নিউজ

বাংলাদেশী রিফিউজিদের পদচারণায় সিডনির রাজপথ মুখরিত

লণ্ডন, ১ আগস্ট : গত ২৪ জুলাই, রবিবার দুপুর ২ টায় সিডনি সিটির প্রধান রাজপথে টাউনহলে রিফিউজি অ্যাকশন গ্রূপ দ্বারা আয়োজিত এক বিশাল সমাবেশে বক্তব্য রাখেন অস্ট্রেলিয়ান গ্রীন পার্টির সিনেটর Hon David Shoebridge. বিগত লিবারেল সরকারের ইমিগ্রেশন আইনের কঠিন সমালোচনা করে তিনি বর্তমান লেবার সরকারকে বিশেষ অনুরোধ জানান সকল  রিফিউজিদেরকে স্থায়ী ভিষার সুবন্দোবস্ত করার জন্যে। এছাড়াও তিনি ২ আগস্ট ২০২২ পার্লামেন্ট অধিবেশনে রিফিউজিদের বিষয়ে আলোচনা উত্থাপন করবেন বলে জানান।

দুপর ২টা থেকে সিডনি ও সিডনির বাহির থেকে বিভিন্ন প্লে কার্ড ও বড় বড় ব্যানারে বিভিন্ন ভাষাভাষীর শরণার্থীরা দলে দলে টাউনহল (https://en.wikipedia.org/wiki/Sydney_Town_Hall) প্রাঙ্গণে স্লোগানসহ আসতে থাকে। অস্ট্রেলিয়ার প্রথম সারির জাতীয় মিডিয়া, সাংসদ, মানব অধিকার সংস্থা,অস্ট্রেলিয়ান বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশের হাজারো রিফিউজির এক বিশাল সমাবেশে গোটা এলাকা মুহূর্তে হয়ে উঠে দাবী আদায়ের প্লাটফর্ম হিসেবে।

বাংলাদেশী রিফিউজি অব অস্ট্রেলিয়া ইন্ক (BRA) উক্ত সমাবেশে এক স্মরণীয় অবদান রাখতে সক্ষম হয়। প্রায় ২০০ বাংলদেশী রিফিউজি বিশাল ব্যানারে স্লোগান দিতে দিতে টাউনহলের মেইন স্পটে প্রবেশ করে — যা সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। সাদা টি শার্টে সামনের দিকে সুন্দর একটি লোগো এবং পিছনের অংশে Justice for Refugees লিখা গ্রূপের দিকে দৃষ্টি ছিল প্রথম থেকেই। তাইতো এমসি বারংবার মেইন মাইক থেকে বাংলাদেশী রিফিউজিদের সুনামে ছিল পঞ্চমুখ।

বাংলাদেশী রিফিউজি অব অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক বিশেষ বক্তব্য রাখেন  বাংলাদেশী রিফিউজি অব অস্ট্রেলিয়ার (BRA) প্রধান উপদেষ্টা — অস্ট্রেলিয়া থেকে প্রকাশিত একমাত্র বাংলাদেশী পত্রিকা সুপ্রভাত সিডনির প্রধান সম্পাদক এম, এ, ইউসুফ শামীম। তিনি বাংলাদেশের চলমান অবস্থা সংক্ষিপ্তভাবে তুলে ধরেন। ছাত্র, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ অর্থাৎ সকল পেশার মানুষ আজ নির্যাতিত ও নিগৃহীত। লাগাতার গুম, খুন, বিচার বহির্ভুত হত্যা, ধর্ষণ ও আওয়ামীলীগের নেতা কর্মী দ্বারা জুলমে দেশ ছেড়ে জীবন নিয়ে পালিয়ে এসেছে অস্ট্রেলিয়ায়। এখানে এসে বাংলাদেশ সরকারের চাকর (হাই কমিশন ও কনস্যুলেট) রিফিউজিদের সাথে অসম্ভব খারাপ ব্যবহার করেন যা অস্ট্রেলিয়ার মতো দেহসে গ্রহ যোগ্য নয়। খুব শীঘ্র তাদের স্বৈরাচারী মনোভাব পরিবর্তন না করলে আমরা অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ লেভেলে তাদের নামে  অফিশিয়াল অভিযোগ দাখিল করবো। তারা ভুলে গেছে, যতদিন একজন বাঙালি এ মাটিতে অবশিষ্ঠ থাকবে, ততদিন তারা এ দেশে না ছেলে মেয়ে নিয়ে এ ধরনের একটি উন্নত দেশে হাওয়া বাতাস খেতে পারবে। যাদের অবদানে তারা (হাই কমিশন ও কনস্যুলেট) এ দেশে এখনো কাজ করার সুজুগ পাচ্ছে, প্রয়োজনে তাদেরকে সকাল বিকাল পা ছুঁয়ে সালাম করে হলেও অভিযোগের গ্লানি থেকে বাঁচা উচিত।

বাংলাদেশী রিফিউজি অব অস্ট্রেলিয়ার সভাপতি মোহাম্মদ নাসির আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক এমডি শফিকুল ইসলাম বাংলাদেশী রিফিউজিদেরকে চমৎকারভাবে সংগঠিত করে এক ব্যানারের নিচে যথা সময়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে। উল্লেখ্য, বিগত দিনেও তারা প্রধান উপদেষ্টার সহায়তায় বড় বাস ভাড়া করে ক্যানবেরা পার্লামেন্ট হাউসের সামনে ডেমোন্সট্রেশন ও সিডনি সিটিতে বিশাল প্রতিবাদ সভা করে সকল জাতিকে চমক লাগিয়ে দেয়।

রিফিউজি প্রধান উপদেষ্টা অস্ট্রেলিয়ান সরকারকে বিনীত অনুরোধ করেন — যাতে তাদেরকে একটি সুজুগ দেয়া হয়, তারাও যাতে পার্মানেন্ট ভিসা নিয়ে লাইফ এনজয় করতে পারে এবং বাকি কমিনিটির সাথে কাঁধে কাঁধ রেখে কমিউনিটির  উন্নতিকল্পে কাজ করে যেতে পারে। বিকেল প্রায় ৩.৩০ মিনিটে পুরো শহর মিছিল করে প্রদক্ষিণ করে হাইড পার্ক যেয়ে সমাপনী বক্তব্যের মাঝে শেষ করা হয় সমাবেশ। সমাপনী বক্তব্য রাখেন অনুষ্ঠানের প্রধান আয়োজক Ian Rintoul.

Sheikhsbay

Related Articles

Back to top button
Close
Close