নিউজ

লন্ডনে বাগানপ্রেমীদের  উৎসব ও বীজমেলা

।। ডরিনা লাইজু।।

গত ৫ ফেব্রুয়ারি লন্ডনের রমফোর্ডে মে ফেয়ার ভেন্যূতে আয়োজন করা হয়েছিল এক ভিন্নধর্মী  বীজ মেলার। বাগানপ্রেমীদের উৎসব ও প্রথমবারের মতো আয়োজিত বীজমেলা অনুষ্ঠানকে পরিণত করে প্রকৃতিপ্রেমীদের এক অসাধারণ জমজমাট উৎসবে।

বাংলাদেশী গার্ডেনার সোসাইটি ইউকে আয়োজিত  ‘বাগানপ্রেমীদের উৎসব ও বীজ মেলা’র উদ্যোক্তারা মেলায় বাগানপ্রেমী মানুষের মাঝে নানা ধরনের দেশী বিদেশী শাক সব্জী, ফল ফুলের বীজ বিনামূল্য  বিতরণ করেন। বাগানপ্রেমী মানুষের মাঝে পারস্পরিক বীজ এবং চারা আদান প্রদানের মাধ্যমে  সামাজিক যোগাযোগ বৃদ্ধির  পাশাপাশি পরিবেশ ও প্রকৃতির উন্নয়ন সাধনে গত কয়েক বছর যাবত বিজিএস নিরলস কাজ করে চলেছে। ব্যাপক পরিসরে এটাই তাদেরপ্রথম বীজ মেলা। 

রবিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত এ মেলায় যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহর থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাগম ঘটে।

দেশীয় শাক সব্জী ও লতা পাতায় জড়ানো কাঠের ফ্রেম দিয়ে বানানো গ্রাম বাংলার আমেজ সৃষ্টিকারি মঞ্চ সকলের নজর কাড়ে। উৎসবে যোগ দেওয়া বেশিরভাগ নারী পুরুষ এবং শিশুদের পরনে ছিল বিজিএস-এর পরিচয় বহনকারী সবুজ শাড়ি আর পাঞ্জাবি। সব মিলিয়ে অনুষ্ঠানস্থল পরিণত হয় বাগান ও প্রকৃতির এক অপূর্ব জমজমাট  মিলন মেলায়।চারিদিকে কেবলই সবুজের সমারোহ। 

মেলার শুরু থেকে বিজিএস পরিবারের অগনিত সদস্যদের  মাঝে থাকা প্রতিভাবান গুনী শিল্পীদের তত্ত্বাবধানে এবং অংশগ্রহনের  মাধ্যমে চমৎকার সাংস্কৃতিক পরিবেশনা সবার হৃদয় কাড়ে। সন্ধ্যায় বিলেতের স্বনামধন্য শিল্পীদের সংগীতের মূর্ছনা আর বাংলাদেশী খাবার নানা ধরণের পিঠা ,চটপটি আর চায়ের আনন্দ উপভোগের সমন্বয়ে মে ফেয়ার হলে বাগান প্রেমীদের এই উৎসব বিলেতে নতুন এক চর্চার যাত্রা শুরু হলো বলে অনেকে মন্তব্য করেন। অগনিত সদস্যদের  পাশাপাশি মেলায় যোগ দেন  ব্রিটিশ পার্লামেন্ট মেম্বার  ষ্টিফেন টিমস এবং বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের সাবেক রাষ্ট্রদূত আনোয়ার চৌধুরী।

মেলায় ২০২২ সালের  বিজিএস এর  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন কর্মকান্ডে নিরলস উৎসাহ এবং উপকারী পোষ্ট দিয়ে যারা নানাভাবে বিজিএস কে উৎসাহ অনুপ্রেরনা দিয়ে অবদান রেখেছেন তাদের মধ্য থেকে সদস্যদের  ভোটে ৫ জনকে  “বিজিএস এওয়ার্ড ২০২২” প্রদান করা হয়। তারা হলেন সিলিভিয়া মির্জা, খায়রুল আনাম, মাসুদা আক্তার, মাহমুদা প্রভা এবং উর্মি রহমান।
একই ভাবে সদস্যভোটে যৌথভাবে ‘গার্ডেনারস অফ দা ইয়ার ২০২২’ নির্বাচিত করেন কাজল রেখা এবং তাহমিনা আহমেদকে ।

বিজিএস এর উদ্যোক্তারা গতানুগতিক নিয়মের বাইরে গিয়ে নামের প্রচারের চেয়ে কাজে বিশ্বাসী। বি জি এস কে কয়েকজন উদ্যোক্তার মাঝে সীমাবদ্ধ না রেখে তারা পুরো বিজিএসকে একটি পরিবার হিসেবে বিবেচনা করে “শেয়ার এন্ড  কেয়ার” এর মাধ্যমে সকল সদস্যদের সবুজের সাথী বানিয়ে কাজ করে যাওয়ায় বিশ্বাসী।”গ্রীন শেল্টার সোসাইটি” নামে একটি চ্যারিটি সংস্থার সহায়তায় বিজিএস এই মেলার আয়োজন করে। বাগান ও প্রকৃতিপ্রেমীদের সারাবছর আনন্দে মাতিয়ে রাখতে নিরলস কাজ করে চলেছে বিজিএস-এর প্রচার বিমুখ একদল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠক। বিজিএস কে নিয়ে ভবিষ্যতে আরো অনেক চমকপ্রদ পরিকল্পনা রয়েছে বলে উদ্যাক্তারা প্রতিবেদককে জানান।পরিকল্পনার ব্যপারে বিস্তারিত জানতে চাইলে তারা জানান সময় ই তা বলে দিবে।বি জি এস এর ভবিষ্যত পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়ন হোক সেই সাথে বিলেতে প্রতিটি বাগান আংগিনা ভরে উঠুক বাংলাদেশী শাক সব্জীতে। আসুন আমরাও সবুজের সাথে থাকি, বাগানে আনন্দে মাতি, নিজে সুস্হ্য থাকি এবং নতুন প্রজন্মকে বাগানে উৎসাহিত করে নিজ নিজ পরিবারকে সুস্হ্য রাখি।

বিজিএস এবং মেলার আয়োজকসহ সংশ্লিষ্ট সকলেরই এরকম একটি সফল উদ্যোগ গ্রহন নি:সন্দেহে প্রশংসনীয়।

Sheikhsbay

Related Articles

Back to top button
Close
Close