লণ্ডনে আনন্দমুখর পরিবেশে নোয়াখালী উৎসব অনুষ্ঠিত
লণ্ডন, ৭ মার্চ : বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে গত ৬ই মার্চ রবিবার পূর্ব লণ্ডনের রয়েল রিজেন্সি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয় আনন্দমুখর নোয়াখালী উৎসব। টি এণ্ড টি কনসালট্যান্সির পৃষ্টপোষকতায় ও আই অন টিভির সহযোগিতায় নোয়াখালী এসোসিয়েশন ইউকে আয়োজিত এ উৎসবে বিলেতে বসবাসরত নোয়াখালীর অধিবাসীরা ছাড়াও বৃটিশ বাংলাদেশী কমিউনিটির বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহন করেন।
নির্ধারিত সময় দুপুর বারোটায় মিলনায়তনের প্রধান ফটক অতিথিদের জন্য খুলে দেয়া হলে ধীরে ধীরে বেলা দু’টার মধ্যে কানায় কানায় ভরে ওঠে রয়েল রিজেন্সির সুপরিসর মিলনায়তন। লণ্ডনসহ বিভিন্ন শহর থেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে উপস্থিত হন নোয়াখালীর অধিবাসীরা। আয়োজকদের মধ্য পুরুষদের পরনে ছিল গোলাপী রঙের ফুল অংকিত পাঞ্জাবী আর নারীদের পরনে একই ধরণের দেশীয় শাড়ী। আয়োজকদের বর্ণিল এই পোশাক আয়োজনে যোগ করে অনন্য দৃষ্টিনন্দন আকর্ষণ।
বেলা দুইটা নাগাদ মিলনায়তনে যেন তিল ধারণের ঠাঁই অবশিষ্ট ছিলনা! অভ্যাগত অতিথিদের আসন গ্রহনের পর পরিবেশন করা হয় সুস্বাদু মধ্যাহ্ন ভোজ। ভোজ পর্ব শেষ হওয়ার পর সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় সংগঠনের নেতৃবৃন্দ শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। ততক্ষণে মূল পর্বের সাংস্কৃতিক আয়োজন উপভোগের জন্য উদগ্রীব হয়ে উঠতে থাকেন অতিথিবৃন্দ। আয়োজকদের সংক্ষিপ্ত শুভেচ্ছা বক্তব্য শেষে শুরু হয় প্রতীক্ষিত সাংস্কৃতিক পর্ব। সকলের সম্মিলিত অংশগ্রহনে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্যদিয়ে শুরু হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পর্ব । এ পর্বে একে একে জনপ্রিয় গান গেয়ে দর্শকদেরকে সুরের ঝংকারে মাতিয়ে তোলেন বাংলাদেশ থেকে আগত শিল্পী কনক চাঁপা, বাউল কালা মিয়া, ক্লোজআপ খ্যাত শিল্পী সাব্বির, রাশেদ, অংকন প্রমুখ। বাজে তাকদুম তাকদুম বাংলাদেশের ঢোল গানের তালে তালে নৃত্য পরিবেশন করে শিশুশিল্পী আদৃতা। সাংস্কৃতিক পর্বে অতিথিদের মধ্যে ব্যাপক প্রাণচাঞ্চল্য লক্ষ্য করা যায়। অনেকে শিল্পীদের গানের সুরে তাল মিলিয়ে নেচে গেয়ে উৎসবের আনন্দ উপভোগে সামিল হন।
অনুষ্ঠানে নোয়াখালী এসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে উৎসব আয়োজকদেরকে তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের স্বীকৃতিস্বরুপ বিশেষ সম্মাননা স্মারক এবং নোয়াখালীর অধিবাসীদের কৃতী সন্তানদেরকে তাদের শিক্ষাগত কৃতিত্বের জন্য সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। সম্মাননা স্মারক প্রদান করেন টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের মেয়র জন বিগস, নোয়াখালী এসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আনোয়ার হোসাইন চৌধুরী, লণ্ডন বাংলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ এমদাদুল হক চৌধুরী, সাপ্তাহিক সুরমার সম্পাদক শামসুল আলম লিটন, ব্যারিস্টার মেহনাজ মান্নান, এডভোকেট খিজির হায়াত খান, কাউন্সিলর ফয়েজুর রহমান, মাহমুদুর রহমান রিপন, হারুন নবী খোন্দকার, মো. মহিউদ্দিন প্রমুখ।
সার্থক ও সফল উৎসব আয়োজনের স্বীকৃতিস্বরুপ সম্মাননা লাভ করেন উৎসব কমিটির আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন লিটন, প্রধান সমন্বয়ক ও আই অন টিভির সিইও আতাউল্লাহ ফারুক, টি এণ্ড টি কনসালট্যান্সির সিইও ইফতিখার আহমেদ ইফতি, নোয়াখালী এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ডক্টর সিরাজুল হক চৌধুরী, সমাজকর্মী রতন কামাল, তাজুল ইসলাম, মনিরুল হক চৌধুরী, আলি আকবর খোকন, মো. মামুনুর রশীদ প্রমুখ। এছাড়াও বিশেষ সম্মাননা লাভ করেন পতাকা কন্যা খ্যাত নাজমুন নাহার।
শিক্ষায় বিশেষ কৃতিত্ব অর্জন করায় সম্মাননা লাভ করেন কৃতী শিক্ষার্থী ডা. তাসনিম আনোয়ার, আজমাইন জারিফ নির্ঝর, খাদিজা বেগম আলি আলি আকবর, জুনায়েদ হক, মোহাম্মেদ আদনান রিয়াজ উদ্দিন, বিলকিস এ চৌধুরী, নাজমুন নাহার, ফাতেমা রহমান রিদনি, রামিসা রহমান, আদনিনা ভূঁইয়া, নাহিয়ান রাঈদা অরণ্য প্রমুখ।
বিভিন্ন পর্যায়ে অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন মো. মামুনুর রশীদ, কিশোয়ার মুনিয়া, আইরিন প্রমুখ।
অপরাহ্ন থেকে রাত দশটা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত প্রাণবন্ত এ উৎসবটি বিলেতে বসবাসরত বৃহত্তর নোয়াখালীর অধিবাসী ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের অংশগ্রহনে জেলাভিত্তিক আয়োজনের মাধ্যমে সামাজিক সম্প্রীতি ও সোহার্দ্য বৃদ্ধির এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্হাপন করলো বলে অতিথিদের অনেকেই অভিমত ব্যক্ত করেন।
– সংবাদ বিজ্ঞপ্তি