ইউকে প্রবাসী জামায়াতে ইসলামী নেতার বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ
সুরমা প্রতিবেদক।। ইউকে প্রবাসী জামায়াতে ইসলামীর নেতা মো: ইউসুফ হোসেনের বাংলাদেশের গ্রামের বাড়ীতে হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা। দুর্বৃত্তরা যুবলীগের নেতা, মোঃ খোরশেদ আলম এবং সেক্রেটারি, রবিউল ইসলাম খান এবং স্থানীয় আঃলীগের নেতা কর্মী। মো.ইউসুফ হোসেন ফরিদগঞ্জ থানার চরমান্দারী গ্রামের মো. নুরুল আমিন ও মোবাস্বেরা বেগমের একমাত্র ছেলে। গত সোমবার (২৩ মার্চ) আনুমানিক বিকাল ৪টায় এই হামলা চালানো হয় বলে নিশ্চিত করেছেন ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আব্দুল মান্নান ও স্হানীয় ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, মোঃ শরীফ হোসেন খান।
তারা জানান, সোমবার বিকাল ৪টার দিকে যুবলীগের নেতা, মোঃ খোরশেদ আলম এবং সেক্রেটারি, রবিউল ইসলাম খান স্বদল বলে মোঃ ইউসুফের চাঁদপুরের গ্রামের বাড়িতে আতর্কিত হামলা চালায়। প্রথমে তারা বাড়িঘর ভাংচুর করে, বাড়িতে অবস্থানরত লোকদের বেধড়ক পিটিয়ে বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এতে ইউসুফ হোসেনের বাবা-মা মারাত্মক ভাবে আহত হন।
চেযারম্যান মোঃ শরীফ হোসেন খান জানান, প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে ইউসুফের আজেবাজে লেখালেখিতে স্হানীয় যুবলীগ কর্মীরা প্রতিবাদ স্বরূপ এই হামলা চালায়। পরে অবশ্য এই ব্যাপারে কোন অভিযোগ তার কাছে আসে নাই।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মো. ইউসুফ হোসেন দীর্ঘদিন সরকারের সমালোচনা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন লেখালেখি করে থাকেন। বাংলাদেশ জামাতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের নেতা ছিলেন এবং পরে জামাতের মূল সংগঠনে যোগ দিয়েছিলেন। তিনি দেশে অবস্থান কালে সরকার ও সরকার দলের নেতা কর্মিদের সমাজবিরোধী কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করতে গণ আন্দোলন করতে এলাকার জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। পরে তার বিরুদ্ধে ক্রিমিনাল মামলা থাকাতে তিনি পালিয়ে লন্ডনে চলে যান এবং জামাতের ইউকে শাখায় নেতা হিসেবে জামাতের রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করছেন।
গত কয়েকদিন আগে তার একটা ফেসবুক পোস্টে দেশের অর্থনৈতিক চরম অবস্থাত জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দোষারোপ গালিগালাজ করলে এতে তার বিরুদ্ধে এলাকার আওয়ামীপন্থি লোকেরা ফুঁসে ওঠে। তারই রেশ ধরে এ হামলা হয়েছে এমনটাই মনে করেছেন এলাকাবাসী।
স্হানীয় ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার মিজানুর রহমান খান জানান, মূলত ইউসুফ জামাতের রাজনীতির সাথে জড়িত আছেন বলে প্রতিহিংসা বসত আওয়ামী লীগের নেতা কর্মিরা এ হামলা চালান। হামলায় তার বাবা-মা মারাত্মক ভাবে আহত হন এবং তাদেরকে পরবর্তিতে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হামলাকারীরা বাড়ির সব আসবাবপত্রে আগুন ধরিয়ে দেয়।
চাঁদপুর জেলার এক জামাত নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আমাদের প্রতিবেদককে জানান দুর্বৃত্তরা চলে যাবার আগে তার বাবা-মাকে এই বলে হুমকি দেয়, যে আগামী এক মাসের মধ্যে ইউসুফকে দেশে ফিরিয়ে না আনলে তাদেরকে আগুনে পুড়িয়ে মেরে ফেলা হবে। পরে এলাকাবাসী জড়ো হলে দুর্বৃত্তরা প্রস্থান করে। এলাকাবাসী দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ইউসুফের বাবা ও মাকে হাসপাতালে ভর্তি করে।
আমাদের প্রতিনিধি ফরিদগঞ্জ থানায় যোগাযোগ করলে কর্তব্যরত পুলিশ পরিদর্শক বলেন, গত মার্চের ২৩ তারিখে লন্ডন প্রবাসী ইউসুফ নামে জামাতের এক নেতার বাড়িতে হামলা হয়েছে বলে সাংবাদিকরা আমাকে জানান। জানা যায়, এই হামলায় ইউসুফের বাবা-মা আহত হয়েছিলেন এবং তাদের বাড়িঘরের অনেক আসবাবপত্র পুড়ে গেছে। তবে ভুক্তভোগীরা আমাকে এখন পর্যন্ত কোন আভিযোগ করেনি। ওসি আরো জানান, ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করলে তা অবশ্যই আমলে নেয়া হবে।
(রিপোর্টের ফটো: প্রতীকি ছবি)