নিউজ

অতিরিক্ত আইজিপির  বাসায় গৃহকর্মীর মৃত্যু: হত্যা না আত্মহত্যা?

একটি মৃত্যু সংবাদ: কয়েকটি গুরুতর প্রশ্ন

 ঢাকা অফিস। একজন অতিরিক্ত আইজিপির বাসায় তার গৃহকর্মীর মৃত্যুর খবরকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন দেখা  দিয়েছে। মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। রাজধানীতে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত আইজিপি) আবু হাসান মুহাম্মদ তারিকের বাসায় গৃহকর্মী মৌসুমী আক্তারের (১৪) মৃত্যু  নিয়ে দেখা দিয়েছে কয়েকটি গুরুতর প্রশ্ন। পুলিশ কারণ নিশ্চিত হতে পারেনি তবে সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে পুলিশ।

পুলিশ গণমাধ্যমকে খবর দিয়েছে, রমনার অফিসার্স কোয়ার্টারের একটি ভবনের ১৩তলা থেকে বুধবার সন্ধ্যায় মৌসুমীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশের ভাষ্য, ওই সময় আবু হাসান মুহাম্মদ তারিক ঢাকার বাইরে তাঁর কর্মস্থল রাজশাহীতে সারদা পুলিশ একাডেমিতে ছিলেন। তাঁর স্ত্রী ও দুই সন্তানও বাসায় ছিলেন না। তার স্ত্রী অতিরিক্ত সচিব হিসেবে কর্মরত এই তথ্যটি কৌশলে চেপে যাওয়া হয়েছে। অফিসার্স কোয়ার্টার থেকে লাশ হলেও সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করা হয়েছে পরদিন বৃহস্পতিবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে।পুলিশ প্রশাসনের একজন অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এই প্রতিবেদককে বলেন, সাধারণতঃ ঘটনাস্থল থেকেই সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করার কথা।

সুরতহাল প্রতিবেদনে বলা হয়, মৌসুমীর গলায় রশির অর্ধচন্দ্রাকৃতির দাগ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া শরীরে কোনো জখমের কোনো চিহ্ন নেই। মেঝে থেকে তার পা সাত ইঞ্চি ওপরে ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, সুরতহাল রিপোর্ট যারা তৈরী করেছেন তারা ঘটনাস্থল না দেখেই কিভাবে সুরতহাল প্রতিবেদনে লিখলেন যে “মেঝে থেকে তার পা সাত ইঞ্চি ওপরে ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল”?

পুলিশের উদৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পুলিশের ব্যবস্থাপনায় মৌসুমীর গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়। তার বাড়ি টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার বাইচাইল গ্রামে।

পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, ছয় বছর আগে মৌসুমীর বাবা মুক্তার মিয়া মারা যান। এরপর তার মা আবার বিয়ে করেন। তিন বছর আগে মৌসুমীর এক আত্মীয় তাকে অতিরিক্ত আইজিপি আবু হাসানের বাসায় গৃহকর্মীর কাজ দেন। মৌসুমীর একটি ছোট ভাই ও নানি আছে। বৃহস্পতিবার তাঁরা ঢাকায় এলেও মর্গে যাননি।

রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, অতিরিক্ত আইজিপি আবু হাসানের বাসার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ফজলুল হক ওই বাসায় যান। সেখানে গিয়ে ডাকাডাকি করে কারও সাড়া না পেয়ে ফোনে বিষয়টি আবু হাসানের স্ত্রীকে জানান। তিনি কর্মস্থল থেকে বাসায় এলে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকা হয়। বৃহস্পতিবার এএসআই ফজলুল হক বাদী হয়ে মৌসুমীর মৃত্যুর ঘটনায় রমনা থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করেছেন। গৃহকর্মীর মৃত্যুর বিষয়ে জানতে অতিরিক্ত আইজিপি আবু হাসানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। পরে মোবাইলে টেক্সট পাঠালেও কোনো জবাব দেননি।

Sheikhsbay

Related Articles

Back to top button
Close
Close