নিউজ

দোতলা রাস্তা নির্মাণের ঠিকাদার নিয়োগে সেতু কতৃর্পক্ষের ‘বহুতল’ জালিয়াতি

।। সুরমা প্রতিবেদন।।
লন্ডন, ২৫ এপ্রিল : শ্যানডং লুকিয়াও-সিআইসি জেভিকে কাজ দিতে অন্তত ৩ যোগ্য নিম্নদরদাতাকে জবরদস্তি অযোগ্য করা হয়। বিবিএ’র জালিয়াত-চক্র ও এর নেপথ্য নায়ক শাস্তি না পেলে ভবিষ্যতে এর দায় বর্তাবে মন্ত্রিসভা ক্রয় কমিটি ও এর সুপারিশ অনুমোদনকারীর ওপর। কেবলমাত্র ক্রয় কমিটির সুপারিশ অনুমোদন করায় খালেদা জিয়ার গ্যাটকো এবং খনি দুর্নীতির চলমান মামলার অভিজ্ঞতাতো তাই বলে

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের (বিবিএ) পঞ্চবটি থেকে মুক্তারপুর সেতু পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ ও দোতলা রাস্তার নির্মাণ কাজ দেয়া হয়েছে চীনের শ্যানডং লুকিয়াও গ্রুপ কোম্পানি এবং চায়না শ্যানডং ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক এন্ড টেকনিক্যাল কো-অপারেশন গ্রুপ লি: (সিআইসি) যৌথ উদ্যোগকে (জেভি)। ১৪ দরদাতার মধ্যে ১০ দরদাতাকে কারিগরি মূল্যায়নে অযোগ্য (নন-রেসপনসিভ) করে যোগ্য (রেসপনসিভ) অন্য ৪ দরদাতার মধ্যে শ্যানডং লুকিয়াও-সিআইসি জেভি সর্বনিম্ন দরদাতা হয়েছে। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে অবৈধভাবে অর্থায়নে যুক্ত সিআইসিকে সুবিধা দিতেই বিবিএ দরপত্র মূল্যায়নে জালিয়াতি করে অন্তত ৩ নিম্নদরদাতাদেরকে অযোগ্য করেছে অভিযোগ উঠেছে।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, সিনিয়র মন্ত্রীবৃন্দ, দুদকসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা চাঞ্চল্যকর পঞ্চবটি থেকে মুক্তারপুর দোতলা রাস্তার দুনীর্তি-জালিয়াতির বিষয়টি অবহিত হয়েছেন। অভিযোগের পক্ষে যথেষ্ট দালিলিক প্রমান থাকার পরেও এ নিয়ে অনুসন্ধান চলমান অবস্থায় ‘বেপরোয়া’ বিবিএ মার্চের শেষ সপ্তাহে শ্যানডং লুকিয়াও সিআইসি জেভি’র সাথে চুক্তি করেছে।

একনেক ২০২০ সালের ডিসেম্বরে পঞ্চবটি-মুক্তারপুর সড়ক প্রশস্তকরণ ও দোতলা রাস্তা নির্মাণ প্রকল্প ২ হাজার ২৪৩ কোটি টাকায় অনুমোদন করে। গত বছরের ৮ মার্চ ‘একধাপ দুই খাম পদ্ধতি’তে দরপত্র আহবান করা হয়। ৩০ জুন ৩ বাংলাদেশি কোম্পানির ১টি জেভি, কোরিয়া-বাংলাদেশের ১টি জেভি, ২টি চীনা কোম্পানি একক ভাবে, চীন-বাংলাদেশের ৪টি জেভি এবং ১২টি চীনা কোম্পানি ৬টি জেভি গঠন করে দরপত্রে অংশ নেয়। ১৪টি প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহনে দরপত্রটি ব্যাপক প্রতিযোগিতামূলক হয়। বিবিএ’র প্রধান প্রকৌশলী কাজী মো. ফেরদৌসের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি ১০ দরদাতাকে কারিগরিভাবে অযোগ্য (নন-রেসপনসিভ) করায় দরপত্রটি সীমিত হয়ে যায়। ফলে প্রতিযোগিতামূলক সর্বনিম্ন দরের সুবিধা থেকে রাষ্ট্র বঞ্চিত হয়। সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে পাঠনো সোয়া ২ পৃষ্ঠার সামান্য বেশি ‘অতি-সংক্ষিপ্ত’ সার-সংক্ষেপে সেতু বিভাগ অযোগ্য ঘোষিত ১০ দরদাতার নাম ও অযোগ্যতার কারণের মত আবশ্যকীয় তথ্যও উল্লেখ করেননি। এভাবে মন্ত্রিসভা কমিটি ও এর সুপারিশ অনুমোদনকারী প্রধানমন্ত্রীর সাথেও সেতু বিভাগ প্রতারনা করা হয়েছে।

‘এক ধাপ দুই খাম’ পদ্ধতিতে দরপত্র আহবান করায় ১৪ দরদাতার বন্ধ খামের ‘আর্থিক প্রস্তাব’ বিবিএ’র হেফাজতে ছিল। অভিযোগ করা হচ্ছে, সিআইসি ও এর জেভি অংশীদার শ্যানডং লুকিয়াও গ্রুপকে সর্বনিম্ন দরদাতা দেখিয়ে কাজ দিতেই বিবিএ’র সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা অবৈধভাবে ‘আর্থিক প্রস্তাব’ খুলে যাদের দর ১ হাজার ২০৬ কোটি টাকার কম পেয়েছে তাদেরকেই কারিগরি মূল্যায়নে যৌক্তিক—অযৌক্তিক বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে অযোগ্য করেছে।

বাংলাদেশে ভৌত অবকাঠামোর উচ্চনির্মাণ ব্যয় বহুল আলোচিত। পঞ্চবটি থেকে মুক্তারপুর সড়ক প্রশস্তও দোতলা রাস্তার নির্মাণ কাজ প্রাক্কলনের চেয়ে ১০.৪৬ শতাংশ বা ১৪০ কোটি ৮৭ লাখ টাকা দর কম দিয়েও শ্যানডং লুকিয়াও গ্রুপ— সিআইসি জেভি কাজ পেয়েছে। উচ্চ প্রাক্কলনের কারণে বাদ পড়া কয়েক দরদাতার প্রতিযোগিতামূলক দর কমবেশি ৯শ’ কোটি টাকা। বিবিএ’র আর্শীর্বাদপুষ্ট হওয়ায় শ্যানডং লুকিয়াও গ্রুপ-সিআইসি জেভি পরবর্তীতে ভেরিয়েশনের মাধ্যমে নিশ্চিতভাবেই দর বাড়িয়ে নেবে। কারণ এদের সাথে সরকারের বাইরের ‘প্রভাবশালী ব্যক্তি’ রয়েছেন।

দরপত্র মূল্যায়ন প্রতিবেদনে দেখা যায়, চীনের সিএসসিএসি, সিআরসিসি—সিসিইসিসি জেভি এবং দক্ষিন কোরিয়া ও বাংলাদেশের হানিল-সিপিসি জেভি দরপত্রের সকল শর্তই পূরণ করেছে। এরা একই ধরণের কাজের ‘সুনির্দিষ্ট অভিজ্ঞতার সনদ’ সংশ্লিষ্ট দেশের বাংলাদেশ মিশন থেকে সত্যায়িত করেনি, এমন যুক্তিতে মূল্যায়ন কমিটি এদেরকে অযোগ্য করেছে। তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, বাংলাদেশ মিশনের সত্যায়িত ‘সুনির্দিষ্ট অভিজ্ঞতার সনদ’ এই ৩ দরদাতার দরপত্রের মূল কপিতে রয়েছে। সে কারণেই জালিয়াতির মাধ্যমে অযোগ্য করার গুরুতর অভিযোগের যথেষ্ট ভিত্তি রয়েছে। ওই সূত্র মতে, নানা ধরনের সনদসহ কমবেশি ২ হাজার পৃষ্ঠার ডকুমেন্ট ও ৩২ কোটি টাকার ‘বিড বন্ড’সহ এত টাকা খরচ করে কেউ তামাশা করতে দরপত্র জমা দেয়না!

এর মধ্যে চীনা কোম্পানি সিএসসিএসি’কে গায়ের জোরে অযোগ্য করা হয়েছে। সিএসসিএসি মালয়েশিয়ায় ১১.৮ কি. মি. ২টি ২ লেন দীর্ঘ সমুদ্র অতিক্রমকারী সেতু নির্মাণ সম্পন্ন করায় সে দেশের সংশ্লিষ্ট সংস্থার ‘সুনির্দিষ্ট অভিজ্ঞতার সনদ’ কুয়ালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে সত্যায়িত করেছে। মূল্যায়ন কমিটি বলেছে, চীনের বাংলাদেশ দূতাবাস কর্তৃক ‘সুনির্দিষ্ট অভিজ্ঞতার সনদ’ ‘এনডোর্সমেন্ট’ না হওয়ায় দরপত্রটি কারিগরি ভাবে অযোগ্য বিবেচিত। অথচ দরপত্র দলিলের ‘টেন্ডার ডাটা শীট’ এর আইটিটি বা ‘দরদাতাদের প্রতি নির্দেশে’র ১৮.২ অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের না হলে সনদ ইংরেজিতে অনুদিত ও সংশ্লিষ্ট দূতাবাস থেকে সত্যায়িত হতে হবে।’ গত বছরের ৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিত প্রাক-দরপত্র সভায় এ বিষয়ে বিবিএ’র ব্যাখায় বলা হয়, ‘বিদেশি দরদাতাদের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতার সনদ সংশ্লিষ্ট দেশের বাংলাদেশ দূতাবাস অথবা বাংলাদেশে সংশ্লিষ্ট দেশের দূতাবাস থেকে সত্যায়িত হতে হবে। উভয়েই গ্রহনযোগ্য হবে।’

সিআরসিসি—সিসিইসিসি জেভিকে অযোগ্য দেখাতে আরও বলা হয়েছে, সিআরটুয়েন্টিফোরবি—পিডিএল জেভি এই দরপত্রে অংশ নিয়েছে। সিআরসিসি, সিসিইসিসি এবং সিআরটুয়েন্টিফোরবি চায়না রেলওয়ে কন্সট্রাকশন কর্পোরেশন লি: (সিআরসিসিএল) এর সাবসিডিয়ারি কোম্পানি। এরা নিজেদের লাইসেন্স, অভিজ্ঞতার সনদ ও আর্থিক সক্ষমতা দেখিয়ে দরপত্রে অংশ নিয়েছে। একই মাদার কোম্পানির একাধিক সাবসিডিয়ারি দরপত্রে পৃথকভাবে অংশ নেয়ায় স্বার্থের সংঘাত (কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেষ্ট) হয়েছে কি না সে বিষয়ে বিবিএ থেকে দরপত্র খোলার সাড়ে ৩ মাস পর সিপিটিইউ’র মতামত চাওয়া হয়। আর ১৪ দিন পর দেয়া জবাবে এক্ষেত্রে স্বার্থের সংঘাত ঘটেছে, সিপিটিইউ এমন সুস্পষ্ট মতামত দেয়নি। মতামত পাওয়ার ৪দিন পর মূল্যায়ন কমিটি তাদের কারিগরি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। ধারনা করা যায়, বৈধ এই দরদাতাকে বাদ দেয়ার অজুহাত হিসেবেই মূল্যায়ন কমিটি সিপিটিইউ’র দ্বারস্থ হয়।

মূল্যায়ন প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিআরসিসি-সিসিইসিসি জেভি এবং সিআরটুয়েন্টিফোরবি’কে দরপত্রের ২০.১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অযোগ্য বিবেচনা করা হয়। তবে ২০.১ অনুচ্ছেদে বলা আছে, ১টি লটে ১টির বেশি দরপত্র দাখিল করলে সকল দরপত্র অযোগ্য বিবেচিত হবে। সিআরসিসিএল এর ৩ সাবসিডিয়ারির কেউই একটির বেশি দরপত্র দাখিল না করায় এক্ষেত্রে ২০.১ অনুচ্ছেদ লঙ্ঘিত হয়নি। অভিযোগ সন্দেহাতীত ভাবে প্রমানিত হলেই কেবল ব্যবস্থা নেয়া যায়, যা এক্ষেত্রে হয়নি। পিপিএ এবং পিপিআর এর সংজ্ঞা অনুযায়ী এটা কোনভাবেই স্বার্থের সংঘাতের মধ্যে পড়ে না।

দরপত্র দলিলের ৬৬.১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সিদ্ধান্তের ৭দিনের মধ্যে দ্রুততার সাথে দরদাতাদেরকে বাতিলের নোটিশ প্রদান এবং লিখিত অনুরোধ করলে কারণ জানানোরও বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে বিবিএ ১০ দরদাতাকে নোটিশ দেয়নি। যারা চিঠি দিয়েছে, তাদেরকেও বাতিলের কারণ জানায়নি। মূল্যায়ন কমিটি ৬৬.১ অনুচ্ছেদ অনুসরণ করলে এই দরদাতারা প্রতিকার লাভের জন্য বিবিএ, সেতু বিভাগ ও রিভিউ প্যানেলে অভিযোগ করার এবং প্রয়োজনে উচ্চ আদালতে গেলে মূল্যায়নে জালিয়াতি উদঘাটিত হত। ফলে শ্যানডং লুকিয়াও—সিআইসিকে কাজ দেয়া যেত না। সংক্ষুব্ধ দরদাতারা সে অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

দরদাতার আর্থিক যোগ্যতা যাচাইয়ে গড় বার্ষিক লেনদেন ৫শ’ কোটি টাকা বা সাড়ে ৯ কোটি ডলারের প্রমান হিসেবে সাম্প্রতিক তথা শেষ ৩ বছর, অর্থাৎ ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২০ সালের অডিট রিপোর্ট চাওয়া হয়। চীনা কয়েক দরদাতা ২০১৮, ২০১৯ ও ২০২০ সালের অডিট রিপোর্ট দিলেও শ্যানডং লুকিয়াও গ্রুপ এবং সিআইসি উভয়েই ২০১৭ ২০১৮ ও ২০১৯ সালের অডিট রিপোর্ট দিয়েছে। আবার দরপত্রে সরকারি খাত থেকে প্রাপ্তবিলের সত্যায়িত সনদসহ নির্মাণ খাতের বার্ষিক ‘টার্নওভার’ চাওয়া হলেও শ্যানডং লুকিয়াও—সিএসআই জেভি তা দিতে পারেনি। অডিট রিপোর্ট অনুযায়ী এরা প্রকৌশল কোম্পানি। এবিষয়ে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির চাওয়া ব্যাখায় বলা হয়, শ্যানডং লুকিয়াও-সিএসআই জেভি যে খাঁটি নির্মাণ কোম্পানি অডিট রিপোর্টে তা প্রমানিত হয়নি। এমনকি ৩০ সেপ্টেম্বর ব্যাখার সাথে দাখিলকৃত ৮টি সংযুক্তির ৬টিই প্রকৌশল ব্যবসার আয়ের অডিট রিপোর্ট। এর পরেও বিবিএ’র কাছে গোজামিলের ব্যাখা গ্রহনযোগ্য হয়েছে। এটা অযোগ্য দরদাতার প্রতি বিবিএ’র গভীর অনুরাগেরই পরিচায়ক।

সিএসআই এক্সপ্রেসওয়ের ব্যবস্থাপনা বা টোল আদায়কারী কোম্পানি। সরকারি-বেসরকারি অংশিদারিত্বে (পিপিপি) বাস্তবায়নাধীন বিমানবন্দর থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মালিক ঢাকা ফাস্ট এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কোম্পানি লি: এর ৩৪ শতাংশের শেয়ার হোল্ডার সিএসআই। তবে সরকারি অনুমোদন ছাড়াই এরা এই শেয়ার নিয়েছে। ২০১১ সালের ১০ জানুয়ারি অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সুপারিশে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনে ইটাল-থাই ডেভেলপমেন্ট পিএলসি’র সাথে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ ও পরিচালনার পিপিপি চুক্তি হয়। অপর প্রস্তাবদাতা সিকদার গ্রপ-কোরিয়ান এক্সপ্রেসওয়ে কর্পোরেশনকে বাদ দেয়া নিয়ে সে সময় সংবাদপত্রে অনেক লেখালেখি হয় ও বিষয়টি উচ্চ আদালতে গড়ায়। কানাডার এসএনসি লাভালিনকে নির্মাণ তদারকি পরামর্শক (সিএসসি) নিয়োগে দুর্নীতি-প্রচেষ্টার অভিযোগ করে বিশ^ব্যাংক ও সহ-অর্থায়নকারী এডিবি ও আইডিবি অর্থায়ন থেকে সরে গেলে দরপত্র ছাড়াই কোরিয়ান এক্সপ্রেসওয়েকে সেতু বিভাগ পদ্মা সেতু প্রকল্পের সিএসসি নিয়োগ দেয়। এখন আবার দরপত্র ছাড়াই পদ্মা সেতুর টোল আদায় ও রক্ষণাবেক্ষনের ৬ শতাধিক কোটি টাকার কাজ দেয়া হয়েছে। দেয়া হচ্ছে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের টোল আদায়ের কাজও। এতে সাবেক সেতু সচিব, বর্তমানে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সংশ্লিষ্টতার কানাঘুষা আছে।

ইটাল-থাই তদানীন্তন যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের আশীর্বাদে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ পেলেও আর্থিক সামর্থ্য না থাকায় প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন অনুযায়ী ৩ বছরে কাজ শেষতো দূরের কথা, জামানতও দিতে পারেনি। পরে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রীর যোগাযোগে চীনের সিএসআই এবং সিনো হাইড্রো এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের অর্থায়নে যুক্ত হলে অনুমোদনের দীর্ঘ ৯ বছর পর ২০২০ সালে কাজ শুরু হয়। তবে কাজের গতি না থাকায় এখনও বিমানবন্দর থেকে বনানী পর্যন্ত প্রথম ধাপের কাজই শেষ হয়নি। ইটাল—থাই’র ব্যর্থতা, দীর্ঘ বিলম্ব এবং নতুন বিনিয়োগকারীদের যুক্ত হওয়ার বিষয়টিতে সেতু বিভাগ অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সুপারিশে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন নেয়নি। প্রধানমন্ত্রী অনুমোদিত সিদ্ধান্ত নিম্নতম পর্যায়ে সেতু বিভাগ পরিবর্তন করায় সরকারের কার্যবিধিমালা (রুলস অব বিজনেস) লঙ্ঘিত হয়েছে।

এ অবস্থায় বিবিএ’র জালিয়াত-চক্র ও এর ‘নেপথ্য নায়ক’ শাস্তি না পেলে ভবিষ্যতে এর দায় বর্তাবে বর্তমান ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সদস্যবৃন্দ, কমিটকে সহায়তাকারী কর্মকর্তা সচিববৃন্দ এবং কমিটির সুপারিশ অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষের ওপর। কেবলমাত্র মন্ত্রিসভা কমিটর ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদনের সুপারিশ অনুমোদন করার কারণে গ্যাটকো এবং খনি দুর্নীতির চলমান মামলায় বেগম খালেদা জিয়া আসামী হয়েছেন। আসামী হয়েছেন তার মন্ত্রিসভার যে সকল সদস্য ক্রয় কমিটির সদস্য ছিলেন তারাও।

Sheikhsbay

Related Articles

Back to top button
Close
Close