নিউজ

টাওয়ার হ‍্যামলেটস আতঙ্কের জনপদ: ডকল‍্যাণ্ডে গ‍্যাং ফাইটে যুবক নিহত

।। সুরমা প্রতিবেদন ।।
লণ্ডন, ২৩ সেপ্টেম্বর : বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশী অধ্যুষিত টাওয়ার হ্যামলেটস বারায় ঘন ঘন নাইফ ক্রাইম, গ্যাং ফাইট এবং প্রকাশ্যে ড্রাগ ডিলিংয়ে জনমনে ব্যাপক উদ্বেগে সঞ্চার করেছে। বিশেষ করে গত কয়েক দিনে কয়েকটি নাইফ ক্রাইমের ঘটনায় উদ্বিগ্ন এলাকাবাসী। এবার ডকল্যাণ্ডর ইস্ট ফেরি রোডে গ্যাং ফাইটের শিকার হয়ে ঘটনাস্থলে নিহত হয়েছেন ৩০ বছরের এক যুবক। ঘটনাটি ঘটেছে, ২১ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৮টায়।

ড্রাগ এণ্ড নাইফ: টাওয়ার হ‍্যামলেটস

একদল, যুবকের মধ্যে ছুরি দিয়ে মারামারিতে লিপ্ত হওয়ার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে আসে। পরক্ষণেই প্যারাডেমিক এসে সবধরণের রাস্তায় পড়ে থাকা মারাত্মক আহত যুবককে বাঁচানোর প্রাণান্ত চেষ্টা করে। কিন্তু কোনভাবেই প্রাণ রক্ষা করা যায়নি কয়েকটি ছুরিকাঘাতের শিকার যুবকের। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার। ঘটনার সাথে জড়ি কাউকে পুলিশ এখনো গ্রেফতার করছে পেরেছে বলেও জানা যায়নি।

নিহত যুবকের এখনো পরিচয় পাওয়া যায়নি। সাপ্তাহিক সুরমার পক্ষ থেকে স্থানীয় বিভিন্নজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, নিহত ব্যক্তি বাঙালি নন। পুলিশ নিহতের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে তার পরিবারকে জানানোর চেষ্টা করছে বলে জানা গেছে। এবছর এযাবত ঘটে যাওয়া হত্যাকা-গুলোর মধ্যে ডকল্যাণ্ডের এই হত্যাকাণ্ড পুলিশের তদন্ত তালিকায় ৯৪তম বলে ডেইলি মেইল সূত্রে জানা গেছে।

এদিকে, বাংলাপাড়া খ্যাত পূর্ব লণ্ডনের টাওয়ার হ্যামলেটস বারার রাস্তা প্রায় প্রতিদিনই রক্তে রঞ্জিত হচ্ছে। সম্প্রতি মারাত্মক ছুরিকাঘাতে আহত এক তরুণের রক্তের উপর বসে থাকার ভয়াবহ ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার পর স্থানীয় বাংলাদেশী কমিউনিটিতে ব্যাপক উদ্বেগের সৃষ্টি হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, ওই তরুণ রাস্তার ফুটপাতে বসে আছেন এবং ম্যাচেটের আঘাতে ছিন্নপ্রায় তার হাতের রক্তে পুরো রাস্তা ভেসে যাচ্ছে। ঘটনাটি ঘটেছে গত ১২ সেপ্টেম্বর, রোববার পূর্ব লণ্ডনের ব্যাপক বাংলাদেশী অধ্যুষিত শ্যাডওয়েলের গোল্ডিং স্ট্রিটে। পরবর্তীতে পাশের রাস্তা থেকে ছুরিকাঘাতে আহত ২০ বছর বয়সী আরেক বাঙালি তরুণকে আটক করে পুলিশ।

আরেকটি ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, এক কিশোর আরেক কিশোরকে নাইফ দিয়ে পেছন থেকে আক্রমণ করছে। উক্ত ঘটনাটি ঘটে গত ১৫ সেপ্টেম্বর, বুধবার সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে। একজনের গাড়ী থেকে করা ওই ভিডিওচিত্রটির স্থান টাওয়ার হ্যামলেটসের স্টেপনী এলাকার বেলগ্রেইভ স্ট্রিটের। সাম্প্রতিক এই ঘটনাগুলো বিপুল বাংলাদেশী অধ্যুষিত এলাকা টাওয়ার হ্যামলেটসের তরুণ-কিশোরদের নাইফ ক্রাইম, গান ও গ্যাং ফাইটে জড়িত হওয়ার ভয়াবহতাকেই প্রমাণ করলো।

উল্লেখ্য, লণ্ডনের যেসব এলাকা ভয়াবহ নাইফ ক্রাইম ও গ্যাং ফাইটের জন্য শীর্ষে অবস্থান করছে টাওয়ার হ্যামলেটস বারা তম্মধ্যে অন্যতম। এর আগেও স্কুলছাত্রসহ অনেক বাঙালি তরুণ-কিশোরকে ছুরিকাঘাতের শিকার হয়ে প্রাণ দিতে হয়েছে। ১২ সেপ্টেম্বর, পূর্ব লণ্ডনে সংঘটিত নাইফ ক্রাইমের ঘটনাটি পথচারিসহ সবাইকে হতবাক করেছে। প্রকাশ্য দিবালোকে মারাত্মকভাবে ছুরিকাঘাতের শিকার একজনের রক্তের উপর বসে থাকার করুণ দৃশ্য লণ্ডনে নাইফ ক্রাইম যে মহামারি আকার ধারণ করেছে, সেটিরই প্রমাণ বহন করে।

Sheikhsbay

Related Articles

Back to top button
Close
Close