ইস্ট লণ্ডন ও কেন্টের ডার্টফোর্ডে দুর্বৃত্তের হামলার শিকার ২ বাঙালি

।। সুরমা ডেস্ক ।।
লণ্ডন, ১৮ জুলাই : কেন্টের ডার্টফোর্ড এবং ইস্ট ল-নের লাইম হাউজে দুবৃত্তের হামলার শিকার হয়ে মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন দুইজন ব্রিটিশ-বাঙালি। এই দুই স্থানে পৃথক হামলার শিকার এই দুইজনের এক জচ্ছেন ডার্টফোর্ডের বাসিন্দা কমরউদ্দিন জামাল । স্থানীয় কমিউনিটির পরিচিতিমুখ, ৫৫ বছর বয়সী জামাল নিজ বাসার সামনেই এক শ্বেতাঙ্গ যুবকের হামলায় মারাত্মকভাবে আহত হন।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় যে, ১১ জুলাই দুপুরে (২টা ৩০ মিনিটে) ক্রেফোর্ডে অবস্থিত স্থানীয় মসজিদে জোহরের নামাজ আদায় করে বাড়ি ফেরার সময় এ হামলার শিকার হন তিনি। কোনো কারণ ছাড়াই এক শ্বেতাঙ্গ লোক তাকে প্রচ- জোরে ঘুষি মেরে তাঁর বাসার পাশেই রাস্তায় ফেলে দেয়। উপর্যুপরি আঘাতে তিনি মারাত্মকভাবে আহত হন। হামলার ফলে চোখ, পাসহ শরীরের বিভিন্ন যায়গায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দারা এ্যাম্বুলেন্স ও পুলিশ ডাকলে এ্যাম্বুলেন্স কর্মীরা তাকে স্থানীয় ডারেন্ট ভেলী হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান। রাত ২টায় তিনি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান।
অপরদিকে, সাইকেল চালাতে বের হয়ে কৃষ্ণাঙ্গ যুবকের হামলায় মারাত্মক জঘম হয়েছেন আরেক ব্রিটিশ-বাংলাদেশী। গত ৯ জুলাই, শনিবার পূর্ব ল-নের টাওয়ার হ্যামলেটসের লাইমহাউজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ এ হামলার ঘটনাকে হেইট ক্রাইম হিসেবে দেখছে। কোনো কারণ ছাড়াই এক কৃষ্ণাঙ্গ যুবক তাঁকে কিল-ঘুষি মেরে আহত করে। তাঁর ঠোঁট ফেটে যায় এবং মুখের চোয়ালে মারাত্মকভাবে জখম হয়। আক্রমণকারী ব্যক্তিকে জনগণের সহায়তায় ঘটনার পরপরই আটক করা হয়।
হামলার শিকার ওই বাংলাদেশীর নাম মুক্তাদিও চৌধুরী। বয়স ৩৮। তিনি এক সন্তানের পিতা। আহত মুক্তাদির বলেন, দীর্ঘ ১৩ বছর যাবত ল-নে বসবাস করলেও এই প্রথমবারের মতো অতর্কিত হামলার শিকার হলেন। তিনি মনে করছেন, সাইক্লিংয়ের সময়ে তাঁর পরনে ইসলামিক পোশাক থাকার কারণেই তার ওপর হামলা চালায় ওই যুবক।
মুক্তাদির চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানান, প্রতি শনি ও রবিবার তিনি ব্যায়ামের উদ্দেশ্যে সাইকেল চালাতে বের হন। ওইদিন তিনি শেডওয়েল এলাকার ক্যাভেল স্ট্রিটের সাইকেল লেইন দিয়ে সাইকেল চালাচ্ছিলেন। তাঁর পেছনে সাইকেল চালাচ্ছিল কালো এক যুবক। তিনি বুচার রোডে আসার পর কালো যুবকটি মুক্তাদিও চৌধুরীর গতিরোধ করে এবং সাইকেল থেকে নেমে বিনা উস্কানিতে কিল ঘুষি মারতে থাকে। ক্রমাগত হামলায় মুক্তাদিও চৌধুরীর ঠোঁট ও মুখ থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। তিনি মাটিতে পড় যান। কয়েকজন শ্বেতাঙ্গ পথচারী তাঁর সাহায্যে এগিয়ে আসেন। তারা কালো যুবককে আটক করতে সক্ষম হয় এবং পুলিশে খবর দেয়।
কিছুক্ষণ পর পুলিশ এসে কলো যুবককে গ্রেফতার করে। আর আহত মুক্তাদির চৌধুরীকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তিনি ভ্যালেন্স রোডের বাসায় ফিরেন। মুক্তাদির বলেন, বাংলাদেশী কমিউনিটির অনেক মানুষ পাশ দিয়ে হেঁটে গেছে, গাড়ি চালিয়ে গেছে। কিন্তু কেউ তাঁর সাহায্যে এগিয়ে আসেনি। এতে চরম হতাশা প্রকাশ করেন মুক্তাদির চৌধুরী। প্রত্যক্ষদর্শীদের সহায়তায় অভিযুক্তকে আটক করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে হেইট ক্রাইমের অভিযোগ আনা হয়েছে।