কমিউনিটি নিউজ

ব্রিকলেন মসজিদের প্রেসিডেণ্ট সাজ্জাদ মিয়া এমবিই’র ইন্তেকাল, দাফন সম্পন্ন

শোকসংবাদ

লণ্ডন, ৪ মার্চ – ব্রিকলেন মসজিদের প্রেসিডেন্ট, বিশিষ্ট কমিউনটি ব্যক্তিত্ব আলহাজ্ব সাজ্জাদ মিয়া এমবিই ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন। গত ২৮ ফেব্রুয়ারী, সোমবার ভোর সোয়া ৫টায় নিজ ঘরে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। পরদিন ১ মার্চ মঙ্গলবার বাদ জোহর ব্রিকলেন মসজিদে নামাজে জানাজা শেষে মরহুমকে পূর্ব লন্ডনের গার্ডেন্স অব পিস গোরস্থানে সমাহিত করা হয়। ৬৭ বছর বয়সী সাজ্জাদ মিয়া এমবিই দীর্ঘদিন থেকেই দুরারোগ্য ক্যান্সারে ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ১ ছেলে ৪ মেয়ে, এবং ৪ ভাই, ৪ বোনসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন ও গুনগ্রাহী রেখে গেছেন।

সাজ্জাদ মিয়া এমবিই কমিউনিটির একজন সর্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর খবরে কমিউনিটিতে নেমে আসে শোকের ছায়া। লণ্ডন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মরহুমের বড় ভাই নুরুল হক লালা মিয়া তাঁর ভাইয়ের জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন। বিভিন্ন সামাজিক এবং ধর্মীয় সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে মরহুমের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে শোকসন্তপ্ত পরিবারে প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করা হয়েছে। তম্মধ্যে ব্রিকলেন জামে মসজিদ ট্রাস্ট, ইস্ট লণ্ডন মস্ক, কাউন্সিল অব মস্ক, বাংলাদেশ ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন, বাংলা মিডিয়া এবং যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠসমূহসহের নেতৃবৃন্দ মরহুম সাজ্জাদ মিয়ার মৃত্যুতে শোক প্রকাশন করেন এবং পরিবারের সমবেদনা জানান।

উল্লেখ্য, আলহাজ্ব সাজ্জাদ মিয়া ব্যক্তিজীবনে একজন সজ্জন ও হিতৈষী মানুষ ছিলেন। ছিলেন সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে সক্রিয়। একাধারে বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের জড়িত থেকে কমিউনিটির উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা পালনকারী সাজ্জাদ মিয়া সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার রসুলপুর গ্রামে ১৯৫৪ সালে জন্মগ্রহণ করেন। প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করার পর ১৯৬৭ সালে তিনি বিলেত পাড়ি জমান। যুক্তরাজ্যে পাড়ি জমানোর পর থেকে আমৃত্যু কমিউনিটির কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখেন। বিলেতে আসার পর প্রথম তাঁর নিবাস হয় বার্মিংহামে, সেখানে তিনি শুরু করেন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা। ১৯৭১ সালে বার্মিংহাম থেকে লণ্ডনে চলে আসেন। তরুণ বয়সে তিনি প্রবাসে মুক্তিযুদ্ধ সংগ্রামের আন্দোলনের প্রায় প্রতিটি মিটিং ও মিছিলে অংশগ্রহণ করেন। প্রতিনিয়ত দেশের খোঁজ খবর রাখেন। কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ ভুমিকা রাখেন।

২০১৫ সালে ঐতিহ্যবাহী ব্রিকলেন জামে মসজিদ ট্রাস্টের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। সততা, নিষ্ঠা আর ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন আলহাজ্ব সাজ্জাদ মিয়া আমৃত্যু সফলভাবে দায়িত্ব পালন করে গেছেন। বাংলাদেশ ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ১৯৮২ সালে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদেও নির্বাচিত হন। আস্থার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮৪ সালে থমাস বাক্সটন প্রাইমারি স্কুলের প্যারেন্ট গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন এবং চেয়ার অফ গভর্নর হিসেবেও গুরু দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৮৮ সালে টাওয়ার হ্যামলেটস ল সেন্টারের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯০ সালে টাওয়ার হ্যামলেটস ওয়েভার্স ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার মাধ্যমে কমিউনিটির নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে বিশেষ অবদান রাখেন। ২০১৫-২০১৭ সালে জগন্নাথপুর ব্রিটিশ বাংলা এডুকেশন ট্রাস্টের চেয়ারপার্সন হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। তার সময়েই সংগঠনের পক্ষ থেকে শুরু করা হয় জিসিএসই ও এ লেভেল উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানের। পূর্ব লন্ডনের বাঙালি অধ্যূষিত টাওয়ার হ্যামলেটসের বাসিন্দাদের কল্যানে দীর্ঘ দিন নিজেকে নিয়োজিত রাখার স্বীকৃতি হিসেবে রাণীর সম্মান সূচক মেম্বার অফ ব্রিটিশ এম্পায়ার বা এমবিই খেতাব পান।

Sheikhsbay

Related Articles

Back to top button
Close
Close