আজিজের পর কে? সেনাপ্রধান বানানোর বার্নিং ইস্যু
- শেখ মহিউদ্দিন আহমেদ


ছবিতে (বা থেকে) লে. জেনারেল এস এম শফি উদ্দিন আহমেদ, লে. জেনারেল আতাউল হাকিম সারওয়ার হাসান, লে. জেনারেল আকবর হোসেন, লে. জেনারেল এস এম মতিউর রহমান ও লে. জেনারেল ওয়াকার উজ জামান।
লন্ডন, ৫জুন। বর্তমান রাজনৈতিক ভ্রষ্টাচারের মধ্যে সশস্ত্র বাহিনী বা পুলিশ প্রধান বা প্রধান বিচারপতি ফেরেশতা বানিয়েও লাভ নেই জাতির। রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং দলীয় প্রধান ২ বারের বেশী হওয়ার প্রথা রদ করার ব্যবস্থা করতে না পারলে এই সকল সম্ভাব্য ফেরেশতাদের দিয়ে সাধারণ আমজনতার কোন লাভ নেই। এটা সবাই বুঝি পরিবারতন্ত্র তৃণমূল পর্যন্ত বিস্তার লাভ করেছে নিকৃষ্টভাবে। কিন্তু নিজেদের ফায়দা হতে পারে ভেবে সবাই এদের পা চেটে চলি অবিরত। নির্লজ্জ্ব বেহায়ার মতো।
পুরোদেশে দূর্নীতি, মাদক আর লুটপাট এখন শাসনতন্ত্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ। কেউ কিছুতে লজ্জা পায় না। সন্তান পিতার অবৈধ অর্থ ও ক্ষমতায় নিজেকে দানব বানিয়ে ফেলছে আর ভোগ করছে সুবিধাগুলো। স্ত্রীরা পাশে থেকেই স্বামীকে মদদ দিচ্ছে দুর্নীতিতে। করোনার মধ্যেও লুট চলছে, নির্বিকার সবাই। আজব! অর্থনৈতিক মাফিয়া গোষ্ঠীদের ছুঁতেও পারছেনা সরকার বলতে চাই না; কারণ সরকার ছুঁতে চাচ্ছেও না।
এ এক আজব দেশ এখন। কেন দেশটা স্বাধীন হয়েছিল এটা এখন বুঝতে আর বাকি নেই কারো। কিন্তু কেউ বলতেও চায় না। রাজনীতিতে কারো নৈতিকতাই নেই; কোন দলের নেতৃত্বের নূন্যতম সততার যোগ্যতা নেই। প্রত্যেকেরই নিজেদের সুবিধামতো সততার প্রদর্শন হয়। আর এই যোগ্যতাহীন জাতীয় নেতৃত্বের কারণেই জাতির কোন ভবিষ্যৎ দেখা যায় না।
এই মুহূর্তে বার্নিং ইস্যু হচ্ছে সেনাপ্রধান বানানো। অথচ আমরা সবাই জানি, যে ই হোকনা কেন সে চলম্যান দুর্বৃত্তায়নকেই সমর্থন দেবে অকুন্ঠ চিত্তে। যদিওবা কারো মধ্যে সুপ্ত ভালো কিছু থাকে, তার কথা লিখলে তাকে অবিলম্বে বাদ দেয়া হবে তালিকা থেকে, পারলে এমনকি চাকুরী থেকেও। কি হচ্ছে অনেক কিছুই জানা সত্বেও এবার লিখছি না বা মুখ খুলছি না; কারণ এবারের এই সেনাপ্রধান নিয়োগ বা সশস্ত্র বাহিনীর অর্গানোগ্রাম পরিবর্তনের কোন পরিবর্তন করা বা না করার উপর অনেক কিছুই হয়তো আগামীর জাতীয় ইতিহাসের সাথে সম্পৃক্ত হতে পারে। কেউ কেউ অবশ্য আন্দাজে ঢিল মেরেও চলেছেন।
টেকনিক্যালি বলা যায়, এই প্রথমবারের মতো জেনারেল আজিজের পরে অবস্থানরত সকল লেঃ জেনারেল সেনাপ্রধান হওয়ার আলোচনায় রয়েছেন। এর বিভিন্ন কারণ রয়েছে। যেমন কারণ রয়েছে চীনের তদবির, ভারতের প্রেসার এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইচ্ছা। সেইসাথে যুক্ত আছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগামী নির্বাচনী বৈতরণী পার করার খায়েশ। জেনারেল আজিজের এক্সটেনশনের কথা যেমন শোনা যায়, তেমনি নতুন পদ লাভের রয়েছে আলোচনায়। তাই সঠিকভাবে কিছুই বলা যাচ্ছে না কিছুই। তবে এইবার চীন বা যুক্তরাষ্ট্রের ইচ্ছাই প্রাধান্য পাবে; যার উপর নির্ভর করছে এই সরকারের ভাগ্য।
আমাদের জাতীয় জীবনে কিছু কর্নেল গাদ্দাফি আর ৭১ এর মেজর হওয়ার হাস্যকর প্রচেষ্টাকারী অর্বাচীনদের আবির্ভাব ঘটেছে। এরা হচ্ছে প্যারাসাইটের মতো। নিজেরাও জানে না কি চায় এরা। তবে এই ডিস্টার্বিং এলিমেন্টদের মতো কোন কথা না বলে চুপ থাকাই এবারের জন্য জাতির জন্য মঙ্গলজনক। কারণ ফেরাউনদের ঘরেই মুসারা লালিত পালিত হয়।
লেখক: প্রেসিডেন্ট, লিবারেল পার্টি বাংলাদেশ