নিউজ

রেজিস্ট্রেশন বাতিল মামলায় এইচএমআরসি‘র বিরুদ্ধে ব্রাক-সাজনের জয়, শীঘ্রই শুরু হচ্ছে মানি-ট্রান্সফার কার্যক্রম

।। সুরমা প্রতিবেদন ।।
লণ্ডন, ১৫ জুন : বৃটেনে বাংলাদেশী মালিকাধীন শীর্ষস্থানীয় মানি-ট্রান্সফার সংস্থা ব্রাক-সাজন এক্সচেঞ্জ লিমিটেড এইচএমআরসি কর্তৃক রেজিস্ট্রেশন বাতিলের বিরুদ্ধে করা মামলায় জয় লাভ করেছে। সম্প্রতি ট্যাক্স ট্রাইব্যুনাল কোর্টের যুগান্তকারী রায়ে ব্রিটিশ সরকারের এই রেগুলেটরি সংস্থার বিরুদ্ধে জয় লাভের পর আবার তাদের কার্যক্রম শুরু হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। এমএলআর আইন লঙ্ঘিত হয়েছে এবং তাদের মাধ্যমে অর্থ প্রেরণ নিরাপদ নয় এবং তাদের উপর ভবিষ্যতে ভরসা করা যাবে না মর্মে গতবছরের ২৬ মে ব্রাক-সাজন মানি-ট্রান্সফার সংস্থার রেজিস্ট্রশন বাতিল করে দেয় এইচএমআরসি। এরপর থেকে সবধরনের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায় ব্রাক-সাজনের। এরপর বন্ধ থাকে প্রায় এক বছর এবং মামলা চলে। এর আগে ২০২০ সালের অক্টোবরে তাদের এমএলআর রেজিস্ট্রেশন সাময়িকভাবে রদ করা হয়েছিলো। কিন্তু এইচএমআরসি‘র উত্থাপিত অভিযোগ সঠিক না হওয়ায় ব্রাক-সাজন কতৃর্পক্ষ আদালতের শরণাপন্ন হয় এবং প্রায় একবছর মামলায় লড়ে তারা জয় লাভ করেন। উল্লেখ্য, ইউকেজুড়ে ব্রাক-সাজনের প্রায় ৩শ‘টি এজেন্সি রয়েছে। রেজিস্ট্রেশন বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং মামলা চললেও ব্রাক-সাজনের মাধ্যমে অর্থ প্রেরণকারী কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন কিংবা কারো অর্থ আটকা পড়েছে বলে শোনা যায়নি।

সরকারের রেগুলেটরি সংস্থার বিরুদ্ধে কোনো বাংলাদেশী সংস্থার ব্যয়বহুল আইনী লড়াইয়ে বিশাল এই জয়লাভের পর কমিউনিটিকে বিষয়টি জানানোর তাগিদ থেকে সংস্থাটির পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে ।
গত ১৩ জুন, সোমবার পূর্বলণ্ডনের হোয়াইটচ্যাপলের একটি রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ব্রাক-সাজনের সিইও আব্দুস সালাম মামলার বিস্তারিত তুলে ধরেন। এসময় ব্রাক-সাজনের কয়েকজন শেয়ার হোল্ডার ও কর্মকর্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অন্যতম শেয়ার হোল্ডার ও কুশিয়ারার ট্রাভেল এণ্ড মানি-ট্রান্সফারের কর্ণধার হারুন মিয়া, দেশ ফাউণ্ডেশনের চেয়ার মিসবাউর রহমান, শেয়ার হোল্ডার সুমন আহমদ, সংস্থাটির ম্যানেজার সিপ্রিয়ান গোমেজ ও কমিউনিকেশন ম্যানেজার শোয়েব চৌধুরী।
ব্রাক-সাজনের সিইও আব্দুল সালাম জানান, কিছু অভিযোগ এনে গত বছরের ২১ মে এইচএমআরসি ব্রাক-সাজন এক্সচেঞ্জ লিমিটেডের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে দেয়। বাতিল করার কারণ হিসবে অর্থ পাচার, সন্ত্রাসবাদে অর্থায়নের ঝুঁকিসমূহ সঠিকভাবে সনাক্ত ও তা মোকাবেলায় ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। এইচএমআরসি‘র পক্ষ থেকে আরো বলা হয় যে, ব্রাক সাজানের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা এই আইন লঙ্ঘন ও ব্যর্থতার ব্যাপারে অবগত ছিলেন এবং কোনরূপ সংশোধনমূলক পদক্ষে গ্রহণ করেননি। তাদের পক্ষ থেকে আরো বল হয় যে, এই দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের ব্যর্থতার কারণে তারা ব্রাক-সাজনের উপর ভবিষ্যতে নিরাপদ অর্থ প্রেরণের ব্যাপারে ভরসা করা যাবে না।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, এইচএমআরসি‘র এমন সিদ্ধান্তের রিরুদ্ধে ব্রাক-সাজনের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে আইনানুগ ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হয়। গত বছরের ২১ জুলাই ফাস্টর্ টিয়ার ট্যাক্স-ট্রাইব্যুনালে আপিল করেন তারা। গত ১ এপ্রিল থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত ট্রাইব্যুনাল উভয় পক্ষের শুনানি গ্রহণ করার পর ৯ জুন দীর্ঘ ১৭৮ পৃষ্ঠার রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ে জাজ উল্লেখ করেন যে, এইচএমআরসি ব্রাক-সাজন এবং এর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে যেসকল অভিযোগ করেছিলো তারা সেসবের কোনো প্রমাণ হাজির করতে পারেনি। এই মর্মে জাজ রেডস্টোন এইচএমআরসি‘র সকল সিদ্ধান্ত বাতিল করে ব্রাক-সাজন এক্সচেঞ্জের এমএলআর রেজিস্ট্রেশন বহাল রাখেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে আব্দুস সালাম জানান, দীর্ঘ একবছর কার্যক্রম বন্ধ থাকায় তাদের প্রায় ১০ মিলিয়ন পাউণ্ডের ক্ষতি হয়েছে। তারা মামলার যাবতীয় খরচ পাবেন কিন্তু তারা যে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সেটির জন্য পাল্টা এইচএমআরসি‘র বিরুদ্ধের কোনো মামলা করবেন কীনা তা ভেবে দেখছেন বলে জানান। তিনি একই সাথে আগামী ৪ থেকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে ব্রাক-সাজন আবার তাদের কার্যক্রম শুরু করবে বলেও জানিয়েছেন।

Sheikhsbay

Related Articles

Back to top button
Close
Close