বুড়িগঙ্গা থেকেই উদ্ধার হয়েছে ৪১ লাশ

|| সুরমা প্রতিবেদন ||
লণ্ডন, ২৪ নভেম্বর : লাশ গুমের নিরাপদ স্থান’ হয়ে উঠেছে রাজধানী ঢাকার আশপাশের নদনদী। এক বছরে বুড়িগঙ্গা, বংশী, তুরাগ, বালু ও শীতলক্ষ্যা থেকে শতাধিক মানুষের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শুধু বুড়িগঙ্গা থেকেই উদ্ধার হয়েছে ৪১ লাশ। সে হিসাবে প্রতি ৯ দিনে নদীটিতে একটি করে লাশ ফেলা হয়েছে। অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আয়নাঘর বা অন্য কোনো স্থানে খুন করে লাশ এনে ফেলা হচ্ছে এসব নদীর নির্জন স্থানে। পরে উদ্ধার হলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পচাগলা লাশের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয় না। তাই অধিকাংশ সময় এসব লাশ বেওয়ারিশ হিসাবে দাফন করা হয়। তাছাড়া কিছু লাশ চিহ্নিত হলেও সঠিক তথ্যপ্রমাণের অভাবে অপরাধীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে।
স্থানীয়দের ধারণা, কেরানীগঞ্জের হাসনাবাদ, রাজধানীর সদরঘাট, বরিসুর, বছিলা, আমিনবাজার, আশুলিয়া ও টঙ্গী পর্যন্ত নদীপথ এবং ডেমরা ও রাজাখালী ছাড়াও নরসিংদীর কিছু এলাকার নদীপাড়ে অনেক বসতি রয়েছে। আবার অনেক এলাকায় কোনো বসতি নেই। বসতিহীন এলাকাগুলোয় দিনের বেলায় লোকজনের উপস্থিতি থাকলেও রাতের বেলায় তা একেবারে নীরব থাকে। একারণে হত্যার পর লাশ নদীতে ফেলে দেওয়ার জন্য ঘাতকেরা এসব এলাকার নদীকে বেছে নিচ্ছে। নদীর পানিতে লাশ ভাসতে ভাসতে বিভিন্ন এলাকায় চলে যাচ্ছে। ফলে খুনের মোটিভ ও স্থান নিয়ে ধোঁয়াশায় থেকে যাচ্ছেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা।
মিটফোর্ড হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, ময়নাতদন্ত শেষে পরিচয়হীন লাশ দাফন করার জন্য আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলামকে দেয়া হয়। এসব হত্যা বা অপমৃত্যু মামলার মধ্যে হাতেগোনা কয়েকটি মামলার রহস্য পুলিশ উদ্ঘাটন করতে পারলেও বহু মামলা বছরের পর বছর তদন্তের বেড়াজালে আটকে আছে। শীতলক্ষ্যা ও বুড়িগঙ্গা নদী সরকারের ঘাতক বাহিনী কর্তৃক গুম হওয়া মানুষের লাশের ডাম্পিং জোনে পরিণত হয়েছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ধারণা করা হচ্ছে, পতনের আগে সরকার বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের মরণকামড় দিচ্ছে। নিজেদের একদলীয় দুঃশাসন চিরস্থায়ী করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নিজেদের কবজায় নিয়ে বিরোধী নেতাকর্মীদের এভাবে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে নদীতে লাশ ভাসিয়ে দিচ্ছে।