মুক্তচিন্তা

তালেবানের কাবুল দখল: এরপর কি?

।। আখলাক আহমেদ ।।

লেখক: আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশ্লেষক ।। কূটনৈতিক সম্পাদক সাপ্তাহিক সুরমা

বয়েস যাদের পঞ্চাশ এর উপরে এমন বাংলাদেশীরা আফগানিস্তানকে চেনে রবীন্দ্রনাথের কাবুলিওয়ালা আর সৈয়দ মুজতবা আলীর প্রবাস বন্ধু গল্প পড়ে। কাবুলিওয়ালা গল্পে আফগানিস্তান ছেড়ে কর্ম উপলক্ষে বাংলা মুল্লুকে আসা এক পিতার দেশে ফেলে আসা ছোট্ট মেয়ের প্রতি দরদ আর রক্তক্ষরণের মানবীয় ছবি ফুটে উঠতে দেখি। প্রবাস বন্ধু গল্পে আব্দুর রহমান নামে এক অসাধারণ সেবক কাম পাচকের গল্প শুনি যে তার দেশের অত্যন্ত বাজে আবহাওয়া আর বরফাচ্ছাদিত রাস্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বটে কিন্তু যখন জিজ্ঞাসিত হয় প্রতিকূল পরিবেশের এই পানশিরে পড়ে আছে কেন সে তখন গভীর দেশপ্রেমে উত্তর দেয় ‘ইনহাস্ত ওয়াতানাম’ এইতো আমার জন্মভূমি।

আশি আর নব্বই দশকে আফগানিস্তান বাংলাদেশে অধিক পরিচিতি আর আলোচনায় আসে যথাক্রমে রাশিয়া, তালেবান আর আমেরিকার আগ্রাসনের কারণে। নব্বই দশকের শেষদিকে যখন তালেবান ক্ষমতায় ছিল তখন মুফতি আমিনির অনুসারীরা বাংলাদেশে শ্লোগান তুলেছিলেন ‘আমরা হবো তালেবান, বাংলা হবে আফগান’ । অবশ্যএই শ্লোগান দেওয়ার বহু আগে ১৯৮০ সালে নারায়ণগঞ্জে এক জনসভায় তৎকালীন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক কমিউনিস্ট নেতা মোহাম্মদ ফরহাদ জিয়াউর রহমান কে উদ্দেশ্য করে বলেছিলেন ‘বাংলাদেশে আফগান স্টাইলে বিপ্লব করা হবে।’ উল্লেখ্য সেসময় মাত্র সোভিয়েত বাহিনী আফগানিস্থানে প্রবেশ করেছে বাম সরকারকে ক্ষমতায় টিকে থাকতে সাহায্য করবার জন্য’। আমিনি বা মোহাম্মদ ফরহাদ এই দুজনের কারো এক্সট্রিম ভাবনাই বাংলাদেশের মাটিতে পূর্ণতা পায়নি এবং কখনো পাবে বলেও মনে হয় না। কারণ বাংলাদেশের জনমানসের মেইনস্ট্রিম কখনো এক্সট্রিম নয়। তারা সব সময় ওয়াসাতিয়ায় (মধ্যপন্থায়) বিশ্বাসী।

তালেবানের বিজয় তাদের ধর্মীয় এজেণ্ডার কারণে নয় বরং বিদেশি শক্তি বিশেষ করে মার্কিন মদদপুষ্ট হয়ে যারা গত ২০ বছর আফগানিস্তান শাসন করছিল সেই কারজাই ও আশরাফ ঘানীদের ক্রমাগত জনবিচ্ছিন্নতা, সাংঘাতিক দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, দেশ পরিচালনায় নিদারুণ অদক্ষতা, মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লংঘন ইত্যাদি কারণে সংঘটিত হয়েছে। বিদেশি শক্তির তাবেদারী আর দুর্নীতিবাজ সরকারের অন্যায় কর্মযজ্ঞের হুকুম তামিল করতে করতে আফগানিস্তানের সরকারি সৈন্য, আইন শৃঙ্খলা ও আমলা বাহিনী লড়াকু প্রতিরোধ যোদ্ধা তালেবানের বিরুদ্ধে লড়ার নৈতিক শক্তি হারিয়ে ফেলেছিল। যুদ্ধে জয় ঘটে অস্ত্রের বলে নয়, নৈতিক বলে।

যে সব দেশ ও সরকার নিজ দেশের জনগণের অভিপ্রায় এর উপর নির্ভর না করে বিদেশী প্রভুদের আজ্ঞাবহ হয়ে ও নির্ভরশীল হয়ে সীমান্তের বাইরের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী দেশ চালায় সেসব দেশের সরকারের এমন করুণ পরিণতিই হয়। তবে আশরাফ ঘানিদের ‘ঘানি’ টানতে হয় নিরীহ জনগণকে। তালেবানের বিজয়ে বাংলাদেশে যারা গোপনে কিংবা প্রকাশ্যে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছে অচিরেই তাদের মোহভঙ্গ হবে, শিগগিরই তারা বুঝতে পারবে আফগান উপজাতীয় সংস্কৃতি আর ইসলামের মূলনীতির মধ্যে যোজন যোজন ফারাক।

আফগানিস্তানের জনগণের দুর্ভাগ্য হলো তাদের উপর সব সময় বাইরে এজেন্ডা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে তাদের নিজস্ব এজেন্ডা নিয়ে কেউ কখনো কাজ করেনি। সত্তর-আশির দশকে ছিল রাশিয়ার এজেন্ডা, তারপরে ওয়ার লর্ডদের এজেন্ডা, তারপর এল তালেবানি এজেন্ডা, এরপর গত দু’দশক ধরে ইঙ্গ-মার্কিন এজেণ্ডা।

এবার তালেবান যদি নিজস্ব এজেন্ডা বাদ দিয়ে জনগণের অভিপ্রায় অনুযায়ী দেশ শাসন করতে পারে তবেই আফগানিস্তান আলোর মুখ দেখতে পারে। কিন্তু তোরাবোরা পাহাড়ে পর্বতে দু’দশক ধরে ঘোরাঘুরি করা শিক্ষা বঞ্চিত গোঁড়া মনোভাবের বিপুল তালেবান নেতৃত্ব তাদের নিজস্ব এজেন্ডা বাদ দিয়ে বৃহত্তর জনগণের এজেন্ডা (অভিপ্রায়) অনুযায়ী দেশ চালাবে এমন আশা করা এই মুহূর্তে দুষ্কর। কাতারে যারা মধ্যস্থতা আলোচনায় তালেবানের পক্ষ থেকে যোগ দিয়েছিলেন তারা সুশিক্ষিত ও আপাত ভারসাম্যপূর্ণ মনে হলেও মাঠ পর্যায়ের তালেবান নেতারা তাদের কথা কতটুকু শুনবেন সে আশঙ্কা থেকেই যায়।

তালেবানরা শরিয়া আইন দ্বারা পরিচালিত ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবে কিনা এবং এই ধরনের শরিয়া রাষ্ট্র কতটা প্রকৃত এবং কঠোর হবে তা দেখার জন্য সারা দুনিয়া যেমন অপক্ষো করছে, তেমনি অপেক্ষা করছে বিভিন্ন দেশের জিহাদিরাও। ইতিমধ্যে জিহাদিরা, ইসলামিক স্টেট (আইএস) ব্যতীত, তালেবানের “ঐতিহাসিক বিজয়”-দেখে উৎসাহিত বোধ করছে – এটিকে বিশ্বব্যাপী জিহাদি এবং ইসলামী আন্দোলনের সামগ্রিক বিজয়ের সূচনা হিসেবে দেখছে। তালেবানরা একটি প্রায় হারিয়ে যাওয়াছোট গোষ্ঠী থেকে বর্তমানে একটি বিস্ময়কর ব্যযাপার হিসেবে আবির্ভুত হয়েছে তাদেও কাছে যা কিনা ধ্বংসস্তুপ থেকে রুপকথার ফিনিক্স পাখির মতো উঠে এসেছে এবং কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই একটি মার্কিন/ন্যাটো-সমর্থিত দেশ দখল করে ফেলেছে।

তারপরও তালেবানের কথঅবার্তা শুনে কট্টর জিহাদিদের মধ্যে কিছুটা মতভেদও দেখা যাচ্ছে। তালেবানের কিছু পররাষ্ট্র নীতি, যেমন চীন সহ প্রতিবেশী এবং আঞ্চলিক খেলোয়াড়দের কাছে তাদের ইতিবাচক বার্তা, এবং একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চাওয়ার দাবি যা সবার প্রতিনিধিত্ব করে, আল-কায়েদার সমর্থক সহ কট্টরপন্থীদেও স্বভাবসুলভ ধারণার সাথে ভালভাবে খাপ খায়না।

এদিকে, আইএস — যা তালেবানদের কট্টর প্রতিদ্বন্দ্বী, পড়েছে বড় মুশকিলে। গোষ্ঠীটি আফগানিস্তানে ঘাটি গাড়তে চেয়েছিল, বিস্ময়ের ব্যাপার হল তারা তালেবানেদেও কাছে হালে পানি পায়নি। এক পর্যায়ে তারা তালেবানদের উপরই ছোট ছোট হামলা চালিয়ে যাচ্ছিল কারন তাদেও মতে তালেবানরা হলে “ধর্মত্যাগী যুদ্ধবাজ মিলিশিয়া” । বর্তমানে তালেবানের সাফল্যে আইএস ক্ষুব্ধ এবং ধারণা করা যেতে পাওে যে তালেবানদের শাসনের স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার চেষ্টাকে নষ্ট করার জন্য তারা সব কিছু করবে। দুটি গ্রুপ একসাথে কাজ করার সম্ভাবনা কম, এবং তালেবানদের আইএসের প্রয়োজন নেই। আইএস সমর্থকরা এখন আফগানিস্তানের ঘটনা নিয়ে ব্যাপক মন্তব্য করছে। তারা যে যুক্তি দেয় তা হল তালেবানরা যুক্তরাষ্ট্রের এজেন্ট এবং আমেরিকা একটি রাজনৈতিক চুক্তির মাধ্যমে আফগানিস্তানকে তালেবানদের কাছে হস্তান্তর করেছে।
তালেবানের রাজনৈতিক পদক্ষেপের প্রশংসা অন্য সবাই করলেও আইএসর কাছে তা পশ্চিমা শক্তি বা কুফফারের সাথে আপোষ করার নামান্তর বিশেষ কওে তালেবান যখন পশ্চিমকে আশ্বস্ত করল যে এটি তাদের দেশগুলিকে টার্গেট করবে না। তালেবান নেতৃতোবর এই নমনীয় মনোভাব মাছ পর্যায়ের কট্টরপন্থীরা কতটুকু মানবে আগামিতে সেটা এক বিরাট ধাধা হিসেবেই থাকবে। এবং অনেকের মনের প্রধান প্রশ্ন হল: তালিবান কি সত্যিই পরিবর্তিত হয়েছে?

ইংগ-মার্কিন পরাজয়ের মুল্যায়ন:
কাবুলের পতন এবং আফগানিস্তানে তালেবানদের ক্ষমতায় ফিরে যাওয়া দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আমেরিকার জন্য সবচেয়ে অপমানজনক বৈদেশিক নীতির বিপর্যয়।
এটি ১১৬১ সালে বে অফ পিগস আক্রমণের বালখিল্যতার কথা মনে করিয়ে দেয়, যখন কিউবার ফিদেল ক্যাস্ত্রোকে উৎখাত করার জন্য ক্যাস্ত্রো-বিদ্রোহীদের সিআইএ দ্বার সজ্জিতকরণ ও আক্রমণের প্রেসিডেন্ট কেনেডির প্রচেষ্টা এক হাস্যকর প্রহসন এবং বৈশ্বিক বিব্রততায় শেষ হয়েছিল; এবং আরো পরে ১৯৭৫ সালে ভিয়েতনামের সাইগনের পতনের পর বিশ্বব্যাপী মার্কিন মর্যাদায় বিধ্বংসী আঘাত, যেখান থেকে আমেরিককে হারানো ইমেজা পুনরুদ্ধার করতে একটি প্রজন্ম লেগেছিল। কাবুলের পরাজয় থেকে ভুলুন্ঠিত মার্কিন গৌরব পুনরুদ্ধার করতে সম্ভবত আমেরিকার আরেকটি প্রজন্ম লাগবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই সেদিন ৮ জুলাই স্পষ্ট বলেছিলেন, তালিবান পুরো আফগানিস্তানের দখল এতো তাড়াতাড়ি করতে পারবে না, কারণ আমেরিকা আফগান সেনাবাহিনীকে দৃঢ়ভাবে গড়ে তুলে আর সব ধরণের সারিক উপকরণে সজ্জিত করেছে। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী, বরিস জনসন, সমানভাবে আত্মবিশ্বাসী ছিলেন — “তালেবানদের বিজয়ের কোন সামরিক সম্ভাবনা নেই” — তিনি পালামেন্টে দাড়িয়ে সাংসদদের বলেছিলেন মাত্র, পাঁচ সপ্তাহ আগে।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছিলেন যে তিনি “আফগান সামরিক বাহিনীর সক্ষমতায়” বিশ্বাস করেন, যারা ভালভাবে প্রশিক্ষিত, উন্নত সজ্জিত এবং “যুদ্ধ পরিচালনার ক্ষেত্রে আরও দক্ষ”। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন হিজ মাস্টারস ভেসের মতো তার সাথে সম্মত হন: “আমি বিশ্বাস করি না যে তালেবানর যে ধরণের বিজয় সম্পর্কে আমরা মাঝে মাঝে পড়ি তা আসলেই সঠিক।”
আফগান সরকার এবং সশস্ত্র বাহিনীর দ্রুত গতির নিঃশব্দ পতন, এবং বিনা গুলিতে দুই মিলিয়নেরও বেশি লোকের শহর কাবুলের পতন এটাই চোখে আংগুল দিয়ে দেখায় যে এই মূল্যায়নগুলি কত মারাত্মক ভুল ছিল। তবে এটা কেবল রাজনীতিবিদদের অতি-আশাবাদী বক্তব্যই ছিল না, সামরিক ও গোয়েন্দা পরিকল্পনাকারীরাও এই মুল্যায়নে সায় দিয়েছিল, এমনকি যখন তালেবানরা আফগান গ্রামাঞ্চলে দ্রুত অগ্রগতি অর্জন করে চলছিল তখনো তারা বলে চলেছে অকোটবরের আগে তালেবানরা কাবুলের ধারে-কাছে ঘেষতে পারবেনা।। ব্রিটিশ সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান জেনারেল স্যার নিক কার্টার পর্যন্ত বলেছিলেন, “তালেবানরা যদি পুরো আফগানিস্তানে শেষ পর্যন্ত যুদ্ধ করতে পছন্দ করে তবে তার সম্পূর্ণ কর্তৃত্ব পাওয়ার সম্ভাবনা কম।”
জুনের শেষের দিকে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত একটি মূল্যায়নে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয় যে, মার্কিন প্রত্যাহার শেষ হওয়ার পর আশরাফ গনির নেতৃত্বাধীন কাবুল সরকার ছয় মাসের মধ্যে ভেঙে পড়তে পারে। তবুও, তারপরও, এটি ইতিমধ্যেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে আফগান নিরাপত্তা বাহিনী প্রায়ই গ্রামাঞ্চলে বিনা লড়াইয়ে আত্মসমর্পণ করছে, পশ্চিমা অস্ত্র¿পাতিগুলিকে কোন কাজেই লাগাতে পারেনি। তবে আফগানিস্তান থেকে মার্কিন পশ্চাদপসরণ আমাদের জন্য ঝুঁকি তৈরি করছে বৈকি। কারণ আমেরিকা কখনো যুদ্ধ ছাড়া থাকতে পারে না। তাদের সমর নীতির অন্যতম কৌশল হলো সেনাবাহিনীর প্রত্যেক প্রজন্মে ব্যাটল হারডেনড যোদ্ধা তৈরি করা, সব সময় তাদের বাহিনীতে সত্যিকারের যুদ্ধক্ষেত্রে অংশগ্রহণের মাধ্যমে অভিজ্ঞ জেনারেল ও সোলজার থাকতে হবে। যেটা পৃথিবীর বহু দেশের নেই, আমাদেরও নেই। আরেকটা হল আমেরিকা নানা ছলছুতোয় প্রত্যেক জনবহুল মুসলিম দেশে তার সৈন্য পাঠিয়েছে এবং সে দেশটাকে এক পর্যায়ে ধ্বংস করে দিয়েছে, বা একেবারে ধ্বংস করতে না পারলেও অর্থনৈতিকভাবে উঠতে দেয় নি। নাইজেরিয়া সুদান পাকিস্তান ইন্দোনেশিয়া এই উদাহরণের সাক্ষী। সুদান এবং ইন্দোনেশিয়াকেতো টুকরো করে ছেড়েছে। মধ্যপ্রাচ্যের সব দেশেই তার ঘাঁটি রয়েছে। বাংলাদেশে তার সৈন্য পাঠানোর জন্য সে একটা অজুহাত তৈরি করবে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে। বার্মা এবং বাংলাদেশের মধ্যে একটা সীমিত যুদ্ধ লাগাতে পারে আগামী তিন চার বছরের মধ্যে যেখানে সে আসলে চীনের সাথে প্রক্সি ওয়ার লড়বে। বার্মার পক্ষে লড়বেন আর বাংলাদেশের পক্ষে স্যাঙাত দেবে আমেরিকা। একপর্যায়ে টেকনাফে তার কিছু সৈন্য এসে নামবে। অনেকের কাছে কষ্টকল্পনা মনে হতে পারে কিন্তু ভূ-রাজনীতি নিয়ে যারা নাড়াচাড়া করেন তাদের কাছে এটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ভয়ঙ্কর সম্ভাবনা। আমাদের সতর্ক থাকতে হবে আমরা যেন আঙ্কেল স্যামের কোন পাতানো ফাঁদে পা না দেই।

আফগানিস্তানে শেষ হাসি হাসল কে? অবশ্যই রাশিয়া। যে তালেবানের হাতে তারা নাস্তানাবুদ হয়েছিল, যে তালেবানকে আমেরিকাই রাশিয়ার বিরুদ্ধে তৈরি করেছিল, সেই তালেবান দিয়েই আমেরিকাকে রাতের অন্ধকারে পালাতে বাধ্য করেছে- পুতিনের রাশিয়ার জন্য এর চেয়ে মধুর প্রতিশোধ আর কি হতে পারে? সেজন্যেই পশ্চিমা সব দূতাবাসের দুতেরা পালালেও রাশিয়ান দূতাবাস কিন্তু কাবুলে ঠিকই খোলা রয়েছে। ওস্তাদ পুতিনের মার শেষ রাতে।

তবে সবকিছুর উপরে যে মিলিয়ন ডলারের প্রশ্নটা অমীমাংসিতই থেকে গেল সেটা হলো আমেরিকা তালেবানের হাতে এভাবে আফগানিস্তানকে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ছেড়ে দিয়ে গেল কেন? তাদের কি এমন তাড়া ছিল? কেউ কি বলতে পারবে? নাকি ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা তালেবানদেরকে ক্ষমতা দেয়ার নামে গুহার গর্ত থেকে বের করে এনে কিছুদিন সরকার পরিচালনার দায়িত্ব দিয়ে অতঃপর মিশরের মুরসির মতো আফগান সেনাবাহিনীর কোন জেনারেল সিসিকে দিয়ে তালেবানকে ক্ষমতাচ্যুত করা হবে এবং গণহারে মৃত্যুদন্ড দেয়া হবে? আংকেল স্যামের তুরুপে এবার কোন তাস আছে কে জানে?

Sheikhsbay

Related Articles

Back to top button
Close
Close