মুক্তচিন্তা

সাবাশ বাংলাদেশ! জয়তু ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’ শেখ হাসিনা!

|| মকিস মনসুর ||
লেখক পরিচিতি; মোহাম্মদ মকিস মনসুর একজন সাংবাদিক ও লেখক এবং রাজনীতিবিদ। বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উৎসব আন্তর্জাতিক সার্বজনীন উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব. ও চেয়ারম্যান ইউকে বিডি টিভি

পদ্মা সেতু  ছিলো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের একটি প্রকল্প। পদ্মা সেতু  ছিলো বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের স্বপ্ন। আজ থেকে ২৫ বছর আগের, বহুল প্রতীক্ষিত সেই স্বপ্নের পদ্মাসেতু জাতীয়-আন্তর্জাতিক অনেক বাধা, ঘাত-প্রতিঘাত, প্রতিবন্ধকতা ও দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে নির্মিত পদ্মাসেতু এখন উদ্বোধনের অপেক্ষায়।আগামী ২৫ জুন ২০২২ ইংরেজি তারিখের সকাল ১০টায় সেতুটি  মাননীয়  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনের মাধ্যমে জনগণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হতে চলেছে, যার ফলে বিশ্বব্যাপী আজ প্রমাণিত বাংলাদেশের মানুষ এখন শুধু স্বপ্ন দেখে না। বাস্তবতার জয়গান গায়। “মাদার অব হিউম্যানিটি’ মানণীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানাতে চাই,যার সততা, সাহসিকতা, দূরদর্শিতায় ও দৃঢ়তার ফলে বাঙ্গালীর আত্মমর্যাদা,আত্মবিশ্বাস ও বিজয়ের গর্বের প্রতীক দীর্ঘতম পদ্মা সেতুতে আজ বাস্তবে পরিণত হওয়ায় বিশ্বময় বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে এবং জাতির আস্থাকে ত্বরান্বিত করেছে।পদ্মা সেতু শুধু একটি সেতুই নয়, এটি আমাদের উন্নয়ন, অহংকারের প্রতীক। আত্মমর্যাদা, আত্মপরিচয়, স্বপ্নের সেতু আজ দৃশ্যমান, বঙ্গবন্ধু কন্যার অদম্য সাহসিকতার অবদান, জয়তু দেশরত্ন শেখ হাসিনা, নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু করার মাধ্যমে বিদেশি নির্ভরশীলতা থেকে বেরিয়ে এসে কোনো কাজ করা সম্ভব সেটাও বাংলাদেশ প্রমাণ করেছে। যারা মনে করেন বিদেশিদের ছাড়া চলে না নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু করে শেখ হাসিনা তাদেরকে দেখিয়ে দিয়েছেন। নিজস্ব অর্থে পদ্মা সেতু নির্মাণের ফলে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ও ভাবমূর্তি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর একটি সাহসী সিদ্ধান্ত তাকে একজন আত্মবিশ্বাসী, দৃঢ়প্রতিজ্ঞ রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে বিশ্ব স্বীকৃতি দিয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি, ক্রমাগত জিডিপি প্রবৃদ্ধি এবং বিভিন্ন সামাজিক সূচকে বাংলাদেশের অবস্থানের উন্নতি আজ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। এই সেতুর জন্য প্রধানমন্ত্রী যে ত্যাগ স্বীকার করেছেন, পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের সাফল্য সেই ত্যাগকে যৌক্তিক করে তুলেছে।পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠান একযোগে সারা দেশে দেখানো হবে। জেলায় জেলায় উৎসব করেও এই ক্ষণ উদ্‌যাপন করা হবে। পাশাপাশি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। আর ঢাকা, মুন্সিগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুরসহ কয়েকটি জেলায় এ উপলক্ষে ২৫ জুন থেকে পাঁচ দিন পর্যন্ত বিভিন্ন অনুষ্ঠান চলবে। এর মধ্যে ঢাকার হাতিরঝিলে লেজার শোর আয়োজন করা হবে।এখানে উল্লেখ করা উচিৎ জনগন থেকে দাবি উঠেছিল এই সেতুর নাম  শেখ হাসিনা সেতু করার কিন্তুু প্রধানমন্ত্রী তার নামে এই সেতুর নামকরণের প্রস্তাব বাতিল করে দিয়ে অনেক বড় উদারতাও দেখিয়েছেন।  তিনি (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) বলেছেন পদ্মা সেতু পদ্মা নদীর নামেই হবে। 
স্বপ্নের পদ্মাসেতু বাস্তবায়ন ও দৃশ্যমান হওয়ার পর থেকেই দেশ-বিদেশে প্রশংসিত হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই ধারাবাহিকতায় বহুল প্রতীক্ষিত পদ্মাসেতু উদ্বোধনের ঠিক আগ মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রীর আত্মবিশ্বাস, দূরদর্শিতা আর নিজস্ব অর্থায়নে এই সেতু নির্মাণের সাহসী সিদ্ধান্তের ভূয়সী প্রশংসা করা হচ্ছে পাকিস্তানে ও, সম্প্রতি পাকিস্তানের পাঞ্জাবের শিক্ষাবিদ, গবেষক ও আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক ড. মালিকা-ই-আবিদা খাত্তাক পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডেইলি টাইমসে ‘বাংলাদেশের পদ্মা সেতুর গল্প: স্রেফ একটা সেতুর চেয়ে বড় কিছু?’ শিরোনামে একটি নিবন্ধ লিখেছেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি  ইতিমধ্যে বলেছেন, জুনেই চন্দ্রালোকিত পূর্ণিমা রাতে পদ্মা সেতু থেকে দাঁড়িয়ে বাংলার মানুষ পূর্ণিমার চাঁদ দেখতে পারবে। আর গত বুধবার আগারগাঁওয়ে এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় মানণীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন জনগণের আশীর্বাদ ছিল বলেই পদ্মা সেতু হয়েছে বলে উল্লেখ করে বলেছেন, আমরা তৃণমূল পর্যায় থেকে দেশের উন্নয়ন করছি। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। দেশের ৯০ ভাগ উন্নয়ন নিজস্ব অর্থায়নে করছি। বাংলাদেশ আজ বদলে গেছে। পদ্মা সেতু একটা চ্যালেঞ্জ ছিল। সততা ছিল বলেই এই চ্যালেঞ্জ নিতে পেরেছি। নিজস্ব অর্থে করেছি এই সেতু। ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধন করব ইনশাআল্লাহ।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

এদিকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম  এক অনুষ্ঠানে বলেন, পদ্মা সেতু দক্ষিণের জনপদের উন্নয়নে অভাবনীয় পরিবর্তন নিয়ে আসবে। এ সেতুর কারণে মানুষের জীবনমানের পরিবর্তন হবে, তাদের আধুনিক আকাঙ্ক্ষা পূরণ হবে। এ সেতু দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের জন্য আশীর্বাদ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা না থাকলে এটি কখনোই সম্ভব হতো না। প্রক্রিয়াজাতকরণের ব্যবস্থা না থাকায় এ অঞ্চলে উৎপাদিত মাছ, মাংস, দুধ, ডিমসহ অন্যান্য কৃষিসামগ্রী রাজধানী ঢাকায় পৌঁছানো বা রপ্তানির সুযোগ ছিল না। পদ্মা সেতুর সংযোগের ফলে দক্ষিণাঞ্চলে উৎপাদিত মাছসহ অন্যান্য কৃষিসামগ্রী দ্রুততার সাথে ঢাকায় যেতে পারবে। পাশাপাশি এ অঞ্চলে প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প প্রতিষ্ঠা হবে। প্রক্রিয়াজাত করা সামগ্রী সরাসরি বিদেশে পাঠিয়ে দেওয়া যাবে। এ সেতু দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ঢাকায় আসা-যাওয়াই শুধু সহজ করবে না, এ অঞ্চলের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধি করবে।
এখানে বলে রাখা প্রয়োজন,শুরুতেই অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মুখে পরে এই মেগা প্রকল্পটি। তবে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসিকতা ও দৃঢ়তার ফলে দেশে দীর্ঘতম এই সেতু আজ বাস্তবে পরিণত হয়েছে।এই সেতু নির্মাণের কার্যক্রম শুরুতেই যেমন দুর্নীতির অভিযোগ উঠে তেমনি পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন ঠেকাতে দেশি-বিদেশি সংস্থা ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উঠে। সব ষড়যন্ত্র ও বাধা মোকাবিলা করে ২৫ জুন উদ্বোধন হতে যাওয়া এই সেতু বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর অর্ধশতাব্দিরও বেশি সময়ের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ স্থাপনা।

এই পদ্মা সেতু নির্মাণে বিশ্ব ব্যাংক ১২০ কোটি ডলার ঋণ দিতে চেয়েছিল। কিন্তু দুর্নীতির অভিযোগ এনে ২০১২ সালে বিশ্বব্যাংক অর্থ দেবে না বলে জানিয়ে দেয়। এ ঘটনার পর অনিশ্চিত হয়ে পড়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ। কিন্তু ঠিক সেই মুহূর্তেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন। যদিও পরবর্তীতে কানাডার আদালত বিশ্বব্যাংকের এই দুর্নীতির অভিযোগের কোনো প্রমাণ না পেয়ে অভিযোগটি খারিজ করে দেয়। এরপর বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন ছাড়াই নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ শুরু করে। এই সেতু নির্মাণে খরচ হচ্ছে ৩০ হাজার ১৯৩ দশমিক ৩৯ কোটি টাকা। দেশের প্রধান নদী পদ্মার ওপর নির্মিত এই সেতুটির মোট দৈর্ঘ প্রায় ৯ কিলোমিটার। এই পদ্মা সেতুর মাধ্যমে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ১৯টির জেলার সঙ্গে সারাদেশের সড়ক যোগাযোগ নিশ্চিত হবে। দুইতলা বিশিষ্ট এই সেতুর ওপরের অংশে সড়ক পরিবহন এবং নিচের অংশে রেল চলাচল করবে। সেতুটি নির্মাণ হলে দেশের সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হবে। ঢাকা থেকে মাওয়া-ভাঙ্গা-যশোর-খুলনা রেল সংযোগ স্থাপন করা হবে। ঢাকা থেকে খুলনা, মংলা, বরিশাল, কুয়াকাটা অর্থনৈতিক করিডোর খুলে যাবে। দেশের দক্ষিণাঞ্চল ট্রান্স-এশিয়ান হাইওয়ে এবং ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে যুক্ত হবে। ভারত, ভুটান ও নেপালের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করা হবে এবং যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের সুবিধা হবে।

নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্ক স্থাপনের ফলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট হবে এবং দেশের শিল্পায়ন ত্বরান্বিত হবে। পর্যটন শিল্পের ব্যাপক উন্নতি হবে এবং মাওয়া ও জাজিরায় গড়ে উঠবে নতুন রিসোর্ট ও হোটেল, শপিংমল, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি। মংলা ও পায়রা বন্দর চালু থাকবে, যা ব্যবহার করতে পারবে কটি প্রতিবেশী দেশ।

২০১০ সালের হিসাব অনুযায়ী, পদ্মা নদীর যেখান দিয়ে প্রতিদিন ১২ হাজার যানবাহন চলাচল করে সেখানে সেতুটি চালু হলে যান চলাচল দ্বিগুণ হতে পারে এবং প্রতি বছর যানবাহনের সংখ্যা ৬-৭ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে এবং ২০৫০ সালের মধ্যে ৬ হাজার যানবাহন চলাচল করবে। প্রতিদিন চলাচলের এই সংখ্যা বাড়তে পারে। কারণ, যমুনা বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণের আগে সেতুর ওপর দিয়ে আনুমানিক যানবাহন চলাচলের হিসাব থাকলেও এখন প্রায় ২৩ বছর পর সেখানে যানবাহন বেশি হচ্ছে। অর্থনৈতিক প্রভাবও প্রত্যাশার চেয়ে বেশি হয়েছে। সেতুতে চলাচলকারী যানবাহন থেকে টোল আদায় দিন দিন বাড়ছে।এখানে উল্লেখ্য যে  ’১৭ মে ১৯৮১ সালে ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে আমাদের আস্থা, বিশ্বাস,ভালোবাসার শেষ ঠিকানা আলোর দিশারি, অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার কাণ্ডারি,জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যারত্ন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি বিশ্ব মানবতার জননী’ মানণীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ’ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, স্বাধীনতার মূল্যবোধ ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়।বঙ্গবন্ধু কন্যার এই স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমেই আবারো মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর স্বপ্ন ফিরে পেয়েছে স্বৈরাচার ও উগ্রবাদীদের ষড়যন্ত্রে ক্ষত-বিক্ষত বীর বাঙালি। তাই পরিবার হারানোর বেদনা বুকে চেপে, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, শেখ হাসিনার স্বদেশে ফেরার এই অদম্য সাহসী দিনটিই বাঙালি জাতির লুট হয়ে যাওয়া স্বপ্ন ফিরে পাওয়ার দিন।১৯৮১’সালের ১৭ ই মে তৎকালীন সামরিক স্বৈরশাসক খুনি জিয়ার সকল বাঁধাবিপত্তি ও রক্ত চক্ষুকে উপেক্ষা করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রিয় জন্মভূমিতে প্রত্যাবর্তনের প্রথম বক্তব্যে শেরে বাংলা নগরে ঢাকা বিমানবন্দরে দিন অঝোর বৃষ্টির মধ্যেও লাখ লাখ জনতার হৃদয় ছোঁয়া ভালবাসার জবাবে বলেছিলেন, আমি আওয়ামী লীগের নেত্রী হওয়ার জন্য আসিনি। আপনাদের বোন হিসাবে, মেয়ে হিসাবে, বঙ্গবন্ধুর আদর্শে বিশ্বাসী আওয়ামী লীগের কর্মী হিসাবে আমি আপনাদের পাশে থাকতে চাই। ‘সব হারিয়ে আমি আপনাদের মাঝে এসেছি; বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তাঁর আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে জাতির জনকের হত্যার প্রতিশোধ গ্রহণে আমি জীবন উৎসর্গ করতে চাই।’ ‘‘আমার আর হারাবার কিছুই নেই। পিতা-মাতা, ভাই রাসেল সকলকে হারিয়ে আমি আপনাদের কাছে এসেছি, আমি আপনাদের মাঝেই তাদেরকে ফিরে পেতে চাই। আপনাদের নিয়েই আমি বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে তা বাস্তবায়ন করে বাংলার দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে চাই, বাঙালি জাতির আর্থ-সামাজিক তথা সার্বিক মুক্তি ছিনিয়ে আনতে চাই।’’

দীঘ একুশ বছর শত প্রতিকূলতা ও যড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করে দল.দেশ ও জাতিকে সুদক্ষ ও বলিষ্ঠভাবে নেতৃত্ব দেওয়ার মাধ্যমে জননেত্রী উনার কথা রেখেছেন।জনগণের ভালবাসায় অভিষিক্ত হয়ে চতুর্থবারের ন্যায় রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেয়ে তিনি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং সকল শ্রেণী ও পেশার মানুষের কল্যাণে যুগান্তকারী অবদান রেখে চলেছেন। ‘‘রূপকল্প ২০২১’’ এর মধ্যম আয়ের বাংলাদেশকে ‘‘রূপকল্প ২০৪১’’ এর বাস্ত বায়নের মাধ্যমেএকটি উন্নত আধুনিক সমৃদ্ধ অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক কল্যাণকামী রাষ্ট্র গঠনে বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। শেখ হাসিনার দিনবদলের যাত্রা শুরু হয়েছিলো ২০০৮ সালে। ২৯শে ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০টির মধ্যে ২৬৪ টি আসনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোট জয়লাভ করলে শুরু হয় রুপকল্প ২০২১ এর পথে শুভযাত্রা। তাঁর নেতৃত্বে জাতীয় প্রবৃদ্ধি বেড়ে ৮ শতাংশ পর্যন্ত পৌছেছে, বর্তমানে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে ২০৬৪ মার্কিন ডলার, দারিদ্র্যের হার কমে হয়েছে ২০ শতাংশ, এক কোটি বেকারের কর্মসংস্থান হয়েছে।বর্তমান সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করছে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচারের রায়ের পরিপুর্ণ বাস্তবায়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।১৯৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অতন্দ্র প্রহরীবাংলাদেশের পতাকা যারা ধ্বংস করতে চেয়েছিলো, তাদের হাতে পতাকা সুরক্ষিত নয়। কিন্তু পুর্ববর্তী সরকার, সেই যুদ্ধাপরাধীদের গাড়িতে পতাকা বহনের সুযোগ করে দিয়েছিলো মন্ত্রী করে। ২০০৮ সালে নির্বাচিত হয়ে, শেখ হাসিনে জাতিকে সেই লজ্জা থেকে নিস্কৃতি দিয়েছেন। তিনি বহু আকাংক্ষিত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছেন। তাঁর সরকারের অধীনেই আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইবুনাল গঠন করা হয়। চারজন কুখ্যাত দাগী যুদ্ধাপরাধীর ইতোমধ্যেই ফাঁসীতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়েছে। আরো অনেকেই বিচারের অপেক্ষায় আছে। বিশ্বশান্তির দুততার প্রথম শাসনামলে (১৯৯৬-২০০১) শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে পার্বত্য শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করেন, যার মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি ও বাঙ্গালীদের মধ্যের দীর্ঘদিনের সশস্ত্র সংগ্রামের সমাপ্তি হয়। ১৯৯৮ সালের ১০ই ফেব্রুয়ারি, শান্তি বাহিনীর প্রধান জ্যোতিরিন্দ্র লাড়মা খাগড়াছড়ি স্টেডিয়ামে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অস্ত্র সমর্পন করে। ১৯৯৮ সালে শেখ হাসিনা ভারত পাকিস্তানে যান, তাদেরকে পরমাণু যুদ্ধ থেকে বিরত থাকার আহবান জানাতে। এর আগে দুই দেশের মধ্যে পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষামুলক বিস্ফোরণের কারনে উত্তেজনা চলছিলো। মিয়ানমারে জাতিগত সহিংসতার শিকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠিকে আশ্রয় দিয়ে সারা বিশ্বে Mother of Humanity হিসেবে ভুষিত হয়েছেন তিনি। ২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশ ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে, পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সংস্থাসহ সরকারি উদ্যোগে শরনার্থীদের নিশ্চিত অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ইত্যাদি মৌলিক চাহিদার যোগান নিশ্চিত করছে।বৈষয়িক কূটনীতিতে দূরদর্শী নেতা দুরদর্শী বিদেশ নীতির মাধ্যমে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সাথে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ও বিশ্বের ক্ষমতাধর দেশগুলোর সাথে সর্বকালের সবেচেয়ে নৈকট্যপুর্ণ সম্পর্ক স্থাপনে সমর্থ হয়েছেন। পার্বত্য শান্তি চুক্তির জন্যে তিনি ইউনেসকো শান্তি পুরস্কার পান। ১৯৯৮ সালে তিনি নিখিল ভারত পরিষদের কাছ থেকে মাদার তেরেসা পদকও পান। ১৯৯৯ সালের ১৫ই মে, তিনি হেগ শান্তি পরিষদের সমাপনী অধিবেশনে বক্তব্য রাখেন। ১৯৯৯ সালে, শেখ হাসিনা সেরেস শান্তি পদক পান যা বিশ্ব খাদ্য পরিষদের পক্ষ থেকে সরকারপ্রধানদের দেয়া সর্বোচ্চ পুরস্কার।গণতন্ত্রের পথপ্রদর্শক১৯৭৫-১৯৯৫ এই সময়, দেশকে গণতান্ত্রিক পথে ফিরিয়ে আনতে অগ্রণী ভুমিকা রাখেন শেখ হাসিনা। ১৯৭৫ সালে তার পিতাকে পুরো পরিবারসহ মেরে ফেলা হয় বিপথগামী কিছু আর্মি অফিসারের নেতৃত্বে। শেখ হাসিনা ৬ বছর নির্বাসনে থেকে ১৯৮১ সালে দেশে ফেরেন। সেই থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত ৯টি দীর্ঘ বছর রাজপথে নেতৃত্ব দিয়ে গেছেন সামরিক স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে। ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনে তার দল হয় প্রধান বিরোধী দল।১৯৯৬-২০০০শেখ হাসিনার দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালের জাতীয় নির্বাচনে জয়লাভ করে ক্ষমতায় আসে। সেই সময় তার সরকার যমুনা বহুমুখী সেতু নির্মাণ করে, যা ছিলো সেই সময় বিশ্বের দীর্ঘতম সেতুর তালিকায় একাদশতম। ১৯৯৮ সালের বন্যার সময়, তাঁর সরকার ২ কোটি বন্যা দুর্গত মানুষকে বিনামুল্যে খাদ্য প্রদান করে। তাঁর নেতৃত্বাধীন সেই সরকারের আমলে উল্লেখযোগ্য সাফল্যসমুহ হচ্ছে, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, পার্বত্য শান্তি চুক্তি, ২১শে ফেব্রুয়ারিকে জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ঘোষণা, এবং বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তি।

২০০১-২০০৭২০০১ থেকে আবারো জাতির ইতিহাসে কালো অধ্যায় শুরু হয়। বিএনপি-জামাত জোট ক্ষমতায় আসে। যুদ্ধাপরাধীদেরকে দেয়া হয় বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। এই সময়েই জঙ্গীবাদ মাথা চাড়া দিয়ে উঠে, ৬৪ জেলায় বোমা মারে। ২০০৪ সালের ২১শে আগষ্ট শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে তার জনসভায় গ্রেনেড হামলা করা হয়।২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামীলীগের সর্বাত্মক আন্দোলনের ফলে সাজানো নির্বাচন বাতিল করতে বাধ্য হয় ততকালীন সরকার। জরুরী অবস্থা ঘোষিত হয়। নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন হয়। শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে নির্বাসনে পাঠানোর ষড়যন্ত্র করা হয়। ২০০৭ এর ১৬ জুলাই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।২০০৮-২০১৩ব্যাপক জনবিক্ষোভের মুখে তাঁকে ২০০৮ এর ১১জুন প্যারোলে মুক্তি দেয়া হয়। তিনি চিকিৎসার জন্যে বিদেশ যান এবং ডিসেম্বরের ৪ তারিখে দেশে ফিরেন। ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর সন্ধ্যায়, শেখ হাসিনা “দিন বদলের সনদ” – তাঁর নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন। সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ একচেটিয়া বিজয় লাভ করে। তাঁর এই শাসনামলে, জাতীয় প্রবৃদ্ধি বেড়ে হয় ৬.৫১, সকল খাতের ডিজিটালাইজেশন করা হয়, অবকাঠামো খাতের ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়, জঙ্গীবাদ কঠোর ভাবে দমন করা হয় এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও রায় রায় কার্যকর শুরু হয়।২০১৪-২০১৮রুপকল্প-২০২১ এ সাধারণ মানুষের বিশ্বাস এবং ভরসার জন্যে সাধারন মানুষ তাঁকে ২০১৪ তে নির্বাচিত করে। এই বার, তাঁর সরকার নিজ উদ্যোগে এবং অর্থায়নে পদ্মাসেতু নির্মাণ শুরু করে যা বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলকে রাজধানী ঢাকার সাথে সংযুক্ত করবে। তার সাথে, ঢাকায় মেট্রো রেইল প্রকল্প, দেশের প্রথম পরমাণু বিদ্যুত প্রকল্প, ঘরে ঘরে বিদ্যুত নিশ্চিতকরণ, জাতীয় প্রবৃদ্ধি ৭ এ উন্নীতকরণ সহ আরো কিছু মেগা প্রকল্প হাতে নিয়ে দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। ২০১৮ সালেও টানা তৃতীয়বারের মতো জাতীয় নির্বাচনে জয়লাভ করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।২০১৮ থেকে বর্তমান২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় জির্বাচনে জয়লাভ করে টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন শেখ হাসিনা। ২০২০ সালের শুরুতেই সারা বিশ্বসহ বাংলাদেশে যখন করোনাসংকটে নানা অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে তখন তা মোকাবিলায় দ্রুত নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১ লক্ষ ১২ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকার ২১টি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন। সেই সাথে নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য সারাদেশে ব্যপকভাবে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন।জাতির সার্বভৌমত্বের প্রতীকতার দুরদর্শী বৈদেশিক নীতির সুফল হিসেবে, ভারতীয় লোকসভায় ঐতিহাসিক স্থল সীমান্ত চুক্তি পাশ হয়েছে। এর ফলে ছিটমহলবাসীর চার শতকের দুঃখ দুর্দশার অবসান হয়েছে। তার ২০০৯-২০১৪ শাসনামলে, বাংলাদেশ দুইটি ঐতিহাসিক সমুদ্র সীমান্ত মামলায় জয়লাভ করে ভারত ও মিয়ানমারের সাথে। বাংলাদেশ ভারতের সাথে বঙ্গোপসাগরের বিরোধপূর্ণ ২৫,৬০২ বর্গ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে ১৯,৪৬৭ বর্গ কিলোমিটার জায়গা পায়।নারী ক্ষমতায়নে অগ্রপথিকতিনি নিজেই বিশ্বের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ১০০ নারীর মধ্যে একজন। অন্য নারীদেরকেও উদ্দীপ্ত করতে অক্লান্তভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। নারী শিক্ষায় তাঁর অবদানের জন্যে তিনি ইউনেসকোর শান্তিবৃক্ষ পুরস্কার পেয়েছেন। বাংলাদেশকে ডিজিটাল করায় তাঁর নানা উদ্যোগ এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে যুগান্তকারী অবদানের জন্যে গত বছর জাতিসংঘ তাঁকে সাউথ সাউথ পুরস্কার দেয়।শেখ হাসিনা ফিরে এসেছিলেন বলেই দেশের চেহারা পাল্টে গেছে, শেখ হাসিনা ফিরে এসেছিলেন বলেই বাংলাদেশ আজ অন্ধকার থেকে আলোর পথের যাত্রী। শেখ হাসিনা এসেছিলেন বলেই বাংলাদেশ আজ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে, বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশে এসেছিলেন বলেই অবরুদ্ধ গণতন্ত্র আজ শৃঙ্খল মুক্ত হয়েছে।দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যখন একের পর এক মেগা প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়ন করে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলেছে ঠিক সেই মুহুর্তে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ৭১ এর পরাজিত অপশক্তি দেশকে অস্থিতিশীল করার পাঁয়তারা করছে। তারা ৭৫ এর খুনিদের দোসরদের সাথে আঁতাত করে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার নীলনকশা বাস্তবায়ন করতে চায়। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর আদর্শের একজন সৈনিক বেঁচে থাকতে, আমাদের শরীরে একবিন্দু রক্ত থাকতে তাদের ষড়যন্ত্র কখনও সফল হবে না। পদ্মা সেতু নির্মাণ ব্যয় নিয়ে ‘মিথ্যা প্রচারণা’ করছে বিএনপি, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীসহ অন্যান্য নেতাদের ওপেন চ্যালেঞ্জ করেছেন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ এ. আরাফাত।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে গত মঙ্গলবার নিজের ভেরিফাইড পেইজে এক স্ট্যাটাসে এ চ্যালেঞ্জ জানান তিনি। ‘পদ্মা সেতু নির্মাণ ব্যয় নিয়ে স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর মিথ্যা প্রচারণাগুলোকে চ্যালেঞ্জ করতে চাই’ শিরোনামে লেখা ওই স্ট্যাটাসে আরাফাত একটি দৈনিকের প্রকাশিত সংবাদের অংশবিশেষ শেয়ার করেন। যেখানে গত শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রামের পুরাতন রেলস্টেশন চত্বরে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে আমীর খসরুর দেওয়া বক্তব্য রয়েছে। যেখানে লেখা আছে— ‘পদ্মা সেতুর ৩০ হাজার কোটি টাকা কোথায় জানতে চেয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘পদ্মা সেতুতে বাড়তি ৩০ হাজার কোটি টাকা খরচ দেখানো হয়েছে। ১০ হাজার কোটি টাকার সেতু ৪০ হাজার কোটি টাকা। বাকি ৩০ হাজার কোটি টাকা কোথায়? আমরা জানি কোথায় গেছে। এগুলো সব বের হবে।’ স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরছি, ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং অন্যান্য বিএনপি নেতারা, যারা পদ্মা সেতুর নির্মাণ ব্যয় নিয়ে মিথ্যাচার করছেন, তাদেরকে আমি ওপেন চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি। তারা পারলে দেখাক—কোথায় পদ্মা সেতু প্রকল্পে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকার বেশি খরচ হয়েছে।* পদ্মা সেতু প্রকল্পে, মূল সেতু নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১২,৪৯৩ কোটি টাকা। অর্থাৎ, আপার ডেক এবং লোয়ার ডেক দুটো মিলেই যে মূল সেতু, সেই মূল সেতুর ব্যয় এটি।বাকি টাকা খরচ হয়েছে—নদী শাসনে ব্যয় আট হাজার ৯৭২ কোটি টাকা, সংযোগ সড়ক ও সার্ভিস এরিয়া নির্মাণে ব্যয় এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা, ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন ও পরিবেশ সংক্রান্তে ব্যয় চার হাজার ৩৪২ কোটি টাকা, পরামর্শক, সেনা নিরাপত্তা, ভ্যাট, আয়কর, যানবাহন, বেতন ও ভাতাদি এবং অন্যান্য খাতে ব্যয় দুই হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা।‘এখানে, কোথায় লুটপাট করার উদ্দেশে অতিরিক্ত ব্যয় দেখানো হয়েছে তা প্রমাণসহ তথ্য দিন’ উল্লেখ করে মোহাম্মদ এ. আরাফাত ওই স্যাটাসে লেখেন—* প্রতিটি পয়সা বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় করেছে।* একটি পয়সাও বাইরের কোনো দেশ বা প্রতিষ্ঠান থেকে ধার করা হয়নি। সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয় এই টাকা সেতু বিভাগকে দিয়েছে।*সেতু বিভাগ টোল সংগ্রহের মাধ্যমে সেই অর্থ সংগ্রহ করে আগামী ৩৬ বছরে অর্থ মন্ত্রণালয়কে ফেরত দেবে, যা অন্যান্য জনকল্যাণমূলক প্রকল্পে ব্যবহৃত হবে।শেষে আরাফাত লেখেন, ‘ডান-বামে গুজব না ছড়িয়ে, সৎসাহস থাকলে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করুন।’ আমার এই লিখনির মাধ্যমে সুচিন্তা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ এ. আরাফাতকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা ইতিমধ্যে দেশকে মধ্যম আয়ের ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলেছেন। গ্রামকে শহরে পরিণত করেছেন। দেশের মানুষ সুখে-শান্তিতে আছে। বিএনপি-জামায়াত দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। যেমনি ভাবে ২১ এ আগষ্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিলো, ১৪ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবি হত্যা করেছিলো সেই কালো ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করতে চায় তারা। বিএনপি জোট সরকারের সময় মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করা হয়েছে। কৃষক হত্যা করেছে। আন্দোলনের নামে  বাসে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা করেছে।মধ্যম আয়ের দেশ থেকে উন্নত, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলার আলোর মিছিলকে এগিয়ে নিতে  সরকারের রুপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়ন করতে হবে। তার জন্য পাড়া, মহল্লায় ইউনিয়ন, ওয়ার্ডে ও দেশে বিদেশে সাংগঠনিকভাবে এই অপশক্তির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। আগামী নির্বাচনে ব্যালটের মাধ্যমে জবাব দিতে হবে।’মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন এবং চ্যালেঞ্জ বাস্তবায়ন করে দেখিয়েছেন। সকল প্রতিকূলতা জয় করে বাংলার মানুষকে উপহার দিয়েছেন পদ্মা সেতু। তাঁরই  নেতৃত্বেই উন্নয়নের নতুন যুগের সূচনা হয়েছে। নতুন এক উচ্চতায় সমাসীন হয়েছে আমাদের বাংলাদেশ। “সাবাশ বাংলাদেশ! জয়তু “মাদার অব হিউম্যানিটি’ শেখ হাসিনা!

সম্পাদকীয় নোট: এই নিবন্ধে লেখকের মতামত প্রতিফলিত হয়েছে। নিবন্ধে উল্লিখিত সকল তথ্য ও অভিমত লেখকের একান্ত নিজস্ব।

Sheikhsbay

Related Articles

Back to top button
Close
Close