নিউজ

জামায়াতের মিছিলে হামলা ও গ্রেফতারে লন্ডনে প্রতিবাদ সভা

আমিনুল ইসলাম মুকুল, লন্ডনঃ গত ৩০ ডিসেম্বর ২০২২ রাজধানীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশের অতর্কিত আক্রমন, গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের প্রতিবাদে ও বিরোধীদলের সকল নেতাকর্মীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে ১ জানুয়ারি ২০২৩ (রবিবার) পূর্ব লন্ডনের একটি রেস্টুরেন্টে প্রতিবাদ সভা করেছে ইউকে ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন ফাইট ফর রাইটস ইন্টারন্যাশনাল (এফআরআই)।সংগঠন এর সভাপতি রায়হান উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং সহকারী সাংগঠনিক সম্পাদক ফয়েজ আহমদ এর পরিচালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় অফিস সম্পাদক ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি শামসুল আলম গোলাপ।অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন সাবেক ছাত্রনেতা ও এফআরআই এর সিনিয়র সহসভাপতি মোঃ তরিকুল ইসলাম, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফাইট ফর রাইটস ইন্টারন্যাশনালের সহসভাপতি সাংবাদিক আমিনুল ইসলাম মুকুল, ইসলামী ছাত্র শিবিরের সিলেট মহানগরীর সাবেক অফিস সম্পাদক আসাদুজ্জামান শাফী ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র নেতা মোঃ রাসেল আলম।সভার শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন এফআরআই’র সহকারী সাধারণ সম্পাদক হাদিসুর রহমান খান।

সভায় প্রধান অতিথি বলেন, ৩০ ডিসেম্বর ঘটনার ভিডিও চিত্রে স্পষ্ট দেখা যায়, পুলিশ অন্যায়ভাবে জামায়াতের শান্তিপূর্ণ মিছিলে আক্রমণ করেছে কিন্তু এক শ্রেণীর মিডিয়া ও পুলিশ প্রশাসন জামায়াতকেই পুলিশের উপর হামলাকারী হিসেবে চিত্রিত করার অপচেষ্টা চালিয়েছে।এই ঘটনায় জাতির কাছে স্পষ্ট হয়েছে, অতীতে যত হামলার ব্যাপারে জামায়াত- শিবিরের ওপর অপবাদ দেওয়া হয়েছে প্রত্যেকটি অপবাদই মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন।প্রত্যেকটি ঘটনার ভিডিও চিত্র প্রকাশ করা সম্ভব হলে দেখা যেতো জামায়াত-শিবির সব সময় শান্তিপূর্ণভাবে তাদের কর্মসূচি পালন করার সর্বাত্মক চেষ্টা করে থাকে অপরপক্ষে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অথবা আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা জামায়াত-শিবিরের ওপর আক্রমণ করে আবার তাদের ওপরে দোষ চাপিয়ে থাকে।এই সরকারের আমলে প্রশাসন দলীয় ক্যাডারের মতো আচরণ করছে, ডিএমপি কমিশনার প্রকাশ্যে মিডিয়ার সামনে পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছে জামায়াত-শিবিরকে পেটানোর জন্য, যা অন্যায়।আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী একটি বৈধ রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের ওপর আক্রমণের উস্কানি দিয়ে দেশের আইন ও সংবিধান লঙ্ঘন করেছে।এর সাথে জড়িতদের শাস্তি দিতে হবে।তিনি এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং অবিলম্বে গ্রেফতারকৃতদের মুক্তি দাবি করেন।

প্রধান বক্তা মোঃ তরিকুল ইসলাম বলেন, কোন জালিম সরকারই চিরস্থায়ী নয় এবং তাদের পতন অনিবার্য।জামায়াত একটি নিয়মতান্ত্রিক ও গণতান্ত্রিক দল হিসেবে বাংলাদেশে রাজনীতি করছে।কিন্তু এই সরকার ভিন্নমতের অধিকার সহ্য করছে না।তারা ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে।এবার জনগণ জেগেছে, হামলা-মামলা ও নির্যাতন করে তাদের দমিয়ে রাখা যাবে না।জামায়াত শিবিরের শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশের এই ন্যাক্কারজনক হামলা, মামলা ও নির্যাতন কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না।ঐক্যবদ্ধ যুগপৎ আন্দোলনের মাধ্যমে ১০ দফা দাবি আদায় করে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের অবসান ঘটানো হবে ইনশাআল্লাহ্‌।

সাংবদিক আমিনুল ইসলাম মুকুল বলেন, বর্তমান সরকারের জুলুম-নির্যাতনের অংশ হিসেবে যুগপৎ কর্মসূচি চলাকালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর শান্তিপূর্ণ মিছিলে আওয়ামী পুলিশ কর্তৃক পৈশাচিক আক্রমণ চালিয়ে অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।পরবর্তীতে পুলিশ হেফাজতে জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে হাত-পা ভেঙ্গে অনেককে রিমান্ডে নেয়া হয়েছে, যা সম্পূর্ণ অন্যায়, অসাংবিধানিক ও অগণতান্ত্রিক।তিনি এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বন্দীদের মুক্তি দেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান।

সভাপতির বক্তব্যে রায়হান উদ্দিন বলেন, ৩০ ডিসেম্বর গণমিছিলের অনুমতি চেয়ে জামায়াতের পক্ষ থেকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের নিকট অনলাইনে এবং প্রতিনিধি দলের মাধ্যমে সশরীরে আবেদন করা হয়।কিন্তু ঢাকা মহানগরী উত্তর জামায়াতের শান্তিপূর্ণ মিছিলে পুলিশ বাধা দিয়ে লাঠিচার্জ, টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে।এতে শতাধিক নেতাকর্মী আহত হন।হাজার হাজার মানুষের শান্তিপূর্ণ মিছিলে বাধা দিয়ে পুলিশ বেআইনী কাজ করেছে।বাংলাদেশের সংবিধান সকল রাজনৈতিক দলকে মিছিল-মিটিং ও সভা-সমাবেশ করার অধিকার দিয়েছে।পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জামায়াতকে মিছিল করতে না দেয়ার যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা সংবিধান স্বীকৃত অধিকারের পরিপন্থী এবং নাগরিক অধিকারের প্রত্যক্ষ বিরোধিতা।আমরা সংবিধানের আলোকে সভা-সমাবেশ ও মিছিলের অধিকার নিশ্চিত করা এবং জনগণকে হয়রানি করা থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

প্রতিবাদ সভায় অন্যানদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মানবাধিকার কর্মী এস এম রেজাউল করিম, সুহেল আহমদ, ইকবাল হোসেন মো: জুনেদ উদ্দীন, মিনহাজ ইসলাম, রুবেল আহমদ, মো : আলিম উদ্দীন প্রমুখ।

Sheikhsbay

Related Articles

Back to top button
Close
Close