ!

বাংলাদেশের মানুষ মাত্রেই জানেন, অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছোটবেলা থেকেই পাড়া বেড়াতে ভালোবাসেন, ঘুরতে ভালোবাসেন। শেখ হাসিনার এবারের সফর তাই গুরুত্বপূর্ণ না হলেও রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সফরের নাম দিয়ে তিনি বিশাল লাটবহর নিয়ে জাপান, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য প্লেজার ট্রিপ করেছেন। বিশ্ব ব্যাংকের সাথে বাংলাদেশের পার্টনারশীপের ৫০তম বার্ষিকী ঢাকায় পালিত হয়ে গেলেও তিনি ৫০তম বার্ষিকী পালনের নামে বিশ্বব্যাংক সফর করেছেন। বিশ্ব ব্যাংক এটার আয়োজন করেনি। এটার আয়োজন করেছেন অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক প্রিন্সিপাল অফিসার ও বর্তমানে বাংলাদেশের কোটায় বিশ্ব ব্যাংকে নিয়োগ পাওয়া বিশ্বব্যাংকের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক আহমেদ কায়কাউস। ইতিপূর্বে তিনি প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। কোটায় বিশ্বব্যাংকে নিয়োগের প্রতিদানস্বরুপ আহমেদ কায়কাউস বিশ্বব্যাংক কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য এই আয়োজন করেছেন। পৃথিবীর কোন রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকার প্রধান বিশ্বব্যাংকে না গেলেও বাংলাদেশের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গিয়েছেন। অথচ নেপাল, উগান্ডা, লাউসের মত দেশগুলো বিশ্বব্যাংকের সাথে তাদের পার্টনারশীপের ৫০তম বার্ষিকী নিজ দেশেই পালন করেছেন। এছাড়া যুক্তরাজ্যের রাজার অভিষেক অনুষ্ঠানে বিভিন্ন রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহীরা না এলেও শেখ হাসিনা এসেছেন। প্রতিবেশী দেশ ভারতের নরেন্দ্র মোদী আসেননি। এমনকি নেপাল ও শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রীও আসেননি। এরকম নিছক একটা আনুষ্ঠানিকতায় আসার প্রয়োজনই তারা মনে করেননি। অথচ তিনি পাড়া বেড়ানো মানুষের মতো বেড়িয়ে গেছেন! শেখ হাসিনা প্রতিটি সফরের সময় রাষ্ট্রীয় খরচে ১৫০/১৬০ জনের একটা বিশাল প্রতিনিধিদল নিয়ে আসেন। এবারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ১৫৭ জনকে সফরসঙ্গী করে তিনি তিন দেশ সফর করেছেন। শেখ হাসিনা যেখানে বক্তৃতা দিয়েছেন, তারাই সেখানে শ্রোতা হিসেবে ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ পৃথিবীর সেখানেই অবৈধ প্রধানমন্ত্রী প্রবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন, সেখানেই তারা পিকেটিং করেছেন। বিশ্ব ব্যাংকের সামনে বিক্ষোভকারী প্রবাসীদেরকে সাড়াশি আক্রমণের পেছনে তারাই দলীয় নেতা-কর্মীদের উস্কানি দিয়েছেন। একসময় রাজা-বাদশাহরা শখ করে হাতির দল পুষতেন। প্রজাদের খাজনার টাকায় পোষা হাতিরা রাজাদের মনোরঞ্জনের নানারকম খেলাও দেখাতো। এখন আর রাজা-বাদশাহরা হাতির দল পোষেন না। এখন গরিব দেশের সরকার প্রধানরা বিদেশ সফরে নিয়ে যান শত শত সফরসঙ্গীর বহর। হাততালি আর বাহবা পাওয়ার জন্য বিদেশ ভ্রমণের এসব সফরসঙ্গী জনগণের কষ্টের টাকা শ্রাদ্ধ করা বৈ দেশের আদৌ কোনো উপকারে আসেনা। সাত তারকা হোটেলে বিলাসবহুল অবকাশ, লাগেজ ভর্তি ব্র্যান্ডেট শপিং আর প্রধানমন্ত্রীর সাথে সেলফি তোলার সুযোগ হাতছাড়া না করলেও বিদেশের সাথে ব্যবসা-বাণিজ্য বা অন্যান্য দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নয়নের কোনো প্রকার সুযোগ আজ পর্যন্ত এসব সফরসঙ্গী সৃষ্টি করতে পারেননি। কিন্তু তারপরও এদের যাত্রা থামেনি।

হাসিনার সফর কাভার করেনি জাপানি কোন সংবাদমাধ্যম!

গত ২৯ নভেম্বর বাংলাদেশের কথিত প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপক্ষীয় সফরে জাপানে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ঠিক এর আগ মূহুর্তে জাপানি রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকি ২০১৮ সালের বহুল বিতর্কিত নির্বাচন নিয়ে বিষ্ফোরক মন্তব্য করে বসেন। তিনি বলেন- “পুলিশ কর্মকর্তারা নির্বাচনের আগের রাতে জাল ভোট দিয়ে ব্যালট বাক্স ভরে রেখেছিল। পৃথিবীর অন্য কোন দেশে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে আমি শুনিনি।” বাংলাদেশে নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূতের এমন বিষ্ফোরক বক্তব্যের পর বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদী প্রধানমন্ত্রী সে যাত্রায় তার জাপান সফর বাতিল করতে বাধ্য হলেও পরবর্তীতে লাজ শরমের মাথা খেয়ে ১৫৭ জন সঙ্গীসহ তিনি ব্যক্তিগতভাবে জাপান সফর করেন। জাপান সফরকালে তাঁর বাবা শেখ মুজিবুর রহমান যে হোটেলে অবস্থান গ্রহণ করেন তিনিও সেই হোটেলে চারদিন অবস্থান করে পরে ওয়াশিংটনের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। তবে দু:খজনক ব্যাপার হলো এই সফর বাংলাদেশের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত ব্যক্তিগত সফর হওয়ায় জাপানের প্রধানমন্ত্রী তাকে সেখানে রিসিভ করেননি। জাপানের কোন সংবাদমাধ্যমও বাংলাদেশের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই অগুরুত্বপূর্ণ সফরের কোন নিউজ কাভার করেনি। জাপানের বহুল জনপ্রিয় ‘এনএইচকে টেলিভিশন’ ও সর্বাধিক প্রচারিত ‘আসাহি শিম্বুন’ সামান্য একটা নিউজও প্রচার করেনি। এ থেকে এটাই প্রমাণিত হয় যে, জাপানি সংবাদ মাধ্যমের কাছে নির্বাচনের আগের রাতে জাল ভোট দিয়ে ব্যালট বাক্স ভরা বাংলাদেশের অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর কোন নিউজ ভ্যালু নেই। তাই শেখ হাসিনার চারদিনের জাপান সফরের খবর সম্পূর্ণভাবে ইগনোর করেছে জাপানি সংবাদমাধ্যম।

হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানায়নি আমেরিকার বাইডেন প্রশাসন!

অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে আমেরিকা এবং পশ্চিমা মিত্রদের মনোভাবের কোনো পরিবর্তন হয়নি। এজন্য বাংলাদেশের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বিশ্বব্যাংক সফরে গিয়ে আমেরিকার বাইডেন প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করলেও বাইডেন প্রশাসন তাতে সাড়া দেয়নি। দরজায় গিয়ে কড়া নাড়লেও হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানায়নি বাইডেন প্রশাসন! জানা গেছে যে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বাইডেনের সাথে দেখা করতে ব্যর্থ হয়ে তিনি ভাইস প্রেসিডেন্ট ও পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে এক মিনিটের জন্য হলেও দেখা করার সময় চেয়েছিলেন। কিন্তু তারপরেও সময় না দিলে এবং সর্বোচ্চ চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে পরে সেখানকার ইন্ডিয়ান অ্যাম্বাসী এবং ভারতীয় বংশোদ্ভুত পলিটিশিয়ানদের মাধ্যমেও তিনি লবিং করিয়েছিলেন। এমনকি শেষ পর্যন্ত নিজেই পায়ে হেঁটে ক্যাপিটাল হিলে গিয়ে একজন সিনেটেরের সাথে হলেও ছবি তুলতে চেয়েছিলেন। তবে তাঁর সাথে থাকা একজন কর্মকর্তা এটা না করতে তাকে অনুরোধ করেছেন। সেই কর্মকর্তা বলেছেন, একটা দেশের প্রধানমন্ত্রীর এত নিচে নামা ঠিক হবে না। সবশেষে ব্যর্থ মনোরথে তিনি যুক্তরাজ্যে চলে এসেছেন।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের খবর ভূয়া!

প্রথম ছবি- পথে হল দেখা। পরেরগুলো- রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ঋষি সুনাকের কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক।

লন্ডনে বাংলাদেশের অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক এর মধ্যে কোন ধরনের আনুষ্ঠানিক দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয়নি। আনুষ্ঠানিক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের নামে যে ছবিটি শেয়ার করা হয়েছে সেটা ছিল কমনওয়েলথ দেশসমূহের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের সম্মেলন স্থানের করিডোরে তোলা একটি অনানুষ্ঠানিক সাক্ষাতের ছবি। হঠাৎ রাস্তায় কারো সাথে দেখা হলে আমরা যেমন হাই-হ্যালো করি। এটা অনেকটা সেরকমই ছিল। যে কারণে সেখানে দু‘দেশের কোন জাতীয় পতাকা ছিলো না। এছাড়া দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের নামে ২৭ সেকেন্ডের যে ভিডিও ক্লিপ শেয়ার করা হয়েছে সেখানে শেখ হাসিনা বলছেন- আমার Neice আপনাদের সংসদ সদস্য …। উত্তরে ঋষি সু্নাক বলছেন- Oh really, Oh gosh! Ha..ha..oh ye..She actually..She asked me..She hasn’t asked.. She hasn’t asked me something recently…I will check next time I see her..Are you going to see her while you are here…Are you here for few days? করিডোর বৈঠকের এই টান্সক্রিপ্ট বিশ্লেষণ করলেই বিষয়টা পরিস্কার বুঝার কথা। অথচ বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যমগুলো যাচাই বাছাই ছাড়াই শেখ হাসিনা ও তাঁর সফরসঙ্গীদের মাধ্যমে ছড়ানো আনুষ্ঠানিক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের ভূয়া খবর প্রচার করেছেন। পৃথিবীতে এভাবে এই ভাষায় দুটি রাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হয় না। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি শুনাক মুলত ৬টি দেশের প্রধান নির্বাহীর সাথে বাইলেটারাল সাক্ষাৎ করেছেন এবং টুইট বার্তায় তা জানিয়ে দিয়েছেন। এ থেকেও বোঝার কথা বাংলাদেশের অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর সাথে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর কোনো দ্বিপাক্ষিক সাক্ষাৎ বা বৈঠক হয়নি। যুক্তরাজ্যর ইনফরমেশন মিনিস্ট্রিও এই বিষয়ে কোন বিবৃতি দেয়নি!

হাঁটে হাঁড়ি ভাঙলেন সালমান এফ রহমান!

সবশেষে কমনওয়েলথ ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড এন্টারপ্রাইজ কাউন্সিল আয়োজিত প্রেস কনফারেন্সে প্রতিবেদকের এক প্রশ্নের জবাবে অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেছেন, ‘এটা ছিলো কুশল বিনিময় বা সৌজন্য সাক্ষাত।‘ এরপর এটা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিতর্কের বিষয়ে তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ‘এটা যেহেতু করোনেশনের সময় আমরা এসেছি ডেফিনেটলি এটা সৌজন্য বলতে পারেন। দুই প্রাইম মিনিস্টারের মধ্যে যখনই কোন সাক্ষাত হয় অটোমেটিকেলি কিন্তু এটা আপনার বাইলেটারাল কথা বলি। অটোমেটিকেলি চলে আসে। আপনি যখন একটা দেখা করতেছেন সৌজন্যতা হ্যালো হ্যালো-গুড বাই গুডবাই তো করবেন না; নিশ্চয়ই আপনারা আমাদের দুই দেশের সম্পর্ক কী আছে, কেমন আছে এটা সম্বন্ধে অটোমেটিকলি কথা হয়। এখন আপনার করোনেশনের সময় ১৪০ দেশের হেড অব স্টেট, হেড অব গভর্নমেন্ট লণ্ডনে আছেন এট দিস মোমেন্ট। কিন্তু যখন উনার সাথে সৌজন্য সাক্ষাত হয়েছিলো বা দ্বিপাক্ষিক বলেন, যা-ই বলেন সাক্ষাত যখন হলো ঋষি সুনাকের সাথে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সে সময় এই লণ্ডনে ১৪০ দেশের হেড অব গভর্নমেন্ট, হেড অব স্টেট উপস্থিত ছিলেন। ওর মধ্যে ঋষি সুনাক কয়জনের সাথে দেখা করেছে, সেটা হলো সিগনিফিকেন্ট। যে কয়জনের সঙ্গে দেখা করেছে ওর মধ্যে একজন আমাদের প্রাইম মিনিস্টার।‘ যাই হোক, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাকের সাথে বাংলাদেশের অবৈধ প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের খবর যে ভূয়া এটা তাঁর উপদেষ্টা ‘শুধু কুশল বিনিময়’ বা ‘সৌজন্য সাক্ষাত’ বলে নিজেই জানিয়েছেন।

আইএমএফ প্রধানের বক্তব্য নিয়েও করেছেন নির্লজ্জ মিথ্যাচার!

আইএমএফ বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য শেখ হাসিনাকে প্রয়োজন’ বলে যে খবরটি অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তরফে প্রচার করা হয়েছে তার কোনো সত্যতা আইএমএফ স্বীকার করেনি। এই নিউজটি দিয়ে অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে মিথ্যা প্রোপাগাণ্ডা ছড়ানো হয়েছে। অতীতেও দেখা গেছে যে বিভিন্ন দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে এমন নির্লজ্জ মিথ্যাচার করেছেন যে পরে সেই ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দিয়ে জানাতে হয়েছে যে, তারা এমন কথা বলেননি।

দেউলিয়া শ্রীলঙ্কার পথেই বাংলাদেশ!

সম্প্রতি বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রা ভাণ্ডার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আইএমএফ। গত ছ’বছরে বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রা ভাণ্ডারে রেকর্ড পতন দেখা গিয়েছে। ঋণের চোরাবালিতে দাঁড়িয়ে দেউলিয়া শ্রীলঙ্কার পথেই হাঁটছে বাংলাদেশ। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প তথা অর্থনীতির বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখতে সম্প্রতি বাংলাদেশ সফরে যায় আইএমএফ-এর একটি দল। এপ্রিলের ২৫ তারিখ থেকে ৭ মে পর্যন্ত চলা ওই সফরের পরই ক্রমে বাংলাদেশের বিদেশি মুদ্রা ভাণ্ডারের ক্ষয় এবং দেশটির মুদ্রা ‘টাকা’র মুল্য পতন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন আইএমএফ প্রতিনিধিরা। মুদ্রাস্ফীতি এবং বিশ্ব অর্থনীতির ঘটনাবলীর নেতিবাচক প্রভাব ঢাকার অর্থনীতিতে পড়তে পারে এবং শ্রীলঙ্কার মত দেউলিয়া হতে পারে বলেও তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। এই সঙ্কটের সময়ে ১০টি এয়ারবাস কেনার প্রস্তাব দেউলিয়া শ্রীলঙ্কার কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়।

Sheikhsbay

Related Articles

Back to top button
Close
Close