নিউজ

তরুণদের সমন্বয়ে গঠিত নূর’দের দলকে অভিনন্দন; তবে…

।।।।শেখ মহিউদ্দিন আহমেদ।।

ডঃ রেজা কিবরিয়া ও ভিপি নূরের নেতৃত্বে নতুন দল ”বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদ”র আত্মপ্রকাশে এ প্রজন্মের তরুণদের রাজনীতিতে অংশগ্রহণের একটি নয়া মাইলফলক প্রতিষ্ঠিত হলো। নয়া একটি রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশে নতুন প্রজন্ম আমাদের দেশের নষ্ট পচা রাজনীতিকে নতুন ভাবে গড়ার একটা সুযোগ তৈরি করলো। এটি একটি ভালো দিক। আমি এবং আমাদের দল ”লিবারেল পার্টি বাংলাদেশে”র পক্ষ থেকে নুর’দের দলের সবাইকে অভিনন্দন জানাচ্ছি।

ঢাকায় দলীয় কার্যালয়ে বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদ”র আত্মপ্রকাশ

এই কিছুদিন আগেও যে নূর ছিলো বৃত্তের বাইরের প্রান্তিক ছাত্র যুবকদের সিম্বল; প্রান্তিক মানুষের প্রতিচ্ছবি। সেই নুরুল হক নূর এখন হচ্ছেন আইএমএফের সাবেক কর্মকর্তার রাজনৈতিক সাথী। পুঁজিবাদী অর্থব্যবস্থার একজন প্রতিনিধি, আমাদের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মানুষের উন্নয়নের জন্য কোন রাজনৈতিক দর্শনকে নূরের দলে প্রতিষ্ঠিত করেন, সেটাই এখন দেখার বিষয়। যদিও এখনো নুরের দল বাংলাদেশ গণ অধিকার পরিষদ কোন্ রাজনৈতিক দর্শন অবলম্বন করবে তা নির্দিষ্ট করেনি; তবে আমার প্রত্যাশা থাকবে সেই আদর্শ যেন নূর যে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করছে, তাদের শ্রেণী স্বার্থকে আঘাত না করে।

পুঁজিবাদী রাজনৈতিক দর্শন আমাদের কোন্ পর্যায়ে নিয়ে গেছে সেটি আমরা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি তৃতীয় বিশ্বের দরিদ্র অন্যান্য দেশের মতোই। রাষ্ট্র এখন আর নাগরিকদের নেই। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর এই রাষ্ট্র ব্যবস্থায় কি অবস্থান, তা লেখার কোন ভাষা দিয়ে বোঝানোর মতো অবস্থায় নেই। রাষ্ট্র একটি কর্পোরেট ব্যবস্থায় পরিণত হয়েছে, যার পরিচালনা সময় সময় কর্পোরেট গোষ্ঠীর চেয়ার সিটিংয়ের মতোই পরিবর্তিত ও নির্ধারিত হয় তাবৎ বিশ্বময়; হাতে গোনা কয়েকটি দেশ ব্যতিত। আর মালিকানা ভিত্তিক দেশের সংখ্যাও কম নয় যেখানে নাগরিকরা হচ্ছে প্রজা মাত্র। এই অবস্থায় প্রান্তিক জনতার সাথে আমরা দেখছি কোন্ রাজনৈতিক দর্শন ধারন করার ঘোষণা আসে নূরের দলের কাছ থেকে। যদিও তারা তাদের দলের চার দফা মূলনীতি (গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, অধিকার ও জাতীয় স্বার্থ) ও ২১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে; কিন্তু এটি যে রাজনৈতিক দর্শন নয়, এটি নাগরিকরা যে বোঝে সেটি নূরদের বুঝতে হবে।

এতদিন যেভাবে নূররা কর্মসূচী ভিত্তিক আন্দোলন সংগ্রাম করেছে, আজ (২৬অক্টোবর মঙ্গলবার,২০২১) থেকে সেই অবস্থানটি আর নেই। এখন তারা নিজেদের নিজস্ব একটি রাজনৈতিক গণ্ডিতে আবদ্ধ করেছে। এখন অন্য সকল রাজনৈতিক দলই তাদের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ। কারন নূররা আলাদা রাজনৈতিক দর্শন ও মতের কারনেই আলাদা দল করেছে; সহমত বা সহমতাদর্শ থাকলে তো ভিন্ন দল করার কোন যৌক্তিক কারন থাকতে পারে না। তাই আলাদা দলের কারনেই তারা অন্যান্য দলের প্রতিদ্বন্দ্বি; এটা যতক্ষণ তারা মনে রাখতে পারবে; রাজনীতি করাও তাদের জন্য উপযোগী হবে।

যাক, এখনি সব বলার সময় আসেনি। সামনে নূরদের পথ চলা অনেক বাকি। আমাদের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী জেনে না জেনে এখনো নির্দিষ্ট কিছু প্রতীক বা মার্কা নিয়েই ব্যস্ত, কোন মানুষ বা মানুষের সততা নিয়ে তাদের মাথা ব্যথা নেই, যদিও তারা প্রতারিত হয় বার বার। যে সুযোগে রাজনৈতিক অনেক নষ্ট মানুষ নির্বাচনী প্রতিকের কারনে নাগরিকদের মালিক মোক্তার হয়, হয়েছে। এই অবস্থার উত্তরন যে আরেকটি পুঁজিবাদী সম রাজনৈতিক প্ল্যাটফরমে সম্ভব নয়, সেটি বোঝার মধ্যেই নূরদের দলের ভবিষ্যৎ নিহিত।

পুরো প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সাথে আমরাও অপেক্ষায় রইলাম নূরদের আগামীর পথ চলা দেখার জন্য। হয়তো রাজপথেই কোথাও দেখা হবে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের নূরদের সাথে কোনো এক ক্রান্তি লগ্নে।

লেখক- শেখ মহিউদ্দিন আহমেদ, প্রেসিডেন্ট, লিবারেল পার্টি বাংলাদেশ, ডাবলিন, আয়ারল্যান্ড থেকে।

Sheikhsbay

Related Articles

Back to top button
Close
Close