জিসিএসইতে লণ্ডন এণ্টারপ্রাইজ একাডেমীর অভাবনীয় সাফল্য

লণ্ডন, ৮ সেপ্টম্বর : লণ্ডন এন্টারপ্রাইজ একাডেমীর যাত্রা শুরু হয় মাত্র ২০১৪ সালে। একটি নতুন ফ্রি স্কুল হিসেবে অনেক চ্যালেঞ্জ আর বাস্তবতা পেরিয়ে প্রথমবারের মতো জিসিএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় ২০১৯ সালে। শিক্ষার্থীরা প্রথম বছরেই অসাধারন ফলাফল অর্জন করে। ৮টি বিষয়ে জাতীয় ফলাফলের গড় অর্জনের কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখে স্কুলটি। ইবিএসিসি এন্ট্রি ও ইবিএসিসি ফলাফলে জাতীয় গড় ফলাফলকেও অতিক্রম করেছিলো প্রতিষ্ঠানটি।

করোনা মহামারি সত্বেও দ্বিতীয় বছরের জিসিএসসি ফলাফলেও বাজিমাত করেন শিক্ষার্থীরা। এসব ছাত্রছাত্রীরা বর্তমানে পড়ালেখা করছেন ইউকের বিখ্যাত সব ইউনিভার্সিটিতে। ইম্পেরিয়াল, ইউসিএল, কুইনমেরি, কিংস কলেজ লন্ডনসহ অনেক নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন লন্ডন এন্টারপ্রাইজ একাডেমীর শিক্ষার্থীরা।

এবার তৃতীয়বারের মতো চলতি বছরের জিসিএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েও অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছেন শিক্ষার্থীরা। করোনা মহামারির চ্যালেঞ্জর মধ্যেও এমন ফলাফলে খুশি শিক্ষার্থী, অভিভাবক এবং স্কুলের শিক্ষকরা। স্কুলের প্রিন্সিপাল আশিদ আলী এই ফলাফলে উচ্ছসিত।
এবারের জিসিএসসিতে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা প্রায় সকল বিষয়ে দারুন ফলাফল বয়ে নিয়ে এসেছেন। বিশেষ করে, ম্যাথস, ইংলিশ, ফিজিক্স, বায়োলজি, কম্পিউটিং, হিস্ট্রি এবং ইকোনমিক্স বিষয়ে গড় রেজাল্ট প্রত্যাশাকেও ছাড়িয়ে গেছে। প্রায় ৭৩.৩ ভাগ শিক্ষার্থী ইংলিশ এবং ম্যাথসে গ্রেড ৪ এবং কোন কোন ক্ষেত্রে এর চেয়েও বেশী ফলাফল অর্জন করেছে। যা স্কুলের গত বছরের রেজল্টকে ছাড়িয়ে গেছে। এছাড়াও আশার কথা হচ্ছে প্রায় ৩৪.৪ ভাগ শিক্ষার্থীর গড় রেজাল্ট ৯-৭ গ্রেড। যা একটি নতুন স্কুল হিসেবে অনন্য অর্জন।

প্রিন্সিপাল আশিদ আলী বলেন, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কঠোর পরিশ্রমের ফলে এই ঈর্ষনীয় ফলাফল অর্জন সম্ভব হয়েছে, যা আমাদের সবাইকে আনন্দিত ও গর্বিত করেছে। দেশের নামীদামী স্কুলগুলোর শিক্ষার্থীদের সমমানের ফলাফল অর্জন করেছে আমাদের অনেক শিক্ষার্থী, যা সত্যিকার অর্থেই আমাদের জন্য গৌরবের।
তিনি আরো বলেন, চলতি বছরের শিক্ষার্থীদের কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলে আমি সন্তুষ্ট। এরাই আমাদের প্রতিষ্ঠানের পথ প্রদর্শক। এই শিক্ষার্থীদের অনেকেই ডাক্তার, আইনজীবী, একাউন্টেন্ট, ব্যাংকার ও উদ্যোক্তা হিসেবে ভবিষ্যতে আবির্ভূত হবে। শিক্ষার্থীদের কঠোর পরিশ্রম ও শিক্ষকদের আন্তরিক পাঠদানের মাধ্যমে এই কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল প্রমাণ করেছে আমাদের পাঠদান পদ্ধতিই সেরা। আগামী বছর আমরা এই সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে আরো ভাল ফলাফল অর্জনে সক্ষম হবো বলে আশাবাদী।

ফলাফলের দিক দিয়ে স্কুলটিতে সেরা হয়েছে, জারিয়া মির্জা। সে ৮টি বিষয়ে ৯ গ্রেড এবং চারটি বিষয়ে গ্রেড ৮ অর্জন করেছে। কেমেস্ট্রি, ইংলিশ, ম্যাথস, স্পেনিস এবং বাংলা ল্যাঙ্গুয়েজে তার রেজাল্ট সর্বোচ্চ। মেধাবী মেয়ে জারিয়া পড়াশুনার পাশাপাশি লেখালেখিতেও পারদর্শী। লকডাউনের সময়ে তার লেখা ১৬২ পেইজের একটি বই ‘‘হিডেন ইউথিন‘‘ প্রকাশ করেছে স্কুল।
ইংলিশে অত্যন্ত দুর্বল ছিলো লিনডা লানাসারি। সে আলজেরিয়ান বংশোদ্ভুত। স্কুলের নিবিড় পরিচর্যার ফলে লিনডা অসাধারন ফলাফল অর্জন করেছে। সে ৬ বিষয়ে গ্রেড ৯, ৩টি বিষয়ে গ্রেড ৮ এবং বাকী সবগুলোতে গ্রেড ৭ পেয়েছে।
এছাড়াও স্কুলের শিক্ষার্থী সাবরিন বেগম, উমর আযম, মুহাম্মদ রিয়াদ, আমিনা নাজিয়া এবং উসরা দারুন ফলাফল অর্জন করেছে। তাদের রেজাল্ট প্রত্যাশাকেও ছাড়িয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, পূর্ব লণ্ডনের হোয়াইট চ্যাপেলে একটি ফ্রি স্কুল হিসেবে ২০১৪ সালে লণ্ডন এন্টারপ্রাইজ একাডেমী তাদের কার্যক্রম শুরু করে। লন্ডন এন্টারপ্রাইজ একাডেমী থেকে গত ৩ বছরে প্রায় ৩২০ জন শিক্ষার্থী জিসিএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। বর্তমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৪৬০ জন।