নিউজ

উই রিভোল্ট থেকে টেইক ব্যাক বাংলাদেশ: তারেক রহমানের এক দফা এক দাবী

সুরমা প্রতিবেদন: ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের রাজনীতির কক্ষপথ যাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়েছিলো তিনি জিয়াউর রহমান। বর্তমান বাংলাদেশের রাজনীতির কক্ষপথ যাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হচ্ছে তিনি নিঃসন্দেহে তারেক রহমান। এক যুগের বেশি সময় ভোটবিহীন দেশে ভয়াবহ মানবাধিকার বিপর্যয়ের মধ্যে থাকা মানুষ যাঁর ‘টেইক ব্যাক বাংলাদেশ’ শ্লোগানে মুখরিত হয়েছে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ‘উই রিভোল্ট’ যেমন টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া কাঁপিয়ে দিয়েছে। তেমনি তারই যোগ্য উত্তরসূরী বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানের ‘টেইক ব্যাক বাংলাদেশ’টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া জাগিয়ে তুলেছে।

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে যুক্তরাজ্য বিএনপির সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মঞ্চে অন্যান্যের মধ্যে বিএনপি নেতা জহির উদ্দিন স্বপন, মাহিদুর রহমান, ডক্টর জালাল উদ্দিন ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি আব্দুল মালিক ও সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদ

১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর বিপ্লবের সিঁড়ি দিয়ে হেঁটে জিয়াউর রহমান যেভাবে গণমানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়ে তাদের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। তেমনি তারেক রহমান গণমানুষের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে লড়াই করছেন। বর্তমানে যুক্তরাজ্য থেকেই তিনি এসব কিছুর সমন্বয় করছেন। গত ২৬ মার্চ রবিবার বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি বলেছেন, শেখ হাসিনার অধীনে আর কোন নির্বাচন নয়। শেখ হাসিনাকে রাষ্ট্র ক্ষমতার বাইরে রেখেই নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন হতে হবে। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠনে সংবিধান কোনো বাধা নয়। শুধু সদিচ্ছার প্রয়োজন। দেশ স্বাধীন করার সময় সংবিধান বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। এবার দেশ এবং জনগণের স্বাধীনতা রক্ষার আন্দোলনেও সংবিধান বাধা হয়ে দাঁড়াবেনা। সভায় তারেক রহমান বলেন, দেশের প্রায় ১২ কোটি ভোটার। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ভোটার তালিকায় প্রায় দুই কোটি নতুন ভোটার যুক্ত হয়েছিল। নতুন ভোটারদের কাছে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, আপনারা কি ২০১৪ সাল কিংবা ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিতে পেরেছিলেন? আপনারা ভোট দিতে পারেননি। কারণ ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে ভোট ছাড়াই এমপি বানিয়ে দিয়েছিলো বেহুদা নির্বাচন কমিশন। আর ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর দিনের বেলায় জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের তারিখ ছিল। কিন্তু ২৯ ডিসেম্বর দিবাগত নিশিরাতে জনগণের ভোট ডাকাতি করে গঠন করা হয়েছে নিশিরাতের সরকার। ২০১৮ সাল থেকে ২০২৩ সাল। এই কয় বছরে ভোটার তালিকায় দেশে আরও প্রায় দেড় কোটি নতুন ভোটার যুক্ত হয়েছে। নতুন প্রজন্মের এই দেড় কোটি ভোটার ঐক্যবদ্ধ হলে আর বিনা ভোটে শেখ হাসিনার ক্ষমতায় থাকার খায়েশ পূরণ হবেনা।

দেশের ১২ কোটি ভোটারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় হয়েছে, ‘আপনার ভোটের অধিকার কি ভোট ডাকাতদের কাছে সমর্পন করবেন নাকি নিজের ভোট দেয়ার অধিকার আদায়ের সংগ্রামে শামিল হবেন’। চলমান ভোটাধিকার আদায়ের আন্দোলনে সবাইকে শামিল হওয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, সবাই নিজের ভোটের অধিকার প্রয়োগের প্রস্তুতি নিন। শপথ নিন ‘আমার ভোট আমি দেব যাকে ইচ্ছে তাকে দেব। আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি, আমার দল কথা দিচ্ছে, আপনার ভোট যেন আর কেউ ডাকাতি করতে না পারে সেজন্য বিএনপি আপনাদের পাশে ছিল, আছে, থাকবে। দেশের বারো কোটি ভোটারের কাছে বিএনপির অঙ্গীকার, নাগরিকদের ভোটাধিকার আদায়ের জন্যই বিএনপির দাবি ‘নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার’। সভায় গণতন্ত্র ভোটাধিকার অর্জনের জন্য জনগণকে রাজপথের আন্দোলনে চূড়ান্ত লড়াইয়ের প্রস্তুতি নেয়ার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশ যাবে কোন পথে ফয়সালা হবে রাজপথে।

স্বাধীনতা দিবসে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে তিনি বলেন, গণতন্ত্র বিরোধী মাফিয়া চক্র বর্তমানে স্বাধীন বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে। ক্ষমতাসীন মাফিয়া সরকার বাংলাদেশকে আজ গণতান্ত্রিক বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে। এখন আর আর্ন্তজাতিক ফোরামে বাংলাদেশের স্বার্থের পক্ষে কোনো দেশকে দেখা যায়না। ২০১৭ সালে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর লক্ষ লক্ষ মানুষকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়ে দিয়েছিলো। বাংলাদেশ ভূখন্ডে এই রোহিঙ্গাদের সংখ্যা বেড়ে এখন ১২ লক্ষাধিক। অথচ গত ছয় বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও তাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে ব্যর্থ হয়েছে মাফিয়া সরকার। একটানা এতো বছর রাষ্ট্র ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখলেও রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশ্বের একটি দেশকেও আর্ন্তজাতিক ফোরামে বাংলাদেশের পক্ষে দাঁড় করাতে পারেনি নিশিরাতের সরকার। দুঃখজনক হচ্ছে, কোনো কোনো দেশকে আওয়ামী লীগ তাদের পারিবারিক কিংবা দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করতে পারলেও একটি দেশকেও বাংলাদেশের বন্ধু বানাতে ব্যর্থ হয়েছে। এমনকি প্রতিবেশী ভারতের কাছ থেকেও আওয়ামী লীগের অবৈধ সরকার বাংলাদেশের স্বার্থ আদায় করতে পারেনি। আওয়ামী লীগ একটানা একযুগের বেশি সময় ধরে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার পরও ভারতের সঙ্গে তিস্তা চুক্তি করতে পারেনি। বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা চুক্তি দূরে থাক, উল্টো তিস্তা ব্যারাজ প্রকল্পের আওতায় ভারত তিস্তায় আরো দুটি বাঁধ নির্মাণ করতে যাচ্ছে। এ বাঁধ নির্মাণ করলে বাংলাদেশের উত্তর জনপদের দুঃখ-দুর্দশা আরো বেড়ে যাবে। অপ্রিয় বাস্তবতা হলো, গুম খুন করে বিনাভোটে ক্ষমতা দখল করে রাখা আওয়ামী লীগকে প্রায় প্রকাশ্যেই সমর্থন দিয়েছে প্রতিবেশী ভারত। বিনিময়ে আওয়ামী লীগ ভারতকে ট্রানজিট, ট্রান্সশিপমেন্ট এবং বাংলাদেশের বন্দর ব্যাবহারের সুযোগ দিয়েছে। বিপরীতে ভারতের কাছ থেকে বাংলাদেশের একটি স্বার্থও ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার আদায় করতে পারেনি। তবে আওয়ামী লীগ ভারতের কাছ থেকে একটি সুবিধা আদায় করেছে। সেটি হলো, আওয়ামী লীগ ভারতের কাছ থেকে গণতন্ত্রকামী মানুষকে সীমান্তের ওপারে ফেলে আসার সুবিধা আদায় করতে পেরেছে। স্বাধীন বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে আওয়ামী লীগের বেইমানির আরও নজির রয়েছে। ২০২২ সালের আগস্ট মাসে নিশিরাতের সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রী প্রকাশ্যেই একটি দেশদ্রোহী কথা বলেছিলেন। অবৈধ পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেছিলেন, ‘ভারতকে বলেছি, শেখ হাসিনার সরকারকে টিকিয়ে রাখার জন্য যা যা করা দরকার, সেটি করতে। আমি ভারতে গিয়ে বলেছি, শেখ হাসিনাকে টিকিয়ে রাখতে হবে।’ একটি স্বাধীন দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রীর পদ ব্যবহার করে ক্ষমতায় থাকার জন্য এভাবে আরেকটি করুনা ভিক্ষা একমাত্র আওয়ামী লীগের মতো অপশক্তির পক্ষেই সম্ভব। স্বাধীনতার ৫২ বছর পর ক্ষমতা লোভী মন্ত্রীর এমন নির্লজ্জতায় প্রমাণিত হয়েছে ‘দেশের জনগণ এখন নিজ দেশেই যেন পরাধীন’।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আরও বলেন, স্বাধীনতার সঙ্গে আত্মমর্যাদার সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু ক্ষমতাসীন অপশক্তি শুধুমাত্র ক্ষমতায় থাকার লোভে দেশের জনগণের ‘আত্মমর্যাদা ও গৌরব’কে পরিকল্পিতভাবে ধুলোয় মিশিয়ে দিচ্ছে। আওয়ামী অপশক্তি জনগণের সামনে এমনভাবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরছে তাতে মনে হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতা কারো দয়ার দান। এ প্রসঙ্গে তিনি ২০১৯ সালে ছাত্রলীগের জঙ্গিদের হাতে বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদের নির্মম হত্যাকান্ডের কথা উল্লেখ করে বলেন, পরগাছা ছাত্রলীগ জঙ্গিরা আবরার ফাহাদকে বুয়েটের আবাসিক হলে ঠান্ডা মাথায় পিটিয়ে হত্যা করেছে। তিনি প্রশ্ন করেন, আবরার ফাহাদের কি অপরাধ ছিল? ভারতকে পানি, গ্যাস ও সমুদ্রবন্দর দেয়ার বিষয় নিয়ে আবরার ফাহাদ ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলো। আবরারের ফেসবুক স্ট্যাটাসে বাংলাদেশের গৌরব, বাংলাদেশের জনগণের আত্মমর্যাদার কথা ফুটে উঠেছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগের আদর্শে বেড়ে ওঠা ছাত্রলীগ জঙ্গিরা দেশের গৌরব সহ্য করতে পারেনি। ফলে ছাত্রলীগের জঙ্গিরা অন্যদেশকে তুষ্ট করতে নিজ দেশের নাগরিককে-নিজের সহপাঠীকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। ভারতের আদানির সঙ্গে শেখ হাসিনার বিদ্যুৎ আমদানি চুক্তির কথা উল্লেখ করে বলেন, চুক্তির একটি শর্তে বলা হয়েছে রাজনৈতিক বা প্রাকৃতিক কোনো কারণে আদানি নির্দিষ্ট পরিমাণ বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে ব্যর্থ হলেও ‘আদানি’কে কোনো ক্ষতিপূরণ দিতে হবে না। তবে কোনো কারণে আদানির কাছ থেকে বিদ্যুৎ না কিনলেও, বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভাড়া অর্থাৎ ক্যাপাসিটি চার্জ বাবদ বছরে প্রায় ৪৫০ মিলিয়ন ডলার দিতে হবে। অপর একটি শর্তের কথা উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, আদানি তার দেশ ভারতের বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করেছে। যেহেতু আদানি বিদ্যুৎ রপ্তানি করবে এই জন্য ভারত সরকার আদানির এই প্রতিষ্ঠানের জন্য ট্যাক্স মওকুফ করে দিয়েছে। এই ট্যাক্স মওকুফের ফলে আদানি ‘এক বিলিয়ন ডলারের’ বেশি খরচ বাঁচাতে পারবে। কিন্তু আর্শ্চয্যের বিষয় হলো, আদানী তার দেশ থেকে ট্যাক্স মওকুফ ফেলেও চুক্তির শর্ত অনুযায়ী আদানী ট্যাক্সের টাকা বাংলাদেশ থেকে আদায় করে নিচ্ছে। তিনি আদানির সঙ্গে শেখ হাসিনার চুক্তিকে ‘দেশদ্রোহিতার শামিল’ বলে উল্লেখ করেন। কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এর আগেও শেখ হাসিনা দেশে কুইক দুর্নীতির জন্য কুইক রেন্টাল চালু করে। এইসব কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ উৎপাদন না করলেও ক্যাপাসিটি চার্জের নামে দলীয় দুর্নীতিবাজদেরকে ৯০ হাজার কোটি টাকার বেশি ডলারে পেমেন্ট করা হয়েছে। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী মানুষের কাছে একটি জিনিস স্পষ্ট হয়ে পড়েছে যে আওয়ামী লীগের কাছে গণতন্ত্র-ভোটাধিকার, জান-মাল এমনকি স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিরাপদ নয়। ১৯৭১ সালে জনগণ যুদ্ধ করেছিল একটি স্বাধীন মাতৃভূমির জন্য। আর এবারের যুদ্ধ দেশ এবং জনগণের স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধ।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, তলাবিহীন ঝুড়ির বদনাম ঘুচিয়ে স্বাধীনতার ঘোষক মেজর জিয়াউর রহমানের শাসনামলে যে দেশটি ‘স্বনির্ভর বাংলাদেশে’ পরিণত হয়েছিল, ‘মাদার অফ ডেমোক্র্যাসি’ খালেদা জিয়ার শাসনামলে যেই বাংলাদেশ ‘এশিয়ার ইমারজিং’ টাইগারে পরিণত হয়েছিল, সকল গৌরব হারিয়ে সেই বাংলাদেশ এখন মাফিয়াদের কবলে। উন্নয়নের নামে, তথাকথিত মেঘা প্রকল্পের নামে আওয়ামী মাফিয়া চক্র বছরের পর বছর ধরে জনগনের টাকা লুটপাট করে চলছে। দেশের টাকা বিদেশে পাচার করে দেয়া হচ্ছে। গত একযুগেরও বেশি সময় ধরে দেশ থেকে ১০ লক্ষ কোটি টাকার বেশি পাচার করে দেয়া হয়েছে। রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম ব্যবহার করে টাকা পাচারকারী মাফিয়া সরকার এতদিন উন্নয়নের নামে জনগণকে ধোকা দিয়ে আসছিলো। এতদিন তারা দাবি করতো তারা নাকি বাংলাদেশকে ‘উন্নয়নশীল’ দেশে পরিণত করেছে। তবে এবার তাদের এই মিথ্যাচার ফাঁস করে দিয়েছে জাতিসংঘ। চলতি মার্চ মাসের ‘ফার্স্ট উইক’ এ জাতিসংঘের আয়োজনে কাতারে স্বল্পোন্নত দেশ অর্থাৎ লিস্ট ডেভেলপ কান্ট্রিজ-এলডিসি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলনে বিশ্বের স্বল্পোন্নত দেশগুলোর একটি তালিকা প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। এতে দেখা যায়, বিশ্বের স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় ৪৬টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের নাম রয়েছে। স্বল্পোন্নত দেশের তালিকায় এশিয়া মহাদেশের দরিদ্র দেশগুলোর মধ্যে প্রথমে আছে যুদ্ধ বিধ্বস্ত আফগানিস্তান এবং এরপরই বাংলাদেশ। এই হলো মাফিয়া সরকারের উন্নয়নের চিত্র।

স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভায় নিজ বক্তব্যের শুরুতেই তিনি তাঁর বাবা মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, ১৯৭১ সালের উত্তাল ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন মেজর জিয়াউর রহমান। ২৬ মার্চ রাতের অন্ধকারে হানাদার বাহিনীর সুপরিকল্পিত বর্বর এ হামলার সময় দিকনির্দেশনাহীন স্বাধীনতাকামী মানুষের সামনে মেজর জিয়ার স্বাধীনতার ঘোষণা ছিল তূর্যধ্বনির মতো। জিয়াউর রহমান হঠাৎ করেই স্বাধীনতার ঘোষণা দেননি। বরং পাকিস্তান থেকে আলাদা হয়ে একটি স্বাধীন মাতৃভূমির প্রতিষ্ঠার তীব্র আকাঙ্খা তিনি বছরের পর বছর ধরে মনে প্রাণে লালন করেছিলেন। ফলে দেখা যায় যখনই জিয়াউর রহমানের সামনে মাতৃভুমি স্বাধীন করার সুযোগ এসেছে তাঁকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। যথানিয়মে স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে তাঁকে এক মুহূর্তও সময়ক্ষেপণ করতে হয়নি। মেজর জিয়াউর রহমান কোন প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, কেন কিভাবে ধীরে ধীরে জিয়াউর রহমানের মনে একটি স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন বেড়ে উঠেছিল ১৯৭২ সালে তৎকালীন দৈনিক বাংলা পত্রিকার ২৬ মার্চ সংখ্যায় প্রকাশিত জিয়াউর রহমানের লেখা ‘একটি জাতির জন্ম’ নিবন্ধে এর বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে। তারেক রহমান বলেন, শহীদ জিয়ার লেখা ‘একটি জাতির জন্ম’ নিবন্ধটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের একটি অনন্য দলিল।

পূর্ব লন্ডনের দ্যা রয়েল রিজেন্সি অডিটোরিয়ামে আয়োজিত উক্ত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাজ্য বিএনপির আহবায়ক এম এ মালিক। যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদের পরিচালনায় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সাবেক এমপি ও বিএনপির মিডিয়া সেলের আহবায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, যুক্তরাজ্য বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মাহিদুর রহমান, বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য ও আন্তর্জাতিক কারেন্সি বিশেষজ্ঞ ড. এম জালাল উদ্দিন ও যুক্তরাজ্য বিএনপির নেতৃবৃন্দ। সভায় যুক্তরাজ্য বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীসহ কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজ ও স্থানীয় সাংবাদিগণ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় আগত কমিউনিটি নেতৃবৃন্দ বলেন, তারেক রহমান বাংলাদেশের গণমানুষের প্রয়োজনে এক ক্রান্তিকালে রাজনীতির হাল ধরেছেন। তাই তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রতিষ্ঠাতা, একজন প্রেসিডেন্ট ও একজন প্রধানমন্ত্রীর সন্তানের পরিচিতি থেকে বেরিয়ে এসে দলের একজন দক্ষ সংগঠক ও সক্রিয় নেতা হিসেবে স্বতন্ত্র পরিচিতি লাভ করেছেন। যাঁর বাবা বহুদলীয় গণতন্ত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষকে ভোট দেয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন, যাঁর মা স্বৈরাচারী এরশাদকে রাজপথের আন্দোলনে বিদায় করেছেন, এবার তিনি বাংলাদেশের মানুষের হারানো ভোটাধিকার ফেরত দিতে পারবেন। শেখ হাসিনার অবৈধ সরকারের অপশাসন থেকে বর্তমান বাংলাদেশের মানুষকে মুক্তি দিতে এবং তাদের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতেই তারেক জিয়া জন্ম নিয়েছেন বলে জনগণ বিশ্বাস করেন। বিএনপির শাসনামলে তারেক রহমান কারো মানবাধিকার খর্ব করেননি, তাঁর বিরুদ্ধে লেখার জন্য কোনো সাংবাদিককে গ্রেফতার করাননি, সংবাদপত্রের অফিসে তালা মারেননি। রাজনৈতিক শিষ্টাচারের বাইরে তিনি কোনো কাজ করেননি। গণতন্ত্র ও সংবাদপত্রবান্ধব জিয়া পরিবারের ঐতিহ্য তিনি যথাযথ সমুন্নত রেখেছেন। প্রেসিডেন্ট জিয়া বাংলাদেশ দিয়ে গেছেন। বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশ গড়ে তুলেছেন। আগামীতে তারেক রহমান বিএনপিকে নেতৃত্ব দিয়ে আধুনিক বাংলাদেশ গড়ে তুলবেন ইনশা-আল্লাহ।

Sheikhsbay

Related Articles

Back to top button
Close
Close