বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব-এর ৯১তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন

বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা ছিলেন বাংলার স্বাধীনতার নেপথ্যের কারিগর: মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিমন্ত্রী ইন্দিরা এমপি
লণ্ডন, ১২ আগস্ট : বহুগুণে গুনান্বিত, মহিয়সী নারী, বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছিলেন জাতির পিতার নেপথ্য শক্তিদাতা, পরামর্শদাতা। তিনি ছিলেন বাংলার স্বাধীনতার নেপথ্যের কারিগর। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ৯১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে এসব কথা বলেন, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেছা ইন্দিরা এমপি। তিনি বলেন, বেগম মুজিব অনন্য প্রেরণাদায়ক ছিলেন জাতির জনকের জীবনে। তিনি শুধু স্ত্রী ছিলেন না, পথপ্রদর্শক ছিলেন, বন্ধু ছিলেন। সভায় প্রধান অতিথি বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থ থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন— ‘রেনু আমার পাশে না থাকলে এবং আমার সব দুঃখকষ্ট, অভাব-অনটন, বারবার কারাবরণ, ছেলে-মেয়ে নিয়ে অনিশ্চিত জীবনযাপন হাসিমুখে মেনে নিতে না পারলে আমি আজ বঙ্গবন্ধু হতে পারতাম না। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামেও যুক্ত থাকতে পারতাম না। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার সময় সে আদালতে নিত্য হাজিরা দিয়েছে এবং শুধু আমাকে নয়, মামলায় অভিযুক্ত সবাইকে সাহস ও প্রেরণা জুগিয়েছে। আমি জেলে থাকলে নেপথ্যে থেকে আওয়ামী লীগের হালও ধরেছে।
গত ৮ আগস্ট, রোববার দুপুর ১২টায় অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল সভায় সভাপতিত্ব করেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান মাহমুদ শরীফ। যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুকের পরিচালনায় ভার্চুয়াল সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন প্রো ভিসি নাসরিন আহমেদ শিলু। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু আজীবন রাজনীতি করেছেন, বঙ্গমাতা সেই রাজনীতির হাল ধরেছিলেন। বঙ্গবন্ধু যেসময় রাজনীতি করেছেন বেশিরভাগ সময়ই বঙ্গবন্ধুকে অপজিশনের রাজনীতি করতে হয়েছে। সেই অপজিশনের রাজনীতিতে কোনো সুখ ছিলো না, সেখানে বাঁধা বিপত্তি ছিলো অনেক বেশি, কিন্তু বঙ্গমাতা ফজিতুন নেছা মুজিব কোনদিন কোনো অভিযোগ বা অনুযোগ করেননি বরং বঙ্গবন্ধুকে সবসময় সাহায্য করেছেন, অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন, উৎসাহ দিয়েছেন। বঙ্গমাতাকে মামী বলে ডাকতেন উল্লেখ করে নাসরিন আহমেদ শিলু বলেন, আমি অনেক ভাগ্যবতী কারণ বঙ্গমাতার অনেক স্নেহ পেয়েছি, ভালোবাসা পেয়েছি। বঙ্গমাতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামে সংকটে নির্ভিক সাথী ছিলেন, মৃত্যুযাত্রায়ও সহযাত্রী হয়েছেন।’ভার্চুয়াল এ আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসাবে যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়েল ট্রাস্টের ট্রাস্টি, বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি, ফরিদা শেখ জেলি। তিনি সভায় বঙ্গমাতাকে স্মরণ করে বলেন, ‘বঙ্গমাতা, যেমন গরীব মানুষের প্রতি সদয় ছিলেন, তেমনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা, তারা সকলেই গরীব অসহায় মানুষের প্রতি সদয় ব্যবহার করেন। তারা ক্ষমতার অহংকার করেন না কখনো। বঙ্গমাতা ছিলেন, নিরহংকারী, নির্লোভ মানুষ।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. শাম্মী আহমদ। তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ জাতীয় চার নেতাকে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে বলেন, বঙ্গবন্ধু তাঁর স্ত্রী সম্পর্কে খুব উচ্চ ধারনা পোষণ করতেন। বঙ্গবন্ধুর বিপদের দিনে বঙ্গমাতা ভেঙ্গে পড়তেন না। সংসারের সবকিছু সামাল দিতেন সাহসিকতার সাথে। সভায় যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সিনিয়র সহ সভাপতি জালাল উদ্দিন, অধ্যাপক আবুল হাশেম, এমএ রহিম সিআইপি, হরমুজ আলী, যুগ্ম সম্পাদক নঈম উদ্দিন রিয়াজ, মারুফ আহমদ চৌধুরী, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আহাদ চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক শাহ শামীম আহমেদ, মানবাধিকার সম্পাদক সারব আলী, শিক্ষা সম্পাদক খছরুজ্জামান, শ্রম বিষয়ক সম্পাদক এম এম সুজন মিয়া, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক ফয়জুর রহমান খান, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক সৈয়দ সুরুক মিয়া, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক কাওসার চৌধুরী, লন্ডন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলতাফুর রহমান মোজাহিদ, যুক্তরাজ্য যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক জামাল খান, সাংগঠনিক সম্পাদক বাবুল খান,যুক্তরাজ্য ছাত্রলীগের সহ সভাপতি সারওয়ার কবির প্রমূখ।
সবশেষে বঙ্গমাতা ফজিলতুন নেছা মুজিবসহ ১৫ই আগস্টের কালোরাত্রিতে নিহত সকল শহীদের রুহের মাগফেরাত কামনা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও দেশ জাতির মঙ্গল কামনা করে দোয়া পরিচালনা করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন ব্রিকলেন জামে মসজিদের খতিব মাওলানা নজরুল ইসলাম।